চাড্ডিগণ

 


সমাজবিজ্ঞানী ই. বার্ক রচফোর্ড অসংখ্য রেফারেন্স সহ গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন ইস্কন আমেরিকা ও ভারতে তাদের দ্বারা পরিচালিত বোর্ডিং স্কুলগুলোতে খ্রিস্টান পাদ্রীদের মতোই শিশুদের উপর যৌন নিপীড়ন চালায় ও মানসিকভাবে অত্যাচার করে। সেই সাথে শারীরিক মারধর তো আছেই।

কীর্তনানন্দ স্বামী নামক ইস্কন এর এক ধর্মীয় গুরুকে আমেরিকান আদালত ২০ বছরের সাজা দিয়েছিল ধান্দাবাজি আর ইমেইলে প্রতারণার অভিযোগে।

১৯৭৬ সালে এই সংগঠনের প্রেসিডেন্টকে নিউ ইয়র্ক এর একটি আদালতে ডাকা হয় জোর করে কিছু শিশুকে আটকে রাখার জন্য। তখন বলা হয়েছিল যে, সংগঠনটির চিন্তাধারা মানুষকে হাজার বছর পিছিয়ে দেয়।

ক্যালিফোর্নিয়ায় এরা আবার অভিযুক্ত হয় এক মেয়েকে অপহরণ করে তাকে মা-বাবাকে অস্বীকার করতে শিখিয়ে দেয়ার অভিযোগে। মেয়ের চিন্তায় বাবা শেষে মারা গিয়েছিল।

.......................................................................................

ভারতে চাড্ডি বাটপারদের অত্যন্ত লাভজনক একটা ব্যবসা আছে। পশ্চিমের পুঁজিবাদী দেশগুলোতে উদ্ভূত নানা সংকট থেকে মুক্তি পেতে দেশগুলোর অনেকেই প্রাচ্যের ধর্মগুলোর দিকে ঝুঁকছে। এরা ভারতে এসে ধ্যান এর জন্য নির্জন জায়গা খুঁজে। আর এই বাটপাররা এসব কাস্টমারদের পকেট মারতে হিমালয়ের বহু পয়েন্ট এ গুহা ভাড়া দেয়।

হলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী মিয়া ফ্যারো ভারতে গিয়েছিলেন আধ্যাত্মিক শান্তি লাভের উদ্দেশ্যে। তিনি গুহার ভেতর ধ্যানে থাকা অবস্থায় মহেশ যোগী নামের সাধুবাবা তাকে পেছন থেকে আক্রমণ করে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল। ঐসময় মন্দিরে অবস্থানরত বিটলস ব্যান্ডের জন ও জর্জকে তিনি অশ্রুভেজা চোখে ঘটনা খুলে বলেছিলেন।

আবার হরিদ্বার এর প্রতিটা হোটেল নিরামিষ রান্না সার্ভ করতে বাধ্য, নইলে চাড্ডি গুন্ডারা এসে পিটিয়ে মেরে ফেলবে এদের।
..........................................................................................

টাউট তান্ত্রিকরা যজ্ঞ করতে গিয়ে উচ্চবিত্ত জোতদার, জমিদার, রাজাদের বিশাল পরিমাণে স্বর্ণ, রৌপ্য আর তামার গয়না এবং মুদ্রা আগুনে উৎসর্গ করতে বলতো। এরা যজ্ঞের বেদিতে গোপন ফোকর রাখতো। বাড়ির মালিককে প্রতি এক ঘন্টা পর পর উঠে গিয়ে গ্রামের লোকদের খাওয়ানোর ব্যাপারটা তদারকি করতে বলতো। এই ফাঁকে এরা একটু একটু করে চিমটা জাতীয় কিছু দিয়ে গয়না এবং মুদ্রা সরাতো। গ্রামের লোকেদের খাওয়ানোর জন্য তিন দিনের সময়ের বিধান দিয়ে রাখতো এই বাটপাররা।

...................................................................................

শোষক আর্য ব্রাহ্মণরা মদ এর নাম দিয়েছিল 'কারণবারি'। তারা এই বলে নিয়ম বানিয়েছিল যে, 'মদ' শব্দটার জায়গায় 'কারণবারি' শব্দটা উচ্চারণ করলে নাকি মদের দোষ কাটা যায়। টাউট সাধুবাবারা এখনো এই নিয়ম অনুসরণ করে যাচ্ছে।

..............................................................................

ভারতের কুখ্যাত আইন POTA (Prevention of Terrorism Act) প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতি বছর গড়ে ২০০ কমিউনিস্টকে মেরে ফেলা হয় কেবল অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যেই। এই আইন প্রয়োগের মাধ্যমে গুজরাট দাঙ্গার পর ২৮৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল যেখানে ২৮৬ জনই মুসলিম সম্প্রদায়ের এবং একজন শিখ সম্প্রদায়ের! সাউথ এশিয়া হিউম্যান রাইটস ডকুমেন্টেশন সেন্টার এর রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে দেশটির অবস্থান বিশ্বে প্রথম।

সূত্র: 'এন অর্ডিনারি পার্সন'স গাইড টু এম্পায়ার', অরুন্ধতী রায়

..............................................................................

পেছনের ইতিহাস

মহান সিন্ধু সভ্যতার সিলমোহর এটা। এই চিহ্নটি সাম্রাজ্যবাদী আর্যরা অনার্য সিন্দু সভ্যতা থেকে এডাপ্ট করলেও উগ্র চাড্ডিরা এটাকে বহু যুগ ধরে হিন্দু ধর্মের চিহ্ন হিসেবে প্রচার এবং ব্যবহার করে আসছে।



"...গত জানুয়ারিতে কালিগঙ্গায় আদিবাসীরা উচ্ছেদের প্রতিবাদ করলে গুলি করে তাদের হত্যা করা হলো, নিহত পুরুষদের হাত ও নারীদের স্তন কেটে ফেলে ক্ষতবিক্ষত লাশ ঝুলিয়ে রাখা হলো বাকি বিক্ষোভকারীদের চোখের সামনে।...তুমি সরকার গরীবেরটা কেড়ে নিয়ে কম পয়সায় বিক্রি করে দিচ্ছ ধনীদের কাছে আর এটার নাম দিয়েছো মুক্তবাজার অর্থনীতি!۔۔۔"

- 'দ্য শেপ অব দ্য বিস্ট', অরুন্ধতী রায়

সাক্ষী মহারাজ নামে বিজেপির এক সংসদ সদস্য ফতোয়া দিয়েছিল রাহুল গান্ধী গরুর মাংস খেয়ে কেদারনাথে গিয়েছিল দেখে নেপালে ভূমিকম্প হয়েছে!

অন্যদিকে পাকিস্তানের জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের সভাপতি, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী ফজলুর রহমান বলেছে মেয়েরা জিন্স প্যান্ট পড়ে দেখেই ভূমিকম্প আর মুদ্রাস্ফীতি হয়! 

বাংলাদেশে জুমা নামাজের খুৎবাগুলোতেও মেয়েদের পিছেই লাগা হয় প্রাকৃতিক আর মানবসৃষ্ট সব ঘটনার জন্য। 

ব্রিটিশরা সম্পদ নিয়ে গেছে, আর রেখে গেছে গরু-ছাগল!

...........................................................................................

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক এক ছবির সাথে মিলছে কি? এটাই নষ্ট উপমহাদেশ।

ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো এর বিবর্তনবাদ বিশেষজ্ঞ লেইফ ভান ভালেন মস্তিকের আকৃতি এবং বুদ্ধিমত্তার মধ্যে সম্পর্ক দেখান তাঁর গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষণ থেকে প্রাপ্ত উপাত্তগুলোর মাধ্যমে। এশিয়ার দেশগুলোতে, বিশেষ করে উপমহাদেশের দেশগুলোর পুরুষদের প্রায় সবাই বিশ্বাস করে তাদের বড়ো মস্তিষ্ক দেখেই নাকি নারীদের চেয়ে তাদের বুদ্ধিমত্তার মাত্রা বেশি! অথচ পশ্চিমা বিশ্বের নারীদের মস্তিষ্ক তাদের চেয়ে বড়ো আর এই বিজ্ঞানীও দেখিয়েছেন গর্ভাবস্থায় ও শৈশবের অপুষ্টি ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক আর হীন বুদ্ধিবৃত্তির কারণ।

"...শ্রেণি বিভাগ ছাড়াও অসাম্যের যে অন্য উৎস আছে তা মানা এবং তাদের তাৎপর্য বিচার করা অত্যন্ত প্রয়োজন। অন্যদিকে এই সঙ্গে এটাও মানতে হবে যে, আমাদের জীবনের এমন কোনও দিক নেই যা আমাদের শ্রেণিগত অবস্থানের দ্বারা খানিকটা প্রভাবিত হয় না। বৈষম্য সৃষ্টি ও তা বজায় রাখার কারণ যে শুধু শ্রেণি বিভাগই নয় এটি যেমন জানা দরকার, তার সঙ্গে এটাও জানা প্রয়োজন যে, অসাম্যের অন্যান্য উৎসগুলির কোনওটিই শ্রেণি নিরপেক্ষ নয়। লিঙ্গবিভাগ বিষয়ে প্রথমে আলোচনা করা যাক। লিঙ্গ বৈষম্যের ব্যাপারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ, যার একটি প্রকাশ দেখা যায় নারীদের অস্বাভাবিক রুগ্নতা ও মৃত্যুহারে। যেসব দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পুষ্টির ক্ষেত্রে নারীরা এ ধরনের বৈষম্যমূলক ব্যবস্থায় ভোগেন না, সেগুলির সঙ্গে তুলনা করলে দক্ষিণ এশিয়ায় সাধারণ নারীদের জীবনযাত্রার দুরবস্থা সহজেই পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। কিন্তু অন্যদিকে এটাও দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার উচ্চ শ্রেণির নারীরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় নানা বিষয়ে এগিয়ে আছেন এবং বেশি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে গেছেন। যেমন ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা এই চার দেশেই নারীরা প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন বা এখনও আছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি বা জাপানে আমি অদূর ভবিষ্যতে এমন কোনও সম্ভাবনা দেখছি না। নিম্ন শ্রেণির নারীরা যে বাধা অতিক্রম করতে পারেন না, উচ্চ শ্রেণিতে জন্মানো নারীরা সেই বাধা সহজেই টপকাতে পারেন। সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টিতে লিঙ্গ বিভেদ নিশ্চয়ই একটি উপাদান, কিন্তু তা শ্রেণি নিরপেক্ষভাবে কাজ করে না। বস্তুত নিম্ন শ্রেণির নারীদের ক্ষেত্রে শ্রেণি বঞ্চনা ও লিঙ্গ বঞ্চনা এক বিন্দুতে মিলিত হয়ে তাদের জীবন দুঃসহ করে তুলতে পারে। একদিকে নিম্ন শ্রেণির অভিশাপ এবং তারই সঙ্গে মেয়ে হয়ে জন্মানোর বঞ্চনা এই দুই দিক একত্রিত হওয়ার ফলে নিম্ন শ্রেণির মেয়েরা নিদারুণ দৈন্য ও রিক্ততার মধ্যে পড়েন। জাতিবর্ণের ক্ষেত্রেও সমস্যাটি একইরকম। নিচু জাতিতে জন্মানোটা নিঃসন্দেহে বঞ্চনার একটি কারণ। কিন্তু নিচু জাতির লোকেরা যদি দরিদ্র হন, তাহলে জাতিগত বঞ্চনা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। দলিত বা নিম্ন বর্ণের লোকেরা বা আদিবাসীরা যে বঞ্চনা ও বৈষম্যে ভোগেন, তা অনেক বেশিরকম হয়ে দাঁড়ায় যখন তা দারিদ্রের সঙ্গে যুক্ত হয়। এমনকি জাতি দ্বন্দ্বের ফলে যেসব হিংসাত্বক ঘটনা দেখা যায়, সেগুলিতে নিছক জাতিগত দ্বন্দ্ব ছাড়াও প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায় শ্রেণিগত অর্থনৈতিক লড়াই। উদাহরণস্বরূপ, বিহারের রণবীর সেনা শক্তি পায় ভূমিহার ও রাজপুতদের সমর্থন এবং তাদের নিষ্ঠুর আক্রমণের শিকার হন প্রধানত দলিতরা। কিন্তু আক্রান্ত দলিতদের পরিস্থিতি বুঝতে গেলে তাদের দারিদ্র্য ও ভূমিহীন অবস্থাকে বিচার করতেই হবে এবং ব্যাপকতর সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে সংঘর্ষগুলিকে দেখতে হবে। এভাবে দেখার অর্থ এই নয় যে, জাতির গুরুত্ব নেই (বরং ঠিক তার বিপরীত)। এর অর্থ এই যে, জাতিগত হিংসাকে এমন এক বৃহত্তর পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে হবে, শ্রেণিও যার অন্তর্ভুক্ত। এই দুই দৈন্যের সংযুক্তিতে দেখতে পাওয়া যায় তাদের পরিপূরকতা এবং আন্তঃসম্পর্ক। বঞ্চনার বিভিন্ন কারণগুলি পরস্পর নিরপেক্ষভাবে কাজ করে না। শ্রেণির সম্পর্ক দারিদ্রের সঙ্গে, মালিকানা ও মালিকানাহীনতার সঙ্গে এবং কাজ ও পেশার সঙ্গে। তাই শ্রেণির ব্যাপ্তি খুবই প্রসারিত। সে কারণে আরও নানা সংঘর্ষের মধ্যে শ্রেণির বহিঃপ্রকাশ ঘটে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর একটি দিক দিয়ে এই সম্পর্কটি দেখা যায়। নিম্ন বর্ণের মানুষদের জন্য যেসব সদর্থক সুযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে নিম্ন বর্ণের সেই সব মানুষই বেশি উপকৃত হয়েছেন যারা ততটা দারিদ্র্য পীড়িত নন। যারা একই সঙ্গে নিম্ন বর্ণের ও দরিদ্র, তারা তুলনামূলকভাবে কম উপকৃত হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, 'সংরক্ষিত' পদগুলির সুযোগ পিছিয়ে পড়া জাতিগুলির অপেক্ষাকৃত সচ্ছল অংশেরাই প্রধানত পেয়েছেন। জাতিগত পশ্চাৎপদতা দূর করার জন্য যে কোনও বিশেষ সুবিধা ঠিকভাবে কার্যকর হতে গেলে নিচু জাতির মানুষদের শ্রেণিকে হিসাবের মধ্যে ধরতেই হবে। লিঙ্গ পরিচয়ের অভিঘাতের মতো জাতি পরিচয়ের অভিঘাতও তাই শ্রেণি পরিচয়ের দ্বারা প্রভাবিত ও পরিবর্তিত হয়। আর একটি উদাহরণ। সাম্প্রদায়িক হিংসা যে বিপর্যয় সৃষ্টি করে তার কথাই ধরা যাক। এটা অবশ্য ঠিক যে, সংখ্যালঘুদের যে অংশ ধনী, তাদেরও ভয়ের মধ্যে থাকার কারণ অনেক থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আক্রান্ত সম্প্রদায়গুলির মধ্যে যারা দরিদ্র, তারাই সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। স্বাধীনতা ও দেশভাগের সময় যে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা হয়েছিল, তাতে আক্রান্ত ও নিহতদের শ্রেণি পরিচয় বিশ্লেষণ করলেই এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আক্রান্ত সম্প্রদায়ের সেই লোকগুলিকেই মেরে ফেলা সহজ যাদের কোনও রকম সুরক্ষা ছাড়াই দৈনিক রোজগারের কাজের জন্য বেরোতে হয়, যারা বস্তিতে বাস করেন এবং সে কারণেই যাদের আক্রমণ করা অতি সহজ। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহতদের বেশিরভাগ অংশ এরাই, এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। নিজের চোখে হত্যাকাণ্ড দেখার অভিজ্ঞতা আমার প্রথম হয় এগারো বছর বয়সে। ঢাকাতে আমাদের বাড়ির ঠিক বাইরে কাদের মিঞা নামে এক দিনমজুরকে হিন্দু গুন্ডারা ছুরি মারে। আমার বাবা তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যান, সেখানেই তিনি মারা গেলেন। মৃত্যুর আগে তিনি আমাকে বলেন, শহরের হিন্দু এলাকায় আসার যে ঝুঁকি রয়েছে তা তিনি জানতেন। তা সত্ত্বেও তাকে আসতে হয়েছিল কিছু রোজগারের আশায় - তাদের বাড়িতে কোনও খাবার ছিল না। কাদের মিঞা মারা গেলেন তার মুসলিম পরিচয়ের জন্য, কিন্তু এটাও সত্যি যে তিনি মারা গেলেন অর্থনৈতিক দারিদ্রের জন্যই। কাজ এবং মজুরির খোঁজে বেপরোয়া হয়ে তাকে বেরোতে হয়েছিল। এই ঘটনা ঘটেছিল ১৯৪৪ সালে। আজকেও যেসব দাঙ্গা হয় তাদের চরিত্র এর থেকে বিশেষ আলাদা নয়। ১৯৪০ এর দশকের হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায় হিন্দু দুর্বৃত্তরা গরিব মুসলমানদের হত্যা করেছিল, মুসলিম দুর্বৃত্তরাও অনুরূপভাবে গরিব হিন্দুদের হত্যা করেছিল। এক্ষেত্রে আক্রান্তদের ধর্মীয় পরিচয় সম্পূর্ণ বিপরীত হলেও তাদের শ্রেণি পরিচয় একই। সাম্প্রদায়িক হিংসায় নিহতদের শ্রেণিগত দিকটির উপর প্রায়শই খুব কম জোর দেওয়া হয়, এমনকী সংবাদপত্রেও এ দিকটার উপর জোর পড়ে না। তাদের শ্রেণিগত পরিচয়টা চাপা দিয়ে ধর্মীয় পরিচয়টাকেই বড় করে দেখানো হয়! সাম্প্রতিককালে ভারতে যেসব সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেগুলির ক্ষেত্রেও এই কথা খাটে। উদাহরণস্বরূপ শ্রীমতী ইন্দিরা গাঁধীর হত্যার পর দিল্লিতে সংগঠিত শিখ বিরোধী দাঙ্গা বা বাবরি মসজিদের ঘটনার পর মুসলমান বিরোধী দাঙ্গার কথা বলা যেতে পারে। সাম্প্রদায়িক ও জনগোষ্ঠীগত দাঙ্গার সময় শ্রেণি সর্বদাই নিজেকে বড়ভাবে প্রকাশিত করে। সুতরাং আমাদের প্রয়োজন শ্রেণির ভূমিকা ও ব্যাপ্তির একটা দ্বৈত উপলব্ধি।..."

- 'দি আর্গুমেন্টেটিভ ইন্ডিয়ান', অমর্ত্য সেন


'মস্ক মি টু' এর চাড্ডি ভার্সন। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া কুম্ভ মেলার সময় বিভিন্ন ফেসবুক গ্রূপের পোস্টে প্রতিবেশী দেশটির শুয়োররা এভাবে ক্যাপশন দিয়েছে "কুম্ভ মেলার উলঙ্গ মেয়েদের ভিডিও লাগলে ইনবক্সে আসুন"। উল্লেখ্য, 'মস্ক মি টু' আন্দোলনে যেসকল অজস্র মুসলিম মেয়ে হজ করতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে মাত্র কয়েক হাজার সংকোচ কাটিয়ে মুখ খুলেছেন।

..................................................................................


এটাকে স্টেরিওটাইপ ভাঙা বলে না, এটাকে বলে চুলা থেকে কড়াইতে আসা। খনাকে জিহ্বা কেটে দেয়া হয়েছিল পুরুষরা তার জ্ঞানের সামনে টিকতে না পারায়। মনু মেয়েদের শিক্ষা অর্জনের ব্যাপারে বলেছে-

“যে ব্যক্তিকে অভিবাদন করা হবে সে ব্যক্তি যদি সংস্কৃত না জানেন তাহলে অভিবাদনের পর অভিবাদনীয় ব্যক্তিকে ‘আমি অভিবাদন করছি’-এই কথা বলবেন। স্ত্রীলোকদেরকে এইভাবেই অভিবাদন করবেন।” ২/১২৩

“যেহেতু শাস্ত্রোক্ত বিধি অনুযায়ী মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমেই স্ত্রীজাতির জাতকর্ম সংস্কার পালিত হয় না তাই তাদের অন্তকরণ নির্মল হয় না। স্মৃতি শাস্ত্র ও বেদ প্রভৃতি ধর্ম শাস্ত্রের ওপর স্ত্রীজাতির কোনো অধিকার নেই। তাই তারা ধর্মজ্ঞ হতে পারে না। এমনকি কোনো মন্ত্রের ওপরেও স্ত্রীজাতির অধিকার না থাকায় তারা কোনো পাপ করলে মন্ত্রের সাহায্যে তা ক্ষালন করতে পারে না। তাই শাস্ত্রমতে স্ত্রিজাতি মিথ্যা অর্থাৎ অপদার্থ।” ৯/১৮

“স্ত্রীলোকের স্বামী ভিন্ন পৃথক যজ্ঞ নেই। স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোনো ব্রত এবং উপবাস নেই। কেবলমাত্র স্বামীর সেবা করেই স্ত্রীলোক স্বর্গে যেতে পারেন।” ৫/১৫৫

“বিবাহ সংস্কারই স্ত্রীলোকের বৈদিক উপনয়ন সংস্কার। সেখানে স্বামীর সেবাই হল গুরুকূলে বাস এবং স্বামীর গৃহ কর্মই হল প্রাতঃসন্ধ্যাকালীন হোমরূপ অগ্নি পরিচর্যা।”২/৬৭

এগুলো কেবল মেয়েদের শিক্ষা সম্পর্কিত জঘন্য উক্তি। এর বাইরেও অন্যান্য ধর্মগুলোর মতোই হিন্দু ধর্মে আরও অসংখ্য আপত্তিকর শ্লোক আছে মেয়েদের ব্যাপারে।

চাড্ডিবাদের দিকে অগ্রযাত্রা

শুয়োর দেশে দেশে

তাহারা
....................................................................................

বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের অবস্থাপন্ন মুসলিমদের ঘেটুপুত্র রাখার বিকৃত প্রথার মতো ঐ পাড়ের রাজধানী কলকাতায় বনেদি হিন্দু পরিবারগুলোতে আরেকটি নোংরা প্রথা প্রচলিত ছিল। সেসব পরিবারগুলোতে বয়সে বড়ো কাজের মেয়ে রাখা হতো যে বাড়ির ছেলে সদস্যদের সাথেই বেড়ে উঠতো। তাকে ঐ ছেলেদের ছোটবেলা থেকে গোসল করিয়ে দিতে হতো। বয়সন্ধিকাল থেকেই ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবার মধ্যেই যৌনতার অনুভূতি অল্প অল্প করে তৈরি হয়। এই সময় থেকেই বাড়ির ছেলে সদস্যরা একটু একটু করে কাজের মেয়েটির শরীরের নানা অংশ স্পর্শ করতো এবং একসময় শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে যেতো। এই প্রথা তৈরি করা হয়েছিল বাড়ির ছেলেদের বারবনিতাদের কাছে যাওয়া আটকাতে, তাদের পিছে খরচ হওয়া অর্থ বাঁচাতে, ছোঁয়াচে যৌন রোগ থেকে রক্ষা পেতে।

ধর্মগুলো মূলত কেন আবিষ্কৃত হয়েছিল নৃতত্ত্ব আমাদের তা এসব ছাগলদের মাধ্যমে হাতে কলমে শিক্ষা দেয় এভাবেই






Comments

Popular posts from this blog

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-দুই]

শিবিরনামা [পর্ব-এক]