'দ্য কেরালা স্টোরি' এবং নির্বাচনপন্থীদের দায়

 


'যা রটে তা কিছু হলেও ঘটে' প্রবাদটি 'কেরালা স্টোরি' ফিল্মটার জন্য সম্পূর্ণ প্রযোজ্য। উগ্র ধার্মিকদের অতি সাধারণ প্রবণতাই হচ্ছে অন্য ধর্মগুলোর অনুসারীদের খুঁত বের করা, আবার বিভিন্ন ধর্মের মডারেট অনুসারীদের সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে অন্য ধর্মের কেউ খুঁত বের করে দিলে সেই খুঁতের মধ্যে গোঁজামিল দেয়া ব্যাখ্যা দিয়ে 'ভালো' কিছু বের করার চেষ্টা।  মুসলিমরা যদি হিন্দুদের কোনো খুঁত বের করে তাহলে হিন্দুরা মুসলিমদের বলবে "কিন্তু তোদের ধর্মে তো এই এই আছে", আবার হিন্দুরা যদি মুসলিমদের কোনো খুঁত বের করে তাহলে মুসলিমরা হিন্দুদের বলবে "কিন্তু তোদের ধর্মে তো এই এই আছে"। অন্যদিকে মডারেট ধার্মিকরা যার যার ধর্মে বিজ্ঞানের তথাকথিত অস্তিত্ব খুঁজে পেয়ে লজিক্যাল ফ্যালাসির মাধ্যমে অন্য ধর্মের অনুসারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে কিংবা ধর্মে অবিশ্বাসীদের সাথে তর্ক চালিয়ে যায়। রাজনীতিবিদদের এবং তাদের চামচাদের আচরণেও হুবহু একই বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, অর্থাৎ বিন্দুমাত্র বিরোধিতা দেখলে ব্যক্তি আক্রমণ শুরু। যেমন- বামেরা চব্বিশ ঘন্টা পশ্চিমাদের খুঁত বের করতে ব্যস্ত থাকলেও সমাজতন্ত্র বিরোধী কেউ যখন বিভিন্ন নেতার আপত্তিকর (কিছু সত্য, কিছু তথাকথিত) কার্যক্রমের দিকগুলো তুলে ধরে তখন সেই একই আচরণের পুনরাবৃত্তি করা হয়; অর্থাৎ  "কিন্তু তোদের পুঁজিবাদে তো এই এই আছে"। আবার বামেরা পশ্চিমা কিংবা দেশীয় পুঁজিবাদীদের বিরুদ্ধে কিছু বললে পুঁজিবাদীরা কিংবা সমাজতন্ত্র বিরোধী যে কেউ শুরু করে "কিন্তু তোদের সমাজতন্ত্রে তো এই এই আছে"। এই ফিল্মে উল্লেখিত সংখ্যা অবশ্যই বিতর্কিত। কারণ বিপক্ষ রাজনৈতিক দল বিভিন্ন বিষয়ে প্রকৃত সংখ্যার কয়েক গুণ বেশি দেখিয়ে প্রচারণা চালাবে আর সেটাই ঘটে আসছে বিভিন্ন যুগে। যেমন- সোভিয়েত ইউনিয়ন বা চীন সংক্রান্ত ব্যাপারে পশ্চিমারা করেছে। কিন্তু মূল সংখ্যাটার পেছনের কারণ অনুসন্ধান না করে এই সিনেমায় অংশগ্রহণকারী নায়িকার স্বল্প পোশাক নিয়ে গবেষণায় নিউজফিড ভর্তি হয়ে গেছে। মনোকালচারিজম, মাল্টিকালচারিজম, ইউনিকালচারিজম ইত্যাদি টার্মের প্রকৃত সংজ্ঞা না জেনে হিন্দুদের পূজায় মুসলিমদের যাওয়া কিংবা মুসলিমদের ঈদে হিন্দুদের যাওয়া দেখে আনন্দিত হলে যা হয় আরকি! ব্যাপারটা উঠে এসেছে অমর্ত্য সেন এর 'আইডেন্টিটি এন্ড ভায়োলেন্স' বইটিতে। আগে থেকেই ব্রিটেনে খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় বিদ্যালয়গুলোর অস্তিত্ব ছিল। বর্তমানে সেখানে অন্যান্য কমিউনিটির তথাকথিত ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো মুসলমানদের মসজিদ, হিন্দুদের মন্দির, শিখদের গুরুদুয়ারা তৈরির অনুমতি দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবোধ ও উগ্রতা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্র কর্তৃক সহায়তা করা হয়েছে। ঠিক যেমনটা বর্তমান চীন করেছে ৩৫,০০০ মসজিদ ও শত শত মাদ্রাসার অস্তিত্ব বজায় রেখে কিংবা হজ করতে যাওয়া চীনা নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে অর্থ সহায়তা করে। বিজেপি এই ফিল্মকে প্রোপাগান্ডার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করলেও তারা কেরালার বৌদ্ধদের ইতিহাস উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই আড়ালে রেখেছে।

https://iskrathespark.blogspot.com/2023/01/blog-post_14.html?m=1

আবার কেরালার নির্বাচনপন্থী বামেরা নিজেদের সাফল্যের ঢাক নিজেরা বাজালেও অরুন্ধতী রায় এর বিখ্যাত দু'টি উপন্যাস 'দ্য গড অফ স্মল থিংস' এবং 'দ্যা মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস' ছাড়াও বিভিন্ন নন-ফিকশন ক্যাটাগরির আর্টিকেলে বাম সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও হিন্দু ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের কমিউনিটিগুলোতে বর্ণপ্রথার অস্তিত্ব বজায় রাখা, সম্পদের বৈষম্য বজায় রাখা, দুর্নীতি, নির্বাচনপন্থীদের সুবিধাবাদী আচরণ ইত্যাদি বহু কিছুই উঠে এসেছে দেখে তার উপর ক্ষিপ্ত উপমহাদেশের নির্বাচনপন্থীরা। কেরালার বাম সরকার মুখে সমাজতন্ত্রের নাম বললেও বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে সংগ্রামী ট্রেড ইউনিয়নের নিন্দা করেছে, আবার পূজায় অংশগ্রহণও করেছে! প্রথমে নির্বাচনপন্থী বামেরা তর্কের সময় দাবী করে যে এসব বাম সরকার নাকি সমাজতান্ত্রিক তথা কমিউনিস্ট সরকার! গোমর ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর, অর্থাৎ এসব সরকারের সোশ্যাল ডেমোক্রেসি নীতি প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার পর এসব বামেরা গায়ের জোরে প্রমাণের চেষ্টা করে যে 'নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো'। নর্ডিক দেশগুলোর সোশ্যাল ডেমোক্রেট সরকারগুলো ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দেশগুলোর ৬৫% সম্পদের মালিক হয়ে গেছে মূল জনসংখ্যার মাত্র কয়েক শতাংশ উচ্চবিত্ত। মার্কেজ তার বইগুলোতে দেখিয়েছেন এসব বাম সরকারের সময়ে গির্জায় উচ্চবিত্তদের জন্য আলাদা আসন থাকতো সামনের সারিগুলোতে নেমপ্লেট সহকারে, তাদের শাসনামলে গির্জার পাদ্রীরা সিনেমা দেখার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিল সাধারণ মানুষের উপর এবং ধর্মের বিরোধিতাকারী ও আত্মহত্যাকারীদের খ্রিষ্টান কবরস্থানে কবর না দেয়ার উপর ফতোয়া জারী করেছিল পাদ্রীরা। এসব বামেরা পশ্চিমাদের বিরাগভাজন না হওয়ার জন্য চে গুয়েভারার সাথে কিভাবে বেইমানি করেছিল তা তিনি লিখে গেছেন নিজের বইগুলোতে। পশ্চিমবঙ্গের বাম সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে কিছু জমি দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করলেও তাদের সময়েই উচ্চ বর্ণের আর নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের জন্য আলাদা স্কুল বানানো হয়েছিল অসংখ্য, তাদের সময়ে উচ্চ বর্ণের ব্রাহ্মণ শিক্ষকরা আদিবাসী ও মুসলমানদের 'ছোটলোকের বাচ্চা' বলে গালি দিয়ে পড়াতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা সংস্কারবাদী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সামান্য কৃষি সংস্কার করলেও যেসব শিক্ষক তাদের পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত, তারা পার্টির কাজে সময় দিতো বাচ্চা না পড়িয়ে আর এই কাজের বিরোধিতাকারী কর্মকর্তাদের বদলী করিয়ে দিতো রাজনৈতিক লবিং এর মাধ্যমে। রাজ্যের বিভিন্ন কমিটির সদস্যদের মধ্যে অধিকাংশই ব্রাহ্মণ। এমনকি বাম শাসনামলে কেবল ব্রাহ্মণদের জন্য প্রতিষ্ঠিত বৃদ্ধাশ্রমের অস্তিত্ব পর্যন্ত পাওয়া গেছে! দরিদ্র ঘরের বাচ্চারা ফসল কাটার মৌসুমে মা-বাবাকে সাহায্য করে, ঘরে ছোট ভাই-বোনকে দেখাশোনা করে, বাড়ির গৃহপালিত পশুর যত্ন নেয়, জঙ্গলে গিয়ে লাকড়ি জোগাড় করে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চেষ্টা না করে, সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে বর্ণবাদ দূর করার চেষ্টা না করে এসব বাম সরকার উল্টো ধর্মীয় উগ্রতাকে প্রশ্রয় দেয়। 

সূত্র: 'প্রতীচী শিক্ষা প্রতিবেদন', অমর্ত্য সেন 

'শিশু শিক্ষার ভূমিকা', অমর্ত্য সেন 

ঠিক যেমনটা বাংলাদেশের বামেরা বিরানির প্যাকেট দেয় ঈদে! ঠিক যেমনটা সমাজতন্ত্রের চামড়ার ছদ্মবেশে থেকে এদেশের এক শ্রেণীর বাম শৃগালরা নূপুর শর্মার পক্ষ নিয়েছে! কেরালার বাম সরকার শিক্ষাকে বেসরকারিকরণের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে ইতিমধ্যেই। 

কনফুসিয়াস কিংবা বৌদ্ধের মতো রাজতন্ত্রের সমর্থকদের পূজা করা বামেদের সংখ্যাও কম নয় উপমহাদেশে। বৌদ্ধের ক্ষেত্রে নারী বিদ্বেষী নীতি প্রবর্তনের কারণে এরা 'কাল' এর দোহাই দেয়! তাহলে মুহাম্মদ কি দোষ করলো, যেহেতু তার বেশ কিছু সংস্কারমূলক নীতি যে আগের সমাজ থেকে 'বেটার' ছিল সেটা যে কেউ নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখলেই বুঝবে। তাছাড়া বৌদ্ধ যে রাজা আর জমিদারদের অনুরোধে দাস ও সৈন্যদের শ্রমণ হওয়া নিষিদ্ধ করেছিলেন সেই তথ্য কি আপনারা জানেন? বৌদ্ধের আরও হাজার বছর আগে থেকে পিতৃতন্ত্রের উদ্ভব ও সম্পদ জমা করার প্রথা শুরু হওয়ার মধ্য দিয়ে মানব সমাজে শ্রেণী বৈষম্যের শুরু হয়েছে। মার্ক্সবাদে একটা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত আচারগুলোর কাঠামোবদ্ধ রূপ, অর্থাৎ যেটাকে 'ধর্ম' নাম দেয়া হয়েছে সেটা শোষণের হাতিয়ার। শোষিত শ্রেণীর মুক্তির মহান নেতা মাও সে তুং এর বাবা ছিলেন কনফুসিয়াসপন্থি এবং মা ছিলেন একনিষ্ট বৌদ্ধ। ১৯১১ সালের হুনান টির্চাস কলেজে ভর্তি হন মাও সেতুং। এখানে পাশ্চাত্য দর্শন সম্বন্ধে জানতে পারেন তিনি। সেসময় চীনে চলছিল কিঙ রাজতন্ত্রের দুঃশাসন। সান ইয়াত সেন সেসময় রাজতন্ত্র ভেঙ্গে গঠন করতে চাইলেন প্রজাতন্ত্র। তার ডাকে মাও উদ্ধুদ্ধ হয়ে যোগ দিলেন প্রজাতন্ত্রের সৈন্যবিভাগে। রাজতন্ত্রবিরোধী আন্দোলনে সান ইয়াত সেন জয়ী হয়ে কুয়োমিনটাং দল গঠন করলেন। ১৯১৮ সালে হুনান টির্চাস কলেজ থেকে পাস করে চাকরির খোঁজে বেইজিং পৌঁছলেন মাও। কাজ জুটলো বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে। কাজের অবসরে তিনি পাঠ করতে লাগলেন মাকর্সবাদ। বুঝলেন মায়ের বুদ্ধবাদ ও বাবার কনফুসিয়বাদ শোষিতদের মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে কোনো কাজে আসবে না। শুধু তাই নয়, এসব ব্যক্তিদর্শন চীনের সামাজিক সমস্যা সমাধানে অক্ষম এবং এসব বালখিল্য দর্শন চীনকে পিছিয়ে রেখেছে। ১৯১৯ সালে চীনকে আধুনিকায়ন করার লক্ষে বুদ্ধিজীবিদের তরফ থেকে আন্দোলন চলছিল, যেখানে মাও সে তুং যোগ দিলেন। তিনি তার লেখায় তীব্র সমালোচনা করলেন কনফুসিয়াসের। সেই সঙ্গে ঐতিহ্যবিরোধী আরও সব অনলবর্ষী লেখা লিখলেন মাও। মাও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে চীনের অধিবাসীদের নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত উঁচু পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং তার মৃত্যুর পর 'এক সন্তান নীতি'র মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ কন্যা শিশুদের ভ্রূণকে হত্যা করে ছেলে শিশুদের ভ্রূণকে বাঁচিয়ে রেখে পৃথিবীতে নিয়ে আসা হয়েছে। মাও এর মৃত্যুর পর ভারতের মতোই নারীদের ডাইনি বলে পুড়িয়ে মারার প্রথা চীনের গ্রামাঞ্চলে আবার ফিরে এসেছে যা তিনি কঠোরভাবে বন্ধ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ঐতিহ্য সংরক্ষণের নামে রাজতন্ত্রের যুগে চীনের নারীদের অবমাননাকর রক্ষিতাদের জীবনকে ইতিবাচক ভঙ্গিতে দেদারসে প্রদর্শন করা হয় চীনের সিনেমাগুলোতে এখন।

বাংলাদেশে বর্তমানে পাহাড়ি জেলাগুলোতে মোল্লাদের কার্যক্রম ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে। সেখানে নিয়মিত ওয়াজের মাহফিল চলে ঘন্টার পর ঘন্টা, ব্যাঙের ছাতার মতো তৈরী হওয়া মসজিদ, মাজার আর মাদ্রাসাগুলো থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ডোনেশন সংগ্রহ করা হলেও এই অঞ্চলের জনগণের জন্য ভালো ডাক্তার কিংবা হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসার কোনো ছোঁয়া নেই। পাহাড়ি জেলাগুলোর মনোরম প্রকৃতি, বিলাসবহুল রিসোর্ট, উচ্চবিত্তদের প্রাইভেট ট্রান্সপোর্ট এর ভিড়ের বিপরীত চিত্রটাও সকলের জানা উচিত। উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা কথিত জাতির পিতার মৃত্যু হলেও এই উগ্রতা ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের প্রতিটা কোনায়। এজন্যই বাঙালিদের মধ্যে এখনো এই ধারণা প্রচলিত আছে যে পাহাড়ি মানেই জংলী। কিন্তু প্রকৃত জংলী আসলে কারা সেটা খোদ বাস্তবতাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সবাইকে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ডাস্টবিন থাকার পরও যত্রতত্র ময়লা ফেলা, পাশেই ওয়াশরুম থাকার পরও পাহাড়ে মূত্র বিসর্জনে দাঁড়িয়ে যাওয়া, পাহাড়িদের 'তুই' সম্বোধন করা ইত্যাদি আচরণ সেদিকেই ইঙ্গিত করে। এমনকি পাহাড়িদের খাবার পানির উৎস্থলগুলোতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ময়লা না ফেলতে অনুরোধের পরও তথাকথিত শহুরে শিক্ষিতরা এই কান্ডটাই বেশি করে সেখানে। এসব রিসোর্টগুলোতে যাওয়ার পথেই হতদরিদ্র পাহাড়িদের চিড়িয়াখানার জন্তুর অনুরূপ গণ্য করে ফটো তোলা হয় অনুমতি ব্যতিরেকে এবং আপত্তি সত্ত্বেও। আবার স্যুভেনির বিক্রির কেন্দ্রগুলোতে পাহাড়ি নারীদের প্রতি ইভ টিজিং এর ঘটনা অহরহ ঘটেই চলেছে। অনেকেই দাবী করেন রিসোর্টগুলোর মালিক পাহাড়িও আছে! এক্ষেত্রেও শ্রেণীর ব্যাপারটা চলে আসে সবার আগে, যখন 'মুসলিম-মুসলিম ভাই ভাই' তত্ত্বের মতোই সব পাহাড়িকে একই শ্রেণীতে ফেলার ব্যাপারটা যুক্তিহীন হয়ে পড়ে। বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়াও পঞ্চাশের অধিক অন্যান্য জাতি বাস করলেও শহুরে শিক্ষিতরা এদের কয়টার নাম বলতে পারে? কেবল চাকমা সম্প্রদায়ের ৮৫% শিক্ষিতের হারের পরিসংখ্যান সামনে এনে তো অন্যান্য জাতিদের বিচার করলে চলবে না।

উপমহাদেশের তিন দেশের 'জাতির পিতা'রা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিল, অন্যদিকে তাদের অন্ধ অনুসরণকারীদের দ্বারা প্রাণ হারায় লক্ষ লক্ষ মানুষ যা এখনো চলমান। জিন্নাহ হুইস্কি খেত, শুওরের মাংস খেত, বহু নারীর সাথে সম্পর্ক তো ছিলই! এই লোকই আবার ইসলামের নামে কত কিছু করে গেছে উপমহাদেশের রাজনীতিতে! গান্ধীর আসল চরিত্র বের হয়ে এসেছে অরুন্ধতী রায় এর 'দ্য ডক্টর এন্ড দ্য সেইন্ট' বইটিতে-

https://iskrathespark.blogspot.com/2023/05/blog-post.html?m=1

https://iskrathespark.blogspot.com/2023/05/blog-post_23.html?m=1

এই ফিল্মে দেখানো চিত্রগুলো কি আসলেই বিপক্ষ দলের প্রোপাগান্ডা নাকি প্রকৃত ইসলাম এবার সেটা দেখা যাক। ম্যারিটাল রেপ তো ইসলামে জায়েজ।

https://www.hadithbd.com/books/link/?id=3711

যেসব মডারেটরা নারীদের একা বের হওয়ার কথা বলেন তারা নিচের লিংক পড়বেন-

https://www.jugantor.com/islam-life/487931/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%BE-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%AB%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87

জিহাদ অর্থাৎ যুদ্ধের জন্য মিথ্যা বলা জায়েজ-

https://dhakamail.com/religion/42310

ইসলামে ধর্ষণ ছাড়াও নানা বিকৃত যৌন আচরণকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যেভাবে-

https://ruqyahbd.org/blog/1330/lover-jinn-lustful-demon

ইসলাম একদিকে উপরের লিংকে বলা প্রহসনের পদ্ধতিতে পুরুষদের রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করে, অন্যদিকে কোনো নারী বিচার না পেয়ে আত্মহত্যা করলে তার লাশ পর্যন্ত কবরস্থানে দাফন না করার বিধান রেখেছে।

ড্রাগস দেয়ার ঘটনার সত্যতা বাংলাদেশে গুলশানে হলি আর্টিজেন এর ঘটনা থেকে জানা গেছে।

যৌনদাসী বানানোর সত্যতা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এসেছে।

অন্যান্য ধর্মগুলোতে নারী সংক্রান্ত পশ্চাৎপদ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে এই বইতে-

https://www.amarboi.com/2015/12/dhormo-o-nari-syed-shajahan.html?m=1

https://en.m.wikipedia.org/wiki/MosqueMeToo#:~:text=%23MosqueMeToo%20is%20predominantly%20a%20Muslim,places%2C%20Mecca%2C%20Saudi%20Arabia.

স্তালিনের যেই গুলাগের বিরুদ্ধে ধার্মিক, নাস্তিক নির্বিশেষে সবাই লিখেন সেখানে কাদের ফাঁসি দেয়া হতো আপনারা জানেন? উত্তর হচ্ছে- ধর্ষকদের। আপনারা যেসব পার্লামেন্টারি গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে বাস করেন, সেসব দেশের মতো ধর্মের ধ্বজাধারী ও ধর্ষকদের জন্য মিনমিনে আইন স্তালিন আর মাও এর শাসনামলে ছিল না।




Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

দেশ যখন ইসলামাইজেশন এর পথে [পর্ব-এক]