ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ

 

উপমহাদেশের মানুষ যে এখনো আদিম যুগের জঙ্গলের অধিবাসীদের মানসিকতা ধারণ করে তা আবারো প্রমাণিত হয় এই ঘটনায়।

#এক্ষেত্রে মুসলিমদের দোষারোপ করা হলেও উগ্র হিন্দুরা গুজরাট দাঙ্গায় যা যা বর্বরতা দেখিয়েছিল তার তালিকা অনেক লম্বা। তারা কোটি কোটি বৌদ্ধকে খুন করেছে, অসংখ্য খ্রিস্টানকে মেরেছে।

#বাংলাদেশের অনেক মুসলিমের এক ঠ্যাং এখনো পাকিস্তানে থাকলেও ঐ দেশটি প্রাক্তন পূর্ব পাকিস্তানের ৩০ লক্ষ মানুষকে খুন করেছিল, যাদের প্রায় সবাই মুসলিম ছিল। বেলুচিস্তানের লক্ষ লক্ষ মুসলিমকে কেন্দ্রের মুসলিমরাই খুন করেছে।

#বাংলাদেশে আর পাকিস্তানে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন হলে ভারতে ক্ষমতাসীন চাড্ডিদের দলের নেতারা জমি দখলের হুমকি দিলেও নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের (কেবল মুসলিমরাই সংখ্যালঘু না) উপর চলমান বর্বরতার ব্যাপারে নির্বিকার। অন্যদিকে ভারতে মুসলিমদের উপর নির্যাতন নিয়ে গলা ফাটিয়ে ফেললেও বাংলাদেশ আর পাকিস্তানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কিংবা পাহাড়িদের উপর সমান তালে নির্যাতন চলে।

#হিন্দু - মুসলিম দুই পার্টিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যার যার ধর্মগ্রন্থগুলোর হাতে গোনা কয়েকটা আপাতদৃষ্টিতে ইতিবাচক শ্লোক একে অন্যকে দেখিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করে কে কার চেয়ে বেশি নারীবান্ধব!!!! অথচ ভয়াবহ পরিসংখ্যান উল্টো গীত গায়। কিছুদিন আগে কলকাতায় নারী ডাক্তারের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর দেশটির পর্নোগ্রাফি সার্স লিস্টে এক নাম্বারে ছিলেন তিনি। অন্যদিকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে হাজার হাজার কথিত ইসলামী পদ্ধতিতে পর্দা রক্ষা করা নারীরা ধর্ষিত হয় নিয়মিত। সেই সাথে দুই পার্টির ধর্মগ্রন্থগুলোর পাতায় পাতায় নারীবিদ্বেষী লেখা। 

#দুই পার্টির মধ্যে আরেকটা দিকে চমৎকার মিল আছে। উপমহাদেশের এই তিন দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো উপাসনালয় থাকলেও বিজ্ঞান পড়তে ও জানতে দেশগুলোর অধিবাসীদের কেবল একটা ক্ষুদ্র সংখ্যাই আগ্রহী। এমনকি দেশগুলোর সরকারগুলো পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পিছনে ব্যয় করলেও বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রগুলোতে উল্টো তারা বরাদ্দ কমায়।

#দেশ তিনটির নির্বাচনপন্থী বামেরা একই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত। পাশের দেশে গরুর মাংস খেয়ে আর এদেশে পূজায় অংশ নিয়ে বিপ্লব কায়েম করা হয়। তাদের কাছে ঈদে সেমাই বিলি করাও বিপ্লবের কাজ, আবার হোলিতে অংশগ্রহণও বিপ্লবের কাজ। সমাজতন্ত্র আদৌ বুঝেন আপনারা? বামগিরি আর সমাজতন্ত্রের পার্থক্য আদৌ জানেন আপনারা?

#নির্বাচনী স্ট্যান্টবাজি আর দেশপ্রেমের পার্থক্য না বোঝা উপমহাদেশের এই বলদ জনগণই ১৯৪৭ সালে এক পার্টি আরেক পার্টির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ১০ লক্ষ মানুষ কেবল ধর্মের জন্য এই অঞ্চলে মারা যায় সেসময়। কেবল ধর্মের কারণে এতো বিপুল প্রাণহানির নজির বিশ্বের আর কোনো অঞ্চলে নেই।

#সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দেশ তিনটির এক দেশের বলদ আরেক দেশের বলদকে যার যার জিডিপি দেখায়। প্রশ্ন থাকলো এই জিডিপি থেকে কয় টাকা কৃষক, শ্রমিক, শ্রমজীবীদের বিশেষ করে আপনার পকেটে আসে? যেই লোক অর্থনীতির এই টার্ম বানিয়েছেন, খোদ তিনি নিজের এই কনসেপ্ট এর সমালোচক।

#একইভাবে এক দেশের বলদ আরেক দেশের বলদকে যার যার দেশের বড়ো বড়ো শহরগুলোতে কর্মজীবী নারীদের রাত্রিকালীন কাজ করা, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে ইন্টার রিলিজিয়ন বিয়ে ইত্যাদি ফ্যাক্টর প্রদর্শন করে সেক্যুলার সাজার ভার্চুয়াল স্ট্যান্ট দেখাতে ব্যস্ত। বলদদের কাছে প্রশ্ন রইলো দেশ তিনটির কর্মজীবী নারীদের কাজের জায়গায় যৌন হয়রানির পরিসংখ্যানগুলো নিয়ে আপনারা পড়াশোনা করেছেন কি? একইভাবে যার যার দেশগুলোর মফস্বল অঞ্চলগুলোর ভয়াবহ অবস্থা জানেন কি? 

#বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে সংখ্যাগুরুদের রিসোর্ট বানানো উন্নতির মানদণ্ড না, পরিবেশের বারোটা বাজানো সেটা। ঠিক একইভাবে ভারতে লক্ষ লক্ষ আদিবাসীকে বাস্তুচ্যুত করে, তাদের মাওবাদী সাজিয়ে নির্যাতন ও হত্যা করে প্রাকৃতিক সম্পদ কর্পোরেট জোঁকেদের হাতে তুলে দেয়াকে উন্নতি বলে না বলদের দল।

#পরিবেশ বিপর্যয়কারী বাঁধ নির্মাণ করে কেবল বাংলাদেশী 'মুসলিমদের' ক্ষতি করা হয়নি, ভারতের লক্ষ লক্ষ 'হিন্দু' দরিদ্রদের বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে 'মুসলিম-মুসলিম ভাই ভাই' মারানি অসুস্থ রোগীদের দল। সাধারণ মানুষদের তথা ভুক্তভোগীদের কোনো ধর্ম হয় না। তাদের একমাত্র ধর্ম পেট। এই উপলব্ধি যতদিন না আসবে ততদিন একদিকে চাড্ডিরা মগজ ধোলাই করবে, আরেক দিকে মোল্লারা। সেই সাথে বাড়তে থাকবে এমন বর্বর ঘটনাগুলো।

আগের হামলাগুলোর অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তালিব হুসেন শাহ জম্মুতে বিজেপি'র আইটি সেলের প্রধান ছিল। শাহ জম্মু প্রদেশের বিজেপি'র সংখ্যালঘু মোর্চার আইটি এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনচার্জ ছিল। জম্মুর অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক মুকেশ সিংহকে উদ্ধৃত করে দ্য ট্রিবিউন জানিয়েছে- 

"তালিব হুসেন পাকিস্তানে অবস্থিত লস্কর-ই-তৈয়বা সন্ত্রাসী কাসিমের সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখতো এবং রাজৌরি জেলায় বেসামরিক হত্যা ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের পাশাপাশি আইইডি বিস্ফোরণের কমপক্ষে তিনটি ঘটনায় জড়িত ছিল।"

২০২২ সালের ৯ই মে শাহ'কে বিজেপি'র আইটি সেলের ইনচার্জ করা হয়েছিল। শাহকে নিয়োগের সময় বিজেপি এক বিবৃতিতে বলেছিল- 

"রাজৌরি জেলার বুধনের দ্রাজ কোটরাঙ্কার জনাব তালিব হুসেন শাহ তাৎক্ষণিকভাবে বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার জম্মু প্রদেশের নতুন আইটি এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনচার্জ হবেন।"

গণহত্যার ঘটনা ঘটবার সাথে সাথেই ভারতের মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার পক্ষ থেকে প্রচার করা হতে থাকে যে, বেছে বেছে হিন্দুদের উপর আক্রমণ করা হয়েছিল। দেশটির মিডিয়া বলেছিল গুলি চালানোর আগে জানতে চাওয়া হয় হতভাগ্যদের ব্যক্তিগত পরিচয়। আবার আইডি কার্ড দেখে নিশ্চিত হয়ে গুলি করা হয়। কলেমা পড়তে বলা হয়। অথচ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় এলোপাতাড়িভাবে গুলি চালানো হয়। 

https://www.facebook.com/share/v/18xQ5gVrBw/

মৃতদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ আদিল হুসেন। তিনি জঙ্গিদের থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে গেলে ঝাঁঝড়া করে দেয়া হয় তাকে। তাছাড়া ভারতের এক মুসলিম আর্মিও মারা যান জঙ্গিদের হাতে।

ভাড়াটিয়া খুনিরা আজীবন ভাড়াটিয়াই থাকবে। অথচ এসব ভাড়াটিয়াদের মগজ ধোলাইয়ে আকৃষ্ট হয়ে সারা বিশ্বের মুসলিমরা কথিত জিহাদে যোগ দিয়ে জীবন নষ্ট করছে প্রতিনিয়ত। সোভিয়েত আমলে এই ভাড়াটিয়াদের (আফগানিস্তানে অনেকগুলো জাতি থাকলেও এই দলে যোগ দিয়েছিল মূলত পশতু জাতির লোকেরা) ব্যবহার করেছিল সংশোধনবাদী চীন, আমেরিকা, ইজরায়েল, ইরান (পরে তাদের কূটনীতিবিদ থেকে শুরু করে অসংখ্য নাগরিক মেরে ফেলে এই ভাড়াটিয়ারা) ইত্যাদি দেশ। ঐসময় তাদের বিপক্ষ শক্তি অন্যান্য মৌলবাদীদের আড্ডাখানার দলটির পক্ষ নিয়েছিল ভারত, সংশোধনবাদী সোভিয়েত ইউনিয়ন (পরবর্তীতে পুঁজিবাদী রাশিয়া ও প্রাক্তন প্রজাতন্ত্রগুলোর পুঁজিবাদী সরকাররা), এসব ভাড়াটিয়াদের কাছে মার খাওয়া তৎকালীন ইরানের সরকার ইত্যাদি দেশ। আমেরিকা ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের খনিজ সম্পদ লুটপাট সমানতালে চলার পর দেশগুলো যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে নিজেদের গুটিয়ে নেয় (যদিও মধ্য এশিয়ায় এখনো 'গ্রেট গেইম' তত্ত্বের বাস্তবায়ন চলমান)। ঐসময়ও ভারত দেশটিতে সক্রিয় ছিল 'গ্রেট গেইম' এর আঞ্চলিক মোড়ল এর ভূমিকা সম্প্রসারিত করতে। পশ্চিমাদের শূন্যস্থান পূরণ করতে এরপর এগিয়ে এলো চীন। তারা তালেবানদের ক্ষমতায় আনতে অর্থ ও অস্ত্রের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল। তালেবানদের কয়েকজন ভারতের কোন কোন সামরিক ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছে সেটা বের হয়ে আসলো অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের রিপোর্টে, জঙ্গিদের লালনক্ষেত্র পাকিস্তানের অর্থনীতি ধসিয়ে দিতে এই ভাড়াটিয়াদের ব্যবহার করে ভারতের দ্বারা অনেকগুলো ব্লাস্টিং ঘটানোর ব্যাপারটাও বের হলো, বেলুচিস্তানের কিংবা উইঘুর মুসলিমদের ভারত কর্তৃক উসকে দেয়ার ব্যাপারটাও সামনে আসলো। অন্যদিকে আছে বাংলাদেশিরা; যাদের কারো এক ঠ্যাং পাকিস্তানে আবার কারো এক ঠ্যাং ভারতে। কিন্তু নিজের দেশটির উপর কয়জনের ঠ্যাং থাকে এদেশে? আমরা কেবল বাফার স্টেট হয়েই বিভিন্ন ব্লকের মোড়লদের মাঝে পিষ্ট হই। এই ধরনের স্যাবোটাজ আর পাল্টা স্যাবোটাজ সারা বিশ্বেই চলমান হলেও রাজনৈতিকভাবে অসচেতন মুসলিমরা এখনো 'মুসলিম-মুসলিম ভাই ভাই' তত্ত্ব মেনে পাকিস্তানকে ভাই মনে করে আর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও কথিত মুক্তমনারা ভারতকে [তাদের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতিকে] সেক্যুলার হিসেবে বিবেচনা করে মুসলিমদের উগ্রতা দমনের কথিত প্রতিপক্ষ হিসেবে।

নির্বাচনী স্ট্যান্টবাজি'র এই ব্যাপারটা নিয়ে আন্দাজে কারা কারা এই কয়েকদিনে উল্লসিত হলেন? মধ্যপন্থী দল লীগের সময়ও অতি উৎসাহী পুলিশরা বাড়াবাড়ি করেছিল। এই সমস্ত বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে সূর্যের চেয়ে বালির গরম বেশি হয় প্রতিটা ঘটনার সময়, অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীগুলোর বাড়াবাড়ি (ক্ষমতায় যেই থাকুক না কেন কিংবা বাহিনীগুলোর সদস্যরা ব্যক্তিগত জীবনে যেই দলের সমর্থকই হোক না কেন)। এই আচরণের ব্যাখ্যাও আছে। এই ধরনের আচরণ আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হলে সেটা 'দেশপ্রেম' হিসেবে প্রচার করা হয়। যেমন- হলিউড, বলিউড কিংবা তুরস্কের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। আবার উপমহাদেশ কিংবা আফ্রিকার মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এই আচরণকে কাজে লাগানো হয় বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের দমনে। যেমন- আফ্রিকায় ক্ষমতায় থাকা খ্রিস্টানরা মুসলিমদের হত্যা করে, আবার কোনো কোনো দেশে ক্ষমতায় থাকা মুসলিমরা খ্রিস্টানদের হত্যা করে। অন্যদিকে কেন্দ্র কর্তৃক কর্পোরেট জোঁকেদের সুবিধা দিতে এসব বাহিনীর সাহায্যে অসংখ্য আদিবাসী, পাহাড়ি ও দলিতদের হত্যা ও বাস্তুচ্যুত করা হলেও পাশের দেশের কর্পোরেট বিগশট'দের মালিকানায় থাকা মিডিয়াগুলো এই অসহায় দরিদ্রদের 'মাওবাদী', সেভেন সিস্টার্স এর সাধারণ মানুষকে 'বিচ্ছিন্নতাবাদী'দের সঙ্গে জড়িত হিসেবে দেখিয়ে প্রোপাগান্ডা চালায়।

বুশ একের পর এক আগ্রাসন চালানোর সময় বলেছিল-

"আপনি হয় আমাদের সাথে, না হয় আমাদের বিরুদ্ধে।" 

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে বাংলাদেশীরাও দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। কারো এক ঠ্যাং ভারতে, আবার কারো এক ঠ্যাং পাকিস্তানে।

এক্ষেত্রে অরুন্ধতী রায় অল্প কথায় পুরো বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছেন এভাবে-

"পাকিস্তান ও ভারত যুদ্ধ করছে না, যুদ্ধ করছে তাদের সরকারগুলো। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ, চলচ্চিত্র শিল্প ও সাধারণ মানুষ একে অপরের বিরুদ্ধে নয়। এই যুদ্ধ আসলে একটি নাটক, যা দুই দেশের শাসক শ্রেণি সৃষ্টি করেছে - যারা ভয়ের আবহ ও ঘৃণা থেকে সুবিধা অর্জন করে। ভারতীয় ও পাকিস্তানি অভিজাত শ্রেণি জাতীয়তাবাদ ও কাশ্মীর ইস্যুকে জিইয়ে রাখে, যাতে জনগণের দৃষ্টি দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং সরকারের ব্যর্থতা ও দমন-পীড়ন থেকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়।”

এটাই প্রকৃত বুদ্ধিজীবী আর নির্বাচনপন্থী বামেদের বিশ্লেষণ এর মধ্যে পার্থক্য, তারা ট্রেন্ড ফলো করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইমলাইটে থাকতে চায়। এরশাদ কাকুর মতো তাদের সকালে এক কথা তো বিকালে আরেক কথা। হুজুগে গা ভাসিয়ে তারাও ভারতের মুসলিম কিংবা শিখ মহিলা সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে গর্ব করে [পাকিস্তানও এই যুদ্ধে আয়েশা নামে এক ফাইটার পাইলট যুক্ত করেছে]। অন্যদিকে সমাজতন্ত্র শিক্ষা দেয় কোনো সম্প্রদায়ের একজন মাত্র প্রতিনিধি পুরো সম্প্রদায়ের সার্বিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটায় না। যেমন- পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশের কিছু বিখ্যাত হিন্দু রাজনীতিবিদ, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, অভিনেতার জীবনযাপন হিন্দুদের উপর চালানো বর্বরতাকে আড়াল করতে অক্ষম। ঠিক একইভাবে ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর (বিশেষ করে মুসলিমরা) বিশাল সংখ্যক মানুষ এখনো নিরক্ষর, বেকার, মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আরেকটা উদাহরণ দেয়া যায় - দেশটির রাষ্ট্রপতি আদিবাসী হলেও ভারতের প্রথমসারির পত্রিকা 'দ্য হিন্দু'তে উঠে এসেছে সেদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আদিবাসীদের বৈষম্যের চিত্র। এক গাঙ্গুলী দিয়ে ঐ পাড়ের বাঙালিরা বছরের পর বছর আত্মতৃপ্তিতে ভুগলেও পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটির সেনাবাহিনীতে ১% এর কম সদস্য বাঙালি!

জঙ্গি উৎপাদন ক্ষেত্র পাকিস্তানের সামরিক স্ক্যান্ডাল অগণিত। এবার কথিত সেক্যুলার রাষ্ট্র ভারতের সামরিক ও বেসামরিক স্ক্যান্ডাল ও বর্বরতাগুলো একটু দেখা যাক-

https://en.m.wikipedia.org/wiki/2020_Amshipora_murders

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Barak_Missile_scandal

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1993_Bijbehara_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Operation_Bluebird

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Bofors_scandal

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Chattisinghpora,_Pathribal,_and_Barakpora_massacres

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1999_Delhi_hit-and-run_case

https://en.m.wikipedia.org/wiki/DRDO_espionage_case

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Indian_National_Army_trials

https://en.m.wikipedia.org/wiki/2013_Indian_helicopter_bribery_scandal

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Kakopathar_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1991_Kunan_Poshpora_incident

https://en.m.wikipedia.org/wiki/One_Rank,_One_Pension

https://en.m.wikipedia.org/wiki/2019_Pulwama_attack

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Samba_spy_scandal

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1990_Gawkadal_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1990_Handwara_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Hawal_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Murder_of_Jalil_Andrabi

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1994_Kupwara_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/2010_Machil_encounter

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Papa_II

https://en.m.wikipedia.org/wiki/2009_Shopian_rape_and_murder_case

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1993_Sopore_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1990_Zakoora_and_Tengpora_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1993_Lal_Chowk_fire

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Kashmir_human_shield_incident

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Uruttal

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Deaths_along_the_Bangladesh%E2%80%93India_border

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Shooting_of_Felani_Khatun

https://en.m.wikipedia.org/wiki/2021_Nagaland_killings

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Turkman_gate_demolition_and_rioting

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1989_Valvettiturai_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Operation_Blue_Star

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Matikhr%C3%BC_Massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Jaffna_hospital_massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Hyderabad_massacres

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1994_Mokokchung_Massacre

https://en.m.wikipedia.org/wiki/1987_Eastern_Province_massacres

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Jeep_scandal_case

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Kargil_coffin_scam

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Vipin_Khanna

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Shashindra_Pal_Tyagi

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Scorpene_deal_scam

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Rafale_deal_controversy

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Suresh_Nanda

https://m.youtube.com/watch?v=lNut1K34aFaFg

উপরের লিংকে চমৎকার একটি ডকুমেন্টারি দেয়া আছে। এটা কেবল পাকিস্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না, পুরো উপমহাদেশের মাদ্রাসাগুলোতে কি চলে তার একটা ধারণা পাওয়া যায়। দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে অন্যদিকে চাড্ডিরাও এমন ধরনের প্রতিষ্ঠান চালিয়ে জঙ্গি উৎপাদন করে। মগজ ধোলাই করা এই ভাড়াটিয়াদের কিভাবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় সেটাও দেখানো হয়েছে এখানে, যা চাড্ডিদের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন কিংবা অন্যান্য ধর্মগুলোর উগ্রপন্থী গ্রূপগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

মাদ্রাসার ছাত্রদের আচরণের ব্যাখ্যা-

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া এর মার্ক রোজেনজবিগ এবং তাঁর সহকর্মীবৃন্দ পরীক্ষা চালালেন দুই দল ল্যাবরেটরী ইঁদুরের উপর। একদল থাকলো একঘেয়ে, বিরক্তিকর এবং নোংরা পরিবেশে। অন্য দলটি থাকলো বৈচিত্র্যময়, প্রাণবন্ত এবং সমৃদ্ধ পরিবেশে। দ্বিতীয় দলটি প্রদর্শন করলো সেরিব্রাল কর্টেক্সের ভর এবং পুরুত্বের ব্যাপক বৃদ্ধি, এছাড়া এদের মস্তিষ্কের রসায়নে ঘটলো কিছু পরিবর্তন। পরিবর্তনগুলো ঘটলো প্রাপ্তবয়স্ক এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক উভয় ধরনের প্রাণীতে।

এই পরীক্ষণটি উপস্থাপন করলো-

শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনগুলোর সাথে সম্পর্ক আছে বুদ্ধিবৃত্তিক অভিজ্ঞতার এবং নমনীয়তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় অঙ্গব্যবচ্ছেদগত ভাবে। যেহেতু অধিকতর ভারী সেরিব্রাল কর্টেক্স ভবিষ্যতের শিক্ষণ প্রক্রিয়াকে সহজতর করে তুলে, তাই শৈশবে সমৃদ্ধ পরিবেশের গুরুত্ব সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।

নতুন শিক্ষণের সাথে নতুন সিনাপসগুলোর জন্ম বা মৃতপ্রায়গুলোকে সক্রিয় করার সম্পর্ক আছে। ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়েস এর স্নায়ু অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ উইলিয়াম গ্রিনাফ এবং তার সহকর্মীগণ দেখতে পেলেন গবেষণাগারে নতুন কাজ শেখানোর কয়েক সপ্তাহ পর ইঁদুরগুলো তাদের কর্টেক্সে নতুন নিউরাল শাখা উৎপন্ন করলো, যেগুলো সিনাপস সৃষ্টি করে। অন্য ইঁদুরগুলোকে একইভাবে লালন পালন করা হলেও অনুরূপ কোনো প্রশিক্ষণ না দেয়ার ফলে এ জাতীয় কোনো স্নায়ু অঙ্গব্যবচ্ছেদগত আভিজাত্য প্রদর্শন করলো না। নতুন সিনাপস সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন পড়ে প্রোটিন এবং আরএনএ সংশ্লেষণের। এই অণুগুলো মস্তিষ্কের ভেতর তৈরি হয় শিক্ষণের কালে এবং শিক্ষণকে ধারণ করে মস্তিষ্কের প্রোটিন বা আরএনএ। নতুন তথ্যগুলোকে ধারণ করে নিউরনসমূহ, যেগুলো প্রোটিন এবং আরএনএ দ্বারা গঠিত।


ম্যাকিয়াভেলি গ্রিক ও রোমান সভ্যতা ধ্বংসের পিছনের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে এটাকেই উল্লেখ করে গেছেন। তারা একদিকে সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে সবটুকু মনোযোগ দিয়েছিল জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ বর্জন করে, অন্যদিকে আমজনতা ডুবে গিয়েছিল পশ্চাৎপদ ধর্মান্ধতায়। উপমহাদেশের আমজনতাও উগ্র জাতীয়তাবাদী মানসিকতার শো ডাউন করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, অথচ তিন দেশের সাধারণ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থাই অতি ভয়াবহ।

Comments

Popular posts from this blog

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-দুই]

শিবিরনামা [পর্ব-এক]