সাংস্কৃতিক বিপ্লব ও স্তালিনের ভ্রান্তি [পর্ব-চার]

 

১৯৬৭ সালের জুলাই মাসে প্রথমে হুনানের গভর্নর দ্বারা সংগঠিত ‘মিলিয়ন হিরোস’ এর সাথে বিদ্রোহীদের তীব্র সংঘর্ষ হয়। ‘মিলিয়ন হিরোস’ বিদ্রোহীদের শারীরিকভাবে দমন করতে শুরু করে আর গভর্নর বিদ্রোহীদের মিছিল-সমাবেশ ভেঙে দেয়ার জন্য এবং তাদের গ্রেফতার করার জন্য স্থানীয় সেনা ছাউনি থেকে সেনাদের ডেকে আনেন। বিদ্রোহীরা অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পিকিং এর ‘সাংস্কৃতিক বিপ্লবী কমিটি’ হস্তক্ষেপ করার জন্য কু চি এবং ওয়াং লি'কে হুপেইতে পাঠায়, কিন্তু গভর্নর তাদের গ্রেফতার করে।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Wuhan_incident

যখন ইয়াংসি নদী দিয়ে নৌবাহিনীর ইউনিটগুলো এবং ছত্রীবাহিনী উপস্থিত হয়, তখন গভর্নর চেন আত্মসমর্পণ করে পিকিং চলে যান। ওয়াং লি উহান ঘটনার পর বিদেশ মন্ত্রণালয়ের বিদেশী ভাষা শিক্ষার বিদ্যালয়গুলোতে অতিবাম কার্যকলাপ চালানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়লো। বিদেশমন্ত্রী চেন ইকে নিন্দা ও অপদস্থ করা হলো এবং গোটা বিদেশ মন্ত্রণালয় ১৯৬৭ সালের আগস্ট মাসে দখল হয়ে গেলো। উহান ও তার দলবল বিদেশী দূতাবাসগুলোতে সেসব দেশের সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু করলো। মাও ব্যাজ পরতে অস্বীকার করায় ইটালির স্থানীয় মানুষদের বিরুদ্ধে লড়ে যাবার জন্য তারা চীনা নাবিকদের প্ররোচিত করলো। পিকিং এ ব্রিটিশ কূটনীতিকদের ধরে মারা হলো। বিদেশী দূতাবাসগুলোর মহাফেজখানা লুট করা হলো এবং তাদের গোপন নথিগুলোকে দেওয়ালে সাঁটা হলো। কিছু এশিয় দূতাবাস বন্ধ হয়ে গেলো। পরবর্তী তদন্তে বোঝা গেলো ওয়াং লি ছিল লিউ এর লোক এবং ১৬ মে-র সার্কুলারের নাম অবলম্বন করে গঠিত গোপন প্রতিবিপ্লবী গ্রুপ ছিল এসব কাজের পিছনে। হাতে সব সময় ‘লাল বই’ নিয়ে ১৬ মে গ্রুপের সদস্যরা গণমুক্তি বাহিনীর উপর আক্রমণ সংগঠিত করলো, পি এল এ ডিপো থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিলো এবং বিভিন্ন প্রদেশে সশস্ত্র আক্রমণ শুরু করলো। মাও দ্বারা নিয়োজিত হওয়ার পর পি এল এ চীনে ঐক্যরক্ষাকারী শক্তি হিসেবে কাজ শুরু করেছিল, তাই পি এল এ হলো আক্রমণের মূল লক্ষ্যবস্তু।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/People%27s_Liberation_Army

প্রতিটি রাজনৈতিক সংগ্রামকে এটি সশস্ত্র সংগ্রামে পরিণত করতে থাকলো যাতে দেশের স্থিতি নষ্ট করে দেয়া যায়। বিদ্রোহী রেড গার্ডরাও সৈন্যবাহিনীকে রক্ষণশীল শক্তি বিবেচনা করে সৈন্য ইউনিটগুলোকে প্রায় আক্রমণ করতে শুরু করলো। ১৯৬৭ সালের ১মে আলবেনিয়ার সামরিক প্রতিনিধিবৃন্দকে দেয়া ভাষণে মাও বললেন-

‘‘জানুয়ারী ঝঞ্ঝার পরে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি বৃহৎ মৈত্রীর সমস্যা নিয়ে বারে বারে মনোযোগ দিয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। পরে এটা বোঝা গেলো এই আত্মমুখীন আকাঙক্ষা শ্রেণীসংগ্রামের বস্তুগত নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। এর কারণ হলো প্রতিটি শ্রেণী এবং রাজনৈতিক শক্তি একগুঁয়ের মতো নিজেকে জাহির করতে চেয়েছিল। বুর্জোয়া ও পেটিবুর্জোয়া মতাদর্শগুলো বাধাহীন বন্যার পানির মতো ফুলে ফেঁপে উঠছিল এবং এভাবেই বৃহৎ মৈত্রী ধ্বংস হলো। বৃহৎ মৈত্রী গড়ে তোলা ছিল অসম্ভব এবং তা যদি গড়াও যেতো তাহলেও শেষ পর্যন্ত তা ভেঙে পড়তোই।’’

১৯৬৭ সালের জানুয়ারির শুরু থেকে ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে সরকার, প্রদেশ, পৌরসভা এবং স্বশাসিত অঞ্চলগুলোর মূল অফিসগুলোতে মাও এর দ্বারা সূত্রায়িত 'একের-মধ্যে-তিন' সমন্বয়ে বিপ্লবী কমিটিতে পুনর্গঠিত করা হয়। অন্যদিকে লিন পিয়াও এবং চিয়াং চিং রাজনৈতিক ক্ষমতা শীর্ষে উঠে আসছিলেন। ভাবা হলো, সময় এসেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ৯ম কংগ্রেস আহ্বান করার। কেন্দ্রীয় কমিটি অক্টোবরের ১৩ থেকে ৩১ পর্যন্ত দ্বাদশ বর্ধিত সভার আহ্বান করলো। মাও বলেন-

‘‘চলমান মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লব চূড়ান্তভাবে প্রয়োজনীয় এবং শ্রমিকশ্রেণীর একনায়কত্বকে সংহত করার জন্য, পুঁজিবাদের প্রত্যাগমন প্রতিহত করার জন্য এবং সমাজতন্ত্র গড়ার জন্য একেবারে সময়োপযোগী।’’

আলোচ্যসূচির মধ্যে প্রধান ছিল ‘দলত্যাগী, লুকিয়ে থাকা বিশ্বাসঘাতক এবং দালাল লিউ শাও চি-র অপরাধমূলক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট’। এই দলিল গৃহীত হয় এবং ‘স্থায়ীভাবে লিউ শাও চি-কে পার্টি থেকে বহিষ্কার করার এবং পার্টির ভিতরের ও বাইরের সমস্ত পদ থেকে বিতাড়িত করার’ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯৬৯ সালের এপ্রিলের ১ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত পিকিং এ পার্টির জাতীয় ৯ম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সদর দফতরে কামান দাগা এবং পার্টি কমিটিগুলোকে ভেঙে দেয়ার পর কংগ্রেস প্রতিনিধি নির্বাচন করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়ে। অনেক জায়গায় মনোনয়নের পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়। কংগ্রেসে ১৫১২ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। লিন পিয়াও কংগ্রেসে রাজনৈতিক রিপোর্ট পেশ করেন। কংগ্রেসের মূল মনোযোগের বিষয় ছিল ‘শ্রমিক শ্রেণীর একনায়কত্বের অধীনে নিরবচ্ছিন্ন বিপ্লব’। সাংস্কৃতিক বিপ্লব এবং মার্কসবাদের তত্ত্ব ও অনুশীলনে তার মহান এবং নতুন অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ‘সংগ্রাম-সমালোচনা-রূপান্তরের কর্তব্য’ যত্ন সহকারে পালন করার কর্মসূচী ঘোষিত হলো এবং পার্টিকে সংহত করার ও গড়ে তোলার কর্তব্য গৃহীত হলো। এই কংগ্রেসে ‘নতুন যুগ’ এর তত্ত্ব সামনে আনা হলো এবং মাও সে তুং চিন্তাধারাকে মার্কসবাদ-লেনিনবাদের সমার্থক বলে ঘোষণা করা হলো। ‘যে যুগে সাম্রাজ্যবাদ সর্বাত্মক ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে এবং সমাজতন্ত্র বিশ্বব্যাপী বিজয়ের দিকে এগোচ্ছে মাও সে তুং চিন্তাধারা সেই যুগের মার্কসবাদ-লেনিনবাদ' ছিল ৯ম কংগ্রেসের ঘোষণা। আরও বলা হলো-

‘‘যে কেউই চেয়ারম্যান মাও বা মাও সে তুং চিন্তাধারার বিরোধী তা যে সময়েই হোক বা যে পরিস্থিতিতেই হোক, সে-ই সমগ্র পার্টি দ্বারা ধিকৃত হবে এবং শাস্তিপ্রাপ্ত হবে।’’

৮ম কংগ্রেসের মতো ৯ম কংগ্রেসও বিবৃত করলো-

‘‘শ্রমিকশ্রেণীর একনায়কত্বের নতুন ঐতিহাসিক পর্যায়ে শ্রমিকশ্রেণী তার একনায়কত্ব বলবৎ করে এবং সকল ক্ষেত্রে তার নেতৃত্ব প্রয়োগ করে তার অগ্রবাহিনী কমিউনিস্ট পার্টির মাধ্যমে।"

সাধারণ কর্মসূচীর মধ্যে এই কংগ্রেস একটি ধারা সংযুক্ত করে, যা হলো চেয়ারম্যান মাও এর উত্তরাধিকারী হবেন লিন পিয়াও। এরপর শুরু হয় ‘সংগ্রাম, সমালোচনা এবং পরিবর্তন’ এর প্রচারাভিযান। ‘এক এর মধ্যে তিন’ নীতিতে বিপ্লবী কমিটি গঠন করে মনে হয়েছিল ক্ষমতা দখলের প্রশ্নটি মূলগতভাবে নির্ধারিত হয়ে গেছে। কিন্তু বিপ্লব সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে উপরিকাঠামো পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ কাজটি প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ালো। মাও এই প্রচারাভিযানকে সূত্রায়িত করেন এভাবে-

‘‘সংগ্রাম-সমালোচনা-পরিবর্তন’ অভিযান এইভাবে ধাপে ধাপে এগোবে: একটি একের মধ্যে তিন বিপ্লবী কমিটি গঠন, গণ সমালোচনা এবং বর্জন, শ্রেণীস্তরগুলোর শুদ্ধিকরণ, পার্টি সংগঠনকে শক্তিশালী করা এবং প্রশাসনিক কাঠামোকে সরল করা, অবান্তর নিয়মকানুনগুলোর পরিবর্তন করে অফিস কর্মীদের কর্মশালাতে পাঠানো।’’

কিন্তু গণ-সমালোচনা এবং শ্রেণী শুদ্ধিকরণ এর অভিযানের সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অতিবাম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল - ‘নিজের সঙ্গে লড়াই করার’ উৎসাহ, জরাগ্রস্ত উৎপাদন প্রক্রিয়ার সরলীকরণ, শারীরিক এবং মানসিক শ্রমের মধ্যকার দূরত্বকে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ‘দক্ষতার সঙ্গে বৈপ্লবিক মানসিকতা’র সংযোগ ঘটানোর সচেতন প্রয়াস প্রভৃতি। শিক্ষানীতির ক্ষেত্রেও কিছু বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল। পার্টির নবম জাতীয় কংগ্রেসের আগে কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক রিপোর্টে লিন পিয়াও বলেছিলেন-

"সাংস্কৃতিক বিপ্লব চূড়ান্তভাবে জয়লাভ করেছে এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের সময় এখন সমাগত।"

তিনি নির্লজ্জভাবে মাও প্রশংসা করেন, উৎপাদনমুখী শ্রমে রাজনৈতিক কর্মীদের অংশগ্রহণকে ‘জবরদস্তি শ্রম সংস্কার’ বলেন এবং তরুণদের গ্রামাঞ্চলে পাঠানোকে ‘ছদ্ম বেকারত্ব’ বলে মন্তব্য করেন। ৮ জুলাই, ১৯৬৬ সালে চিয়াং চিংকে লেখা চিঠিতে মাও বলেন-

‘‘আমার বন্ধু (লিন পিয়াওকে বিদ্রূপ করে) এবং তার সমর্থকরা আমার হাত বেঁধে রেখেছে। বাহ্যত: ওদের সঙ্গে সহমত হওয়া ছাড়া আমার উপায় নেইজীবনে এই প্রথমবার কোনো এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমাকে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যদের মতে মত দিতে হলো।’’

মাও আসন্ন চতুর্থ জাতীয় গণকংগ্রেসে উত্থাপন করার জন্য প্রস্তাব রাখলেন রাষ্ট্রীয় রাজ্য সভাপতির পদটি তুলে দেয়া হোক। ১৭ মার্চ কার্যকরী সম্মেলনে লিন মাও এর প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেন। ২৩ আগস্ট, ১৯৭০ সালে নবম কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় প্লেনারি বৈঠকে আলোচ্যসূচী গৃহীত হওয়ার আগে লিন বক্তব্যে মাওকে ‘মহান’ বলে তুলে ধরেন। তার প্রভূত গুণকীর্তন করে রাজ্য সভাপতি পদের জন্য নিজের পথ পরিষ্কার করার চেষ্টা করলেন। মাও পলিটব্যুরোর স্ট্যান্ডিং কমিটির বর্ধিত অধিবেশন ডাকলেন এবং লিন পিয়াও এর বক্তব্যের প্রচার বন্ধ করলেন যাতে তিনি রাষ্ট্রীয় সভাপতির পদটি বহাল রাখার জন্য জোর দিয়েছিলেন। লিন এর কাছে তখন সামরিক অভ্যুত্থান করা ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা রইলো না। ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লিন পিয়াও এর ছেলে লিন লিগনো ‘আউটলাইন অফ প্রোজেক্ট ৫৭১’ নাম দিয়ে মাওকে হত্যা করা কিংবা মাও ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের কোনো মিটিং চলার সময় আটক করার পরিকল্পনা করলেন।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Project_571

মাও দ্রুত নবম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় প্লেনারি বৈঠক আহ্বান করেন। প্লেনারি বৈঠকে কারসাজি ফাঁস হয়ে যেতে পারে আন্দাজ করে লিনও প্রস্তুতি জোরদার করতে থাকেন। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পরিদর্শনের কাজে বেরিয়ে মাও লিন এর ষড়যন্ত্র ভেস্তে দেন। বিভিন্ন জায়গায় সাথীদের সঙ্গে আলোচনার সময় মাও মন্তব্য করেন-

‘‘কোনো একজন রাষ্ট্রীয় সভাপতি হতে খুব আগ্রহী, তিনি পার্টির মধ্যে বিভাজন ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।"

লিন পিয়াও মাও এর মন্তব্য শুনে তার পরিদর্শন যাত্রার মধ্যে মাওকে হত্যা করে ক্যু দেতা করতে মনস্থ করেন। মাও লিন এর অদ্ভুত কিছু কার্যকলাপ দেখে আকস্মিকভাবে তার যাত্রাপথ পরিবর্তন করেন। লিন তখন পিকিং থেকে সাতটি এরোপ্লেন এবং একটি বিশেষ প্লেন ট্রিডেন্ট ২৫৬ পাঠাতে অনুরোধ জানান। কেন্দ্রীয় কমিটি এবং চৌ এন লাই এই অনুরোধের কথা জানতে পেরে রাডারের সাহায্যে ট্রিডেন্ট ২৫৬ এর গতিবিধি অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেন। লিন, তার স্ত্রী-পুত্র এবং ছয়জন সহযোগী ট্রিডেন্ট প্লেনটিতে উঠে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। প্লেনটি মঙ্গোলিয়াতে ভেঙে পড়লে সকল যাত্রী নিহত হন। লিন এর পতনের পর ৩২ জন সামরিক অফিসার গ্রেপ্তার ও বরখাস্ত হলেন। ২৫ জন জেলা ও আঞ্চলিক অধিনায়ককে সরিয়ে দেয়া হলো ১৯৭৩ সালের গোড়ায়। পুরনো কর্মীদের আবার ফিরিয়ে আনা হলো, কিন্তু এতে বহু দক্ষিণপন্থীর অনুপ্রবেশ ঘটে গেলো পার্টিতে। লিনপিয়াও এর ‘অতি-বাম’ ঝোঁক (যা অন্তর্বস্তুতে দক্ষিণপন্থা) এর বিরুদ্ধে বাম ও দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে এক ধরনের যুদ্ধবিরতি তৈরী হয়। প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই পালন করেছিলেন মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা। পার্টির মধ্যে বিভিন্ন শক্তিগুলোর ভারসাম্যের কার্যকরী স্থিতাবস্থা গড়ে উঠেছিল। ১৯৭২ সাল নাগাদ দক্ষিণপন্থী অংশ নিজেদের মতামত জোরেসোরে রাখতে শুরু করলো। বিতর্ক শুরু হয়ে গেলো অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, শিল্প পরিকল্পনা এবং ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনার পুন:প্রবর্তন নিয়ে। ১৯৭২ সালের শেষের দিকে দক্ষিণপন্থীরা শিক্ষাক্ষেত্রে আঘাত হানলো সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় গৃহীত শিক্ষা ব্যবস্থার কিছু পরিবর্তনকে উল্টে দিয়ে। পরবর্তীকালে পার্টি যাকে ‘মন্দ বাতাস’ বলে অভিহিত করেছিল তার প্রবাহ শুরু হয়ে গেলো। ২৪ এপ্রিল, ১৯৭২ সালে পিপলস ডেইলি ‘অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নাও, রোগীকে বাঁচাবার জন্য রোগকে সারাও’ শিরোনামে সম্পাদকীয় প্রকাশ করলো যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ, বিশেষ করে বয়স্ক পার্টি সদস্যদের উপর আস্থা রাখার উপর জোর দেয়া হলো। তখন থেকে বিরাট সংখ্যক অগ্রণী সদস্য যারা মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় নিন্দিত হয়েছিলেন, তাদের পুন:প্রতিষ্ঠিত করা শুরু হয়ে গেলো। ১৯৭৩ সালের মার্চে মাও এর প্রস্তাব অনুযায়ী চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি দেং জিয়াও পিংকে পুন:প্রতিষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নিলো। চিয়াং চিং এর নেতৃত্বে বামপন্থীরা দক্ষিণপন্থীদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে পড়ছেন অনুভব করে প্রতিক্রিয়ায় অতিবাম ঝোঁক দেখানো শুরু করলেন। মাও অতি বাম ঝোঁকের থেকে অতি দক্ষিণ ঝোঁক বেশি বিপজ্জনক বিবেচনা করে বামপন্থীদের পক্ষ নিলেন। ১৯৭৩ সালের আগস্ট মাসে পিকিংয়ে দশম জাতীয় পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হলো। এই কংগ্রেস ঘোষণা করে নবম কংগ্রেসের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক নীতি সঠিক ছিল। লিন পিয়াও চক্রের অপরাধ তীব্রভাবে সমালোচিত হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচনে অনেক পুরনো সদস্য যারা মহান সর্বহারা সংস্কৃতিক বিপ্লবে সংশোধনবাদী বলে খারিজ হয়ে গিয়েছিলেন, তারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুক্ত হলেন। ‘গ্যাং অফ ফোর’ এর সকল সদস্য পলিটব্যুরোতে স্থান পেয়ে গেলেন। ডান-বাম উভয়ে প্রায় সমান সমানভাবে যার যার নীতিকে জয়যুক্ত করার জন্য নতুন লড়াইতে ঝাঁপিয়ে পড়লো। বামপন্থীরা তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র পেয়ে গেলো যখন নতুন সংবিধানের ওপর রিপোর্ট রাখতে গিয়ে ওয়াং হাং-ওয়েন ‘স্রোতের বিরুদ্ধে যাওয়া মার্কসীয়-লেনিনীয় নীতি’ এবং ‘মার্কসবাদ অভ্যাস করো, সংশোধনবাদ নয়; ঐক্যবদ্ধ হও, বিভক্ত হয়ো না; মুক্তমনা হও, গুপ্ত জোট করে ষড়যন্ত্র করো না' বলে আহ্বান রাখলেন। এই আহ্বান বামেদের পক্ষে প্রতি আক্রমণ করার সুযোগ এনে দিলো। প্রতি-আক্রমণের বয়ান হলো ‘লিন পিয়াও এবং কনফুসিয়াস এর সমালোচনা করো’। কিন্তু তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এটা ছিল আড়ালে দক্ষিণপন্থীদের, বিশেষ করে চৌ এন লাইয়ের ওপর আক্রমণ। কনফুশিয়াস এবং মেনসিয়াসের বিরুদ্ধে কামান দাগা হলো তাদের ‘পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ আর ‘মধ্যপন্থা’র মতবাদের জন্য। কে তাদের লক্ষ্য তা আরও পরিষ্কার হয়ে গেলো যখন ‘চৌ এর ডিউক’ বলে বলা হতে থাকলো যা স্পষ্ট করে চৌ এন লাইকে বোঝায়। এই প্রচার প্রাথমিক অবস্থায় মাও এর অনুমোদন পায়। কিন্তু যখন তা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছায় তখন তিনি ‘গ্যাং অফ ফোর’কে তিরস্কার করেন। ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে চৌ এন লাই যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মাও দেং জিয়াও পিংকে দেশের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেন। ‘গ্যাং অফ ফোর’ এর ওপর মাও এর আস্থা যে ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছিল তা যথার্থ প্রতিপন্ন হলো যখন মাও চৌ এন লাইকে চতুর্থ জাতীয় গণ কংগ্রেসের দায়িত্ব দিলেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির উপাধ্যক্ষ, তৎসঙ্গে রাজ্য কাউন্সিলের প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কমিটির মিলিটারী কমিশনের উপাধ্যক্ষ এবং গণমুক্তি ফৌজ এর সাধারণ সমদস্যদের প্রধান পদে দেং জিয়াও পিং এর নাম অনুমোদন করলেন। চতুর্থ জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রথম বৈঠক হয় পিকিং এ জানুয়ারি ১৩-১৮, ১৯৭৫ সালে। চৌ এন লাই সরকারের তরফে রিপোর্ট পেশ করেন বিংশ শতকের শেষভাগের মধ্যে কৃষি, শিল্প, জাতীয় প্রতিরক্ষা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি - এই চার ক্ষেত্রে চার আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে। একই সঙ্গে তিনি মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লব এর গুরুত্বকে তুলে ধরেন তার সুদূর প্রসারী প্রভাবের জন্য এবং ‘লিন পিয়াও ও কনফুশিয়াস এর সমালোচনা করো’ প্রচার অভিযানকে সমর্থন করেন। মাও এর ব্যক্তিগত আগ্রহে ‘ধর্মঘটের অধিকার’ চ্যাং চুন-চিয়াও পঠিত রাজ্য সংবিধানের রিপোর্টে সংযুক্ত হয়। চতুর্থ জাতীয় গণকংগ্রেস অনিশ্চিত ভারসাম্যে আটকে থাকে। সাংগঠনিক জোড়াতালির মধ্য দিয়ে দক্ষিণপন্থীরা ক্ষমতা বাড়ায়, অন্যদিকে মাও এর লাগাতার শ্রেণীসংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেয়ার মধ্য দিয়ে বামপন্থীরা শক্তিশালী অবস্থান নিতে থাকে। চৌ এন লাই অতি বামদের নৈরাজ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে যেভাবে দাঁড়িয়েছিলেন তাতে দক্ষিণপন্থীরা তাকে নিজেদের সুবিধার্থে কাজে লাগিয়েছিল। ‘বিপ্লবকে আঁকড়ে ধর, উৎপাদন বাড়াও’ মাও এর এই মূল শ্লোগানকে ভুলে গিয়ে অতি বামরা কেউ উৎপাদনের কথা বলছে কিনা তার জন্য কানখাড়া করে থাকতো। চৌ এবং দেং এর মধ্যকার পার্থক্য বোঝা যায় যদি কেউ ৪র্থ জাতীয় কংগ্রেসের আগে চৌ যে অর্থনৈতিক কর্মসূচী নিয়েছিলেন তার সঙ্গে ১৯৭৫ সালের গ্রীষ্মে দেং এর নির্দেশে লেখা ‘সাধারণ কর্মসূচী'র তুলনা করেন। যদিও মাও এর ডজনখানেক উদ্ধৃতি ব্যবহার করে ‘সাধারণ কর্মসূচী’ রচনা করা হয়েছিল, কিন্তু তাতে জাতীয় অর্থনীতির বিকাশের কথা প্রথম গুরুত্ব পেয়েছিল। অর্থনৈতিক বিকাশ, স্থায়িত্ব এবং ঐক্য এবং সর্বহারার একনায়কত্ব এর তত্ত্বের অধ্যয়ন নিয়ে মাও ১৯৭৪ সালে তিনটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছিলেন। বিভিন্ন উপলক্ষ্যে ‘সাধারণ কর্মসূচী’ এই বিষয়গুলোকে পরস্পর অবিচ্ছিন্ন ঘোষণা করে এবং মাও এর নীতি ‘শ্রেণী সংগ্রামই মূল সূত্র’ এর পরিবর্তে ‘তিন নির্দেশ’কে মূলসূত্র বলে প্রচার করে। চতুর্থ জাতীয় গণকংগ্রেসের পর চৌ আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং দেং পার্টি এবং রাষ্ট্র উভয় ক্ষেত্রে একচ্ছত্র ক্ষমতা দখল করেন। দেং কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকারের পদগুলোতে নিজের লোকদের নিয়ে আসতে থাকেন। কেন্দ্রে ৩০টি নিয়োগের মধ্যে ২০টিই হয় মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় নিন্দিত এবং পরে পুন:প্রতিষ্ঠিত পার্টি সদস্যদের মধ্য থেকে। তিনি জাতীয় অর্থনীতির বিকাশের বিষয়টিকে নির্ধারক বিষয় হিসাবে দাঁড় করানোর জন্য শুদ্ধিকরণ আন্দোলনের সূচনা করলেন। রেল, শিল্প এবং কৃষি উৎপাদন, সেনাবাহিনী এমনকি বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রগুলোতে তিনি সংস্কার শুরু করে দিলেন। ‘গ্যাং অফ ফোর’ এর নেতৃত্বে বামপন্থীরা ‘সর্বহারার একনায়কত্ব' এর তত্ত্ব অধ্যয়নের সপক্ষে জোরদার আন্দোলন শুরু করলো দক্ষিণপন্থীরা যাকে প্রশ্রয় দিতো সেই ‘অভিজ্ঞতাবাদ’কে উন্মোচিত করার জন্য। জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে বড় বড় সংঘর্ষ হতে লাগলো যেখানে গণমুক্তি ফৌজকে হস্তক্ষেপ করতে হলো। মাও দুই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্য নিরূপণ করলেন -  একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লবে অসন্তোষ এবং অন্যটি তার সঙ্গে চূড়ান্ত বোঝাপড়া। শিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্টির সহ সম্পাদক দেং মারফত মাওকে চিঠি পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পার্টি নেতা যারা চিয়াং চিং-এর ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেন। মাও বুঝতে পারলেন গোটা বিচারই দেং এর ষড়যন্ত্র। ১৯৭৫ সালের অক্টোবর মাসে 'দেংকে সমালোচনা করো এবং দক্ষিণপন্থী পুনর্বাসনকে প্রতিহত করো' আন্দোলন শুরু হয়ে গেলো। চৌ এন লাই মারা গেলেন ১৯৭৬ সালের ৮ জানুয়ারি। পার্টির মধ্যকার উভয়পক্ষ তার শেষকৃত্যকে কেন্দ্র করে একে অপরের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে নেমে পড়লো। দক্ষিণপন্থীরা মানুষকে শোক যাত্রায় সংগঠিত করতে লাগলো এই বলে যে তিনি শুধু তাদের সঙ্গেই ছিলেন। জনগণের থেকে বামপন্থীদের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করার কাজে শেষকৃত্যে উপস্থিত দশ লক্ষ মানুষকে তারা ব্যবহার করলো। তারা ‘গ্যাং অফ ফোর’ ও বামপন্থীদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক শ্লোগান দিলো।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Gang_of_Four

বামপন্থীরা জনসমাবেশকে ‘তিয়েন আন মেন স্কোয়ারে প্রতিবিপ্লবী সমাবেশ দীর্ঘ সময় ধরে পরিকল্পিত’ বলে ঘোষণা করলো। ঐ বছরের ৪ এপ্রিল সমাধি ধৌতকরণ উৎসবে বিশ লক্ষ মানুষ তিয়েন আন মেন স্কোয়ারে সমবেত হন প্রয়াত নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। এই সুযোগটা দক্ষিণপন্থীরা সুচতুরভাবে কাজে লাগালো। বামপন্থীরা পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখানোর চেষ্টা করলো। তাদের নিজেদের ভাষ্য অনুযায়ী ‘‘তাদের বিকৃত কার্যকলাপে ত্রুদ্ধ হয়ে জনগণ তাদের বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম করার জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নেয়।’’ মিলিশিয়া, পুলিশ এবং পিকিং গ্যারিসনকে নামানো হয়। ‘পর্দার পিছনে মূল ষড়যন্ত্রকারী’ বলে চিহ্নিত হন দেং জিয়াও পিং এবং ৭ এপ্রিল মাও এর প্রস্তাবক্রমে তাকে পার্টির অভ্যন্তরে ও বাইরে সমস্ত পদ থেকে অপসারিত করা হয়। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সহসভাপতি এবং কাউন্সিলের প্রধান রূপে নিযুক্ত হন হুয়া কুও ফেং।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Hua_Guofeng

১৯৭৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মাও সে তুং প্রয়াত হলেন। বিগত কয়েক বছরে পার্টির মধ্যে দেং জিয়াও পিং এর কর্তৃত্ব বামেদের পার্টির মধ্যে সংখ্যালঘুতে পরিণত করেছিল। আপাতভাবে মাও এর বিশ্বাসভাজন বলে পরিচিত হুয়া কুও ফেং ক্ষমতা দখলের লড়াইটিকে দক্ষিণপন্থীদের পক্ষে নিয়ে আসার জন্য আসরে নামলেন। ৬ অক্টোবর হুয়ার নেতৃত্বে ‘গ্যাং অফ্‌ ফোর’কে গ্রেপ্তার করা হলো। পরের দিন কেন্দ্রীয় কমিটির পলিটব্যুরো হুয়াকে পার্টির এবং মিলিটারী কমিশনের সভাপতি মনোনীত করলো। নভেম্বর মাসের শেষদিকে দেং জিয়াও পিং এর সমালোচনা বন্ধ হয়ে গেলো। ১৯৭৭ সালের এর জানুয়ারিতে দেং জিয়াও পিংকে পার্টি এবং দেশের নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনার দাবীতে বিক্ষোভ প্রদর্শন হতে লাগলো। ১৯৭৭ সালের জুন মাসে রেন মিনরিপাও-তে দেং এর চিন্তাভাবনা এবং ‘গ্যাং অফ ফোর’ এর উদ্দেশে তার সমালোচনা প্রভূতভাবে প্রশংসিত হলো এবং জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় বৈঠকে হুয়া বিধিবদ্ধভাবে সভাপতি নির্বাচিত হলেন এবং দেংকে ভূতপূর্ব সব ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া হলো। দক্ষিণপন্থীরা পার্টি এবং রাজ্য উভয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করলো। ৬ অক্টোবর, ১৯৭৬ সালের ক্যু দেতার পর হুয়াকুও ফেং এর ক্ষমতায় উত্তরণ সংস্কৃতির বিপ্লবের সমাপ্তি ঘটালো। সাংহাই এর শ্রমিকবর্গ এবং অন্যান্য কিছু অঞ্চল থেকে বিক্ষিপ্ত প্রতিরোধ বাদে চূড়ান্ত ক্ষমতা দখলের পর্বে দক্ষিণপন্থীদের কোনো জোরালো প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হয়নি।

Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

দেশ যখন ইসলামাইজেশন এর পথে [পর্ব-এক]