বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর আর্য ব্রাহ্মণদের গণহত্যা
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Pushyamitra_Shunga
https://www.pdfdrive.com/asoka-and-the-decline-of-mauryas-d188152168.html
একে একে মগধের বৌদ্ধকেন্দ্রগুলো ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়। কয়েক হাজার বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। বৌদ্ধদের স্তোত্র পাঠ ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিল বলে হিন্দু রাজা জালালুকা তার এলাকাধীন বৌদ্ধ বিহারগুলো ধ্বংস করে দেন (কলহন, রাজতরঙ্গিনী)।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Jalauka
https://granthagara.com/boi/322655-raj-tarangini/
কিন্নর এর রাজা হাজার হাজার বৌদ্ধ বিহার ভেঙে বৌদ্ধ গ্রামগুলো দখল করেন ব্রাহ্মণদের তুষ্ট করার জন্য (কলহন)
বিশাল সংখ্যক বৌদ্ধ বিহার ব্রাহ্মণ্যবাদীরা দখল করে হিন্দু মন্দিরে পরিণত করে। এই মন্দিরগুলোতে শুদ্রদের প্রবেশাধিকার ছিল না। বিভিন্ন আষাঢ়ে গল্প লিখে বৌদ্ধ স্থানগুলো হিন্দু মন্দির হিসাবে দেখানো হয়ে আসছে যুগের পর যুগ। ব্রাহ্মণ্যবাদীরা দখল করে নিয়ে হিন্দু মন্দির বানিয়েছে এমন কয়েকটি জায়গা যেখানে আগে বৌদ্ধ বিহার ছিল সেগুলো হলো তিরুপতি, আহবালে, আন্দাবাল্লি, ইলোরা, পুরি, পশ্চিমবঙ্গ (কালিঘাট), দিল্লি, বদ্রিনাথ, মথুরা, অযোধ্যা, শ্রীনগরি, বুদ্ধগয়া, শারনাথ, নালন্দা, গুড়িয়ালাম, নাগার্জুন কান্ডা, শ্রীসাইলাম এবং শবরীমালা (লর্ড আয়াপ্পা)। নাগার্জুনকোন্ডাতে বৌদ্ধ মূর্তি ও স্মৃতিসৌধ ধ্বংস করার ক্ষেত্রে অন্যতম বড়ো ভূমিকা নিয়েছিলেন আদি শঙ্কর। নৃতত্ত্ববিদ লংহার্ষ্ট নাগার্জুন কোন্ডাতে খননকার্য চালিয়ে বিষয়টি নথিবদ্ধ করেন তার বইতে। বইটির নাম 'Memoirs of the Archaeological Survey of India No:54, The Buddhist Antiquities of Nagarjunakonda'.
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Nagarjunakonda
https://archive.org/stream/in.gov.ignca.84003/84003_djvu.txt
ব্রাহ্মণ পন্ডিত শঙ্করাচার্য তার একদল শিষ্যকে নিয়ে নাগার্জুনকোন্ডা আসেন এবং বৌদ্ধ স্মৃতিসৌধগুলো ধ্বংস করে দেন। যে জমির উপর বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ দাঁড়িয়ে আছে সেই জমিটি শঙ্করাচার্য ধর্মীয় উপঢৌকন হিসাবে পেয়েছিলেন। কেরলে শঙ্করাচার্যের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন কুমারিলা ভট্ট। তিনি বৌদ্ধদের ঘোষিত শত্রু।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Kum%C4%81rila_Bha%E1%B9%AD%E1%B9%ADa
এরা দু'জনে যৌথভাবে বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধ ঘোষণা করেন। অব্রাহ্মণদের পুড়িয়ে মারার দৃশ্য শঙ্করাচার্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতেন। এসব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ পাওয়া যায় ‘শঙ্কর দিগ্বিজয়’ বইতে।
https://estudantedavedanta.net/Sankara-Digvijaya.pdf
কুমারিলা ভট্ট উজ্জয়িনীর রাজা শুদ্ধভাননকে প্ররোচিত করেছিলেন যাতে বৌদ্ধদের পুরোপুরিভাবে নির্মূল করা হয়।শুদ্রকা'র মির্চাকাতিকা থেকে আমরা জানতে পারি উজ্জয়িনীর রাজার শ্যালক অজস্র বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে নিগ্রহ করেন। তাদের বলদ হিসাবে ব্যবহার করা হতো। নাকের মধ্যে তার ঢুকিয়ে কাঁধে জোয়াল ফেলে টানতে বলা হতো।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/M%E1%B9%9Bcchakatika
https://rarebooksocietyofindia.org/book_archive/196174216674_10152838611916675.pdf
কেরালোলপথির নথিপত্র থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় কেরালা থেকে বৌদ্ধধর্ম উৎখাত করেছিলেন কুমারিলা।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Keralolpathi
https://archive.org/details/Keralolpatti_he_origin_of_Malabar/page/n4/mode/1up
শঙ্করের কর্মকাণ্ড নিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ লিখেছিলেন-
“তর্কে হারিয়ে শঙ্কর অগণিত বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিলেন। শঙ্করের এই কাজটি উগ্র ধর্মান্ধতা ছাড়া আর কী বলতে পারি?”
(Complete Works of Swami Vivekananda, Vol.VII)
https://www.ramakrishnavivekananda.info/vivekananda/complete_works.htm
কেরালায় বহু জায়গা রয়েছে যে জায়গাগুলোর নামের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ‘পাল্লি’ শব্দটি। কারুঙ্গাপাল্লি, কার্তিক পাল্লি, পাল্লিকাল, পাল্লিপুরম এমনই কিছু জায়গার উদাহরণ। এই ‘পাল্লী’ শব্দের অর্থ 'বৌদ্ধবিহার'। কেরালায় ছিল ১২০০ বছরের পুরোনো বৌদ্ধ ঐতিহ্য। আজকের দিনেও কেরালার বিদ্যালয়গুলোকে বলা হয় এঝুথুপাল্লি বা পাল্লিকুড়াম। কেরালায় ক্রিষ্টান ও মুসলিমররা তাদের উপাসনালয়কে ‘পাল্লী’ বলে থাকে। শঙ্কর ও কুমারিলার নেতৃত্বে পাল্লিগুলোকে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়। তারা ১২০০ বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্যকে নষ্ট করে কেরালাকে ব্রাহ্মণ্যবাদী প্রদেশে পরিণত করে। প্রচুর বৌদ্ধবিহার পরিণত হয় হিন্দু মন্দিরে। শুদ্র হওয়ার অজুহাতে বেশিরভাগ মানুষকে সেসব মন্দিরে প্রবেশ করতে দেয়া হতো না। তারপর থেকে কেরালার আদি অধিবাসী এজাভা, পুলায়া প্রভৃতি জাতিকে ব্রাহ্মণ্যবাদী জাতিভেদ প্রথা বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
Comments