এরদোয়ানের মুরিদ হওয়ার আগে

 

বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডার মুলা ঝুলিয়ে জনতার সামনে রেখেছিল। এরদোয়ানও ওসমানীয় সাম্রাজ্য ও ইসলামের মুলা ঝুলিয়ে মুসলিম বিশ্বে আধিপত্য বিস্তারে উঠেপড়ে লেগেছে।

১৬৮৩ সালে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের আয়তন ছিল প্রায় ৫২ লক্ষ বর্গ কি.মি.। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের মোট আয়তন ছিল ১৫,৮৯,৫৪০ বর্গ কি.মি.। এসময় বর্তমান তুরস্ক, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও জর্দান এবং ইয়েমেন ও সৌদি আরবের অংশবিশেষ ছিল ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অংশ। ১৯০৮ সাল পর্যন্ত ওসমানীয় রাজবংশের সুলতানরা ওসমানীয় রাষ্ট্রের একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। 

https://www.haberler.com/lozan-anlasmasinin-sureci-doluyor-3810466-haberi/

১৯০৮ সালে সংঘটিত 'তরুণ তুর্কি বিপ্লব' ওসমানীয় সাম্রাজ্যকে একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে পরিণত করে এবং ১৯১৩ সালে সংঘটিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তিন পাশা ওসমানীয় রাষ্ট্রের প্রকৃত শাসনক্ষমতা হস্তগত করেন।

https://www.yunturk.org.tr/?Syf=26&Syz=318427&/2023%E2%80%99TE-SONA-ERECEK-LOZAN-ANTLA%C5%9EMASI%E2%80%99n%C4%B1n-G%C4%B0ZL%C4%B0-MADDELER%C4%B0-VAR-MI?-

এরা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তালাত পাশা, যুদ্ধমন্ত্রী এনভের পাশা এবং নৌমন্ত্রী জেমাল পাশা। ১৯১৩ সাল থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত কার্যত এই তিনজন ছিলেন ওসমানীয় রাষ্ট্রের মূল শাসক।

https://www.prothomalo.com/opinion/column/%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4-%E0%A6%B9%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%8F%E0%A6%B0%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF

১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই মিত্রশক্তি ও অক্ষ শক্তির মধ্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। ওসমানীয় সাম্রাজ্য অক্ষ শক্তির পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং ১৯১৪ সালের ২৯ অক্টোবর ওসমানীয় নৌবাহিনী কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী রুশ সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর আক্রমণ পরিচালনার মধ্য দিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। চার বছরব্যাপী যুদ্ধের পর ১৯১৮ সালের অক্টোবর নাগাদ ওসমানীয় সাম্রাজ্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

https://en.m.wikisource.org/wiki/Treaty_of_S%C3%A8vres

১৯১৮ সালের ৩০ অক্টোবর ওসমানীয় সাম্রাজ্য ও মিত্রশক্তির মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্পাদিত হয় এবং শর্তানুযায়ী ব্রিটিশ, ফরাসি, ইতালীয় ও গ্রিক সৈন্যরা সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল দখল করে নেয়। 

https://en.m.wikisource.org/wiki/Treaty_of_S%C3%A8vres

একে একে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, বুলগেরিয়া ও হাঙ্গেরির সঙ্গে শান্তিচুক্তি সম্পাদনের পর সবশেষে ১৯২০ সালের ১০ আগস্ট মিত্রশক্তি ওসমানীয় সাম্রাজ্যের সঙ্গে 'সেভ্রে চুক্তি' স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে ওসমানীয় সাম্রাজ্য মিত্রশক্তির সদস্যদের কাছে যেসব ভূখণ্ড হারিয়েছিল (মিসর, সাইপ্রাস, লিবিয়া প্রভৃতি), সেগুলোর ওপর থেকে নিজস্ব দাবি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। ওসমানীয় সাম্রাজ্য তাদের সকল আরব ভূখণ্ড (ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও জর্দান এবং ইয়েমেন ও সৌদি আরবের অংশবিশেষ) হারায়।

https://www.aa.com.tr/en/world/turkey-marks-centennial-anniversary-of-moscow-treaty/2177558

ওসমানীয় সাম্রাজ্যের আর্মেনীয় অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোকে স্বাধীন আর্মেনিয়া রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য গণভোট অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ভাগবাটোয়ারার পর ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অবশিষ্টাংশের আয়তন ছিল ৪,৫৩,০০০ বর্গ কি.মি.। সেভ্রে চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি ও গ্রিস মিলে ওসমানীয় রাষ্ট্রের অবশিষ্টাংশকে নিজ নিজ প্রভাব বলয়ে ভাগ করে নেয়। ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অর্থনীতির সমস্ত দিক ও ওসমানীয় ব্যাংকের কর্তৃত্ব মিত্রশক্তির হাতে সমর্পিত হয়। ওসমানীয় রাষ্ট্রের মধ্য দিয়ে মিত্রশক্তির সকল সদস্যের পণ্য বিনা শুল্কে যাতায়াত করতে পারবে- এই নিয়ম প্রবর্তন করা হয়। বসফরাস ও দার্দানেলিস প্রণালীদ্বয়ের কর্তৃত্ব ওসমানীয়দের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়। নিয়ম প্রবর্তন করা হয় ওসমানীয় সেনাবাহিনীতে ৫০,৭০০ জনের বেশি সৈন্য থাকবে না, ওসমানীয় নৌবাহিনীতে ৭টি স্লুপ ও ৬টি টর্পেডো বোট ছাড়া অন্য কোনো নৌযান থাকবে না এবং ওসমানীয় রাষ্ট্রের কোনো বিমানবাহিনী থাকবে না। মিত্রশক্তি আর্মেনীয় গণহত্যার জন্য দায়ী ওসমানীয় কর্মকর্তাদের বিচার করার ঘোষণা দেয়। ওসমানীয় সাম্রাজ্যের তুর্কি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে ইতিমধ্যে মিত্রশক্তির দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল এবং ১৯১৯ সালে তুর্কি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সৃষ্টি হয়েছিল। তারা এশীয় তুরস্কের আঙ্কারায় বিকল্প সরকারের সৃষ্টি করেছিল এবং 'গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি' নামে নতুন একটি আইনসভা নির্বাচিত করেছিল। গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সরকারের নেতা ছিলেন ওসমানীয় সেনাবাহিনীর সমরনায়ক মুস্তফা কামাল পাশা। সেভ্রে চুক্তি যখন স্বাক্ষরিত হয়, তখন ওসমানীয় সাম্রাজ্যে কার্যত দু'টি সরকার ছিল- মিত্রশক্তির অধিকৃত কনস্টান্টিনোপলভিত্তিক ওসমানীয় সরকার এবং আঙ্কারাভিত্তিক গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সরকার। 

আঙ্কারাভিত্তিক সরকারের বক্তব্য ছিল, তারা তুর্কি জনসাধারণের প্রকৃত প্রতিনিধি। তারা সেভ্রে চুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করে এবং সেভ্রে চুক্তির পর মিত্রশক্তির সঙ্গে আঙ্কারাভিত্তিক সরকারের সশস্ত্রবাহিনীর যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ইতিহাসে এটি 'তুর্কি স্বাধীনতা যুদ্ধ' হিসেবে পরিচিত। তুর্কি স্বাধীনতা যুদ্ধে আঙ্কারাভিত্তিক সরকার প্রধানত গ্রিস, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের বিরুদ্ধে এবং ১৯২০ ও ১৯২১ সালে যথাক্রমে আর্মেনিয়া ও জর্জিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ১৯২০ সালে কনস্টান্টিনোপলভিত্তিক ওসমানীয় সরকারের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এই যুদ্ধে সোভিয়েত রাশিয়া, সোভিয়েত আজারবাইজান, সোভিয়েত বুখারা ও সোভিয়েত ইউক্রেন আঙ্কারাভিত্তিক সরকারকে সহায়তা করে। ইতালি আঙ্কারাভিত্তিক সরকারের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকে। ১৯২২ সালের অক্টোবর নাগাদ আঙ্কারাভিত্তিক সরকার গ্রিস, ফ্রান্স, আর্মেনিয়া ও কনস্টান্টিনোপলভিত্তিক ওসমানীয় সরকারের বিরুদ্ধে জয়ী হয় এবং ওসমানীয় সাম্রাজ্যের তুর্কি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর সিংহভাগ তুর্কি জাতীয়তাবাদীদের হস্তগত হয়। ১৯২২ সালের ১১ অক্টোবর উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়। যুদ্ধ শেষে প্রায় সাত মাসব্যাপী আলোচনার পর ১৯২৩ সালের ২৪ জুলাই সুইজারল্যান্ডের লুজানে আঙ্কারাভিত্তিক সরকার এবং ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, গ্রিস, রুমানিয়া ও যুগোস্লাভিয়ার মধ্যে সম্পাদিত হয় 'লুজান চুক্তি'। ফরাসি ভাষায় লিখিত এবং ১৪৩টি ধারাবিশিষ্ট চুক্তিটি আঙ্কারার গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ১৯২৩ সালের ২৩ আগস্ট অনুমোদন করে এবং ১৯২৪ সালের ১৬ জুলাই নাগাদ অন্য রাষ্ট্রগুলোর আইনসভায় চুক্তিটি অনুমোদিত হয়। ১৯২৪ সালের ৬ আগস্ট থেকে চুক্তিটি কার্যকর হয়। লুজান চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সেভ্রে চুক্তি বাতিল হয়ে যায় এবং তখন থেকে চুক্তিটিকে আধুনিক তুর্কি রাষ্ট্রের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করে আসা হয়েছে। 

চুক্তিটি সম্পর্কে যেসব গুজব আছে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো হয়েছে-

#২০২৩ সালে লুজান চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে

তুর্কি নাগরিকদের একটি অংশের মতে, লুজান চুক্তির একটি গোপন শর্ত রয়েছে এবং এই শর্ত মোতাবেক লুজান চুক্তির মেয়াদ ১০০ বছর পূর্ণ হলে চুক্তিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। কিছু কিছু ব্যক্তির ধারণা, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যে কোনো চুক্তি ১০০ বছর পর বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু লুজান চুক্তির কোনো গোপন শর্ত আছে, এমন কোনো প্রমাণ বিগত প্রায় এক শতাব্দীতে পাওয়া যায়নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মধ্যে স্বাক্ষরিত গোপন 'সাইকস-পিকো চুক্তি' কিংবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে জার্মানি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত মলোতভ-রিব্বেনট্রপ চুক্তি'র গোপন শর্তাবলি- কোনোটিই গোপন থাকেনি। আন্তর্জাতিক আইনে এ রকম কোনো নিয়ম নেই যে, কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার ১০০ বছর পর চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। যদি চুক্তিটিতে সুনির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ উল্লেখ করা না থাকে (যেমনটি ছিল ১৯৫০ সালে স্বাক্ষরিত ৩০ বছর মেয়াদী চীনা-সোভিয়েত মৈত্রী চুক্তিতে) এবং চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলো যদি বিলুপ্ত না হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে চুক্তিটি কয়েক শত বছর পরেও সচল থাকতে পারে। উদাহরণ হিসেবে ১৯২১ সালের ১৬ মার্চ সোভিয়েত রাশিয়া ও আঙ্কারাভিত্তিক সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত মস্কো চুক্তির কথা বলা যায়। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ চুক্তিটির ১০০ বছর মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে, কিন্তু চুক্তিটিতে যেহেতু সুনির্দিষ্ট কোনো মেয়াদের উল্লেখ নেই, তাই ১০০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও চুক্তিটি কার্যকর রয়েছে।

#লুজান চুক্তির কারণে তুরস্ক খনিজ সম্পদ উত্তোলন করতে পারছে না

কিছু কিছু ব্যক্তি বিশ্বাস করেন লুজান চুক্তিতে তুরস্ক কর্তৃক খনিজ সম্পদ উত্তোলনের ওপর ১০০ বছর মেয়াদী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাখা হয়েছে এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো তুরস্ককে দরিদ্র ও অনুন্নত রাখা।

https://www.aljazeera.com/news/2020/10/17/turkey-raises-black-sea-gas-field-estimate-after-new-discovery

তাদের বিশ্বাস, ২০২৩ সালে লুজান চুক্তির মেয়াদের অবসান ঘটলে এই নিষেধাজ্ঞা সরে যাবে। এরপর তুরস্ক বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদ উত্তোলন করতে পারবে এবং সেগুলো বিক্রির মাধ্যমে অত্যন্ত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। কিন্তু লুজান চুক্তির ১৪৩টি ধারার কোনোটিতে এমন কোনো শর্ত দেয়া নেই যে, তুরস্ক তার নিজের খনিজ সম্পদ উত্তোলন করতে পারবে না। তুরস্কের প্রধান খনিজ দ্রব্য হচ্ছে ক্রোমাইট, বক্সাইট ও তামা, যেগুলো তুরস্ক নিয়মিতভাবে উত্তোলন করে থাকে। ২০২০ সালে তুরস্ক কৃষ্ণসাগরে তাদের বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে এবং সেখান থেকে গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থাও শুরু করেছে।

#লুজান চুক্তির কারণে ওসমানীয় সাম্রাজ্য ভেঙে ৪০টি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে

কিছু কিছু ব্যক্তির দাবি অনুযায়ী, লুজান চুক্তির কারণে ওসমানীয় সাম্রাজ্য ভেঙে প্রায় ৪০টি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরণের দাবিতে কামাল আতাতুর্কের ওপর দোষারোপ করা হয়, কারণ তিনি লুজান চুক্তির স্বাক্ষরকালে তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। কিন্তু এই সাম্রাজ্যের সিংহভাগ অংশই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে ওসমানীয় সুলতানরা হারিয়েছিলেন এবং এর সঙ্গে লুজান চুক্তি বা কামাল আতাতুর্কের কোনো সম্পর্ক ছিল না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের আয়তন ছিল ১৫,৮৯,৫৪০ বর্গ কি.মি. এবং বর্তমান তুরস্ক, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও জর্দান এবং ইয়েমেন ও সৌদি আরবের অংশবিশেষ সেসময় ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। 


প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে বর্তমান বিশ্বের ৭টি রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ ও ২টি রাষ্ট্রের অংশবিশেষ ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল, ৪০টি রাষ্ট্র নয়। 

https://www.britannica.com/place/Cyprus/Ottoman-rule

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে বর্তমান তুরস্কের মূল ভূখণ্ডের সিংহভাগ বাদে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের বাকি অংশ (ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, জর্দান, ইয়েমেন ও সৌদি আরবের অংশবিশেষ) মিত্রশক্তির দখলে চলে যায়। ১৯২০ সালে যখন সেভ্রে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তখন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল এবং আনাতোলিয়ার অংশবিশেষ মিত্রশক্তির দখলে ছিল। তুর্কি স্বাধীনতা যুদ্ধে আঙ্কারাভিত্তিক সরকার আনাতোলিয়াকে শত্রুমুক্ত করতে সমর্থ হয় এবং লুজান চুক্তিতে আনাতোলিয়া, পূর্ব থ্রেসের অংশবিশেষ ও কনস্টান্টিনোপলকে তুরস্কের নিকট অর্পণ করা হয়। লুজান চুক্তির সময় প্রাক্তন ওসমানীয় ভূখণ্ড ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও জর্দান এবং ইয়েমেন ও সৌদি আরবের অংশবিশেষ ব্রিটেন ও ফ্রান্সের দখলে ছিল। তুর্কি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তুর্কি জাতীয়তাবাদীরা ভূখণ্ডগুলো পুনর্দখলের কোনো চেষ্টা করেনি, কারণ সেই সামর্থ্য তখন তাদের ছিল না। লুজান চুক্তিতে তারা এই ভূখণ্ডগুলো ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। পাশাপাশি ঈজিয়ান সাগরের তিনটি দ্বীপ ছাড়া বাকি সমস্ত দ্বীপ গ্রিসের হস্তগত হয়। এখনকার আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধের মাধ্যমে অপর রাষ্ট্রের ভূমি দখল অবৈধ হতে পারে, সেসময় এটিই ছিল প্রচলিত নিয়ম এবং ওসমানীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যুদ্ধের মাধ্যমে ভূমি দখলের মধ্য দিয়ে। সেভ্রে ও লুজান চুক্তির শর্তানুযায়ী আঙ্কারাভিত্তিক সরকার সাইপ্রাস, মিসর, সুদান, লিবিয়া ও দোদেকানিজ দ্বীপপুঞ্জের ওপর থেকে সমস্ত দাবি প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে বিভিন্ন সময়ে এই ভূখণ্ডগুলো ওসমানীয় সুলতানদের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। ১৮৭৮ সালে ওসমানীয় সাম্রাজ্য ব্রিটেনের নিকট সাইপ্রাসকে ইজারা দেয় এবং ১৮৮২ সালে ব্রিটিশ সৈন্যরা মিসর ও সুদান দখল করে। তখন থেকে ভূখণ্ডগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ওসমানীয় ভূখণ্ড হলেও কার্যত ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। 

ওসমানীয় সাম্রাজ্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অক্ষ শক্তির পক্ষে যোগ দিলে ব্রিটেন এই উপনিবেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে দখল করে নেয়। ১৯১১-১৯১২ সালের ইতালীয়-ওসমানীয় যুদ্ধে ওসমানীয় সাম্রাজ্য ইতালির নিকট পরাজিত হয় এবং লিবিয়া ও দোদেকানিজ দ্বীপপুঞ্জ ইতালির নিকট হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়। 

https://www.nam.ac.uk/explore/egypt-and-sudan#:~:text=British%20forces%20occupied%20Egypt%20in,tribesmen%20in%20hostile%20desert%20conditions.

১৯২৩ সালে এগুলো পুনর্দখল করে নেয়ার মতো সামর্থ্য আঙ্কারাভিত্তিক সরকারের ছিল না, লুজান চুক্তিতে তারা এই ভূখণ্ডগুলোর ওপর থেকে দাবি ত্যাগ করে। লুজান চুক্তির মধ্য দিয়ে আঙ্কারাভিত্তিক সরকার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ৮টি ভূখণ্ড (বর্তমানে ৬টি রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ ও ২টি রাষ্ট্রের অংশবিশেষ) মিত্রশক্তির কাছে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আগে ওসমানীয়দের হাতছাড়া হওয়া ৫টি ভূখণ্ডের ওপর থেকে নিজেদের দাবি প্রত্যাহার করে নেয়। লুজান চুক্তিতে ছেড়ে দেয়া ভূখণ্ড থেকে সর্বসাকুল্যে ১৩টি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে।

#লুজান চুক্তির অবসান ঘটলে তুরস্ক ইরাক ও সিরিয়ার অংশবিশেষ দখল করে নেবে

কারো কারো ধারণা, ২০২৩ সালে লুজান চুক্তির অবসানের পর তুরস্ক ইরাকের মসুল এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের অংশবিশেষ দখল করে নেবে।

https://www.britannica.com/event/Italo-Turkish-War

লুজান চুক্তি বজায় থাকাকালে তুরস্ক অন্য কোনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে পারবে না- এ রকম কোনো শর্ত লুজান চুক্তিতে নেই। ১৯৭৪ সালে তুর্কি সৈন্যরা সাইপ্রাসের উত্তরাংশ দখল করে নেয় এবং তখন থেকে উত্তর সাইপ্রাস তুর্কি নিয়ন্ত্রিত আশ্রিত রাষ্ট্র।

https://www.al-monitor.com/originals/2020/05/turkey-syria-population-transfers-tell-abyad-irk-kurds-arabs.html

১৯৯০ এর দশক থেকে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনের জন্য তুরস্ক উত্তর ইরাকে প্রায়ই সামরিক অভিযান পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ইদলিব প্রদেশের অংশবিশেষসহ কিছু অংশ তুর্কি সামরিক দখলদারিত্বের অধীন। এগুলোর কোনোটি করার জন্য তুরস্ককে লুজান চুক্তি ভঙ্গ করতে হয়নি। তুরস্ক যদি ইরাক বা সিরিয়ার অংশবিশেষ দখল করতে চায়, তাদের সেজন্য ২০২৩ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। 


#লুজান চুক্তির কারণে তুরস্ক তুর্কি প্রণালীদ্বয়ে চলাচলকারী নৌযানগুলো থেকে শুল্ক আদায় করতে পারছে না

লুজান চুক্তি অনুযায়ী, বসফরাস ও দার্দানেলিস প্রণালীদ্বয়ের ওপর তুরস্কের কার্যত সামরিক, অর্থনৈতিক বা অন্য কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছিল না।

https://www.britannica.com/event/Montreux-Convention

কিন্তু ১৯৩৬ সালের ২০ জুলাই তুরস্ক, ব্রিটেন, ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়ন, জাপান, গ্রিস, রুমানিয়া, যুগোস্লাভিয়া, বুলগেরিয়া ও অস্ট্রেলিয়া বসফরাস ও দার্দানেলিস প্রণালীদ্বয় নিয়ে নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে; যেটির আনুষ্ঠানিক নাম 'Montreux Convention Regarding the Regime of the Straits' বা সংক্ষেপে 'Montreux Convention'। চুক্তি অনুযায়ী, বসফরাস ও দার্দানেলিস প্রণালীদ্বয়ের সামরিক কর্তৃত্ব তুরস্কের নিকট প্রত্যর্পণ করা হয়। এর ফলে যুদ্ধ চলাকালে তুরস্ক বিদেশি যুদ্ধজাহাজের জন্য এই প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারবে এবং কোনো রাষ্ট্র তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হলে সেই রাষ্ট্রের বেসামরিক জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিতে পারবে।

https://moderndiplomacy.eu/2018/09/11/the-curious-treaty-of-kars/

এই চুক্তির শর্তানুযায়ী, শান্তিকালীন সময়ে প্রণালীদ্বয় দিয়ে যাতায়াতকারী নৌযানগুলোর কাছ থেকে তুরস্ক কোনো শুল্ক আদায় করতে পারবে না। তুরস্ক যে এখন তুর্কি প্রণালীদ্বয় দিয়ে চলাচলকারী নৌযানগুলোর কাছ থেকে শুল্ক আদায় করতে পারছে না, সেটির জন্য লুজান চুক্তি নয়, Montreux Convention দায়ী। ২০২৩ সালে যদি লুজান চুক্তি বাতিলও হয়ে যায়, তবুও তুর্কি প্রণালীদ্বয়ের চলাচলরত নৌযানগুলো থেকে তুরস্ক শুল্ক আদায় করতে পারবে না। 


#লুজান চুক্তির অবসান ঘটলে তুরস্কে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে

লুজান চুক্তির পর ১৯২৪ সালে তুরস্কে কামাল আতাতুর্ক খিলাফতের বিলুপ্তি ঘোষণা করেন। লুজান চুক্তির সঙ্গে এর সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ লুজান চুক্তিতে খিলাফত বিলুপ্ত করার জন্য কোনো শর্ত তুরস্কের ওপর আরোপ করা হয়নি। লুজান চুক্তির আগেই ১৯২২ সালে আতাতুর্ক ওসমানীয় সালতানাত বিলুপ্ত করেছিলেন। সালতানাত ও খিলাফত বিলুপ্তি ছিল আতাতুর্কের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তুরস্কে খিলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সঙ্গে লুজান চুক্তির অবসান ঘটার কোনো সম্পর্ক নেই। তুর্কি শাসকশ্রেণি ও জনসাধারণ চাইলে যেকোনো সময় খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারে।

কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলো যদি সর্বসম্মতিক্রমে ঐ চুক্তিটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে চুক্তিটি বাতিল হয়ে যায়। যেমন- ১৯২১ সালের মস্কো চুক্তি অনুযায়ী সোভিয়েত রাশিয়া ও আঙ্কারাভিত্তিক সরকার অতীতে রুশ ও ওসমানীয় সাম্রাজ্যদ্বয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তিকে বাতিল বলে ঘোষণা করে। এর ফলে ১৯২১ সালের আগে রাষ্ট্র দু'টির মধ্যে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলো যদি ঐ চুক্তির বিষয়াবলি নিয়ে নতুন করে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে, তাহলেও আগের চুক্তিটি বাতিল হয়ে যায়। যেমন- ১৯২৩ সালে তুরস্ক ও মিত্রশক্তির মধ্যে স্বাক্ষরিত লুজান চুক্তির মধ্য দিয়ে ১৯২০ সালে স্বাক্ষরিত সেভ্রে চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। কোনো রাষ্ট্র চাইলেই যেকোনো সময়ে কোনো চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিতে পারে। যেমন- ১৯১৮ সালের ৩ মার্চ অক্ষ শক্তি ও সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে ব্রেস্ত-লিতোভস্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। একই বছর জার্মানি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হলে ১৯১৮ সালের ১৩ নভেম্বর সোভিয়েত রাশিয়া এই চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। এক্ষেত্রে তাদের জার্মানি বা অক্ষ শক্তির অন্য সদস্যদের অনুমতির প্রয়োজন হয়নি।

কামালকে গালাগালি করার আগে-

ওসমানীয় সরকার কর্তৃক স্বাক্ষরকৃত সেভ্রে চুক্তির মধ্য দিয়ে ওসমানীয় সাম্রাজ্য কার্যত ৪,৫৩,০০০ বর্গ কি.মি. আয়তনবিশিষ্ট মিত্রশক্তির উপনিবেশে পরিণত হয়েছিল। লুজান চুক্তির মাধ্যমে তুরস্ক একটি অপেক্ষাকৃত বড়, স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

সেভ্রে চুক্তি অনুযায়ী ওসমানীয় রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে পুরোপুরি মিত্রশক্তির হাতে সমর্পণ করা হয়েছিল। লুজান চুক্তি তুরস্কের অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ তুর্কি সরকারের হাতে ফিরিয়ে দেয়।

ওসমানীয় সুলতানরা ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে একটি বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছিলেন। এই আইন অনুযায়ী, ওসমানীয় সাম্রাজ্যের মাটিতে অবস্থানরত কোনো ইউরোপীয় নাগরিকের বিচার ওসমানীয় আইনে করা যেতো না। লুজান চুক্তি এই বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা রহিত করে।

সেভ্রে চুক্তি অনুযায়ী মিত্রশক্তি ওসমানীয় রাষ্ট্রের ওপর বিরাট ক্ষতিপূরণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিল। লুজান চুক্তিতে উল্টো তুর্কি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গ্রিক সৈন্যরা আনাতোলিয়ায় যে ক্ষয়ক্ষতি করেছে, তার জন্য তুরস্ক গ্রিসের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করে। গ্রিস ক্ষতিপূরণ প্রদান না করে এদিরনে প্রদেশ সংলগ্ন একটি ক্ষুদ্র অঞ্চল তুরস্কের নিকট হস্তান্তর করে।

সেভ্রে চুক্তি অনুযায়ী মিত্রশক্তি আর্মেনীয় গণহত্যার জন্য ওসমানীয় কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে চেয়েছিল। কিন্তু লুজান চুক্তিতে এই প্রসঙ্গের কোনো উল্লেখ করা হয়নি এবং এর মধ্য দিয়ে কার্যত মিত্রশক্তি তুরস্ককে আর্মেনীয় গণহত্যার দায় থেকে দায়মুক্তি প্রদান করে।

সেভ্রে চুক্তিতে তুর্কি সামরিক শক্তির ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। লুজান চুক্তির মধ্য দিয়ে এসব বিধিনিষেধের অবসান ঘটে।

সেভ্রে চুক্তি অনুযায়ী আনাতোলিয়ার বিরাট অংশ জুড়ে স্বাধীন আর্মেনিয়া ও কুর্দিস্তান রাষ্ট্র গঠনের কথা ছিল। লুজান চুক্তিতে এই প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা হয়নি। ফলে আনাতোলিয়ার প্রায় সম্পূর্ণ অংশ নতুন তুর্কি রাষ্ট্রের হস্তগত হয়।

https://foreignpolicy.com/2014/10/02/notes-on-a-turkish-conspiracy/

সেভ্রে চুক্তির পর ওসমানীয় রাষ্ট্র ছিল ৪,৫৩,০০০ বর্গ কি.মি. এর একটি সম্পূর্ণভাবে মিত্রশক্তি নিয়ন্ত্রিত আশ্রিত রাষ্ট্র। লুজান চুক্তির মধ্য দিয়ে তুরস্ক আরো প্রায় ২,৭৭,০০০ বর্গ কি.মি. ভূমি লাভ করে। এর পাশাপাশি ১৯২১ সালের ১৩ অক্টোবর আঙ্কারাভিত্তিক সরকার এবং সোভিয়েত জর্জিয়া, সোভিয়েত আর্মেনিয়া ও সোভিয়েত আজারবাইজানের মধ্যে 'কার্স চুক্তি' সম্পাদিত হয়। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে তুরস্ক প্রাক্তন রুশ সাম্রাজ্যের বাতুম প্রদেশের দক্ষিণাংশ (প্রায় ৩০,০০০ বর্গ কি.মি.), কার্স প্রদেশের সিংহভাগ (প্রায় ১৫,০০০ বর্গ কি.মি.), সুরমালি জেলা (৩,৬৮৮ বর্গ কি.মি.) ও আরাস করিডোর লাভ করে। ১৯৩৮ সালে তুরস্ক ফরাসি নিয়ন্ত্রিত সিরিয়া থেকে হাতাই প্রদেশ (৫,৫২৪ বর্গ কি.মি.) লাভ করে।


Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

চাড্ডিগণ [এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]