পাকিস্তান ও ইজরায়েল

 


উইকিলিকস এর গোপন নথি অনুযায়ী ২০০৮ সালের গোড়ার দিকে পাকিস্তানের আইএসআই গোপনে ইজরায়েলের মোসাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছিল। আইএসআই মোসাদকে ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসীদের দ্বারা সম্ভাব্য বড় ধরনের হামলার ইঙ্গিত দিয়ে তথ্য দিয়েছিল, যেখানে ইজরায়েলি নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা হতে পারে। ২৬ নভেম্বর, ২০০৮ সালে এই সন্ত্রাসী হামলা লস্কর-ই-তৈয়বা দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল যারা অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে 'নারিমান হাউস' নামে পরিচিত ইহুদি কেন্দ্রে আক্রমণ করেছিল। এই হামলার পর পাকিস্তানি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ সুজা পাশা ইজরায়েলের মোসাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছিলেন।

ঠান্ডা যুদ্ধের সময় ইজরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ব্লকের অংশ ছিল, যেখানে জোটনিরপেক্ষ পাকিস্তান মিত্র ছিল তাদের। আমেরিকার মিত্র পাকিস্তান এবং ইজরায়েল সোভিয়েতদের তীব্র বিরোধিতা করেছিল। ইজরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান মুজাহিদিনদের সমর্থনে পাকিস্তানে অস্ত্র এবং তহবিল সরবরাহ করেছিল। ইজরায়েল পূর্ববর্তী সংঘাতগুলোর সময় ফিলিস্তিন এবং অন্যান্য আরব গোষ্ঠী (যারা সকলেই সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা সমর্থিত ছিল) থেকে সোভিয়েত অস্ত্রশস্ত্র দখল করেছিল।

ইজরায়েলি-পাকিস্তানি গোয়েন্দা সহযোগিতা ১৯৮০'র দশকের গোড়ার দিকে শুরু হয়, যখন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ জিয়া-উল-হক আন্তঃবাহিনী গোয়েন্দা সংস্থা (আইএসআই) কে ইজরায়েলের মোসাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনে উভয় দেশের দূতাবাসে গোয়েন্দা অফিস স্থাপন করা হয়েছিল যেখানে আইএসআই, এমআই৬, সিআইএ এবং মোসাদ আফগানিস্তানে এক দশক ধরে সোভিয়েত বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছিল (অপারেশন সাইক্লোন)। এই অভিযানের সময় ইজরায়েল আফগান মুজাহিদিনদের সোভিয়েত নির্মিত অস্ত্র (ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে জব্দ করা) সরবরাহ করেছিল। পাকিস্তান এবং ইজরায়েল পুরো সংঘাতের সময় খুব ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করেছিল এই তালেবান জঙ্গিদের এবং  ফলস্বরূপ পাকিস্তান প্রচুর পরিমাণে ইজরায়েলি অস্ত্র এবং সাহায্য পেয়েছিল।

https://tribune.com.pk/story/19048/is-pakistan-like-israel-or-north-korea

https://web.archive.org/web/20030930073002/http://www.dailytimes.com.pk/default.asp?page=story_20-7-2003_pg1_4

ব্রিটেনের ব্যবসা, উদ্ভাবন এবং দক্ষতা বিভাগ ২০১৩ সালে প্রকাশ করে যে, ইজরায়েল পাকিস্তানে সামরিক প্রযুক্তি রপ্তানি করেছে। আরও জানা গেছে ইজরায়েল ব্রিটিশ সামরিক সরঞ্জাম যেমন ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থা এবং সামরিক গ্রেড বিমানের যন্ত্রাংশ কিনতে চেয়েছিল যা পাকিস্তানিদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।

https://web.archive.org/web/20181224210545/http://paktribune.com/news/ISPR-denies-Israel-arming-Pakistan-with-hi-tech-gear-says-report-baseless-260779.html

https://www.business-standard.com/article/pti-stories/israel-denies-exporting-military-equipment-to-pakistan-113061200483_1.html

ড্যান কিসেল নামক এক ইজরায়েলি পাকিস্তানের ক্রিকেট টিমের ফিজিওথেরাপিস্ট।

https://www.haaretz.com/2001-07-12/ty-article/dan-kiesel-our-man-in-pakistan/0000017f-e0c2-df7c-a5ff-e2fa92cc0000

দেশটির আইসাম উল হক কুরেশী উইমবল্ডন ওপেন এ ইজরায়েল এর টেনিস খেলোয়ারের সাথে খেলেছে।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Aisam-ul-Haq_Qureshi

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Amir_Hadad

এএফসি এশিয়ান কাপ এ পর্যন্ত দেশ দু'টি ম্যাচ খেলেছে।

তাশবিহ সাইয়্যেদ ছিলেন সুপরিচিত পাকিস্তানি-আমেরিকান জায়োনিস্ট যিনি তার সাংবাদিকতা জীবনের বিভিন্ন সময়ে অনেক কলাম এবং লেখায় ইজরায়েল ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের প্রতি খোলাখুলিভাবে সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Tashbih_Sayyed

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম 'ডেইলি জং' এর রিপোর্ট অনুযায়ী অনেক শীর্ষ পাকিস্তানি নেতা এবং প্রতিনিধি ইজরায়েল সফর করেছে।

https://web.archive.org/web/20121011235742/http://jang.com.pk/jang/dec2009-daily/25-12-2009/america.htm

পাকিস্তানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ কাসুরি পাকিস্তান ও ইজরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকে সমর্থন করেছিলেন।

পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি পারভেজ মোশাররফ ইজরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের কার্যকর সমাধানে পৌঁছানোর সাথে সাথে ইসরায়েলের সাথে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য খোলাখুলিভাবে কথা বলেন। তিনি ব্যক্ত করেন যে, ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের সমান সুযোগ প্রদানকারী দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান অর্জিত হলে এবং শান্তি পুনরুদ্ধার হলে পাকিস্তান পূর্ণ হৃদয়ে ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে এবং উন্মুক্ত সম্পর্কের জন্য এগিয়ে আসবে।

https://www.haaretz.com/2012-01-06/ty-article/relations-with-israel-could-help-pakistan-says-former-president-musharraf/0000017f-e913-df2c-a1ff-ff53ce040000

২০১৬ সালে মালিক শাহরুখ 'ইজরায়েল-পাকিস্তান ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ' শুরু করেন, যা দুই জাতির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য প্রচারণা চালায়।

২০১৭ সালে ভারত সফরে এসে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অবস্থান জোরদার করার জন্য ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার যে জল্পনা চলছে, তার জবাবে বলেন-

"আমরা [ইজরায়েল] পাকিস্তানের শত্রু নই এবং পাকিস্তানেরও আমাদের শত্রু হওয়া উচিত নয়।"

২০১৮ সালে খবর (বিশেষ করে ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমে) প্রকাশিত হতে শুরু করে যে একটি ইজরায়েলি যাত্রীবাহী বিমান একদিনের জন্য পাকিস্তানে থামছে এবং অবস্থান করছে (ইজরায়েলি কূটনীতিকরা গোপনে পাকিস্তানে সরকারি সফর করেছে)।

https://asiatimes.com/2019/08/a-gulf-red-carpet-for-modi-and-silence-for-kashmir/

https://scroll.in/article/936665/why-have-saudi-arabia-and-the-uae-failed-to-express-support-for-pakistans-position-on-kashmir





Comments

Popular posts from this blog

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-দুই]

শিবিরনামা [পর্ব-এক]