চোখ যখন মধ্য এশিয়ায়

 

মার্কিনিদের সৃষ্টি করা তালেবানকে 'মহান ভারত' যে ব্যবহার করছে সেটার একটু ঝলক আগে দেখা যাক-

https://www.reuters.com/article/us-pakistan-militants-idUSKBN17S1VN

https://nation.com.pk/12-Jan-2021/isis-in-afghanistan-being-supported-by-india-s-raw

https://dailytimes.com.pk/658228/raw-nds-and-isis-nexus-to-destabilize-afghanistan-and-pakistan/

https://tribune.com.pk/story/1394957/india-sponsors-perpetrates-terror-fo

https://tribune.com.pk/story/2220857/pervasive-world-indian-intelligence

https://www.firstpost.com/blogs/raw-does-not-make-india-proud-307552.html/amp

https://www.dawn.com/news/1345483

https://carnegieindia.org/2020/06/02/dealing-with-taliban-india-s-strategy-in-afghanistan-after-u.s.-withdrawal-pub-81951

https://www.thenews.com.pk/print/649513-indian-terror-bases-in-afghanistan

https://www.geo.tv/latest/318529-staying-silent-no-longer-an-option-for-pakistan-or-region-fm-qureshi

https://dunyanews.tv/en/Pakistan/481314-India-RAW-seek-help-Afghanistan-NDS-terrorism-nexus

https://magazine.outlookindia.com/story/raw-is-training-600-balochis-in-afghanistan/231032

https://www.kuna.net.kw/ArticleDetails.aspx?language=en&id=1364810

https://payouthforum.com/isis-in-afghanistan-is-supported-by-indias-raw/

https://www.bharatdefencekavach.com/news/pakistan/-raw-operating-from-afghanistan-to-create-tension/61338.html

https://m.timesofindia.com/world/pakistan/Indian-missions-in-Afghanistan-base-of-RAW-Pak/articleshow_new/109408.cms

https://scroll.in/latest/835789/no-credibility-in-ex-taliban-spokespersons-claims-of-india-afghanistan-funding-militants-centre

https://www.greaterkashmir.com/world/raw-operating-from-afghanistan-to-create-tension-pak-army

https://www.business-standard.com/article/current-affairs/india-s-raw-targeting-cpec-via-afghanistan-alleges-pakistan-117071500295_1.html

https://arynews.tv/en/raw-nds-ttp-militant-alliance-pakistan-afghanistan/

https://wjla.com/news/videos/raw-mother-of-all-bombs-targets-isis-operatives-in-afghanistan-killing-dozens

https://www.financialexpress.com/india-news/pakistan-accuses-indias-raw-of-targeting-cpec-via-afghanistan/764410/

https://newspakistan.tv/raw-secret-nexus-terrorist-groups-based-afghanistan-fo/

http://www.riazhaq.com/2009/10/taliban-or-raw-liban.html?m=1

'গ্রেট গেম' বলতে ঊনবিংশ শতাব্দীতে মধ্য এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে ব্রিটেন ও রাশিয়ার মধ্যকার প্রতিযোগিতাকে বোঝানো হতো এবং বর্তমানে মধ্য এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতাকে 'নিউ গ্রেট গেম' হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের পর মধ্য এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, জাপান, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান এবং ভারত নিজস্ব প্রভাব বলয় সৃষ্টির চেষ্টা শুরু করে। মধ্য এশিয়ার অন্য রাষ্ট্রগুলো জাতিগতভাবে 'বৃহত্তর তুর্কি' জাতির অংশ হলেও তাজিক জাতি 'বৃহত্তর ইরানি' জাতির অংশ। কিন্তু ইরানিরা শিয়া মতবাদের অনুসারী হলেও তাজিকরা মূলত সুন্নি মতবাদের অনুসারী।তাজিকিস্তানের উত্তরে কিরগিজস্তান, পূর্বে চীন, দক্ষিণে আফগানিস্তান এবং পশ্চিমে উজবেকিস্তান অবস্থিত বিধায় দেশটির প্রায় চতুর্দিকে 'ট্রাবল স্পট'। আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ চলছে, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুররা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে লিপ্ত, কিরগিজস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল এবং উজবেকিস্তানের সঙ্গে তাজিকিস্তানের সীমান্ত দ্বন্দ্ব বিদ্যমান। আফগানিস্তানের অন্তর্গত 'ওয়াখান করিডোর' পাকিস্তান থেকে তাজিকিস্তানকে পৃথক করেছে। কিন্তু তাজিকিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী দূরত্ব মাত্র ১৬ কি.মি.।

https://www.eurasiareview.com/04032017-india-and-tajikistan-ties-partners-in-development-analysis/

ঊনবিংশ শতাব্দীতে রুশ তুর্কিস্তান থেকে ব্রিটিশ ভারতকে ভৌগোলিকভাবে পৃথক করার জন্য ওয়াখান করিডোরটির সৃষ্টি করা হয়েছিল। নয়াদিল্লি থেকে মুম্বাইয়ের দূরত্বের (১,৪০১ কি.মি.) চেয়ে নয়াদিল্লি থেকে তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবের দূরত্ব (১,৩৫১ কি.মি.) কম। তাজিকিস্তান আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নিকটবর্তী ছিল বিধায় ১৯৯০ এর দশকে ভারত তাজিকিস্তানের সঙ্গে বিস্তৃত সামরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। ১৯৭০ ও ১৯৮০ এর দশকে আফগানিস্তানে চলমান গৃহযুদ্ধে ভারত নিজেদের স্বার্থে আফগানিস্তানের কমিউনিস্ট সরকারকে সমর্থন করে এবং ১৯৯২ সালে আফগান কমিউনিস্ট সরকারের পতনের পর পাকিস্তান সমর্থিত তালেবানের বিরুদ্ধে আফগান নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে সমর্থন করে। ভারতের মূল উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানে পাকিস্তানি প্রভাব হ্রাস করে ভারতীয় প্রভাব বৃদ্ধি করা। এসময় তাজিকিস্তানে গৃহযুদ্ধ চলছিল এবং আফগানিস্তানকেন্দ্রিক তাজিক জঙ্গি গ্রুপগুলোকে দমন করা ছিল তাজিকিস্তান সরকারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের কোনো সীমান্ত নেই, এজন্য ভারত তাজিকিস্তানের মধ্য দিয়ে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে অস্ত্রশস্ত্র ও রসদপত্র সরবরাহ করতো। তাজিকিস্তান স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র বিধায় ভারতকে ইরানের চাবাহার সমুদ্রবন্দর দিয়ে তাজিকিস্তানে এসব পৌঁছে দিতে হতো।

https://www.eastasiaforum.org/2019/03/23/chinas-tajikistan-military-base-eclipses-indias-central-asian-ambitions/

এসময় দক্ষিণ-পশ্চিম তাজিকিস্তানের ফারখোর শহরে ভারত একটি সামরিক হাসপাতাল স্থাপন করে, যেখানে ভারতীয় সামরিক চিকিৎসকরা যুদ্ধাহত নর্দার্ন অ্যালায়েন্স যোদ্ধাদের চিকিৎসা করতো। ২০০১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর যখন নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের নেতা আহমদ শাহ মাসুদ আল কায়েদা সদস্যদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় গুরুতরভাবে আহত হন, তখন তাকে চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ফারখোরের ভারতীয় হাসপাতালে আনার সময় তিনি পথিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেন। আফগানিস্তানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে প্রক্সি যুদ্ধ চলছিল, সেটি পরিচালনার ক্ষেত্রে তাজিকিস্তান ছিল ভারতের জন্য ঘাঁটিস্বরূপ। নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে সহায়তার প্রেক্ষাপটে তাজিকিস্তানে ভারতীয় সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থার উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়। ১৯৯৬-৯৭ সালে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' তাজিকিস্তানি সরকারকে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে রসদপত্র সরবরাহ, হেলিকপ্টার মেরামত এবং আফগানিস্তান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য ফারখোর বিমানঘাঁটি ভারতকে ইজারা দেয়ার প্রস্তাব দেয়। ফারখোর বিমানঘাঁটি মূলত সোভিয়েত বিমানবাহিনীর একটি ঘাঁটি হলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের পর ঘাঁটিটি পরিত্যক্ত হয়। ভারত এই ঘাঁটি সংস্কার করে সেখানে এক স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান মোতায়েন করার পরিকল্পনা করে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাজিকিস্তানকে জানায় আফগান গৃহযুদ্ধে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে সহায়তা করার জন্য তারা ফারখোর বিমানঘাঁটি ব্যবহার করতে চায়। কিন্তু ভারতের মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানকে ঘেরাও করে ফেলা। ফারখোর বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হলে সেগুলো ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ক্ষেত্রে কয়েক মিনিটের মধ্যে পাকিস্তানের ওপর বোমাবর্ষণ করতে সক্ষম হবে। এর ফলে সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ক্ষেত্রে আফগানিস্তানকে strategic depth হিসেবে ব্যবহার করার জন্য পাকিস্তানি রণকৌশলবিদদের যে পরিকল্পনা ছিল, সেটি অকার্যকর হয়ে যাবে। তখন ভারতীয় যুদ্ধবিমান তাজিকিস্তান থেকে আফগানিস্তানের ভূমিতে পশ্চাৎপসরণরত পাকিস্তানিদের ওপর আক্রমণ চালাতে পারতো। পাকিস্তানি সমর বিশারদদের পরিকল্পনা ছিল সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে যদি পাকিস্তানি সৈন্যরা পাকিস্তানের মাটি থেকে বিতাড়িত হয়, তাহলে তারা আফগানিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করবে। এজন্য নয়াদিল্লি সেসময় তাজিকিস্তানকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সামরিক সহায়তা প্রদান করে। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত তাজিকিস্তানের সামরিক বাহিনী তখন বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিল এবং তাজিকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সক্রিয় জঙ্গি গ্রুপগুলোকে মোকাবেলা করার সামর্থ্য তাদের ছিল না। এমতাবস্থায় ভারত তাজিকিস্তানের সশস্ত্রবাহিনীকে ২টি 'এমআই-৮' হেলিকপ্টার, বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ, ট্রাক ও অন্যান্য যান, ১০০০০ উর্দি এবং কম্পিউটার বিনা মূল্যে সরবরাহ করে। ১৯৯৮ সাল থেকে ভারতের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে তাজিকিস্তানি সৈন্য ও অফিসাররা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা শুরু করে এবং তাদের সম্পূর্ণ ব্যয়ভার ভারতীয় সরকার বহন করে। দুশানবে-তে 'তাজিক সামরিক ইনস্টিটিউট' স্থাপনের ক্ষেত্রে ভারত অর্থায়ন করে। এসবের বিনিময়ে ২০০২ সালে তাজিকিস্তান ফারখোর বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় সৈন্য মোতায়েন করতে দিতে রাজি হয়। কিন্তু ঘাঁটিটি ভারতের একক মালিকানাধীনে ন্যস্ত না করে সেটিকে তাজিকিস্তানি ও ভারতীয় বিমানবাহিনীর যৌথ কর্তৃত্বাধীনে রাখা হয়। ২০০৬ সালে ভারত ঘাঁটিটিতে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রন মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিলেও প্রক্রিয়াটি স্তিমিত হয়ে যায়। ফারখোর বিমানঘাঁটি ব্যবহারের অনুমতি লাভের পাশাপাশি ভারত তাজিকিস্তানে আয়নি বিমানঘাঁটি ইজারা লাভের প্রচেষ্টা চালায়, যেটি দুশানবে থেকে ১০ কি.মি. দূরে অবস্থিত। সোভিয়েত আমলে এটি সোভিয়েত বিমানবাহিনীর একটি বড় ঘাঁটি ছিল, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের পর ফারখোর বিমানঘাঁটির মতো এটিও পরিত্যক্ত হয়। ২০০২-২০১০ সালের মধ্যে ভারতীয় সরকার আয়নি বিমানঘাঁটির সংস্কারের জন্য ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে। প্রথমে একটি ভারতীয় কোম্পানিকে এই কাজ দেয়া হলেও কোম্পানিটি নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়। এরপর ভারতের আধা সামরিক সংগঠন বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনকে ঘাঁটিটি সংস্কারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ভারতীয়রা ঘাঁটিটির রানওয়ে প্রশস্ত করে এবং সেখানে অত্যাধুনিক বিমান চালনা সংক্রান্ত ও এয়ার ডিফেন্স সরঞ্জাম মোতায়েন করে। ২০০০ এর দশক থেকে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমশ সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে তাজিকিস্তানে ভারতীয় বিমানঘাঁটি স্থাপন প্রকারান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে বলে মস্কো বিবেচনা করে। এজন্য রাশিয়া আয়নি বিমানঘাঁটি ভারতকে ইজারা না দেয়ার জন্য তাজিকিস্তানের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। তাজিকিস্তান অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল, ফলে রুশ চাপ উপেক্ষা করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।

https://eurasiantimes.com/india-ayni-airbase-in-tajikistan-russian/

ভারতীয় সরকার মধ্য এশিয়ায় কূটনৈতিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে ফারখোর বিমানঘাঁটিতে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক মিগ-২৯ বহর মোতায়েন করার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনি। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তাজিকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হামরোখোন জারিফি ঘোষণা করেন আয়নি বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় বা মার্কিন সৈন্য মোতায়েন করা হবে না। এটি ছিল তাজিকিস্তানে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করার ক্ষেত্রে ভারতের জন্য বড় ধাক্কা। বর্তমানে আয়নি বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় সামরিক উপস্থিতি না থাকলেও ফারখোর বিমানঘাঁটিতে মোতায়েনকৃত ভারতীয় উপদেষ্টাদের (!) রসদপত্র সরবরাহ করার জন্য ঘাঁটিটি ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি চীন তাজিকিস্তানের অভ্যন্তরে একটি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করেছে, যেটি সাম্রাজ্যবাদী ভারতের জন্য কৌশলগত পরাজয়।















































Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

চাড্ডিগণ [এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]