আসাদ ও ইরান সমর্থিত মৌলবাদীরা

 

বাশার আল আসাদ এবং তার শীর্ষ সহযোগীদের অনেকে আলাউয়ি সম্প্রদায়ভুক্ত এবং সিরীয় শিয়ারা প্রধানত সিরীয় সরকারের সমর্থক। অন্যদিকে বাশার আল আসাদের স্ত্রী আসমা আল আসাদ সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত এবং সিরীয় সরকার ও সশস্ত্রবাহিনীর বড় একটি অংশ সুন্নি। সিরীয় বিদ্রোহী দলগুলোর সমর্থকদের সিংহভাগই সুন্নি, কিন্তু কিছু আলাউয়ি ধর্মীয় নেতা সিরীয় সরকারের বিরোধিতা করেছে। যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে পশ্চিমাদের দালাল সৌদি আরব, কাতার ও তুরস্ক সিরীয় বিদ্রোহীদের সক্রিয়ভাবে সহায়তা করে আসছিল এবং এখন পর্যন্ত তুরস্ক সিরীয় বিদ্রোহীদের সহায়তা করে চলেছে (উইঘুরদের পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে এই উদ্দেশ্যে)। ইরান যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায় থেকেই সিরীয় সরকারকে সহায়তা করছে।

https://jamestown.org/program/the-zainabiyoun-brigade-a-pakistani-shiite-militia-amid-the-syrian-conflict/#.V6nKM1t961t

ইরানি সৈন্যরা সরাসরি সিরীয় সরকারের পক্ষে যুদ্ধ করছে এবং ইরানিদের তত্ত্বাবধানে ইরাকি, লেবানিজ ও আফগান শিয়া যোদ্ধারা সিরীয় সরকারের পক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। ইরানিদের সক্রিয় তত্ত্বাবধানে পাকিস্তানি শিয়াদের একটি দল সিরীয় সরকারের পক্ষে যুদ্ধ করছে এবং দলটি 'লিওয়া আজ জায়নাবিউন' নামে পরিচিত। সিরীয়ার গৃহযুদ্ধের হাজার হাজার সিরীয় সৈন্য যুদ্ধে নিহত হয় অথবা দলত্যাগ করে বিদ্রোহীদের বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগদান করে। জনবলের ঘাটতি মোকাবিলা করার জন্য সিরীয় সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান বিভিন্ন রাষ্ট্র (ইরাক, লেবানন, আফগানিস্তান প্রভৃতি) থেকে শিয়া স্বেচ্ছাসেবকদের সিরিয়ায় প্রেরণ করতে শুরু করে।

https://tribune.com.pk/story/1009233/four-dead-several-wounded-in-parachinar-blast

বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে বসবাসকারী শিয়াদের মধ্যে একটি অংশ রয়েছে, যারা নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্য রক্ষার জন্য অস্ত্র ধারণ করতে আগ্রহী। ইরানিরা তাদের এই মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে সিরীয় যুদ্ধের জন্য তাদের মধ্য থেকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে শুরু করে। পাকিস্তান থেকেও ইরানিদের আহ্বানে সাড়া আসে। পাকিস্তানের জনসংখ্যার সিংহভাগ সুন্নি ইসলামের বিভিন্ন ধারার অনুসারী (দেওবন্দি, বারলেভি, সুফি, সালাফি/ওয়াহাবি)। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ২০-২৫% শিয়া ইসলামের অনুসারী। পাকিস্তানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিয়া জনগোষ্ঠীর বসবাস। শিয়ারা পাকিস্তানের গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে এবং সিন্ধু ও পাঞ্জাবের গ্রাম্য অঞ্চলে বসবাস করে। খাইবার পাখতুনখোয়া ও বালুচিস্তান প্রদেশদ্বয়ে শিয়াদের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলার রাজধানী পারাচিনার শিয়া অধ্যুষিত। ২০১৩ সালে ইসলামিক স্টেট এর জঙ্গিরা দামেস্কের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত সায়্যিদাহ জায়নাব মসজিদের ওপর রকেট হামলা চালালে মসজিদটির বাইরের দেয়াল বিধ্বস্ত হয়। ইমামিয়া শিয়াদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এখানে ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী ও ফাতিমার মেয়ে জায়নাব বিনতে আলীর কবর অবস্থিত। ইমামিয়া শিয়াদের কাছে এটি অত্যন্ত পবিত্র স্থান। পাকিস্তানি বিশ্লেষক ফারহান জাহিদের মতে, ১০০৯ সালে ফাতিমীয় শাসক আল হাকিম বিন আমর আল্লাহ কর্তৃক জেরুজালেমে অবস্থিত চার্চ অফ দ্য হোলি সেপুলকারে'র ধ্বংসসাধন যেমন খ্রিস্টানদের মধ্যে ক্রুসেডে অংশগ্রহণের জন্য উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছিল, আইএস কর্তৃক সায়্যিদাহ জায়নাব মসজিদের ওপর পরিচালিত আক্রমণ পাকিস্তানি শিয়াদের সিরীয় যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য অনুরূপ উদ্দীপনা যোগায়। ২০১৩ সাল থেকে কিছু পাকিস্তানি শিয়া স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সিরিয়ায় যেতে আরম্ভ করে। প্রথমে পাকিস্তানি শিয়ারা ইরান নিয়ন্ত্রিত ও আফগান স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা গঠিত 'লিওয়া আল ফাতিমিউন' মিলিশিয়াদের অংশ হিসেবে যুদ্ধ করে, ক্রমশ তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ২০১৪ সাল নাগাদ তারা স্বতন্ত্র মিলিশিয়া দল গঠন করে। দলটির নামকরণ করা হয় লিওয়া আজ জায়নাবিউন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Liwa_Zainebiyoun

প্রাথমিকভাবে দলটিকে দামেস্কের সায়্যিদাহ জায়নাব মসজিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Sayyidah_Zaynab_Mosque

লিওয়া আজ জায়নাবিউন গঠনের পূর্বে লিওয়া আবুল ফাদল আল আব্বাস নামক মিলিশিয়াদের উপর এই মসজিদটি এবং আলেপ্পোয় অবস্থিত শিয়াদের পবিত্র স্থানগুলো রক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Liwa_Abu_al-Fadhal_al-Abbas

এটি মূলত সিরীয় ও ইরাকি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল।

https://tribune.com.pk/story/1007694/iran-recruits-pakistani-shias-for-combat-in-syria

২০১৪ সালের মে মাসে আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হারাকাত নূর আল দিন আল জেনকি জঙ্গি গ্রুপের কাছে তারা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Nour_al-Din_al-Zenki_Movement

এরপর লিওয়া আজ জায়নাবিউনের নিকট মসজিদটি রক্ষার দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। লিওয়া আজ জায়নাবিউন গঠনের প্রক্রিয়াটি ছিল সম্পূর্ণভাবে ইরান কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। ইরানের ইসলামি বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে মিলিশিয়া দলটি গঠিত হয় এবং সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Islamic_Revolutionary_Guard_Corps

সিরিয়ায় দলটির সার্বিক কার্যকলাপ ইরানিরা তত্ত্বাবধান করে থাকে। মিলিশিয়াদের নিহত সদস্যদের ইরানে কবর দেয়া হয়। সিরিয়ায় নিহত পাকিস্তানি শিয়া যোদ্ধাদের ইরানে রাষ্ট্রীয়ভাবে মহিমান্বিত করা হয়। মিলিশিয়াদের দলটিতে যেসব পাকিস্তানি নাগরিক যোগদান করেছে, তাদের অনেকে পারচিনারের বিভিন্ন গোত্রের সদস্য। পাকিস্তানে বসবাসরত আফগানিস্তান থেকে আগত 'হাজারা' শরণার্থীদের মধ্য থেকে কিছু স্বেচ্ছাসেবক দলটিতে যোগদান করেছে। বেশ কিছু বালুচ এই মিলিশিয়াদের সাথে যোগদান করেছে, কিন্তু তারা পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশ থেকে এসেছে না ইরানের সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশ থেকে এসেছে সেটি স্পষ্ট নয়। ইরানে বসবাসকারী পাকিস্তানি শরণার্থীদের মধ্য থেকে কিছু স্বেচ্ছাসেবককে নিযুক্ত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহু পাকিস্তানি দলটিকে 'পাকিস্তানি হিজবুল্লাহ' হিসেবে অভিহিত করতে শুরু করে। 'হিজবুল্লাহ পাকিস্তান' নামে যে সংগঠনটি পাকিস্তানে সক্রিয় রয়েছে, সেটির সঙ্গে এই মিলিশিয়ার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। স্বেচ্ছাসেবক হতে আগ্রহী ব্যক্তিরা ইরানের কোম শহরে আসে এবং সেখানে তাদের বাছাই করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ১৮-৩৫ বছর বয়সী সমর্থ ব্যক্তিদের নিযুক্ত করা হয়। তাদের ইরানে দেড় মাস সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং সিরিয়ায় ছয় মাস অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। স্বেচ্ছাসেবকদের ইরানি সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের অঙ্গীকার করে থাকে এবং এজন্য বেশ কিছু মানুষ মিলিশিয়াটিতে যোগ দানের জন্য উৎসাহিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একটি বিজ্ঞাপন অনুসারে স্বেচ্ছাসেবকদের ইরানি সরকার মাসে ১,২০,০০০ রূপি বেতন প্রদান করবে এবং তিন মাস পর পর ১৫ দিনের ছুটি দেবে। কোনো স্বেচ্ছাসেবক যুদ্ধে নিহত হলে তার সন্তানদের শিক্ষার খরচ ইরানি সরকার প্রদান করবে এবং নিহত ব্যক্তির পরিবার প্রতি বছর ইরানি সরকারের খরচে ইরান, ইরাক ও সিরিয়ায় শিয়াদের পবিত্র স্থানগুলোতে তীর্থযাত্রা করার সুযোগ পাবে। পাকিস্তানি শিয়া স্বেচ্ছাসেবকরা সিরিয়ায় প্রথমে কেবল সায়্যিদাহ জায়নাব মসজিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতো। পরবর্তীতে তারা আলেপ্পো, দেইর ইয-যর, দারা ও ইদলিব প্রদেশসহ বিভিন্ন রণাঙ্গনে সিরীয় সরকারের পক্ষে যুদ্ধ করে। বিভিন্ন সময়ে তারা মার্কিন, ইসরায়েলি ও তুর্কি বিমান হামলার শিকার হয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চে প্রাপ্ত এক হিসেব অনুযায়ী, যুদ্ধের শুরু থেকে তখন পর্যন্ত ১৬০ জন লিওয়া আজ জায়নাবিউন সদস্য নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি ও মার্কিন বিমান হামলায় নিহত মিলিশিয়া সদস্যদের এই হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ইরান কর্তৃক পাকিস্তানি শিয়া স্বেচ্ছাসেবকদের সিরীয় যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের বিভিন্ন সমালোচনা রয়েছে। লিওয়া আজ জায়নাবিউনের কিছু সদস্য ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত, কিন্তু কিছু সদস্যকে কার্যত একটি রাইফেল ছাড়া অন্য কোনো অস্ত্র দেয়া হয়না। কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, ইরান সিরিয়ায় নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই মিলিশিয়া সদস্যদের সহজলভ্য ও সহজে খরচযোগ্য সৈন্য হিসেবে ব্যবহার করছে। ইরানি অর্থনীতির বর্তমান দুর্দশার প্রেক্ষাপটে ইরানিরা এই স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতিশ্রুত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে সক্ষম কিনা, সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ১৯৮০ এর দশকের মাঝামাঝি থেকে পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব তীব্র রূপ ধারণ করে। সেসময় থেকে এখন পর্যন্ত শিয়া-সুন্নি পাল্টাপাল্টি সংঘাতে দশ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ২০০৯-২০১৫ সালের মধ্যে এই দ্বন্দ্বের মাত্রা ছিল তীব্র। শত শত পাকিস্তানি সুন্নিও সিরিয়ায় গিয়েছে এবং আইএস সহ বিভিন্ন সুন্নি বিদ্রোহী গ্রুপে যোগ দিয়েছে। ২০১৫ সালে পাকিস্তানি পুলিশ পাঞ্জাবের শিয়ালকোটে আইএসের একটি শাখাকে নির্মূল করেছে। কেবল এই শাখাটি আইএসের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য ১০০ জনের বেশি পাকিস্তানি নাগরিককে সিরিয়ায় প্রেরণ করেছে। শিয়ারা যেহেতু পাকিস্তানে সংখ্যালঘু, সুতরাং ইরানিদের তত্ত্বাবধানে সিরীয় যুদ্ধে তাদের একাংশের অংশগ্রহণের ফলে পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব আগের চেয়ে তীব্র হয়ে উঠবে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানি সুন্নি জঙ্গি গ্রুপ 'লস্কর ই ঝাংভি' পারাচিনার অঞ্চলে ভয়াবহ বোমা হামলা চালালে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Lashkar-e-Jhangvi

তাদের মতে, হামলাটি ছিল সিরিয়ায় সুন্নিদের বিরুদ্ধে শিয়াদের সংঘটিত অপরাধগুলোর প্রত্যুত্তর। তারা আরো হুমকি দিয়েছিলো পারাচিনারের শিয়ারা যদি সিরিয়ায় যোদ্ধা প্রেরণ বন্ধ না করে তাহলে এরকম হামলা আরো চালানো হবে। পাকিস্তানি নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সিরিয়ায় যুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার পর শিয়ারা পাকিস্তানে ফিরে এসে দেশটিতে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করবে। এই শিয়ারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ইরানের প্রভাব বিস্তারে ভূমিকা রাখবে এবং সিরিয়ায় অর্জিত যুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে পাকিস্তানি সুন্নি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাবে। শুধু তাই নয়, সিরিয়া থেকে শিয়াদের প্রত্যাবর্তনের পর পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক সংঘাত শুরু হলে পাকিস্তান সৌদি-ইরানি প্রক্সি যুদ্ধের যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত হবে।

....................................................................

সিরিয়া নিয়ে মার্কিন-রুশ (সাথে তাদের ছোট-বড়ো মিত্ররা) কামড়াকামড়ি মূলত দুইটা পাইপলাইনকে ঘিরে। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত পাইপলাইন কাতার-সৌদি আরব-জর্ডান-সিরিয়া হয়ে তুরস্ক যাবে। এরপর সেটি বুলগেরিয়া যাবে। আসাদ ২০০৯ সালে এই প্রজেক্ট বাতিল করে দিয়েছিলেন। কাতার এটি বাস্তবায়নে পশ্চিমাদের সহায়তায় আসাদ বিরোধী সরকারকে ক্ষমতায় বসাতে চেয়েছিল সেসময়।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Qatar%E2%80%93Turkey_pipeline

আর রাশিয়া সমর্থিত পাইপলাইনটি ইরান-ইরাক-সিরিয়া যাবে। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Iran%E2%80%93Iraq%E2%80%93Syria_pipeline

একসময় রাশিয়ার গ্যাসের বিকল্প হিসেবে নাবুকো গ্যাস পাইপলাইন (কাস্পিয়ান এলাকা ও মধ্যপ্রাচ্যের গ্যাস ইউরোপে সরবরাহ করতে, বছরে ৩১ বিলিয়ন কিউবিক মিটার) বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও কার্যকর হয়নি। পরে আরব গ্যাস পাইপলাইন (মিশরের গ্যাস জর্ডান হয়ে সিরিয়ার মধ্য দিয়ে লেবানন পর্যন্ত নিয়ে যেতে, যা পরে নাবুকো গ্যাস পাইপলাইনে যুক্ত হওয়ার কথা) তৈরী হয়।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Nabucco_pipeline

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Arab_Gas_Pipeline

২০১৪ সালে রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব শুরুর পর থেকে রাশিয়া ইউক্রেন রুট বাদ দিয়ে তুর্কস্ট্রিম (৯৩০ কি۔মি۔ পাইপলাইনের মাধ্যমে বুলগেরিয়ায় যাবে, বছরে ৩ মিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস বুলগেরিয়া হয়ে সার্বিয়া ও হাঙ্গেরিতে যাবে) আর নর্ডস্ট্রিম-২ (সেন্ট পিটার্সবার্গ এর কাছাকাছি উস্ত লুগা হয়ে জার্মানির গ্রীফ্সওয়াল্ড এ যাবে) পথে তুরস্কের মধ্য দিয়ে ইউরোপে গ্যাস রপ্তানির উদ্যোগ নেয়। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/TurkStream

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Nord_Stream_2

তেল-গ্যাসের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ কাদের পেটে যাচ্ছে? মধ্যপ্রাচ্যের, আমেরিকার, রাশিয়ার সাধারণ মানুষের পেটে নাকি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জোঁকেদের সম্পদ আরও বৃদ্ধি হচ্ছে? তাহলে দুই বৃহৎ শক্তির কামড়াকামড়ি কিভাবে পূর্ব বনাম পশ্চিমের দ্বন্দ্ব হয়ে যায় কিংবা প্রক্সি যুদ্ধে কাজে লাগানো দেশগুলো হয়ে যায় সাম্রাজ্যবাদের পক্ষ বা বিপক্ষ শক্তি? নির্বাচনপন্থীদের দ্বিচারিতা এখানেই, যারা কিনা নিজেদের দেশগুলোর জিডিপি সংক্রান্ত সরকারি ভাষ্যের বিরুদ্ধে কথা বললেও তেল-গ্যাসের এই যুদ্ধে অর্জিত সম্পদের ব্যাপারে নিশ্চুপ।


Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

দেশ যখন ইসলামাইজেশন এর পথে [পর্ব-এক]