সোভিয়েতদের মহান শিক্ষক আইনী

এটা খুব কমই ঘটে যে একজন ব্যক্তির জীবনী প্রায় সম্পূর্ণরূপে তার জনগণের জীবনীর সাথে মিশে গেছে, যেমনটি ঘটেছিল সাদরিদ্দিন আইনীর সাথে। তার জীবন তাজিকদের জীবনের সাথে অবিচ্ছিন্নভাবে জড়িত- আশাহীন অতীতের অন্ধকার বছরগুলো থেকে সোভিয়েত তাজিকিস্তানের সুখী দিনগুলো পর্যন্ত। আইনী সাহেব বেঁচে থাকাকালীন যদি ধাপে ধাপে প্রায় পুরো শতাব্দী ধরে ঘটনাগুলোর ঝড়ো ধারা অনুসরণ করা হয়, তখন এটি একটি সম্পূর্ণ জাতির ভাগ্য পরিবর্তনের গল্প হয়ে দাঁড়াবে। কীভাবে দারিদ্র্য এবং অভাব থেকে শ্রমজীবী মানুষ সুখ এবং আলোর দিকে এগিয়ে গিয়ে বহুজাতিক সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের পনেরটি প্রজাতন্ত্রের মধ্যে একটি তৈরি করেছিল সেই গল্প। প্রথমে ছোটবেলায়, তারপর যুবক হিসেবে এবং পরিশেষে একজন পরিপক্ক ব্যক্তি হিসাবে আইনী তার জাতির লোকেরা যা দেখেছিল এবং অনুভব করেছিল তা দেখেছেন এবং অনুভব করেছেন। অতএব আইনীর জীবন আমাদের জন্য তার লোকদের ভ্রমণ করা বেদনাদায়ক পথের প্রতীক হয়ে উঠে। বোখারা আমিরাতে এই অসামান্য তাজিক লেখকের জীবনের প্রথমার্ধে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। তাঁর জীবনের দ্বিতীয়ার্ধ একটি নতুন, উজ্জ্বল সময়ে সংঘটিত হয়, যখন মহান অক্টোবর বিপ্লবের তাজা বাতাস আমাদের পৃথিবীর গা থেকে মানুষের দ্বারা মানুষের শোষণের সামন্ততন্ত্রের বর্বরতা ধুয়ে ফেলে।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Emirate_of_Bukhara

আর সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের ভ্রাতৃত্বপ্রতিম ইউনিয়নে একজন দেশপ্রেমিক লেখকের প্রতিভা সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হয়। আইনীর অদ্ভুত প্রতিভা তাজিকদের হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতির সমস্ত ঐশ্বর্যকে শুষে নিয়েছিল, যা যত্নের সাথে অবিজিত মানুষদের আত্মার অক্ষয় ভাণ্ডারে সংরক্ষিত ছিল। আসুন আমরা লেখক এবং নাগরিক হিসেবে তাঁর নিজের সাক্ষ্যের দিকে ফিরে যাই, এমন একটি জীবনের সমসাময়িক হিসাবে যা চিরকাল অতীতের বিষয়। আসুন আমরা সাধারণ জনগণের ঐতিহাসিক আইনী এবং রুদাকীর সময় থেকে আমিরাতের শেষ সময় পর্যন্ত মানুষের ইতিহাসের দিকে ফিরে যাই।

ধ্রুপদী তাজিক কবিতার প্রতিষ্ঠাতা অসাধারণ কবি রুদাকী দারিদ্র্য ও নির্বাসনে তাঁর শেষ দিনগুলো কাটিয়েছেন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Rudaki

বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মেধাবী ফেরদৌসী সুলতান মাহমুদের অত্যাচার থেকে আত্মগোপন করেছিলেন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Mahmud_of_Ghazni

কয়েক দশক ধরে মহান তাজিক চিন্তাবিদ, বিশ্বকোষ বিজ্ঞানী আবু আলী ইবনে সিনা তার জন্মভূমি থেকে দূরে ঘুরে বেড়ান। স্বাধীনতাচেতা কবি আদিব সোবীর তেরমেজীকে আমু দরিয়ার জলে ডুবিয়ে মারা হয়।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Adib_Sabir

কামোল খুজান্দি একটি দুর্গের অন্ধকূপে বন্দী ছিলেন এবং তিনি তার জন্মভূমি থেকে অনেক দূরে মারা যান।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Kamal_Khujandi

এরা হলেন আইনীর গৌরবময় পূর্বসূরী, যারা দশ শতাব্দী ধরে পরস্পরের হাত থেকে স্বাধীনতা এবং মানবতাবাদের মশাল বহন করে নিয়ে গেছেন। অনুরূপ তিক্ত পরিণতি তার অনেক সমসাময়িক শিক্ষক এবং বন্ধুদের হয়েছিল। বিজ্ঞানী এবং লেখক আহমদ ডোনিশ (কাল্লা), যাকে আইনী সাহেব সম্বোধন করেছিলেন "বুখারার অন্ধকার আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র"; তিনি নিরন্তর দারিদ্রের মধ্যে বাস করতেন এবং বারবার প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির জন্য নিপীড়নের স্বীকার হন।

https://uz.m.wikipedia.org/wiki/Ahmad_Donish

তার সময়ের সবচেয়ে শিক্ষিত কবি জুফুনুন, যিনি তার কবিতায় আমিরাতের শাসক চক্রের তীব্র নিন্দা করেছিলেন, তাকে উন্মাদ হওয়ার ভান করতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমিরের আদেশে কবি সাখবোকে হত্যা করা হয়। দারিদ্র্যে, যক্ষ্মার জ্বরে কবি শোখিন এবং আইনীর নিকটতম বন্ধু প্রতিভাবান কবি-শিক্ষাবিদ খায়রাত মারা যান। সামন্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রযন্ত্র, বুখারার আমিরের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নিপীড়ন নির্দয়ভাবে সমস্ত মুক্ত চিন্তাকে ধ্বংস করে। জারিস্ট রাশিয়ার জঘন্য শাসনে বিশ্ববিখ্যাত রাশিয়ান লেখক এবং চিন্তাবিদ গ্রিবোয়েদভ এবং পুশকিন, লেরমন্টভ এবং বেলিনস্কির মতো তাজিকদের সেরা বুদ্ধিজীবীরা আমিরাতের অন্ধকূপে ধ্বংস হয়েছিল।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Alexander_Griboyedov

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Alexander_Pushkin

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Mikhail_Lermontov

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Vissarion_Belinsky

আজও অনেক শিল্পীর ভাগ্য, যারা তাদের জনগণের সত্যিকারের সন্তান; (যেমন- পাবলো নেরুদা, নাজিম হিকমেত) আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে স্বাধীনতাপ্রেমী কবিদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াশীলদের দ্বারা কী প্রস্তুত করা হয়েছিল।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/N%C3%A2z%C4%B1m_Hikmet

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Pablo_Neruda

কিন্তু জনগণের প্রবল শক্তি ভাঙা যাবে না এবং ধ্বংস করা যাবে না। আমাদের যুগের সত্য আমাদের এই সম্পর্কে বলে, সমস্ত মানবজাতির ইতিহাস এর সাক্ষ্য দেয়। জনগণ অমর। সবচেয়ে কঠোর নিপীড়ন এবং শোষণের পরিস্থিতিতে তাজিকরা তাদের ভাষা ও সাহিত্য সংরক্ষণ করেছে এবং বিকাশ ঘটিয়েছে, তাদের বীরত্বপূর্ণ মহাকাব্য এবং হৃদয়গ্রাহী গানের নমুনা আমাদের সময়ে নিয়ে এসেছে। তলোয়ার ও চাবুকের অধীনে, সামন্তবাদী যুদ্ধ, বিজয় ও অন্তর্বর্তী যুদ্ধ এবং অভিযান যা দেশকে ধ্বংস ও বিধ্বস্ত করেছে, সেসকল সময়েও মানুষ জমি চাষ করেছে, শহর তৈরি করেছে, অসাধারণ স্থাপত্যের স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছে, সেচের খাল স্থাপন করেছে, সুন্দর সঙ্গীত এবং চমৎকার গান রচনা করেছে। অক্টোবর বিপ্লবের আগে তাজিক জনগণের ইতিহাস শুধু তাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ইতিহাস নয়। শ্রমজীবী জনগণের উপর নিপীড়ন ও দাসত্বের বিরুদ্ধে এটি তাদের স্বাধীনতা ও সুখের জন্য সংগ্রামের গল্প। আইনী সাহেব তার রচনায় তাজিক জনগণের কিংবদন্তি নায়ক মুকান্নার অষ্টম শতাব্দীতে আরব আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান, চেঙ্গিস খানের বর্বরতা থেকে খুজান্দ শহরকে রক্ষাকারী সাহসী যোদ্ধা তৈমুর মালিক, বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বুখারার কারুশিল্প কর্মশালার কর্মীরা যারা তাদের মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট ছিল এবং দোহুন্ডার আত্মসচেতনতা জাগ্রত করার প্রক্রিয়া; একটি নতুন জীবনের জন্য, তার জন্মভূমিতে সোভিয়েত শক্তি তৈরি এবং শক্তিশালী করার জন্য পাহাড়ের এই বাসিন্দার সক্রিয় যোদ্ধাদের মধ্যে আগমনের কথা নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছেন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Al-Muqanna

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Timur_Malik

আইনীর শৈশব ও যৌবন কেটেছে মানুষের মাঝে। তিনি তাদের বেদনায় ভারাক্রান্ত ছিলেন, তাদের আনন্দে উল্লাসিত ছিলেন। কিংবদন্তিগুলো থেকে তিনি তাজিকদের বীরত্বপূর্ণ অতীত সম্পর্কে জানতে পারেন এবং পুরো জীবন তার পূর্বপুরুষদের গৌরবময় কাজের জন্য বিশুদ্ধ ভালবাসা এবং প্রশংসা নিজের ভেতর বহন করেন। তাজিকদের জমির প্রতিটি ইঞ্চি এই গৌরবে আবৃত। আইনীর পিতা সৈয়দ মুরোদ খোদজা ছিলেন বংশগত কারিগর এবং একজন শিক্ষিত ব্যক্তি, শৈল্পিক শব্দের জ্ঞানী। ভবিষ্যতের লেখক তার বাবার কাছ থেকে কবিতার প্রতি ভালবাসা এবং অন্তর্দৃষ্টি ধারণ করেছিলেন। ছোট গ্রাম সকতার এবং উচ্চ মহল্লায় জীবন- যেসব জায়গায় আইনি তার শৈশব কাটিয়েছেন সেগুলো সামন্ততান্ত্রিক বুখারার সমাজ ব্যবস্থার সমস্ত বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত করে। আশেপাশের গ্রামের সকল কৃষকরা এভাবেই জীবনযাপন করতো, এভাবেই বুখারার কারুশিল্প জেলায় শ্রমিকরা বাস করতো যেখানে শিক্ষা লাভের জন্য তার বাবা মারা যাওয়ার পর যুবক আইনী আসেন। একটি সরু দরজা দিয়ে মাদ্রাসার বদ্ধ এবং অন্ধকার কক্ষে ঢুকতে হতো; যেটির মধ্য দিয়ে মানুষ, বায়ু এবং সূর্য একই সময়ে প্রবেশ করতে পারতো না। কক্ষটি সমগ্র পুরানো বুখারার চিত্র তুলে ধরতো। শত সহস্রের জন্য দারিদ্র্য এবং কয়েকজনের জন্য সম্পদ, মানুষের অধিকারের অভাব এবং অনিয়ন্ত্রিত নিষ্ঠুর স্বৈরতন্ত্র- এটাই ছিল জীবনের তিক্ত সত্য এবং ধার্মিক প্রার্থনার কোন কুয়াশা এটিকে সজাগ দৃষ্টি এবং অনুসন্ধানী হৃদয় থেকে আড়াল করতে পারে না। একজন পরিপক্ক ব্যক্তি হয়ে আইনী নিজের মধ্যে সত্যের জন্য লড়াই করার, মানুষের কাছে সত্য পৌঁছে দেয়া এবং তাদের আলোকিত করার সংকল্প নিয়েছিলেন। তিনি অক্লান্তভাবে এই সত্যের পথ খুঁজতেন এবং আহমদ দোনিশের শিক্ষাগত ধারনা উৎসাহের সাথে গ্রহণ ও অব্যাহত রেখেছিলেন। মার্কসবাদের বৈপ্লবিক তত্ত্বের জ্ঞান দ্বারা সমর্থিত না হওয়া এই অনুসন্ধানগুলো কখনও কখনও আইনীকে বিভ্রান্তির দিকে নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে তিনি জাদীদের বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে যোগ দিয়ে তাদের মিথ্যা ঘোষণাকে আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করেছিলেন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Jadid

জনগণকে সাহায্য করার তার মহৎ আকাঙ্ক্ষায়, আইনী সাহসের সাথে এবং সৎভাবে তার মনোনীত পথে হাঁটলেন। তিনি "নতুন পদ্ধতির স্কুল" তৈরিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের জন্য পাঠ্যপুস্তক লিখেছিলেন এবং তাদের শিক্ষা দিয়েছিলেন। যখন আমিরের আদেশে স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যায়, তখন আইনী তার শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যান সিক্রেট সোসাইটি "এডুকেশন অব ইয়ুথ" এর মাধ্যমে, যেটার লক্ষ্য ছিল নতুন ধরনের সাহিত্য প্রচার করা এবং আমিরের শাসনের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করা। একই সময়ে আইনী তাজিক ভাষার প্রথম সংবাদপত্রে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছিলেন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Bukharaye_Sharif

বুখারার মোল্লাদের আক্রোশ এবং শাসকদের আভিজাত্যের ক্ষোভ আইনীকে দমাতে পারেনি। তিনি বুখারার আমিরের রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠেন এবং বিদ্রোহী হিসেবে জল্লাদদের হাতে ধরা পড়ে দোররা দিয়ে পঁচাত্তর বার বারির শাস্তি পান। সর্বোপরি আইনীর হৃদয়ে জ্বলতে থাকা ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার প্রতি ভালবাসা বহু শতাব্দী ধরে মানুষেরা হৃদয়ে বহন করেছিল, যা তিনি মাতৃভূমির যোগ্য পুত্র হিসাবে উত্তরাধিকার সূত্রে ছড়িয়ে দিয়ে গেছেন। বুখারার জল্লাদরা হিসাবে ভুল করেছিল। লেখকের সাহসী চেতনা ভেঙে পড়েনি, ঠিক যেমন বুখারা আমিরাত এবং জারিস্ট স্বৈরাচারের দ্বৈত শোষণের শিকার সমগ্র তাজিক জনগণের সাহসী আত্মা ভেঙে পড়েনি। লাল ফৌজের বীর যোদ্ধারা আইনীকে কারাগার থেকে মুক্ত করে। বুখারা আমিরাতের পতনের আগেও তিনি বন্ধুত্বপূর্ণ হাতের উষ্ণতা এবং রাশিয়ার জনগণের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সাহায্য অনুভব করেছিলেন। শীঘ্রই সমগ্র তাজিক জনগণ সাম্রাজ্যবাদের নিপীড়ন এবং অত্যাচার থেকে মুক্তি পেয়েছিল সোভিয়েত রাশিয়ার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সহায়তার জন্য, মহান সমাজতান্ত্রিক অক্টোবর বিপ্লবের ঐতিহাসিক বিজয়ের ফলে।

আইনী একবার বলেছিলেন-

"যদি কবিতা না হতো, তাহলে আমি আমিরের বুখারায় পাগল হয়ে যেতাম জল্লাদ, অস্পষ্টবাদী এবং ধর্মান্ধদের এই জমায়েতে।"

উক্তিটি তার বিস্তৃত এবং বৈচিত্র্যময় সামাজিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম, যেসব কাজ আধা-বেআইনী এবং এমনকি সম্পূর্ণ অবৈধ, এমন কার্যকলাপ দ্বারা প্রমাণিত হয় যা তাকে নৈতিক সন্তুষ্টি এনে দিয়েছিল। আইনী তার যৌবনকাল থেকেই কবিতা লিখতে শুরু করেছিলেন ধ্রুপদী কাব্য রচনার কৌশল আয়ত্ত করে এবং সেগুলো সর্বদা জ্ঞানীদের কাছে জনপ্রিয় ছিল। এই কবিতাগুলো, গজল এবং মুহাম্মাস ঐতিহ্যগতভাবে ফুলের রূপকের একটি সম্পূর্ণ পরিসর দিয়ে সজ্জিত ছিল, কারণ হৃদয়ের ব্যথা যথাসম্ভব গভীরভাবে লুকিয়ে রাখতে হয়েছিল। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Mukhammas

কিন্তু এটি ভেঙে গেলো, সমস্ত রীতিকে ঝেড়ে ফেললো যখন কবি জানতে পারলেন যে তার ছোট ভাই হাজী সিরাজউদ্দিনকে ১৯১৮ সালে আমির কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল।

"কবিতার কবিকে গোলাপ, মধুরতা, স্বপ্ন এবং বাস্তবতা সম্পর্কে আর জিজ্ঞাসা করবে না...

এবং তারা যাচ্ছে, প্রতিশোধের জন্য উদ্দীপ্ত হচ্ছে,

কবিতাকে ঘৃণা করো, কোন ছড়া এবং কোন উপাধি নেই।"

এটি নতুন এক আইনীর দ্বারা লেখা হয়েছিল, যিনি ততদিনে বিপ্লবের কবিতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। সব যুগেই স্বাধীনচেতা তাজিকরা তাদের নিজস্ব মুক্তির গান রচনা করেছে এবং গেয়েছে। জনগণের গায়কদের অন্ধকূপে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, কিন্তু কেউ তাদের চুপ করাতে সক্ষম হয়নি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আলোকবর্তিকার মতো পথ দেখিয়ে স্বাধীনতার পবিত্র গানগুলো হাজার হাজার বছর ধরে চিরস্থায়ী এবং শক্তিশালী হয়ে রয়ে গেছে। সদরদ্দিন আইনীর 'স্বাধীনতার পদযাত্রা'য় এসব গান শান্তি, শ্রম এবং ভ্রাতৃত্বপূর্ণ বন্ধুত্বের মহান সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সরাসরি আহ্বানের মতো শোনাচ্ছিল। তিনি তার বিপ্লবের নগ্ন সত্য, তার আন্দোলন এবং প্রচারণার তীব্রতায় দৃঢ় ছিলেন। কিন্তু তিনি শাস্ত্রীয় কবিতার পন্ডিতদের মধ্যে বিভ্রান্তির অনুভূতি সৃষ্টি করেছিলেন, যারা সকল কাব্যিক ঐতিহ্য ত্যাগ করার জন্য আইনীর নিন্দা করেছিলেন। তাজিক জনগণ অবিলম্বে উৎসাহের সাথে আইনীর কবিতা আপন করে নেয়। সর্বোপরি এতে ব্যবহৃত শব্দগুলো শোনাচ্ছিল তাদের রুটি, পৃথিবী এবং পানির মতোই সহজ এবং বোধগম্য।

"এখন থেকে, স্বাধীনতা শেকল থেকে মুক্ত।

রাজা এবং আমিরদের প্রতি সমুচিত প্রতিশোধ!

এখন থেকে তাদের বিশ্ব শাসন করতে দিন, শ্রমজীবীদের!

মুক্ত শ্রমজীবীদের!"

তাজিকদের দেশে অক্টোবরের মহান সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব এসেছিল বহু প্রতীক্ষিত বসন্তের মতো। এটি শ্রমজীবী মানুষের হৃদয়কে জীবনদায়ক উষ্ণতায় উষ্ণ করেছে, সুখের রাস্তা আলোকিত করেছে, তাজিক জনগোষ্ঠীসহ মধ্য এশিয়ার সকল মানুষকে উন্নীত এবং পুনরুজ্জীবিত করেছে। এই বিপ্লব আইনী সাহেবকে একজন লেখক এবং নাগরিক হিসাবে সত্যিকার অর্থে উদ্দীপিত এবং পুনরুজ্জীবিত করেছে। তখন তিনি মার্কসবাদ-লেনিনবাদের শিক্ষার মাহাত্ম্য ও শক্তি উপলব্ধি করেন এবং তা হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করেন। মহান এই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল শুধু আইনির আশেপাশের বিশ্বে নয়, লেখকের চেতনায়ও।

“আমি ৪০ বছর বয়সী ছাত্র হিসাবে অক্টোবরের সাথে পরিচিত হয়েছি এবং সেই বয়সে আমি অক্টোবরের স্কুলে প্রবেশ করেছি। এই স্কুলটি আমাকে গড়ে তুলেছে এবং এটি ছেড়ে যাওয়ার পরে আমার পুনর্জন্ম হয়েছে বলে মনে হয়েছে।"

কেবল বিমূর্ত জ্ঞান নয়; বরং একটি নতুন জীবনের জন্য, একটি বাস্তব জগতের সংগ্রামের জন্য, সাম্যবাদের জন্য, মানুষের ভালোর জন্য, শৈল্পিক শব্দ দিয়ে বিপ্লবের সেবা করার জন্য সেদিন থেকে সদরুদ্দিন আইনীর জীবনের প্রতিটি দিন নির্ধারণ হয়েছে। বিপ্লবের কাজে আইনীর প্রথম উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল 'স্বাধীনতার পদযাত্রা' কবিতাটি। লড়াইয়ের বিপ্লবী চেতনায় ভরপুর এই ডানাওয়ালা গান থেকে তাজিক সোভিয়েত সাহিত্যের কালানুক্রমিক যাত্রা শুরু হয়, যা ছিল বিষয়বস্তুতে সমাজতান্ত্রিক এবং কাঠামোয় জাতীয়তাবাদে সমৃদ্ধ। সেখান থেকেই আইনী সাহেব কমিউনিজমের জন্য নিবেদিতপ্রাণ যোদ্ধাদের সারিতে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন, যিনি ছিলেন তাজিক সোভিয়েত সাহিত্যের প্রতিষ্ঠাতা; কেবল কথাসাহিত্যে নয়, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও। ১৯১৯-১৯২১ সালে তিনি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ইস্যুতে লিথোগ্রাফিক পদ্ধতিতে সমরকন্দে প্রকাশিত প্রথম তাজিক সোভিয়েত ম্যাগাজিন "শুলাই ইনকিলব" ("বিপ্লবের শিখা") এ লেখালেখি করেছেন। আইনী ছিলেন সোভিয়েত স্কুলগুলোতে প্রথম তাজিক শিক্ষক, যাকে সোভিয়েত ইউনিয়ন শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাঠ্যপুস্তকের লেখক ও সংকলক হিসেবে নিয়োগ দেয়। তিনি সারাজীবন সাধারণ মানুষের জন্য পাঠ্যপুস্তক সংকলনের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, সর্বদা ছিলেন বিস্তৃত এবং আধুনিকতম চিন্তাধারার এক শিক্ষাবিদ। ১৯২৫ সালে আইনী প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত তাজিক সাহিত্যের প্রথম সংকলন তৈরী শুরু করেন। অক্টোবরের স্কুল থেকে নতুন এক মানুষ হয়ে বের হয়ে আসার পর এই বিপ্লবী তাঁর জনগণের হাজার বছরের ইতিহাসের সাংস্কৃতিক সম্পদ পুনর্বিবেচনা এবং মূল্যায়ন করেন; সঞ্চিত সম্পদের মধ্য থেকে সেরা, সর্বাধিক উন্নত, প্রগতিশীল যা তাদের সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনের নতুন জীবন গঠনে প্রয়োজন ছিল। এই কাজটি বিজ্ঞান হিসাবে তাজিক ধ্রুপদী ভাষাবিজ্ঞানের প্রথম পৃষ্ঠাটি খুলে দেয় যা প্যান-তুর্কীদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিল, যারা তাজিক জনগণের ইতিহাসকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছিল, সেই সাথে মধ্য এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন জনগোষ্ঠী হিসাবে তাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকেও। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Pan-Turkism#:~:text=Pan%2DTurkism%20is%20a%20political,unification%20of%20all%20Turkic%20peoples. 

এই সময়ের মধ্যে আইনী পাঠকদের কাছে তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ "বুখারা এক্সিকিউশনারস" এবং "ওডিন" উপন্যাসের লেখক হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। তাঁর সৃষ্ট প্রতিটি কাজের লক্ষ্য ছিল একটি নতুন, সমাজতান্ত্রিক জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। লেখালেখি এবং বৈজ্ঞানিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আইনী সোভিয়েত ইউনিয়নের এই প্রজাতন্ত্রের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তাঁর বহুমুখী রচনা দেশের স্বার্থ, আকাঙ্ক্ষা এবং কর্মের প্রতিফলন ঘটিয়ে আবারও লেখককে তাঁর জাতির সঙ্গে ঐক্য এবং অবিচ্ছেদ্য সংযোগ দেখিয়ে দেয় আমাদের। "ওডিন" গল্পের পরে আইনী সাহেব আরও বড় পরিসরে তার কর্ম ছড়িয়ে দেন। তিনি "দোহুন্দা" এবং "ক্রীতদাস" উপন্যাস লেখেন, যেখানে তিনি তার স্বদেশীদের আধ্যাত্মিক ক্রমোন্নতি এবং জনগণের সুখের জন্য তাদের বিপ্লবী সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেন। সোভিয়েত পাঠকরা যথাযথভাবেই "দোহুন্দা" এবং "ক্রীতদাস" উপন্যাসকে তাজিক জনগোষ্ঠীর কয়েক প্রজন্মের জীবনের একটি ঘটনাপঞ্জি বলে অভিহিত করেছেন। প্রকৃতপক্ষে এসব উপন্যাসে আইনী ইতিবাচক চিত্রের একটি সম্পূর্ণ গ্যালারি এঁকেছেন, ব্যক্তি এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর শত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান ঐতিহাসিকভাবে ধারাবাহিক ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক এবং পরিণতি চিহ্নিত করে। উপন্যাসের প্রথম অংশে সামন্তবাদী ডাকাতির ভয়ঙ্কর ছবি আমাদের সামনে উন্মোচিত হয়। আমরা দেখি মানুষকে চিরতরে কিভাবে তাদের জন্মভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছিল এবং বিদেশের মাটিতে দাসত্বের দিকে ধাবিত করা হয়েছিল, কিভাবে মানুষ তাদের নিজস্ব ভূমিতে দাস হয়ে গেলো; যেখানে দেশীয় চারণভূমি এবং স্থানীয় নদীগুলো বে এবং ভূমি মালিকদের হাতে শোষণ ও নিপীড়নের যন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Bey 

উপন্যাসের শেষ অংশে আমরা আমাদের প্রকৃত নায়কদের সাথে পরিচিত হই- শ্রমজীবী সোভিয়েত জনগণ এরগাশ, সফর, কুলমুরাদ এবং খাসান, যারা অনুপ্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে মুক্ত সুখী ভূমিতে নতুন জীবন গড়ে তুলছেন। লেখক সম্মিলিত খামার ব্যবস্থার বিজয়ের দিনগুলোতে প্রাক্তন ক্রীতদাসের বংশধরদের দেখান, যখন শ্রমজীবী লোকেরা তাদের উর্বর জমি এবং পানির জায়গাগুলোর পূর্ণাঙ্গ মালিক। তাজিক নারীর ভাবমূর্তি তৈরিতে আইনীর মেধা বিশেষভাবে লক্ষ করা উচিত। মধ্য এশীয়ার ধ্রুপদী সাহিত্যে নারী বিষয়ক কোনো বীরত্বপূর্ণ আলোচনা প্রায় ছিল না। সেই বিরল ব্যতিক্রমগুলো যেগুলো পরিচিত ছিল কেবল তাদের ব্যক্তিগত সুখের জন্য নারীদের সংগ্রাম। অন্য সব ক্ষেত্রে শাস্ত্রীয় রচনার নায়িকারা নিষ্ক্রিয় এবং ব্যর্থ ভুক্তভোগী, তাদের সমস্ত কমনীয়তাসহ নিম্ন শ্রেণীর প্রাণী যারা জনজীবনে অংশ নেয় না এবং পারে না। নারীদের প্রতি এমন মনোভাব ছিল শরিয়ত দ্বারা সংজ্ঞায়িত ও বৈধ এবং শাস্ত্রীয় কবিতাগুলো ঐতিহাসিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রচলিত সামন্ততান্ত্রিক ঐতিহ্যের বিরোধিতা করার সাহস পায়নি। শুধুমাত্র মহান ফেরদৌসী গর্বিত এবং দৃঢ় চরিত্রের একজন মহিলার ভাবমূর্তি তৈরি করতে পেরেছিলেন, তার স্বদেশের ভাগ্যের জন্য যিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং সাহসের সাথে তার সুরক্ষায় আওয়াজ তুলেছিলেন। তার "দোহুন্দা" এবং "ক্রীতদাস" উপন্যাসে সদরদ্দিন আইনী তাজিক সাহিত্যে প্রথমবারের মতো নতুন ধরনের নারী চরিত্রের পরিচয় করিয়ে দেন আমাদের। যেমন- গুলনর, মুহাব্বত বা কমসোমল সদস্য ফাতিমার মতো বীর নারীরা যারা অনুগত বন্ধু, নিঃস্বার্থ যোদ্ধা এবং নতুন সমাজ গঠনের প্রতিভাবান নির্মাতা। এই উপন্যাসে আইনী কেবল নিপীড়িত জনগণকেই উপস্থাপন করেননি, বরং শোষক শ্রেণীর প্রতিনিধিদের এবং তাদের দালাল জাদিদপন্থীদের বৈশিষ্ট্য দেখিয়েছেন, যারা প্রতিবিপ্লবের দুর্গ পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখেছিল। শাকির-আকি এর ছবি দৃঢ়ভাবে সাক্ষ্য দেয় যে জাদিদপন্থীরা জনগণের স্বার্থের কতটা বিপরীত ছিল, স্বাভাবিকভাবেই এটি শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থের প্রতি প্রতিকূল একটি প্রতিক্রিয়াশীল আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। আইনীর উপন্যাসে কমিউনিস্টদের ছবি হচ্ছে জনগণের স্বপ্নের সবচেয়ে উজ্জ্বল প্রতিফলক এবং তারা এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের যোদ্ধা। এগুলো ছিল তাজিক সোভিয়েত সাহিত্যে ধারণ করা তাজিক কমিউনিস্ট এবং মধ্য এশিয়ার অন্যান্য জনগণের প্রতিনিধিদের প্রথম চিত্র। আমাদের সময়ে উপন্যাসটি তার তীক্ষ্ণতা এবং প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। এই শতাব্দীতে সেই দাস ব্যবসা আর নেই; কিন্তু বিশ্বের অনেক জায়গায় এখনও দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা, নিপীড়ন এবং গণহত্যা রয়েছে। এজন্যই আজ আইনী সমস্ত প্রগতিশীল মানবতার হৃদয়ের এতো কাছে বেঁচে আছেন। এই কারণেই সোভিয়েত তাজিকিস্তানের শ্রমিকরা এই উপন্যাসটি বারবার পড়েছে, তাদের জন্মভূমির দিকে আরও বেশি গর্ব এবং ভালবাসার সাথে তাকিয়েছে, যেখানে ক্রীতদাস নেকাদামের বংশধররা কাজ করেছে এবং তৈরি করেছে সোভিয়েত তাজিকিস্তানের রাষ্ট্রপতি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সমৃদ্ধ যৌথ খামারগুলোর নেতাদের। তাদের বিজ্ঞানীরা অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছেন; বৈজ্ঞানিক চিন্তার কেন্দ্র ছিল সোভিয়েত তাজিকিস্তানের "একাডেমি অব সায়েন্সেস", যার প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন সদরদ্দিন আইনী। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Tajik_Academy_of_Sciences 

১৯২৫ সালে তাজিক সাহিত্য সংকলনের নমুনায় তিনি সর্বপ্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণায় অনেক স্বল্প পরিচিত এবং সম্পূর্ণ অজানা সাহিত্যিকের নাম সামনে নিয়ে এসে তাজিক সাহিত্যের বিকাশের জন্য একটি নতুন ধারণা তৈরি করেন। রুদাকী, আবু আলী ইবনে সিনা, ফেরদৌসি, সাদি, বেদিল, নাভোয়ীর উপর তার গবেষণাগুলো আজকের দিনে উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের উদাহরণ হিসাবে রয়ে গেছে। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Abdul-Q%C4%81dir_Bedil 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Ali-Shir_Nava'i 

সমরকন্দের সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপত্য স্মৃতিস্তম্ভের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করার জন্য সকল বিশেষজ্ঞরা জাতীয় সঙ্গীত এবং অতীতের বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীদের সম্পর্কে আইনীর কাজগুলোর উল্লেখ করেন। একজন বিশ্বকোষ লেখক হিসেবে আইনী সাহেব আমাদের সামনে বিস্ময়কর পান্ডিত্য এবং বিস্তৃত শিক্ষার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। এই লেখার পর্বগুলোতে কেবল তার ভাষাতাত্ত্বিক ও শিল্পকর্মের ইতিহাস সংক্রান্ত কাজ, মাংঘুদ রাজবংশের আমিরদের ইতিহাসের উপর ঐতিহাসিক গবেষণা এবং বুখারা বিপ্লবের উপর রচনা নয়; তার উপন্যাসের ব্যাপারেও বলা হবে। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Manghud 

"দোহুন্দা" এবং "ক্রীতদাস" উপন্যাসে লেখক শৈল্পিকভাবে তাজিকদের আত্ম-সচেতনতার বৃদ্ধি বিশ্লেষণ করেছেন, তাদের বিপ্লবী সংগ্রাম দেখিয়েছেন যা কেবল বিষয়বস্তুতে নয়, জীবন চিত্রিত করার নীতিতেও উদ্ভাবনী ছিল। এই কাজগুলো আইনী রাশিয়ার মহান সর্বহারা লেখক ম্যাক্সিম গোর্কির সাথে তার অধ্যয়নের সময় তৈরি করেছিলেন। ১৯৩৪ সালে মস্কোতে সোভিয়েত লেখকদের প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। দাগেস্তানি আশুগ সুলেমান স্টালস্কি এবং তাজিক সোভিয়েত সাহিত্যের প্রতিষ্ঠাতা সদরদ্দিন আইনী গোর্কির পাশে প্রেসিডিয়াম টেবিলে বসেছিলেন। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Suleyman_Stalsky 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Ashik 

এই বৈঠকের আগে আইনী গোর্কির বইগুলোর অমর নায়কদের সাথে ইতিমধ্যেই পরিচিত ছিলেন, তাঁর রচনাগুলো বহুবার পুনরায় পড়েছিলেন প্রথমবারের মতো তাজিক ভাষায় মহান এই লেখকের গল্প ও উপন্যাসের সম্পাদিত অনুবাদের মাধ্যমে। এবং আইনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলেক্সি মাক্সিমোভিচকে জানার চেষ্টা করেছিলেন। কংগ্রেসের অধিবেশনে তিনি গোর্কির প্রতিটি পদক্ষেপকে নিবিড়ভাবে অনুসরণ করেছিলেন, মহান শিল্পীর আত্মা এবং চিন্তাকে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। আইনী বলেছিলেন- 

"এবং হলের মধ্যে বসে আমাদের কাছে মনে হয়েছিল যে তিনটি ভিন্ন ভাষার সংস্কৃতির তিনজন বাহক শব্দ ছাড়াই একে অপরকে বুঝতে পেরেছে। দাগেস্তানে সুলেমান স্টালস্কির সাথে তিনি কীভাবে অবস্থান করছিলেন সে সম্পর্কে এন۔ তিখনভের গল্পটি আমার মনে আছে। বৃদ্ধ আশুগ অতিথিকে কবিতাটি পড়তে বললেন। তিখনভ বলেছিলেন যে তাঁর কবিতাগুলো বোধগম্য হবে না, কারণ তিনি সেগুলো কেবল রুশ ভাষায় পড়তে সক্ষম হবেন। যার উত্তরে স্টালস্কি বলেছিলেন যে "কবি তার কণ্ঠ দিয়ে কবিকে চিনেন।" 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Nikolai_Tikhonov_(writer) 

সোভিয়েত লেখকদের প্রথম অল ইউনিয়ন কংগ্রেসে নতুন সমাজতান্ত্রিক জীবনের গায়কদের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় কণ্ঠ শোনা গেলো। এই কণ্ঠগুলো আলেক্সি মাক্সিমোভিচ গোর্কির শক্তিশালী কণ্ঠের সাথে একত্রিত হয়ে নতুন শক্তি অর্জন করেছিল। গোর্কির কাজগুলো পড়ার ফলে এই কণ্ঠগুলো আরও শক্তিশালী ও পরিপক্ক হয়েছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ও সুবিন্যস্ত সাহিত্যে পরিণত হয়েছে। আইনী নিজেই গোর্কির প্রভাব সম্পর্কে বলেছিলেন- 

“মহান লেখকের কাজ মানুষের জন্য কীভাবে লিখতে হয় তার একটি চমৎকার উদাহরণ। আপনি তার রচনাগুলো পড়বেন এবং জীবনের জ্ঞানের গভীরতা, মানুষের আত্মার সূক্ষ্মতম সুতাগুলো স্পর্শ করার ক্ষমতা দেখে অবাক হবেন। এবং এই কারণেই তাঁর রচনাগুলোর চিত্র এবং চরিত্রগুলো এত সাধারণ, মানুষের কাছে বোধগম্য...আমরা, ভ্রাতৃত্বপ্রতিম সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের লেখকরা, গোর্কিকে আমাদের মহান শিক্ষক হিসেবে বিবেচনা করি।" 

একজন লেখক হিসেবে আইনী গভীরভাবে আন্তর্জাতিক। তার কাজের জনপ্রিয় চরিত্রগুলো তাকে সর্বহারা আন্তর্জাতিকতার দিকে নিয়ে যায়। আইনী মধ্য এশিয়ার সমস্ত মানুষের প্রতিনিধিদের ছবি তৈরি করেছিলেন, যাদের অতীতে একটি সাধারণ ভাগ্য ছিল এবং যারা সোভিয়েত শক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একসাথে লড়াই করেছিল। তীক্ষ্ণ আঘাতের মাধ্যমে আইনী উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের প্রাক-বিপ্লবী জীবনের ছবিগুলো পুনরায় তৈরি করেন এবং তাদের জন্মভূমির সমাজতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য মধ্য এশিয়ার মানুষের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম তুলে ধরেন। এই সমস্ত মানুষের ভাগ্য আইনীর হৃদয়ের কাছাকাছি এবং কেবল তার নিজের লোকদের জন্যই নয়- প্রাচ্যের সমস্ত জনগণের জন্য তিনি আনন্দিত হন, নিজের চোখে সাক্ষী হয়েছিলেন কিভাবে মহান অক্টোবর বিপ্লব ভবিষ্যতের দরজা খুলে দিয়েছিল সাধারণ শ্রমিকদের জন্য, তাদের জন্য সুখের পথ খুলে দিয়েছিল। বন্ধুত্ব, কৃতজ্ঞতা এবং শুভেচ্ছা জ্ঞাপক শব্দের সাথে তিনি রাশিয়ার মহান কবি পুশকিনকে সম্বোধন করেছেন- 

"সেই সময়ে রাশিয়ার মানুষ দুঃখের মধ্যে বাস করতো,

অভাব এবং দুঃখ তার বুকে যন্ত্রণা দিয়েছে,

আত্মা ক্রোধ এবং আকাঙ্ক্ষায় নিস্তেজ হয়ে পড়েছে,

হৃদয় হাহাকার করলো, কিন্তু ঠোঁট ছিল নীরব।" 

যন্ত্রণা, তিক্ততা এবং ক্ষোভের সাথে আইনী এই লাইনগুলো বলে কেবল পুশকিনের রাশিয়ার দিকেই নয়, তিনি তার জাতির অতীত সম্পর্কেও চিন্তা করেন। একই সাথে তিনি প্রতিভাধর এই রুশ কবির স্বাধীনতার আকাঙ্খার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আইনীর কাজগুলো সোভিয়েত ইউনিয়নের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের প্রায় সব ভাষায় এবং বিশ্বের কয়েক ডজন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আইনীর আন্তর্জাতিকতাবাদ তাকে মধ্য এশিয়ার মানুষের ধ্রুপদী সাহিত্যের শ্রেষ্ঠতম ঐতিহ্যের উত্তরসূরি হিসেবে তৈরী করেছে। ১৫তম শতাব্দীতে শাস্ত্রীয় উজবেক সাহিত্যের প্রতিষ্ঠাতা আলিশের নাভোই উজবেক এবং তাজিক উভয় ভাষায় সমান প্রতিভা নিয়ে লিখেছিলেন। সদরদ্দীন আইনীও দু'টি ভাষায় তাঁর রচনাগুলো তৈরি করেছিলেন। এজন্যই ভ্রাতৃপ্রতিম উজবেক জনগোষ্ঠীর সাহিত্যের জন্য তাঁর সৃষ্টিকর্ম এতো মহান। "গ্রেট পেট্রিয়টিক ওয়ার" এর সময় আইনী তার সৃজনশীলতার পুরোটুকু একটি লক্ষ্যে স্থির করেছিলেন, আর সেটা হচ্ছে মানুষকে বিজয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করা। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Great_Patriotic_War_(term) 

যুদ্ধোত্তর বছরগুলোতে আইনী তার বিখ্যাত "স্মৃতিকথা" বইটি নিয়ে কাজ করেছিলেন, যা অবিলম্বে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছিল। "স্মৃতিকথা" পড়ার মাধ্যমে আপনি কেবল আইনীর সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণকেই নয়; তার বিস্ময় জাগানিয়া বিপুল স্মৃতিকেও প্রশংসা ও শ্রদ্ধা জানাতে বাধ্য হবেন। 

'স্মৃতিকথা' তে আইনী লিখেছেন- 

"আমি শুনেছি বা দেখেছি এমন শব্দ এবং ঘটনা কখনই ভুলি না।" 

এজন্য এই স্মৃতিচারণে সমস্ত ঐতিহাসিক তথ্য এবং নায়কদের বর্ণনা এত নির্ভুল এবং সঠিকভাবে লেখা হয়েছে। তার স্মৃতিচারণের জন্য আইনী ছোট গল্পের একটি চক্র বেছে নিয়েছিলেন, যেখানে তার আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা এবং মানব প্রকৃতিগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রতিফলিত করা সম্ভব হয়েছিল। সাহসী এবং দৃঢ়চেতা মেয়ে খাবিবা, শক্তিশালী লোক লুৎফুলো, বুড়ো গল্পকার তুতিপোষশো, বিস্ময়কর শিক্ষক উস্তো খোজা, দাম্ভিক সৈয়দ আকবর এবং আরও অনেকে বইয়ের পাতায় পাতায় পুনরুজ্জীবিত হয়ে পাঠককে নিয়ে যায় পুরানো বুখারার শহর ও গ্রামের মধ্য দিয়ে অতীত জীবনের দীর্ঘ রাস্তা ধরে একটি আকর্ষণীয় যাত্রায়। তাঁর "স্মৃতিকথা" তে আইনী কঠিন বাস্তবতা সম্পর্কে কথা বলেছেন- গ্রামবাসী, তাদের আনন্দহীন কাজ, বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধি, দরিদ্র মিস্ত্রি এবং দক্ষ কারিগর সম্পর্কে। সুনির্দিষ্ট ব্যঙ্গাত্মক আঘাতের মাধ্যমে আইনী বুখারার শাসক শ্রেণী কৃপণ এবং লোভী বণিক, কারুশিল্পের কারখানার নিষ্ঠুর মালিক, স্বার্থপর বিচারক, সুদখোর, অজ্ঞ এবং প্রতিক্রিয়াশীল মোল্লাদের আসল রূপ প্রকাশ করেন। আইনী নতুন পৃথিবীর সমর্থকদের ভয়াবহ পরিণতির কথা বলে এমন একটি অন্ধকার এবং বিষণ্ণ জগতের বর্ণনা দেন যা এর মধ্যে আলোর ক্ষীণতম রশ্মির অনুপ্রবেশও প্রতিরোধ করে। 

এটি মোল্লা তুরাবের গল্প। তিনি আরবীতে লেখা রাশিয়ান শব্দ সমরকন্দ থেকে বুখারায় নিয়ে আসেন এবং তার ইচিগির পরিবর্তে রাশিয়ান জুতা ব্যবহার করতে শুরু করেন। 

https://ru.m.wikipedia.org/wiki/%D0%98%D1%87%D0%B8%D0%B3%D0%B8 

মোল্লা তুরাব রাশিয়ান ভাষা অধ্যয়ন করেন এবং এটি পরে তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইচিগি এবং রাশিয়ান জুতাসহ বিশদ বিবরণ প্রথম নজরে আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ মনে হলেও আসলে তা সামন্তবাদী বুখারার শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশকে আরও তীব্রভাবে তুলে ধরে। "স্মৃতিকথা" এর চতুর্থ অংশে আমরা কোরি নুরুল্লোর দেখা পাই যিনি সব ধরনের উদ্ভাবনের অনুরাগী, যিনি ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত হয়ে গাধার উপর তার স্যুটকেসটি রাখেন এটি ভয়ঙ্করভাবে অস্বস্তিকর হওয়ার পরও। এটি একটি ছোট হাস্যকর ঘটনা মনে হবে, কিন্তু এর পিছনে রয়েছে লেখকের সুগভীর চিন্তা। আইনী তাজিক জনগণের জীবনে সেই কঠিন সময়ে নতুন সব কিছুর আগমনের পরিণতি দেখান এবং আমরা দেখি সামন্তবাদী নৈতিকতার মানদণ্ড থেকে "বিচ্যুত" হওয়ার জন্য নিরীহ কোরি নুরুল্লোকে কীভাবে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তাই প্রতিবারই আইনী বুখারার আমিরের গোড়ামি এবং নিষ্ঠুরতাকে নতুনভাবে প্রকাশ করেন, নির্মম এবং বোকা বুখারার জল্লাদ শাসকদের চিত্রিত করেন। মধ্য এশিয়ার জনগণের অতীত জীবন সম্পর্কে ভয়ঙ্কর সত্য প্রথমবারের মতো এত দৃঢ় প্রত্যয় এবং সহজভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। লেখক ভি কাভেরিন বলেছেন- 

“আমি এমন কোনো শৈশবের কথা কখনোই পড়িনি যেটা আইনি বলেছিলেন...আমাদের দিগন্ত ঐ বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত, যা সব দিক থেকে অসাধারণ কিছু। যতই আমি এই বইটি পড়ছি, ততই আমার চোখ খুলছে...এবং প্রতিটি পৃষ্ঠার সাথে আমি আরও বেশি করে অবাক হয়েছি।" 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Veniamin_Kaverin 

আইনীর বইগুলোর শক্তি মূলত তাদের মহান মানবিক সত্যের মধ্যে নিহিত। তিনি বলেছিলেন- 

"কিছুটা হলেও ক্রীতদাস উপন্যাসটি আমার নিজের জীবনের ইতিহাস।" 

এই স্বীকৃতি আইনীর সমস্ত কাজের ক্ষেত্রে তার আশ্চর্যজনক পরিণতির জন্য প্রযোজ্য, যা সমগ্র তাজিক জনগণের পরিণতিকে মূর্ত করেছে। সদরদ্দিন আইনী ১৮৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৫৪ সালে মারা যান। তিনি একজন পরিপক্ক মানুষ হিসেবে মহান অক্টোবর বিপ্লবের সাথে পরিচিত হয়েছিলেন, এটিকে আপন করে নিয়েছিলেন এবং বিপ্লবের ঝড়ে তার প্রলেতারিয়েত সাহিত্য লেখার দক্ষতা জন্মগ্রহণ করেছিল। তিনি ভালবাসতে এবং ঘৃণা করতে জানতেন। বুখারা আমিরাতের নৃশংস শোষকদের শাসনের সাথে জড়িত অতীতকে ক্ষুব্ধভাবে প্রত্যাখ্যান করে তিনি উৎসাহের সাথে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিজয়কে স্বাগত জানান এবং তার রচনায় শ্রমজীবী মানুষদের প্রশংসা করেন যারা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলেছেন প্রকৃত মুক্তির এই রাস্তায় অবিচল থেকে। কোরি-ইশকাম্বা ("দ্য ডেথ অফ অ্যা ইউসুরার") এর মতো রক্তচোষা সত্যিই ঘৃণা জন্মায় যে বালজাকের গবসেক, গোগলের প্লুশকিন, শেড্রিনের ইউদুশকা গোলোভ্লেভ এর মতো জুয়াড়িদের সাথে একই কাতারে পড়ে। 

https://ru.m.wikipedia.org/wiki/%D0%A1%D0%BC%D0%B5%D1%80%D1%82%D1%8C_%D1%80%D0%BE%D1%81%D1%82%D0%BE%D0%B2%D1%89%D0%B8%D0%BA%D0%B0 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Gobseck 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Plyushkin 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/The_Golovlyov_Family 

মানুষের সুখের জন্য তিন প্রজন্মের যোদ্ধাদের চিত্রিত করার জন্য আপনাকে সত্যিই ভালোবাসতে হবে "রাবাখ" এ নেকাদামের দাস, তার ছেলে খামার শ্রমিক ও যোদ্ধা এরগাশ এবং নাতি কমসোমল সদস্য হাসানকে। যে কেউ মধ্য এশিয়ার সাহিত্যে প্রথমবারের মতো নারী যোদ্ধা, নারী বন্ধু এবং মায়ের প্রতিমূর্তি তৈরির জন্য আইনীর লেখাকে ভালোবাসতে বাধ্য হবেই। প্রলেতারিয়েত সাহিত্য সৃষ্টির জন্য সত্যিকারের ভালবাসা দরকার যাতে নামহীন নায়করাও স্রোতে গা না ভাসিয়ে সব ক্ষেত্রেই প্রকৃত মানুষের পরিচয় দেয়, আইনীর লেখায় যাদের প্রত্যেকেই তার স্বতন্ত্র চেহারা ধরে রেখেছে। একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হিসেবে, সমাজতান্ত্রিক মাতৃভূমির একজন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে, বিজ্ঞান ও সাহিত্যের সকল শাখার উন্নয়নে অংশ নেয়ার জন্য তার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে একজন সম্পাদক, সাংবাদিক, শিক্ষক, লেখক ও বিজ্ঞানীদের উপদেষ্টা এবং শিক্ষাবিদ, কূটনীতিবিদ। সোভিয়েত তাজিকিস্তানের পাহাড়ী নদীর প্রবল পানি যেমন অফুরান, তেমনি ছিল আইনী সাহেবের জীবনী শক্তি; যে শক্তি ছিল সোভিয়েত সাহিত্যের আরও বিকাশের লক্ষ্যে সমাজতান্ত্রিক জন্মভূমির অগ্রগতিতে নিবেদিতপ্রাণ।


Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

দেশ যখন ইসলামাইজেশন এর পথে [পর্ব-এক]