পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]
বাম রাজনীতির সাথে জড়িত কুখ্যাত ফরহাদ মজহার এর বৌ এই মহিলা যিনি সাম্রাজ্যবাদীদের পুতুল সরকারের অন্যতম সদস্য। এটা সেই মজহার যিনি মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন মার্কিন আগ্রাসন প্রতিরোধ করার! এক গাদা এনজিও এর প্রতিষ্ঠাতা এই লোক সম্পদে নারীর সমঅধিকার বাস্তবায়নের চেষ্টাকে উস্কানীমূলক বলে প্রচার করেছিলেন! কাঠমোল্লাদের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের স্বপ্নও বুনেছিলেন ফরহাদ মজহার! তিনি মনে করতেন যে সকল ব্যক্তি বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী তারা বুশ-ব্রাউনের এজেন্ট! তার ভাষায়-
"এদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ বলা আর গলায় সাপকে ফুলের মালা বলা একই কথা।"
তিনি ধর্মনিরপেক্ষতাকে কিছুটা ঘুরিয়ে ফ্যাসিবাদ বলে ভাবতেন এবং মনে করতেন, বাংলাদেশে ইসলামের যুদ্ধটা এই ফ্যাসিবাদ আর পরাশক্তির সমর্থকদের সাথেই ঘটবে!
আর এই ধরনের শিবিরের অতি প্রিয়পাত্র বামের বৌ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হবে না তো কে হবে? শিবিরের কর্মীরা নিয়মিত তার লেখা এখনো পড়ে।
পশ্চিমাদের পুতুল সরকারের এই সদস্য কুখ্যাত রাজাকার কাদের মোল্লার আইনজীবী ছিলেন এবং সেই সাথে ফখরুদ্দিন এর অবৈধ সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা ছিলেন।
পশ্চিমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের এই সদস্য কেন মুক্তিযুদ্ধ করেননি সেটা জানতে হলে আগে তার ব্যাকগ্রাউন্ড জানতে হবে। তিনি করাচি থেকে ১৯৬৩ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট, পাকিস্তানের ইসলামিয়া সায়েন্স কলেজ (করাচি) থেকে ১৯৬৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে পিএমএ, কাকুল থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ (USACGSC) থেকে (১৯৮১-১৯৮২) স্নাতক হন। তিনি কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৌশলগত অধ্যয়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ন্যাশনাল ডিফারেন্স কলেজ, পাকিস্তান থেকে এনডিসি প্রতীক পেয়েছিলেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্রোহ বিরোধী অভিযানে দু'টি আর্টিলারি ব্রিগেড এবং একটি পদাতিক ব্রিগেডের নেতৃত্ব দেন।
আসিফ নজরুল ইসলাম ২০১৩-১৪ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জামাত-শিবিরের পক্ষে ছিল, গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করেছিল, হেফাজতের পক্ষে ছিল। আসিফ নজরুলের প্রকৃত নাম মো. নজরুল ইসলাম। ঢাকা ইউনিভার্সিটির ল ডিপার্টমেন্ট থেকে পাশ করে কিছুদিন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ করেন, এরপর যোগ দেন 'বিচিত্রা'য়। '৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় নজরুল ছাত্রদলে ছিলেন। বিশেষ করে ছাত্রনেতা অভি'র সাথে ছিল তার ঘনিষ্ঠতা। অভি'র চরিত্রকে নির্ভর করে নজরুল তার প্রথম উপন্যাস 'ক্যাম্পাসের যুবক' লিখেন। বিচিত্রায় শাহরিয়ার কবিরের সাথে তরুণ নজরুলকে কলিগ হিসেবে দেখা। নজরুল সাংবাদিক হওয়ার উচ্চাশায় শাহরিয়ার কবিরের ঘনিষ্ঠ হওয়ার নিমিত্তে যোগ দেয় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিতে। বয়সে তরুণ, তার উপর আইনজীবি এ বিবেচনায় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম নজরুলকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করেন। তাকে সারাদেশ থেকে আসা মাঠ পর্যায়ের রাজাকারদের যে তথ্য তা সমন্বয় করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কাজ দেয়া হয়। ১৯৯২ সালে রমনায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি'র যে প্রতীকী আদালত বসে ২৬শে মার্চ নজরুল সেখানে গোলাম আযমের আইনজীবীর ভূমিকা পালন করেন। জাহানারা ইমামসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে তৎকালীন বিএনপি সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করে। সেখানে আসিফ নজরুলের নাম নজরুল ইসলাম হিসেবে নথিবদ্ধ আছে। ১৯৯৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি'র দ্বিতীয় পর্যায়ের নথি পেশ করার কথা ছিল যার মূল কাগজপত্র ছিল নজরুলের কাছে। কিন্তু নজরুলের সাথে ক্যান্সার আক্রান্ত শহীদ জননী বহুবার যোগাযোগ করলেও সে ধরা দেয় না দ্বিতীয় পর্যায়ের দলিল দস্তাবেজের মাঠ পর্যায়ের তথ্যসহ। নজরুল ক্যান্সার আক্রান্ত শহীদ জননীকে একটি যেনতেন রিপোর্ট দিয়ে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ড চলে যায় ১৯৯৪ সালে। নজরুল ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি'র সবাইকে ডিঙিয়ে এসময় ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন আইন বিভাগের তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান এরশাদুল বারীর সাথে। বারীর সুপারিশে নজরুল কমনওয়েলথ বৃত্তি লাভ করেন। নজরুলের পুরো ভূমিকা, তার এই বেঈমানী লিপিবদ্ধ আছে শাহরিয়ার কবিরের লেখা 'জাহানারা ইমামের শেষ দিনগুলি' বইয়ে। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, নজরুলের এহেন ব্যবহারে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন শাহরিয়ার কবিরের হাত ধরে।
তার বাপ ছিল পাকিস্তান আমলে মুসলিম লীগের সংসদ সদস্য। পরে জিয়ার মতো ক্রিমিনালের সরকারের প্রতিমন্ত্রী। তার মেয়ে পশ্চিমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্য তো হবেই!
https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A7%88%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%A6_%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%B2_%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A8
তার ভাই হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা লিয়াকত হাসান।
Comments