Posts

তথাকথিত বিস্ময় বালিকা মৌসুমী

Image
  https://www.anandabazar.com/west-bengal/purulia-birbhum-bankura/former-wonder-girl-is-now-living-a-normal-life-1.888397 মৌসুমীকে জানতে, মৌসুমীর ওপর প্রাথমিক পরীক্ষা চালাতে আদ্রায় যাবো ঠিক করে ফেললাম। ২৯ আগস্ট '৮১ সন্ধ্যায় পাওলভ ইনস্টিটিউটে ডাঃ বাসুদেব মুখোপাধ্যায়কে পেয়ে গেলাম। ডাঃ মুখোপাধ্যায় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি মৌসুমীর কাছে গিয়েছিলেন। ১৩ আগস্ট '৮৯-র আনন্দবাজারে এঁকেই পাভলভ ইন্সটিটিউটের অধিকর্তা ডাঃ ডি এন গাঙ্গুলীর ছাত্র বলে পরিচয় দেওয়া হয়েছিল। ডাঃ মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, "মৌসুমীকে পরীক্ষা করে কী মনে হলো আপনার?" "অসাধারণ। কথা বললে অবাক হয়ে যাবেন। যে কোনও প্রশ্ন করুন, কম্পিউটারের মতো উত্তর দিয়ে যাবে। আপনিও কি যাবেন নাকি?" বললাম, "যাওয়ার ইচ্ছে আছে। আপনি কী ধরনের প্রশ্ন করেছিলেন?" "ও অনেক কিছু। যেমন অসাধারণ স্মৃতি, তেমনই মেধা। এইটুকুন তো বয়েস; এর মধ্যেই ডাচ, জার্মান ও দস্তুর মতো শিখে ফেলেছে। স্মার্টলি ডাচ, জামান বলে।" এই পর্যন্ত বলেই সুর পাল্টালেন বাসুদেববাবু, "আমি মশাই শুধুই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, আপনা...

শকুন্তলা দেবীর ভণ্ডামি উন্মোচন

Image
  কলকাতা তথা তামাম ভারতবর্ষের জ্যোতিষীরা দ্বিতীয় বিশাল আঘাত পেলেন যখন মানবী কম্পিউটার এবং ভারতবর্ষের বৃহত্তম জ্যোতিষ সংস্থা 'Indian Institute of Astrology'-র পৃষ্ঠপোষক, জ্যোতিষ সম্রাজ্ঞী শকুন্তলা দেবী আমার সরাসরি খোলামেলা চ্যালেঞ্জে সাড়া না দিয়ে কলকাতা ছেড়ে পালালেন। এতে তিনি ভরাডুবির হাত থেকে বাঁচলেও ডোবালেন তাঁর মুখাপেক্ষী সারা ভারতবর্ষের কয়েক হাজার জ্যোতিষীকে। শকুন্তলা দেবী বাস্তবিকই চতুর। প্রথমবার আকাশবাণীর অনুষ্ঠানে তিনি আমার বিরুদ্ধে হাজির হননি। জানতেন হাজির না হওয়ার যে অপমান, তাঁর চেয়ে বহুগুণ বড় মাপের অপমান তাঁর জীবনে নেমে আসবে যদি হাজির হয়ে পরাজিত হন। দ্বিতীয়বার আমার চ‍্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গুছোন জ্যোতিষ ব্যবসা ফেলে স্রেফ পালিয়েছিলেন। পালাবার তাড়ায় গ্রেট ইস্টার্ণ হোটেল থেকে নিজের জিনিসপত্তর নিয়ে যাওয়ার মতও সময় দিতে পারেন নি। ৪ ফেব্রুয়ারী, '৮৭ কলকাতার সান্ধ্য দৈনিক 'ইভিনিং ব্রিফ'-এর পাতা জুড়ে 'দ্য মিসটিক্যাল লেডি অব দ্য কমপিউটার' শীর্ষকে তথাকথিত 'হিউম্যান কম্পিউটার' শকুন্তলা দেবীর ছবি ও সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সাক্ষাৎকারের এক জায়গায় শকুন্তলা দেবী...

ফ্রয়েড বনাম মার্কসবাদ [পর্ব - এক]

Image
  ফ্রয়েড এবং ফ্রয়েডপন্থীরা বলে যে, পুরুষরা নাকি ছোটবেলা থেকে মায়েদের ভোগ করার কল্পনা করে এবং বাবার উপস্থিতি এই উদ্দেশ্য সফলের পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ধরে নেয়! তাই বিদেশী শাসকেরা দীর্ঘদিন কোন দেশকে শাসন করলে জন্মভূমিকে 'মা' হিসেবে ধরে নিয়ে আন্দোলন সংগঠিত করা হয় এই চিন্তা থেকে যে, তাদের জন্মভূমিকে বিদেশীদের দ্বারা শোষণ প্রক্রিয়া (ফ্রয়েডপন্থীদের দৃষ্টিতে অবচেতন মনে জমে থাকা সম্ভোগের ইচ্ছা) দূর হয়ে যেন তারাই একচ্ছত্রভাবে ভোগের অধিকারী হয়! তাহলে নারীরা কেন স্বাধীনতার সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে? রাজনৈতিক চেতনা সৃষ্টি হওয়ার পিছনেও পুঁজিবাদীদের এই দালালদের হাস্যকর ব্যাখ্যা আছে। পিতৃপ্রধান সমাজে পিতা কর্তৃক নানা কাজে ছোটবেলা থেকে অবদমন এর শিকার হওয়ার কারণে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর সমাজ এবং রাষ্ট্রের নানা বিধি-নিষেধকে তারা পিতৃতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে ধরে নেয় এবং রাজনৈতিক দল গঠনের মাধ্যমে অরাজকতা তৈরি করে! ফ্রয়েডপন্থীদের মতে রাজনৈতিক সচেতনতা নাকি সুস্থ মস্তিষ্কের লক্ষণ নয়! তাদের কুযুক্তি অনুযায়ী রাজনৈতিকভাবে নিরুৎসাহী তথা নিরপেক্ষ থাকতে হলে রুশ বিপ্লব, চীন বিপ্লব আর দেখা লাগতো না। ম...

চাড্ডিগণ [দুই]

Image
  বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষে অনিল ভট্টাচার্য নস্ত্রাদামুসের মতো বাটপারের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা শুনিয়ে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদকে জাগরিত করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। শুনিয়েছিলেন হিন্দুদের বিশ্ব বিজয় ও মুসলমানদের ধ্বংসের দিন দ্রুত এগিয়ে আসার কথা। অনিল ভট্টাচার্যের যুক্তি ছিল- "অতীতের প্রতিটি ভবিষ্যদ্বাণী যেহেতু মিলেছে, সুতরাং অবশ্যই আমরা ধরে নিতে পারি, ভবিষ্যতে হিন্দুদের বিশ্ব বিজয়ের যে কথা নস্ট্রাডামুস বলেছেন তা-ও অবশ্যই মিলবে।" ........................................................................................ বাটপার নস্ত্রাদামুসের ১ নাম্বার সেঞ্চুরীর (মোট ১০টা সেঞ্চুরী আছে, ৭ নাম্বার সেঞ্চুরী [৪২টা] বাদে বাকিগুলোতে ১০০ টা করে তথাকথিত 'ভবিষ্যদ্বাণী' আছে বলে এগুলোকে 'সেঞ্চুরী' বলে) ৫০ নাম্বার কবিতা- De l'aquatique triplicite naistra. D'un qui fera le jeudi pour sa feste: Son tadt, loz, regne, sa puissance coistra, Par terre & mer aux Oriens tempeste. অর্থ: "তিনটে পানির সঙ্কেত থেকে জন্মাবে এক মানুষ, যে বৃহস্পতিবারকে তার ছুটির দিন হিসেবে পালন করবে। তার ব...

বাম রঙ্গ [পর্ব - দশ]

Image
  "রাজনৈতিক দল, রাজনীতিক ও বড় বড় পত্র-পত্রিকা এইসব ভারি ভারি প্রবন্ধ লিখিয়েদের বিষয়ে লাগাতারভাবে সূক্ষ্ম ধারণা সাধারণের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে থাকে - ওঁরা চিন্তাবিদ, ওঁরা বিশিষ্ট, ওঁরা অসাধারণ পণ্ডিত, ওঁরা প্রগতিশীল। প্রগতিশীলতার সিলমোহর দেগে দেওয়া ওই সব বুদ্ধি বেচে খাওয়া মানুষগুলো কী প্রসব করেন? তারই একটি সাম্প্রতিকতম উদাহরণ দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত 'প্রতিরোধ'। কার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ? অন্ধতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। বইটির টাইটেল পেজ-এ ছাপা আছে "অন্ধতা ও অযুক্তির বিরুদ্ধে রামমোহন থেকে সত্যেন্দ্রনাথ বসু"। সম্পাদকীয়তে দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এক জায়গায় লিখছেন, "অন্ধকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে বঙ্গ মনীষার ইতিহাসে একের পর এক মানুষের আবির্ভাব। তাঁদের যে অভিযান তা যেমনই দুঃসাহসিক তেমনই প্রখর প্রতিভার পরিচয়। রামমোহন রায় থেকে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর রচনাবলির দিকে দৃষ্টি আবদ্ধ রাখুন। বুকের বল ফেরত পাবেন। এই সব দীপ্ত মেধাবীরা কিন্তু প্লেটোর ঐ অসুর দলে পড়েন। ধর্মান্ধতার উর্ণাজাল ছিন্নভিন্ন করে অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর মশাল জ্বেলে, যুক্তিনিষ্ঠ নির্মল চিন্তার হাতিয়ার হাতে বিজ্ঞানে...