বাহরাইনে আরব বসন্ত দমনে ইজরায়েল ও পশ্চিমাদের ভূমিকা
https://youtu.be/G2t2fvyt834
(The other face of the revolution)
https://youtu.be/xaTKDMYOBOU
(Shouting in the dark)
https://youtu.be/3HbsXgqPdy4
(Al Khalifa Corruption and MI6 Involvement)
https://youtu.be/0JrkC9jxan0
(Playing with fire)
https://youtu.be/9fVF0qQU3kc
(An inconvenient uprising)
https://youtu.be/bMuhSszAUJg
(Breaking the silence)
https://youtu.be/IZdyiK-Z5Do
(Fighting for change)
https://youtu.be/YWzjLtJv97Q
(Crimes of Bahraini regime)
উপরের লিংকগুলোতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা চমৎকারভাবে পশ্চিমাদের ও তাদের ছোট ভাই ইজরায়েলের দ্বিচারিতা তুলে ধরেছেন।
বাহরাইন কখনোই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফ্রন্টলাইন স্টেট হিসেবে ছিল না। এ পর্যন্ত কোনো আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে বাহরাইন সরাসরি অংশগ্রহণ করেনি। বাহরাইন ও ইসরায়েল উভয়েই মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মিত্ররাষ্ট্র। বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর ৫ম নৌবহরের সদর দপ্তর অবস্থিত। বাহরাইন ও ইসরায়েলের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়নকে সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করা যাবে না। ১৯৯০ এর দশকে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের সময় থেকে এ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
https://www.haaretz.com/opinion/.premium-when-bahrain-once-welcomed-israelis-1.5380610১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইসরায়েলি পরিবেশমন্ত্রী ইয়োসি সারিদের নেতৃত্বে ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল আনুষ্ঠানিকভাবে বাহরাইন সফর করেছিল এবং তখন থেকে রাষ্ট্র দু'টির মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়। উইকিলিকসের তথ্য অনুসারে, ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাহরাইনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম মনরোর সঙ্গে এক বৈঠকে বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা জানিয়েছিলেন ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে।
https://www.haaretz.com/1.5148676
তিনি আরো জানান, তার নির্দেশে বাহরাইনের প্রচার মাধ্যমগুলোতে ইসরায়েলবিরোধী প্রচারণা বন্ধ করা হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাহরাইন ও ইসরায়েলের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিলে তিনি জানান, এরকম সম্পর্ক স্থাপনের সময় তখনও আসেনি। ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালিদ বিন আহমেদ আল খলিফা মার্কিন ইহুদি কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন এবং একই মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিপি লিভনির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এজন্য তাকে বাহরাইনের আইনসভায় তোপের মুখে পড়তে হয়। ২০১৬ সালে বাহরাইনে ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব 'হানুক্কাহ' উদযাপিত হয় এবং এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকালে হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে বয়কট করার ব্যাপারে আরব লীগের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানান এবং বাহরাইনের নাগরিকদের প্রয়োজনে ইসরায়েল সফরের অনুমতি প্রদান করেন। ২০১৮ সালের মে মাসে বাহরাইন আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ২০১৯ সালের জুন মাসে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি শান্তি প্রস্তাবের অর্থনৈতিক দিক নিয়ে বাহরাইনে কর্মসভা অনুষ্ঠিত হয় এবং বাহরাইন ৬টি ইসরায়েলি প্রচার মাধ্যমকে এতে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানায়। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালিদ বিন আহমেদ আল খলিফা এবং ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাক্ষাৎ করেন। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং ডিসেম্বর মাসে জেরুজালেমের প্রধান ধর্মীয় নেতা বাহরাইন সফর করেন। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে আমিরাত-ইসরায়েলি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর বাহরাইন প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েল ও আরব
https://pjmedia.com/news-and-politics/tyler-o-neil/2018/05/10/bahrain-diplomat-just-said-israel-has-a-right-to-defend-itself-against-iran-n57850
২০১১ সালে বাহরাইনের গণআন্দোলন দমন করার জন্য সৌদি আরব ও আরব আমিরাত বাহরাইনে সৈন্য প্রেরণ করেছিল এবং আল খলিফা রাজবংশের ক্ষমতায় টিকে থাকার ক্ষেত্রে সৌদি-আমিরাতের হস্তক্ষেপের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ২০১১ সালের গণআন্দোলনের ফলে বাহরাইনি সরকারের অভ্যন্তরীণ গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পায় এবং বাহরাইন বিশেষত সৌদি জোটের ওপর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ২০১৮ সালে সৌদি আরব বাহরাইনকে অর্থনৈতিক সঙ্কট এড়াতে প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রদান করেছিল। ইসরায়েল ও সৌদি আরব-আরব আমিরাত জোট উভয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব সীমিত রাখতে আগ্রহী। এরই অংশ হিসেবে আমিরাত ইতোমধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও অন্যান্য কৌশলগত কারণে সৌদি আরবের পক্ষে এখনই ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। সৌদি-ইসরায়েলি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। বাহরাইন সৌদি প্রভাবের ফলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
https://www.nytimes.com/2020/09/12/world/middleeast/bahrain-israel.html
বাহরাইন ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের তুলনামূলক বিচ্ছিন্নতাকে হ্রাস করা এবং ইরান ও অন্যান্য মার্কিনবিরোধী শক্তির বিপরীতে ইসরায়েলের অবস্থান শক্তিশালী করা যুক্তরাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্য। ক্ষমতা লাভের পর থেকে ট্রাম্প ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি দ্বন্দ্বে খোলাখুলিভাবে ইসরায়েলের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। তিনি ইসরায়েলে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থার (পিএলও) কার্যালয় বন্ধ করার নির্দেশ দেন এবং সিরিয়ার কাছ থেকে ইসরায়েল কর্তৃক দখলকৃত গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলি ভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেন। যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি লবি অত্যন্ত সংগঠিত ও প্রভাবশালী এবং মার্কিন ইভ্যাঞ্জেলিক্যাল খ্রিস্টানদের মধ্যে ইসরায়েল প্রীতি ব্যাপক। আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে ট্রাম্প অভ্যন্তরীণ সমর্থন বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। ওবামা প্রশাসন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাহরাইনের নিকট এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, কিন্তু ট্রাম্প সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন। কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো অভ্যন্তরীণ ভিন্নমতকে দমন করার জন্য ইসরায়েলি প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা সহায়তা লাভে আগ্রহী। বাহরাইনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।
https://m.jpost.com/arab-israeli-conflict/does-israel-prefer-peace-with-authoritarian-regimes-640470
https://www.haaretz.com/israel-news/.premium-with-bahrain-deal-israel-s-mantle-in-the-gulf-expands-eyeing-big-saudi-prize-1.9150121
এর ফলে একদিকে যেমন ভূরাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ এই অঞ্চলে ইসরায়েলি প্রভাব বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে ইরানের উত্তরে আজারবাইজানে অবস্থিত বিমানঘাঁটি এবং দক্ষিণে পারস্য উপসাগরে অবস্থিত নৌঘাঁটির মাধ্যমে ইসরায়েল ইরানকে কৌশলগতভাবে ঘেরাও করে ফেলতে সক্ষম হবে।
Comments