বাম রঙ্গ [পর্ব - দশ]

 


"রাজনৈতিক দল, রাজনীতিক ও বড় বড় পত্র-পত্রিকা এইসব ভারি ভারি প্রবন্ধ লিখিয়েদের বিষয়ে লাগাতারভাবে সূক্ষ্ম ধারণা সাধারণের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে থাকে - ওঁরা চিন্তাবিদ, ওঁরা বিশিষ্ট, ওঁরা অসাধারণ পণ্ডিত, ওঁরা প্রগতিশীল। প্রগতিশীলতার সিলমোহর দেগে দেওয়া ওই সব বুদ্ধি বেচে খাওয়া মানুষগুলো কী প্রসব করেন? তারই একটি সাম্প্রতিকতম উদাহরণ দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত 'প্রতিরোধ'। কার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ? অন্ধতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। বইটির টাইটেল পেজ-এ ছাপা আছে "অন্ধতা ও অযুক্তির বিরুদ্ধে রামমোহন থেকে সত্যেন্দ্রনাথ বসু"। সম্পাদকীয়তে দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এক জায়গায় লিখছেন, "অন্ধকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে বঙ্গ মনীষার ইতিহাসে একের পর এক মানুষের আবির্ভাব। তাঁদের যে অভিযান তা যেমনই দুঃসাহসিক তেমনই প্রখর প্রতিভার পরিচয়। রামমোহন রায় থেকে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর রচনাবলির দিকে দৃষ্টি আবদ্ধ রাখুন। বুকের বল ফেরত পাবেন। এই সব দীপ্ত মেধাবীরা কিন্তু প্লেটোর ঐ অসুর দলে পড়েন। ধর্মান্ধতার উর্ণাজাল ছিন্নভিন্ন করে অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর মশাল জ্বেলে, যুক্তিনিষ্ঠ নির্মল চিন্তার হাতিয়ার হাতে বিজ্ঞানের সমর্থনে এঁরা এগিয়ে এসেছিলেন।" 

ধর্মান্ধতার উর্ণাজাল কে ছিন্ন করেছিলেন? রামমোহন রায়? সত্যেন্দ্রনাথ বসু? রামমোহন রায় তো স্বয়ং এক ধর্মমতের স্রষ্টা। ব্রাহ্মধর্ম প্রতিষ্ঠা করে নিরাকার ঈশ্বরের উপাসনাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। মন্দির ও দেবমূর্তি ভাঙে কালের করাল গ্রাসে। অথবা নিশ্চিহ্ন হয় কেউ নিশ্চিহ্ন করে দিলে। নিরাকার ঈশ্বরকে ওভাবে মুছে ফেলা যায় না। এমনই এক ঈশ্বর চিন্তা জনমানসে প্রথিত করতে চেয়েছিলেন রামমোহন, যেখানে ঈশ্বর থাকবেন অনেক নিরাপদে। 

রামমোহন রায়ের রচনাটির আগে যে সংক্ষিপ্ত লেখক পরিচয় দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় দিয়েছেন তাতে রামমোহন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, "বিশ্বের সর্বত্র স্বাধীনতাকামী ও সাধারণতন্ত্রী আন্দোলনের প্রতি তাঁর ছিল অকুন্ঠ সমর্থন।" বাস্তব সত্য যে অন্য কথা বলে। বাম বুদ্ধিজীবী হিসেবে আই. এস. আই. ছাপ মারা সুপন্ডিত দেবীপ্রসাদবাবু কী অস্বীকার করতে পারবেন যে নিচের তথ্যগুলো ভুল বা মিথ্যে?

রামমোহন ইংরেজ শাসকদের প্রভু হিসেবে মেনে নিয়ে দেশীয় উচ্চ বর্ণদের উদ্দেশ্যে যে উপদেশ বার বার বারিধারার মতই বর্ষণ করেছেন এবং তাঁর কাজকর্মে যে
চিন্তাধারা অতি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা হলো এই-

(১) ইংরেজদের শ্রেষ্ঠত্ব ও অভিভাবকত্ব মেনে নাও।

(২) বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ ভারতবাসীদের কাছে ঈশ্বরের অপার করুণার মতোই এসে পড়েছে।

(৩) ইংরেজদের সাম্রাজ্য রক্ষায় সব রকমের সাহায্য করো।

(৪) ইংরেজদের বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহ করে তাদের ঘৃণা করো। ওই বিদ্রোহীদের নির্মূল করতে ইংরেজদের সর্বাত্মক সাহায্যে এগিয়ে এসো।

(৫) সভা-সমিতি গড়ে সেগুলোর মাধ্যমে ইংরেজদের জয়গান করো। ইংরেজদের প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করো।

(৬) সংবাদপত্রের মাধ্যমে ইংরেজ শাসনের সুফল বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করো। 

(৭) ইংরেজদের কাঁচামাল রপ্তানী এবং বৃটিশ সাম্রাজ্য থেকে তৈরি জিনিস আমদানীর ব্রিটিশ নীতিকে সমর্থন করো।

রামমোহনীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেবীপ্রসাদ 'ইংরেজ' শব্দের পরিবর্তে 'শাসক' শব্দটি রামমোহনের নীতিবাক্যগুলোতে বসিয়ে নিয়ে গ্রহণ করেছেন বলেই কী অন্ধতা ও অযুক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামরত মানুষদের মস্তক চর্বণের জন্যেই তাঁর এই মিথ্যাচারিতা? 

আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু যে পরম ঈশ্বরভক্ত এবং অলৌকিক ক্ষমতায় অগাধ বিশ্বাসী ছিলেন, তা আচার্যদেবের সামান্য হালফিল জানা মানুষদের যেখানে অজানা নয়, সেখানে দেবীপ্রসাদবাবুর মতো এমন সুপন্ডিতের তো অজানা থাকার কথা নয়? সম্পাদক হিসেবে দেবীবাবু কী তবে না জেনেশুনেই শুধুমাত্র সুন্দর কিছু শব্দবিন্যাসের তাগিদেই সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে অন্ধকার ও অযুক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামী বঙ্গমনীষা বলে অবহিত করলেন? সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে যদি অন্ধকার অযুক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামী চরিত্র বলে দেবীপ্রসাদবাবুর মনে হয়ে থাকে, তবে দেবীবাবু নিশ্চয়ই অন্ধকার ও অযুক্তির ধারক-বাহক হিসেবে অবহিত করবেন সেইসব মানুষদের, যাঁরা অন্ধভাবে ঈশ্বর ও অলৌকিকতাকে মেনে নিতে নারাজ; যাঁরা অবিশ্বাস ও অযুক্তির বিরদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন!

'প্রতিরোধ'-এ এমন আরো অনেকের রচনাই স্থান করে নিয়েছে যাঁরা রামমোহনীয় চিন্তায় উদ্বুদ্ধ, যুক্তিহীন চিন্তার দ্বারা পরিচালিত। এরপর 'প্রতিরোধ' কাদের প্রতিরোধের জন্য প্রকাশিত, তা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না।

দেবীপ্রসাদের মতো 'ট্রয়ের ঘোড়া' শুধুমাত্র অন্তর্ঘাত চালিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে না, এরা অশ্বমেধের দিগ্বিজয়ী ঘোড়ার ভূমিকাও পালন করে একের পর এক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের দুর্গে ধস নামিয়ে। এইসব অশ্বমেধের ঘোড়াদের অগ্রগতি রোধ করতে হবে সাংস্কৃতিক কর্মীদেরই, যুক্তিবাদী আন্দোলন কর্মীদেরই। যুক্তিবাদী আন্দোলন যখন বাস্তবিকই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বহু থেকে বহুতর মানুষদের মধ্যে শহরে গ্রামে সর্বত্র, ঠিক তখনই সরকারী অর্থানুকূল্যে প্রকাশিত হলো এই 'প্রতিরোধ'। প্রকাশক কারা? আমেরিকার CSICOP নামক একটি সংস্থার পূর্ব ভারতের এজেন্সি নেওয়া একটি স্বঘোষিত যুক্তিবাদী সমাজ সচেতন মাসিক পত্রিকাগোষ্ঠি। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে অত্যাচারিত দরিদ্র মানুষগুলোর চেতনাকে ঠেকিয়ে রাখতে আমেরিকার ধনিকশ্রেণি মেকি বিজ্ঞান আন্দোলন গড়ে তুলতে তৈরি করেছে 'কমিটি ফর সাইন্টিফিক ইনভেস্টিগেশন অফ ক্লেমস অফ দ্য প্যারানরমাল' সংক্ষেপে 'CSICOP' নামের একটি সংস্থা। সেই কুখ্যাত সংস্থার দালালদের ওপর বিজ্ঞান আন্দোলন কর্মীদের ভরসা রাখা আর চোরেদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া নাইটগার্ডদের ওপর পল্লীবাসীর ভরসা রাখা একই ব্যাপার। সুন্দর পৃথিবীকে অসুন্দর করারও উৎস মানুষ - তা ওই পত্রিকার কাজকর্মেই প্রকট।

এদেশের রাজনীতিতে আমরা তথাকথিত মগজবানদের আরো হাস্যকর ও লঘু আচরণ দেখলাম '৯১-এর গোড়ায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এগিয়ে এলেন অন্ধতা ও অযুক্তি বিরোধী একটি তথ্যচিত্র করতে। গরীব মানুষদের জন্য গরীব মানুষদের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি করা হলো 'আলোর উৎস সন্ধানে'। বিপুল অর্থ ব্যয়ে তৈরি এই তথ্যচিত্রের সাহায্যে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষকে আলো দেখাবার ভার তুলে দেওয়া হলো এক গ্রহরত্নধারী তথাকথিত মার্কসবাদী বুদ্ধিজীবী অভিনেতা কাম চিত্র পরিচালককে। অযুক্তি ও অন্ধকারে ডুবে থাকা এমন এক পরিচালক আলো দেখাবেন? এও কি বিশ্বাসযোগ্য? যিনি অস্বচ্ছ চিন্তায় ডুবে আছেন, তিনি সাধারণ মানুষকে দেবেন স্বচ্ছ চিন্তার দিশা? দেশের কী করুণ অবস্থা ভাবুন! অন্ধ পথ দেখাচ্ছে অন্ধকে! আরো মজার ব্যাপার দেখুন; ওই পরিচালক তথ্যচিত্রটিতে হাজির করলেন কাঁদের? বুদ্ধির ব্যাপারী দেবীপ্রসাদবাবুকে এবং ভূত-ভগবানে পরম বিশ্বাসী এক যুক্তিবাদীর ভেকধারী জাদুকরকে। আরো লক্ষ্যণীয় - CSICOP-র দালাল পত্রিকাগোষ্ঠি দেবীবাবুর মতই ওই জাদুকরের অনেক লেখা তাদের পত্রিকায় প্রকাশ করে তাকে যুক্তিবাদী হিসেবে সাধারণ মানুষের সামনে ও যুক্তিবাদী আন্দোলনকারীদের সামনে হাজির করতে চেয়েছে। আমরা কী তবে ধরে নেবো এদের সকলের অবস্থান বেড়ার একই দিকে? অথবা এইসব বুদ্ধিজীবীদের পকেটে পুরতেই সংগ্রামের হাতিয়ার সরকার পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করলেন? না কী এসবই স্বজনপোষণের বিস্ময় ফল? কিংবা সুচিন্তিতভাবে যুক্তিবাদী আন্দোলন কর্মীদের চিন্তা-চেতনাকে গুলিয়ে দিতেই বেড়ার একই দিকে অবস্থান করা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে? কথায় ও কাজে সরকারকে এক ও অভিন্ন দেখতে চাওয়াটা একজন ভারতীয় নাগরিকের পক্ষে নিশ্চয়ই অন্যায় নয়? মুখোশ ছিঁড়তে চাওয়াটা নিশ্চয়ই বেয়াদপী নয়?"

- 'অলৌকিক নয়, লৌকিক (৩য়)'

......................................................................................

....১৯৬২'র ২০ অক্টোবর শুরু হলো চিন-ভারত সীমান্ত যুদ্ধ। ওদিকে ১৯৫৯-এই একটা পটভূমি তৈরি হয়েছিল। তিব্বত তখন চিনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। দলাই লামাকে উসকে দিয়ে চিনের ক্রোধ উৎপাদন করেছিল ভারত। চিনকে এমন দলাই-মলাই করলো যে, শান্তির পরিবেশ বিঘ্নিত হলো। '৫৯-এ দলাই পালিয়ে এলেন ভারতে। সঙ্গে আনলেন হাজার হাজার কোটি টাকার সোনা-মণি মুক্ত ইত্যাদি অলংকার যেগুলো ধর্মগুরু হিসেবে লুঠ করে জমিয়েছিলেন। নেহেরু দলাইকে রাজকীয় আশ্রয় দিলেন। আর দলাইয়ের কয়েক হাজার অনুগামীর জীবন ধারণের সমস্ত খরচ-খরচা আমাদের ট্যাক্সের টাকায় দিতে লাগলেন নেহেরু। পরিণতিতে গরম হলো চিন-ভারত সম্পর্ক। পরে শুরু হলো যুদ্ধ। নেহেরু তখন ভারতের এক ও একমাত্র জননেতা। রেডিওতে 'জাতীয়তাবোধ'-কে সুড়সুড়ি দিয়ে জাগিয়ে তুলতে পিলপিল করে বুদ্ধিজীবীরা এক হলো। রেডিওতেই শুনতে লাগলাম, কোনও ভিখারি ভিক্ষে করে কয়েক হাজার টাকা দান করেছে প্রতিরক্ষা তহবিলে। কোনও বউ বিয়ের দিনে সমস্ত গহনা, এমনকী হাতে আংটি, কানের দুলটি পর্যন্ত খুলে যুদ্ধাস্ত্র কেনার জন্য দিয়ে দিলেন নেহেরুকে। কোনও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে যুদ্ধ তহবিলে দান করে দিলো। যতই এই প্রচার বাড়ছে ততই রিকশাওয়ালা থেকে মেথর, চাষি থেকে শ্রমিকদের নাম উঠে আসছে। যেন দানের অর্থেই যুদ্ধ জিতবেন নেহেরু। আর একদিকে নাগাল্যান্ড, অরুণাচল, আসামের অধিবাসীরা অর্থ দান করে যাচ্ছে খেয়ে না খেয়ে। সে কী আবেগের তুফান উঠছে। 'জাতীয়তাবোধ' জাগাতে ঝাম্পু ঝাম্পু গান চলছে। জাতীয়সঙ্গীত। টগবগ টগবগ করে রক্ত ফোটাতে সে কী গান। গায়ে যেন জ্বর চলে আসে। তখন সিপিআইকে 'পঞ্চমবাহিনী' অর্থাৎ বিশ্বাসঘাতক হিসেবে প্রচারের তুফান ছুটালেন নেহেরু। আরএসপি, এসইউসিআই তখন সুযোগ বুঝে নেহেরুর পোষা বেড়াল হয়ে গেলো। আর তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো মিউ মিউ করতে লাগলো। কমিউনিস্ট পার্টি জাতীয় পরিষদে চিনকে আক্রমণকারী বললো। নেহেরুকে সমর্থন করে আমজনতার কাছে ঘোষণা করলো, নেহেরুকে সমর্থন করার জন্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভারতীয় সেনাদের সাহায্য করার কথা বললো উদাত্ত কণ্ঠে। ২১ নভেম্বর একতরফাভাবে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করলো চিন। এর আগে প্রতিদিন দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় গম্ভীর কাঁপা গলায় রেডিওতে ঘোষণা করছেন ভারতীয় সেনাদের বীরত্বের সঙ্গে পশ্চাদপসরণের কাহিনি। ২১ নভেম্বর এই পশ্চাদপসরণ শেষ হল। চিন ভারত যুদ্ধ চলছে। কলকাতার আকাশে চক্কর কাটছে যুদ্ধবিমান। মাঝে মাঝেই সাইরেন বাজে রাতে। সঙ্গে সঙ্গে নিষ্প্রদীপ হয়ে যায়। আমরা রেডিওতে কান পেতে শুনি ভারতীয় সেনাদের 'বীরত্বের সঙ্গে পশ্চাদপসরণ'-এর কাহিনি। এরপরেই সিপিআই-এর গন্ডগোল চরম পর্যায়ে গেলো। সিপিআই-এর একদল বললো ভারতই আক্রমণকারী। এই নিয়ে মতপার্থক্য। এটা কোনও মতাদর্শগত পার্থক্যের লড়াই নয়। দেশে সঠিক বিপ্লবের পথ খোঁজা নিয়ে মতপার্থক্য নয়। এটা ছিল ক্ষমতা দখলের লড়াই। রুশপন্থী কমিউনিস্টদের ক্ষমতায় একচেটিয়াপনা ভাঙতে চিনের সমর্থন আদায়ের জন্য একটা কৌশল। যেহেতু রুশ-চিনের সম্পর্কটা তখন আদায়-কাঁচকলায়, তাই বড় খুঁটিতে নৌকো বাঁধার চেষ্টা। ১৯৬৪ সালের ১১ এপ্রিল সিপিআই দলের জাতীয় পরিষদ থেকে ৩২ জন সদস্য সিপিআই ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এদের মধ্যে ছিলেন জ্যোতি বসু, প্রমোদ দাশগুপ্ত, মুজাফফর আহমেদ, হরেকৃষ্ণ কোঙার, হরকিষণ সিং সুরজিৎ, সরোজ মুখার্জি প্রমুখ। এরা ১৯৬৪ এর ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত একটি পার্টি কংগ্রেসের আয়োজন করেন কলকাতায়। এই পার্টি কংগ্রেসের মধ্যে দিয়ে জন্ম নেয় সিপিআইএম। সিপিএম-এর সমর্থক ছিল প্রধানত পূর্ব বাংলা থেকে আগত উদ্বাস্তুরা। সর্বহারা এই উদ্বাস্তুদের কাছে টানতে তৎপর হয়েছিল সিপিএম। এবং সফলও হয়েছিল। উদ্বাস্তুরা সিপিএম-এর প্রচারে ধরে নিয়েছিলেন কংগ্রেসের জন্যেই দেশ ভাগ হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই জানতে পারলো না যে, কমিউনিস্ট পার্টিও দেশ বিভাগকে পুরোপুরি সমর্থন করেছিল। তারা স্বপ্ন দেখলো ক্ষমতা দখল করেই সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ আনবে। ওদিকে কংগ্রেস দল কেন্দ্রের ক্ষমতায়, ১৯৬৬ থেকে ইন্দিরা প্রধানমন্ত্রীর গদিতে। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে 'দ্য সিন্ডিকেট' কামরাজ ও অতুল্য ঘোষের বিশাল প্রভাব। কামরাজ, অতুল্য ঘোষ চাইছেন পার্টির নির্দেশ মেনে চলুক ইন্দিরা। ইন্দিরা চাইছেন পার্টির সর্বময়ী কর্ত্রী হতে। ফলে ইন্দিরা অতুল্যতে টক্কর চলছে। ১৯৬৭-তে রাজ্যে কংগ্রেস ভেঙে বাংলা কংগ্রেস হলো। সিপিএম প্রথম ক্ষমতার স্বাদ পেলো। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে বাংলা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে 'যুক্তফ্রন্ট' গদিতে বসলো। অজয় মুখার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী করে যুক্তফ্রন্টের বৃহত্তর দল সিপিএম নিলো উপমুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রীর পদ। এই দুটি পদই নিলেন জ্যোতি বসু। ইন্দিরার সহযোগিতায় ব্যবসায়ী শ্রেণি পশ্চিমবঙ্গ যুক্তফ্রন্টকে জেতাতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করলো। ১৯৬৭ থেকে জ্যোতি বসু অ্যান্ড কোম্পানি হয়ে উঠলেন ইন্দিরার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, স্রেফ সিন্ডিকেটপন্থী অতুল্য ঘোষের কংগ্রেসকে পশ্চিমবাংলায় হারাতে পারার জন্যে। ইন্দিরার ডাকে জ্যোতি বসু দিল্লি গেলেন। ইন্দিরা কমরেড বন্দিদের মুক্তি দেবেন বলে ঘোষণাও করলেন। কমরেড বন্দি নেতারা মুক্তি পেলেন। ১৯৬৭-তে কংগ্রেসের রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ইন্দিরা দাঁড় করালেন ভি ভি গিরিকে। সিপিএম সহযোগিতার হাত বাড়ালো। গিরি জিতলেন। ইতিমধ্যেই সিপিএম-এ ভাঙন প্রক্রিয়া শুরু হলো। চারু মজুমদার তাঁর প্রবন্ধ লিখলেন। সেসব ছড়ালো কমরেডদের মধ্যে।....

- যৌবনের বজ্রনির্ঘোষ

"জানুয়ারি ১৯৯৬। মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির একচ্ছত্র সাম্রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গে একচ্ছত্র অপসংস্কৃতির বন্যা শহর থেকে গ্রামে। অশ্লীল নাটকের রমরমা কলকাতার সিনেমা হলগুলিতে। দুপুরের শো-তে ব্লু-ফিল্ম। গ্রাম-গঞ্জে, আধা শহরে ছোট্ট ছোট্ট হলে ব্লু-ফিল্মের রমরমা। স্কুলছুট ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে ব্লু-ফিল্ম দেখছে। কলকাতার কিছু থিয়েটার হলে পর্নো সিনেমা রমরমিয়ে চলছে। এমন সময়ে কলকাতার বিভিন্ন সিনেমা হল ও থিয়েটার হলে যুবসমাজ পোস্টার, ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং হলগুলি শেষ পর্যন্ত অশ্লীল সিনেমা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। তখন নেতৃত্বে ছিল যুক্তিবাদী সমিতি, হিউম্যানিস্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং বিপ্লবী যুব অ্যাসোসিয়েশন। এরা সম্মিলিতভাবে বিক্ষোভ দেখায়। জায়গায় জায়গায় তাদেরই বিক্ষোভে প্রদর্শনগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হয় মালিকরা। খবরের কাগজে যখন এই সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে তখন ছোট শহরগুলোতে ব্লু-ফিল্ম বন্ধ করতে বোমাও ফাটাচ্ছে। কিছু কিছু লোকজন আহত হচ্ছে, কিন্তু হলের শো-গুলোও বন্ধ হচ্ছে। কলকাতা ও মফস্সল জুড়ে ব্লু-ফিল্মের রমরমা। সেখানের পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলছে, স্ক্রিনে আগুন, হলে বোমা। যে জনপ্রিয় সরকার এই পর্ণো সিনেমা ও থিয়েটারকে জনপ্রিয় করে তুলছিল তারা পিছু হটলো। অপসংস্কৃতির গতিরোধ করা গেলো। তখন আমাদের উপর বেজায় চটলেন সিপিএম-এর এক জাঁহাবাজ মন্ত্রী, বেশ কিছু 'তান্ত্রিক' ও 'জ্যোতিষী' নামের প্রতারকরা এবং তাদের সঙ্গী হলো কয়েকটা প্রিন্ট মিডিয়া। একটা প্রিন্ট মিডিয়ার ঘরেই ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করা হলো। এদের সঙ্গে যোগ দিলো ক্ষমতালোভী ও অর্থলোভী যুক্তিবাদী সমিতির ও হিউম্যানিস্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন নেতা ও নেত্রী। সমিতি দু'টোকে ভাঙার প্রবল চেষ্টায় নামলো ওরা। তার সঙ্গে যুক্ত হলো ফান্ডেড এনজিও-রাও। সে আর এক দীর্ঘ যুদ্ধের ইতিহাস। বিস্তৃত জানতে পড়তে পারেন 'প্রসঙ্গ প্রবীর ঘোষ'। শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রকে ছিন্নভিন্ন করে আমরা জয় ফিরিয়ে আনলাম।"

- [ঐ]

"দমদম পার্কের সিপিএম-এর মস্তানদের এই ধরনের চরিত্রের কোনও সুপার হিরো ছিল না। মস্তানরা লেখাপড়া না করে, বেকার জীবনে গুন্ডামি করেই বেড়াতো। একদিন আমাদের বাড়ির প্রায় পাশে দোতলা বাড়িটার কাজ প্রায় শেষ। হঠাৎ বিশাল বিস্ফোরণ। পাড়ার কয়েকটি সিপিএম মস্তান বোমা বাঁধছিল সেখানে। তিনটি ছেলে ঘটনাস্থলেই মারা গেলো। আহত হলো শম্ভু। দেখলাম সিপিএম নেতৃত্বের করিশমা। বেদি তৈরি করে ওদেরকে শহিদ বানিয়ে দিলো। জানালো ওই তিনজন নকশালদের আক্রমণে নিহত হয়েছে। গল্পের গরু গাছে উঠলো।"

- [ঐ]

১৯৬৬-তে স্টেট ব্যাঙ্কে ঢুকলাম। স্ট্র্যান্ড রোড-এর কলকাতা মেইন ব্রাঞ্চ। সাড়ে তিন হাজার কর্মী। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কর্মী সংখ্যার ব্যাঙ্ক শাখা। বাঙ্গুরের L3C স্টেট বাস যেতো এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। ওই বাসে আমি নামতাম গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের কাছে। ওখান থেকে হেঁটে গভর্নর হাউসকে বাঁদিকে রেখে সোজা গেলে স্ট্র্যান্ড রোড। স্ট্র্যান্ড রোডে উঠে বাঁহাতে নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং-এর পাশেই আমাদের অফিস। তখন অফিসের কাছে ফুটপাথে প্রচুর খাবারের দোকান। রুটি, পাউরুটি, ডিম সেদ্ধ, ওমলেট, ঘুগনি, ভেজিটেবল স্টু, কাটা ফল নুন দিয়ে, মশলা মুড়ি, বেলের মোরব্বা ইত্যাদি পাওয়া যেতো। একটা দুধের দোকান ছিল। অনেকেই দাঁড়িয়ে ভাঁড়ে করে একপো বা আধপো দুধ খেতো। আমাদের অফিসের পিছনে হাইকোর্ট। বাঁপাশে রাস্তা পেরোলে ক্যালকাটা সুইমিং ক্লাব। সামনে স্ট্র্যান্ড রোড আর অফিসের উল্টোদিকেই হুগলি নদী। আমাদের ব্যাচে নিয়োগ হয়েছিল প্রায় ১২৫ জন। এর মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ হলেন মহিলা। শুনেছিলাম অফিস বিল্ডিংটা ছিল সিরাজ-উদ-দৌলার নাচ ঘর। দোতলার সিলিং ছিল তিরিশ ফুট উঁচু। প্রচুর রঙিন কাচ দিয়ে ঘেরা জানালা। লম্বা লম্বা টেবিল। টেবিলের দু'পাশে কর্মচারীরা বসতেন। কিছু সিঙ্গল টেবিলও ছিল। সব আসবাবই বার্মাটিক-এর। এখানে ঢুকে অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, বয়স্ক কর্মীদের অভাবনীয় সব অপকর্ম। পেপারওয়েট হতো বালি ঢোকানো মোটা কাপড়ের ছোট কোলবালিশ আকারের। ওগুলো পেপারওয়েট ছাড়াও এর ওর গায়ে ছুড়ে মারার কাজে ব্যবহৃত হতো। বয়স্ক, প্রবীণ কর্মীদের গায়ে তরুণ কর্মীরাও লুকিয়ে বালির ওই বস্তা ছুড়ে আঘাত করে বিকৃত আনন্দ পেতো। এদের আবার পালের গোদা ছিলেন সৌমেন দেব। এই বিকৃত র‍্যাগিং-এ ইন্ধন জোগাতেন এবং অংশ নিতেন প্রবীণ বেশ কিছু মানুষ। এমনকী ধুতি পরে যাঁরা অফিসে আসতেন, তাঁদের ধুতি খুলে নেবার মতো এবং তাতে আনন্দ পাওয়ার মতো রুচির মানুষও ছিল। ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের সামনেই এমন ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটতো। আমাদের ডিপার্টমেন্টেই বসতেন ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি নির্মল গোস্বামী। রোগা, লম্বা, ধূর্ত মানুষ। মার্কসবাদী কমরেড। বসতেন সৌমেন দেবের পাশে। আর একটা ব্যাপার তখন ঘটতো। প্রায় প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে ম্যাগাজিন ক্লাব ছিল। তাতে প্রচুর পর্নো বই কেনা হতো। মহিলা কর্মীরাও এ বিষয়ে পিছিয়ে ছিলেন না। মহিলাদেরও কিছু ম্যাগাজিন ক্লাব ছিল। তাতেও রাখা হতো প্রচুর পর্নো বই। নির্মলদাকে পর্ণো লাইব্রেরির ঘটনা বললাম। তিনি বললেন, তুই স্টাফদের বোঝা। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে কিছুই করা যায় না। এমন কিছু করতে গেলে পারবি না। তখন সিপিআইএম-এর একচ্ছত্র রাজ। ইউনিয়ন ব'কলমে সিপিআইএম-এর। ইউনিয়নে মাসলম্যানের অভাব নেই। তাদের লিডার রবিন চক্রবর্তী। একটা পা ছোট। রবিন এসেও আমাকে জ্ঞান দিয়ে গেলো। আমি সরাসরি ব্রাঞ্চের সর্বোচ্চ পদাধিকারীকে জানালাম, পর্নো বই নিয়ে লাইব্রেরি চালাবার ঘটনা। বললাম, কালকের মধ্যে সব নোংরা বই ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। নতুবা পুলিশ কমিশনারকে জানাতে বাধ্য হবো। লালবাজার থেকে পুলিশ এসে এক একটা টেবিলের ড্রয়ার থেকে পর্নো বই বের করবে, স্টাফদের অ্যারেস্ট করবে। মিডিয়াগুলো আসবে। ছবিসমেত খবরটা বের হবে। এতে কি আপনার সম্মান, ব্রাঞ্চের সম্মান বাড়বে?
না। আর বেশি কিছু বলতে হয়নি। আমার কথা যে ফাঁকা আওয়াজ নয়, এটা নির্মলদা খুব ভালোই বুঝেছিলেন। কারণ যারা কলেজ স্ট্রিট শাসন করতো, সেই নকশালদের অনেকেই আমার অফিসের সিটের আশপাশে এসে বসতো। নিচু গলায় দীর্ঘক্ষণ কথাও বলতো। আমি তখনই পরিবর্তন ও যুগান্তরের নিয়মিত লেখক। আমার থেকে সিনিয়াররাও প্রবীরদা বলে সম্বোধন করতেন। সব মিলিয়ে আমি যে কিছুটা রহস্যজনক চরিত্র, এটা সহকর্মীরা বুঝতেন। অতএব পরের দিনই বড় বড় বস্তায় পুরে হুগলি নদীতে বিসর্জন দেওয়া হলো পর্নো-রাশি। এরপর র‍্যাগিংও বন্ধ করেছিলাম। অতো না বুঝিয়ে বলেছিলাম, এরপর যারা সিনিয়ারদের র‍্যাগিং করবে, তাদের ধরে কেউ রাস্তায় ন্যাংটো করে খবরের কাগজ পরিয়ে ছেড়ে দিলে, আমি জানি না। স্কুল জীবনে দামড়া পেটানো দিয়ে শুরু করতে পেরেছিলাম বলেই অফিসের ডবল দামড়াদের শায়েস্তা করতে পেরেছিলাম সেদিন। তারপর র‍্যাগিং বন্ধ এবং শুধুই এগিয়ে যাওয়ার অধ্যায়।

- [ঐ]

........................................................................................

যেসব বাম সাধারণ মানুষকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন না করে (ধর্মীয় গুরুদের দ্বারা তৈরী শোষণগুলোর উপায় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিও এর অন্তর্গত) চ্যারিটিবাজি তথা এনজিওগিরিতে ব্যস্ত থাকেন কিংবা যেসব তথাকথিত 'মুক্তমনা' ধরে নেন মানুষ মায়ের পেট থেকে রিচার্ড ডকিন্স হয়ে বের হবে এবং রাষ্ট্র কর্তৃক সমান শিক্ষা ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার ফ্যাক্টর মাথায় না রেখেই যত্রতত্র 'মৌলবাদী' শব্দটা ব্যবহার করেন তাদের জন্য জি۔ এ۔ কোহেন এর মার্ক্স এর দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কিত 'কার্ল মার্ক্স'স থিওরি অব হিস্ট্রি : এ ডিফেন্স' বইটি থেকে উদ্ধৃতি-

"....মার্ক্সের মতে বায়ুর গঠন এবং জ্যোতিষ্কপুঞ্জের চলাচলকে ইন্দ্রিয় দ্বারা উপলব্ধি করতে যাওয়াটা ভুল। যে লোক শ্বাস নেওয়ার সময় বাতাসের আলাদা আলাদা উপাদানগুলোকে চিহ্নিত করতে পারে, তার নাক নিশ্চয়ই সুস্থ মানুষের নাক যেভাবে কাজ করে তার চেয়ে আলাদা। আবার যে লোক সত্যিই মনে করে যে, সে বুঝতে পারে সূর্য স্থাণু এবং পৃথিবী ঘূর্ণমান, হয় তার চোখের অসুখ আছে অথবা সে স্নায়ু দৌর্বল্যের শিকার। বাতাসকে মৌল পদার্থ ও সূর্যকে গতিশীল বলে উপলব্ধি করাটা যতটা না অলীক কল্পনা, তার চেয়ে বেশি মরীচিকা দর্শন। যেখানে মরীচিকা দেখার কথা সেখানে কেউ যদি তা দেখতে না পায়, তাহলে বুঝতে হবে তার দৃষ্টিতে কোনও গন্ডগোল আছে - কিছু দূরে যে আলোর খেলা চলছে সেটা তার চোখে ধরা পড়ছে না।...."

Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

চাড্ডিগণ [এক]