ভারতের মাওপন্থী কমিউনিস্টদের কৃষি ব্যবস্থা

 

৭ই নভেম্বর ২০১৭ সালে ভারতের নারায়নপুর জেলার আবুসমারের কাছে হওয়া একটি সংঘর্ষে অ্যান্টি নকশাল ফোর্স নেলনার ক্ষেত্রের জনতানা সরকারের 'ব্যালেন্স শীট' খুঁজে পায়, যে কাগজে বলা হয় নেলনারে গতবছর কোন কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে। এই ব্যালেন্স শীটে আরও বলা হয়  গ্রামে কমিউনিটি স্ট্রাকচার তৈরিতে কত খরচ হয়েছে (কূপ খনন, পুকুর নির্মাণ, চেক ড্যাম নির্মাণ)। এটাও উল্লেখ করা হয় যে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা এই এলাকায় ১৬,০০০ টাকা মূল্যের সেলাই মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে।

https://indianexpress.com/article/india/maoist-papers-show-how-note-ban-didnt-hurt-them-4950367/

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গোয়েন্দা বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে বলে যে এই তথ্য শুধুমাত্র একটি 'জনতানা সরকারের', এই ধরনের অনেক জনতানা সরকার এই অঞ্চলে মাওবাদীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এবং প্রত্যেকের আলাদা ব্যালেন্স শীট রয়েছে। ভারতের মিডিয়া এবং মোদী সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে মাওবাদীদের মত কৃষি ব্যবস্থার মডেলটি বাইরের বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত না হোক, কিন্তু বিখ্যাত বিপ্লবী কবি ভারভারা রাও জনতানা সরকার সম্পর্কে অনেক প্রবন্ধ লিখেছেন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Varavara_Rao

অরুন্ধতী রায় তার প্রবন্ধে জনতানা সরকার সম্পর্কে বলেন যে, জনগণকে সরকার পরিচালনার জন্য সংগঠিত করার এই নীতিটি এসেছে চীনা বিপ্লব এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে। প্রতিটি জনতানা সরকার গ্রামগুলোর নির্দিষ্ট গোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত হয়, যার মিলিত জনসংখ্যা ৫০০ থেকে ৫০০০ হতে পারে। পার্টি সর্বদা এই বিষয়ের উপর নজর রাখে যাতে এতে 'বন্ধু বর্গের' প্রতিনিধিত্ব থাকে, মহিলাদেরও প্রতিনিধিত্ব থাকে।

মাওবাদী দল এবং গণসংগঠনের লোকদের নিয়ে গঠিত বেশ কয়েকটি সরকার নিয়ে গ্রাম রাজ্য কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটিগুলোতে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। জনতানা সরকারে প্রধানত নয়টি বিভাগ রয়েছে-

#কৃষি বিভাগ
ব্যবসা-উদ্যোগ
#আর্থিক
#ন্যায়
#প্রতিরক্ষা
#স্বাস্থ্য
#জন সম্পর্ক
#শিক্ষা-রীতিনীতি
#জঙ্গল বিভাগ

প্রতিটি বিভাগের কমিটি নয় জনকে নিয়ে গঠিত। জনতা সরকারের কৃষি বিভাগের প্রধান কাজ হলো বৈপ্লবিক ভূমি সংস্কার। যা ভারত সরকার ১৯৪৭ সাল থেকে আজ অবধি এড়িয়ে আসছে। জনতানা সরকার তার প্রথম ধাপ সম্পন্ন করেছে এবং এটি বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রথম পর্যায়ে সবাইকে জমি দেয়া হয়েছে। পুরো দণ্ডকারণ্য এলাকায় কোন ব্যক্তি ভূমিহীন নেই। জমি পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের মালিকানাধীন। দ্বিতীয় ধাপে খাদ্য শস্য চাষের জন্য জমির গুণগতমান চিহ্নিত করা এবং গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য কাজ করা হচ্ছে। অতীতেও মাটির গুণমান অনুযায়ী জমি বন্টন করা হয়েছে। যদি নিম্নমানের জমি আগে কাউকে দেয়া হয়ে থাকে, এখন তার ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে। জঙ্গল পুড়িয়ে যাযাবর চাষের জায়গায় এখন স্থায়ী চাষাবাদ চলছে। ভারভারা রাও জনতানা সরকার সম্পর্কে তথ্য দিতে গিয়ে লিখেন যে, জনতানা সরকারগুলোর একটি সম্মেলনে কৃষি বিভাগ এবং বন বিভাগের মধ্যে একটি বিবাদ দেখা দেয় যে বন বিভাগ কৃষি বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তারা  চাষের জন্য জঙ্গলের গাছ নষ্ট করেছে। বিষয়টি সত্য বলে প্রমাণিত হয় এবং কৃষি বিভাগের উপর এই জরিমানা আরোপ করা হয় যে তারা যতগুলো গাছ নষ্ট করেছে ততগুলো গাছ রোপন করতে হবে। কৃষি বিভাগ এই জরিমানা গ্রহণ করে। ভারতের সরকারী রিপোর্টই বলে যে মাওবাদী এলাকায় বন সমৃদ্ধ হয়েছে। দণ্ডকারণ্য জুড়ে কোন নারী বা পুরুষ ভূমিহীন নেই, তবে অপেক্ষাকৃত ধনী কৃষকদের উপস্থিতি রয়েছে। যদি ধনী কৃষক এখানকার মানুষের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ করে তাহলে তার জমি নিয়ে নেয়া হয় বা নেয়ার বিধান আছে, কিন্তু এমন পরিস্থিতি খুব কমই এসেছে। অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে গ্রাম রাজ্য কমিটির তা বিচার করার অধিকার আছে। মাওবাদী দল প্রায়ই জমি পরীক্ষণ এর জন্য কর্মশালার আয়োজন করে, যার মধ্যে কৃষি এবং বন বিভাগ উভয়ই জড়িত। এই কর্মশালায় কৃষিকাজে দক্ষতা বৃদ্ধি, গুণগত মান বৃদ্ধি, সেচ ব্যবস্থার উন্নতি, ছোট পুকুর খনন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অনেক গ্রাম সেচের জন্য ছোট ছোট চেকড্যাম তৈরি করেছে, এই সব বিকাশ বিভাগের সহযোগিতায় করা হয়। বৃষ্টি এবং পাহাড় থেকে আসা জলকে পুকুরে  সংগ্রহের জন্য খাল তৈরি করা হয়েছে। যেখানে পুকুরগুলো সেচের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, সেই পুকুরটি মাছ চাষের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই পুকুরটি সম্মিলিতভাবে গ্রামের, তাই মাছগুলোও গ্রামের। সবুজ বিপ্লবের সময় যখন ভারতের কৃষি ক্ষেত্রগুলোকে সাম্রাজ্যবাদী বাজারের বীজ এবং সার দিয়ে ফসল এবং মানুষকে অসুস্থ করে দেয়া হয়, তখন জনতানা সরকারের কৃষি বিভাগ কৃষিতে সার ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করে। বনের মধ্যে ঝরে পড়া পাতা এবং পশুর গোবর সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গোবর সংগ্রহের জন্য পশুদের মাঠে বাধা হয়। ধান, ভুট্টা,ডাল ছাড়াও অন্যান্য ফসলের চাষ করা হয়, যা শুকনোর সময় কাজে আসতে পারে। প্রতিটি বাড়িতে শাকসবজি এবং ফল উৎপাদন করার জন্য উৎসাহিত করা হয়। যারা সেরা উৎপাদন করে তারা পুরস্কৃত হয়। বেশিরভাগ জায়গায় বছরে দু'বার ফসল হয়, যা জনতানা সরকারের দৃষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। যেসব এলাকায় বছরে দু'বার ফসল হয় না, সেখানে এর জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে; কারন এই সব এলাকায় বছরে দু-তিন মাস খাবারের জন্য পর্যাপ্ত ফসল থাকেনা।

মাওবাদী পার্টি দু'ফসলের জন্য উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে মানুষকে উৎসাহিত করার কাজে গুরুত্ব সহকারে নিয়োজিত। এছাড়া সবজি উৎপাদনে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে, যা শীতকালে বেশি হয়। এলাকায় একটি ছোট চালকল রয়েছে।

জনতানা সরকারের কৃষির রাজনীতির দু'টি বিষয়-

#সমবায় কৃষি
#সমষ্টিগত কৃষি

সমবায় চাষের ক্ষেত্রে ৪ বা ৫ টি পরিবার একসাথে একটি দল গঠন করে। প্রতিটি বাড়িতে একটি খামার এবং চাষের সরঞ্জাম থাকে। এক দল অন্য দলের সাথে একসাথে কাজ করে। ধরা যাক A এবং B টিম আছেটিম A আগে টিম B এর সাথে তাদের মাঠে কাজ করবে, তারপর টিম B টিম A এর মাঠে কাজ করবে। যেহেতু সেখানে সমবায় চাষ শুরু হয়েছে, তাই কেউ শ্রমিক নয়; অন্যের খামারে কাজ করে এমন একজন সহকর্মী।

সমষ্টিগত চাষের ক্ষেত্রে সেই সব জমিতে সমস্ত লোকের দ্বারা চাষাবাদ করা হয়, যা সরকার জমিভাগের সময় নিজের কাছে রেখেছিল। জমি বন্টনের সময় জনতানা সরকার নিজেদের জন্য কিছু জমি বরাদ্দ করে, যার উপর মানুষ সম্মিলিত শ্রম করে খাদ্য ফলায়।

ভারভারা রাও তার প্রবন্ধে ব্যাখ্যা করেছেন-

"ধরে নিচ্ছি যে মোট ৪০০ একর জমি আছে, তারপর ৩৭০ একর জমি মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয় এবং ৩০ একর জমি সরকার যৌথ চাষের জন্য রাখে। সরকারী কমিটির নেতৃত্বে এই জমিতে মানুষ সম্মিলিত চাষ করে। এই জমির উৎপাদন তিন ভাগে বিভক্ত। এর একটি অংশ গ্রামের সম্মিলিত স্বার্থে ব্যবহৃত হয়। একটি অংশ কৃষি যন্ত্রপাতি, ওষুধ বা যাদের পর্যাপ্ত শস্য নেই বা যাদের চাষ কম হয়েছে তাদের জন্য রাখা হয়। মহুয়া বাছার সময়ের জন্য কিছু অংশ সুরক্ষিত রাখা হয়। অবশিষ্ট অংশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যয় করা হয়, কারণ 'জনতানা সরকার' এখানকার মানুষের ভাষায় সর্বদা 'লুটি সরকার' এর টার্গেট।"

সালওয়া জুডুমের সময় জনতানা সরকারের এলাকাগুলো প্রথম লক্ষ্য ছিল এবং এই প্রচেষ্টা আজও অব্যাহত রয়েছে।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Salwa_Judum

পিএলজিএ কেবল তাদের সুরক্ষায় কাজ করে না, জনকল্যাণেও কাজ করে।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/People%27s_Liberation_Guerrilla_Army_(India)

তুলার মতো নগদ ফসলের উৎপাদন নিরুৎসাহিত করা হয়, এমনকি কিছু জায়গায় এটি নিষিদ্ধকিন্তু কিছু এলাকায় চাষ করা হয়, যেখানে এটি 'শৃঙ্খলাবদ্ধ' বলে বিবেচিত হয়, কিন্তু কখনও কখনও কৃষি কমিটি নিজেও এই নিয়ম ভাঙে। এটি বেশিরভাগ রাস্তার পাশের গ্রামগুলোতে হয় যেখানে বাজার প্রবেশ করেছে এবং যেখানে কোনও গ্রাম রাজ্য কমিটি নেই। এখানে তাদের শিক্ষিত করার এবং তাদের রাজনৈতিক চেতনা দেয়ার কাজ করা হচ্ছে।

ভারভারা রাও বলেন-

"আসলে, রাষ্ট্র দু'টি উপায়ে এই অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করছে- একটি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এবং অন্যটি বাজারের মাধ্যমে।" 

এখানেও সাপ্তাহিক বড় বাজার বসেকিন্তু এখানে বিক্রিত পণ্যের দাম বাইরের বাজার দ্বারা নির্ধারিত হয় না, বরং জনতানা সরকার দ্বারা হয়; সেগুলো মহাজন বা মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে বাজারে আনা হয়ে থাকলেও। মহারাষ্ট্রের কৃষক সমাবেশে অধিকাংশ ভূমিহীন দলিত ও আদিবাসী কৃষকরা অংশ নিয়েছিল। তারা পাট্টা জমি গ্রহণ এবং বন উৎপাদনের উপর তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সমাবেশে যোগ দিয়েছিল, ভূমিহীন অবস্থায় তারা কৃষি শ্রমিক হয়ে গেছে। মোদী সরকারের  দালাল বিশ্লেষকরা বলেছে যে কৃষি সংকটের অন্যতম কারণ হলো উচ্চ কৃষি মজুরি এবং তারা কম মজুরিকে কৃষির জন্য উপকারী বলে মনে করে, কিন্তু ভূমিহীন দলিত আদিবাসীদের এই বড় অংশকে চাষের জমি দিয়ে কৃষি সংকটের সমাধান করা আর সামাজিক বৈষম্য দূর করার কথা কখনো বলে না এরা। একটি অ্যাসপেক্ট স্টাডি অনুসারে, ৮০% দলিত এবং ৯২% আদিবাসী গ্রামাঞ্চলে বাস করে  এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় কৃষির উপর তারা বেশি নির্ভরশীল। গ্রামীণ ভারতে ২১% পরিবার দলিতদের, কিন্তু কৃষি ব্যবহারের জন্য ব্যবহৃত মোট জমির মাত্র ৯% দলিতদের কাছে রয়েছে। অর্ধেকের বেশি দলিতদের কাছে অর্ধেক হেক্টরেরও কম জমির  মালিকানা ছিল। 'ভারতীয় বন আইন ১৯২৭' এর সংস্কার করার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বন দখল এবং আদিবাসীদের দখলদার ঘোষণা করা হয়। ১৯৪৭ সালের পরও এই আইনে নতুন নতুন অংশ যুক্ত করে এটি আরও আক্রমণাত্মক করা হচ্ছে। যেসব এলাকা জনতানা সরকার জমি বণ্টন বাস্তবায়ন করছে, সেই আদিবাসী ক্ষেত্রগুলোই বেশি করে সালওয়া জুডুম বা মাওবাদ বিরোধী সামরিক অভিযানের শিকার হচ্ছে। সাধারণত সরকারি যোজনাগুলোতে গ্রাম সমাজের জমির পাট্টা বিতরণের ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় মহিলা  পুরুষ উভয়কে যৌথভাবে দেয়ার কাগজের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু কাগজের বাইরে এর কোন অস্তিত্ব নেই। উত্তর প্রদেশে যোগীর সরকার গ্রাম সমাজের জমির পাট্টার মাধ্যমে জমি দেয়ার ব্যবস্থা শেষ করছে এবং একইসাথে পাট্টার জমিগুলো ফিরিয়ে নেয়ার মহড়া শুরু করেছে। ২০০৪ সালে যখন অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার মাওবাদী দলকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, মাওবাদীদের আট সদস্যের প্রতিনিধি দল যারা তাদের পক্ষে শান্তি আলোচনায় এসেছিল, তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল সরকার অন্ধ্রপ্রদেশের ভূমি মালিকদের কাছ থেকে জমি নেবে এবং ভূমিহীনদের মধ্যে বিতরণ করবে। তারা তৎকালীন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএসআর রেড্ডির কাছে সেই জমির মালিকদের একটি তালিকা জমা দিয়েছিল যাদের হাজার হাজার একর জমি ছিল। এদের মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও থেকে শুরু করে অনেক মন্ত্রী, নেতা, বিধায়ক, এমপি এবং শিল্পপতিদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। যে হোটেলে রামকৃষ্ণার নেতৃত্বে মাওবাদী প্রতিনিধিদল ছিল, তাদের সাথে দেখা করার এবং তাদের সমস্যা বলার লোকের লাইনও ছিল যেখানে চাষের জন্য পাওয়া জমির মালিকানা অধিকার পাওয়া একটি বড় সমস্যা ছিল। এসব শুনে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, জমিদারদের বন্ধু এবং কর্পোরেটদের দালাল সরকার দাবিগুলো পূরণ করতে পারতো না। তিনি এসব দাবির প্রতি তীব্র আপত্তি জানান। শীঘ্রই তিনি আলোচনার বাইরে বেরিয়ে আসেন এবং আলোচনা ভাঙার জন্য মাওবাদীদের দায়ী করেন। ভারতের সরকারগুলো সাম্রাজ্যবাদী কর্পোরেটগুলোতে শ্রমিকদের বেতন কম রাখতে এবং খাদ্যশস্যের বাজারে লাগাম কষে রাখতে চায়। একদিকে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রতিটি জিনিসে সাম্রাজ্যবাদী কর্পোরেটদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে যারা সার, বীজের দাম সর্বদা বাড়িয়ে রাখে। অন্যদিকে সরকারগুলো 'গরিব জনতা'র অজুহাত দিয়ে খাদ্যশস্যের দাম বাড়তে দেয় নাকারণ এটির বৃদ্ধির সাথে ন্যূনতম বেতনের বৃদ্ধি করতে হবে, যা কর্পোরেটদের স্বার্থের জন্য নেতিবাচক। ভারতের ক্ষমতাসীন সরকার কৃষকদের উত্থাপিত দাবি প্রথমে মেনে নেয়নি এই অজুহাতে যে এটি মুদ্রাস্ফীতি বাড়াবে। অর্থাৎ সমাজে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর দায়িত্ব শুধু কৃষকদের উপর, কর্পোরেটদের উপর নয়। এটি কৃষির সংকট নয়, এটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংকট। 



Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

দেশ যখন ইসলামাইজেশন এর পথে [পর্ব-এক]