রাশিয়া এবং বাজার অর্থনীতি - আবদুল হক
তথাকথিত সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির ২৮তম কংগ্রেসে গর্বাচেভ যে রাজনৈতিক রিপোর্ট এবং যে রিপোর্ট কংগ্রেসে গৃহীত হয়েছে সেই রিপোর্ট অনুযায়ী রাশিয়ার অর্থনৈতিক কার্যক্রমের চালিকা শক্তি হলো বাজার অর্থনীতি। রাশিয়ার অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসাবে বাজার অর্থনীতি গ্রহণ করে রাশিয়া পরিপূর্ণ এবং সামগ্রিকভাবে ধনবাদী অর্থনীতিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। বাজার অর্থনীতির প্রথম ও প্রধান কথা হলো বাজারের ক্রিয়া প্রক্রিয়ার প্রেক্ষিতে চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে পণ্য সামগ্রির মূল্য নির্ধারণ। এর বিপরীতে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির চালিকা শক্তি হলো সমগ্র দেশের প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পিত অর্থনীতি এবং উৎপাদিত পণ্য সামগ্রির সুষম বণ্টন। ১৯১৭ সালের ৭ই নভেম্বর রাশিয়াতে মহান লেনিনের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব জয়যুক্ত হওয়ার পর সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা হয়। মহান স্তালিনের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির এই পতাকাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়। ক্রুশ্চেভ চক্রের ক্ষমতা দখলের পর রাশিয়া ধনবাদী পথে যাত্রা শুরু করে। ২২তম কংগ্রেসে মুনাফাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ক্ষেত্রে উৎপাদন পরিপ্রেক্ষিতে আয় ব্যয়ের ক্ষেত্রে সুতীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখে সামগ্রিক মঙ্গলকে সামনে রেখে কোনো রকম অনুৎপাদনজনিত ব্যয়কে প্রশ্রয় দেয়া হয় না। কিন্তু ধনবাদী উৎপাদন ব্যবস্থায় মুনাফাকে যেমন উৎপাদনের ভিত্তি হিসাবে বিচার করা হয়, সমাজতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থায় তেমন মুনাফাকে ভিত্তি হিসাবে বিচার করা হয় না। ক্রুশ্চেভের পর ব্রেজনেভ ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে মুনাফার প্রবণতাকে আরও অগ্রসর করে নেয়। কিন্তু ক্রুশ্চেভ এবং ব্রেজনেভের আমলে বিশ্ব বিবেককে প্রতারিত করার জন্য সমাজতন্ত্রের সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে রাখা হয়। এর পর ক্ষমতায় আসেন গর্বাচেভ। গর্বাচেভের পেরেস্ত্রইকা অর্থাৎ পরিবর্তন এবং গ্লসনস্ত অর্থাৎ খোলা দরজার নীতি প্রবর্তন করে ধনবাদের জন্য সকল দরজা খুলে দেয়া হয়। এর ফলে ধনবাদী অর্থনীতির সঙ্কট রাশিয়াতে আরও তীব্র আকার ধারণ করে। সমাজতান্ত্রিক আমলে স্তালিনের নেতৃত্বে রাশিয়াতে শিল্প উৎপাদন ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছিল। ১৯৩৬ সালের একটা হিসাবের দিকে দৃষ্টি দিলে এটা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। ১৯২৯ সালের শিল্প উৎপাদনকে ১০০ হিসাবে ধরলে আমেরিকাতে শিল্প উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৯২ দশমিক ২ ভাগ। ১৯৩৮ সালে এই উৎপাদন আরও হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৭২ ভাগ। ফ্যাসিষ্ট জার্মানি এবং ফ্যাসিষ্ট জাপান যুদ্ধ অর্থনীতি গ্রহণ করার ফলে অর্থনীতির কিছুটা প্রসার ঘটে। এর ফলে ১৯২৯ সালের ১০০ তুলনায় ১৯৩৮ সালে জাপান ১৬৫ ভাগ এবং জার্মানি ১২৫ ভাগে উন্নীত হয়। কিন্তু রাশিয়াতে শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে কমরেড স্তালিনের আমলে বিষ্ময়কর অগ্রগতি হয়। ১৯২৯ সালের ১০০ ভাগের তুলনায় রাশিয়ার শিল্প উৎপাদন ১৯৩৭ সালে গিয়ে দাঁড়ায় ৪২৪ ভাগে। এই যুগ ছিল রাশিয়ার ক্ষেত্রে সমাজতন্ত্রের যুগ। এই সমাজতান্ত্রিক যুগে স্তালিনের রাশিয়া বিশ্বের শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ হার অর্জন করে। আর সমাজতন্ত্রের পথ পরিত্যাগ করে ধনবাদের পথে অগ্রসর হওয়ার দিন থেকে ক্রুশ্চেভের আমল থেকে রাশিয়ার ধনবাদী অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিপর্যয় শুরু হয়। গর্বাচেভের আমলে এই অর্থনৈতিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করে। বিশ্বের উন্নত ধনবাদী দেশসমূহের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করলে শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে ১৯৯০ সালে রাশিয়ার স্থান ছিল সর্বনিম্ন। রাশিয়ার অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসাবে বাজার অর্থনীতিকে গ্রহণ করে গর্বাচেভ যেমন একদিকে রাশিয়াকে পরিপূর্ণ এবং সামগ্রিকভাবে ধনবাদে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে তেমনি অন্যদিকে সমাজতন্ত্রের সাইনবোর্ডকে সম্পূর্ণরূপে দূরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের যে সমস্ত পার্টি রাশিয়াকে এখনও সমাজতন্ত্রের দেশ বলে আখ্যায়িত করে সেই সমস্ত পার্টি ধনবাদের পতাকাকেই তুলে ধরছে, ধনবাদের স্বার্থকেই সেবা করছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি গর্বাচেভের ধনতান্ত্রিক রাশিয়াকে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া বলে অভিহিত করে ধনবাদের পতাকাকেই হাতে তুলে নিয়েছে। এই একই পথ অনুসরণ করে চলেছে ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ। কোনো কোনো পার্টি বলছে যে, রাশিয়া চীনে কিছু কিছু সংশোধনবাদের প্রকাশ ঘটলেও মৌলিকভাবে বিচার করলে রাশিয়া চীন সমাজতান্ত্রিক দেশ। এই ধরনের পার্টি হলো ওয়ার্কার্স পার্টি। ওয়ার্কার্স পার্টিও ধনবাদের পতাকাকে হাতে তুলে নিয়েছে। বিশ্ব পরিসরে রাশিয়া চীন যেমন সমাজতান্ত্রিক শক্তি নয়, জাতীয় পরিসরে তেমনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি সমাজতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়। সেই জন্য এর বিরুদ্ধে সুগভীর মতাদর্শগত সংগ্রাম চালিয়ে এদের মুখোশ খুলে দিতে হবে। রাশিয়ার পার্লামেন্টে ১৯ অক্টোবর ১৯৮৯ মিখাইল গর্বাচেভ অর্থনৈতিক সংস্কার বা বাজার অর্থনীতি চালু করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। রাশিয়ার প্রজাতন্ত্রগুলো নিজেরাই তাদের বাজার অর্থনীতি উন্নয়ন করতে পারবে বলে গর্বাচেভের পক্ষ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পর সুপ্রিম সোভিয়েতের কমিটিগুলো ১৮ অক্টোবর বাজার অর্থনীতির প্রস্তাব অনুমোদনে নীতিগতভাবে সম্মত হয়। পার্লামেন্টে বক্তৃতা দানকালে গর্বাচেভ সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন যে, রাশিয়ার প্রজাতন্ত্রগুলো তাদের নিজস্ব গতিতেই সংস্কারের পথে অগ্রসর হতে পারবে। অর্থনৈতিক সংস্কার অর্থাৎ বাজার অর্থনীতি চালু করার বিষয়ে গর্বাচেভের বৃহত্তর রুশ প্রজাতন্ত্র রুশ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলেৎসিনের সাথে নীতিগতভাবে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হলেও কৌশলগত কিছু পার্থক্য দেখা দেয়। বরিস ইয়েলেৎসিন এবং গর্বাচেভের নীতিমালার কোন পার্থক্য নেই। গর্বাচেভের আমূল অর্থনীতি সংস্কারের সম্পূর্ণ পরিকল্পনাটি বরিস ইয়েলেৎসিন মেনে নেন, পার্থক্য হলো গর্বাচেভ অর্থনৈতিক সংস্কার প্রস্তাব ধাপে ধাপে কার্যকরী করতে চাচ্ছেন, আর ইয়েলেৎসিন দ্রুত গতিতে অর্থনৈতিক সংস্কার প্রস্তাব কার্যকরী করতে আগ্রহী। সেপ্টেম্বর মাসে অর্থনৈতিক সংস্কার অথবা বাজার অর্থনীতি চালুর ব্যাপারে পার্লামেন্টের ডেপুটিদের অনুমোদনের জন্য তিনটি পরিকল্পনা পেশ করা হয়। প্রথমটি সরকারি পরিকল্পনা, দ্বিতীয়টি রুশ ফেডারেশনের পার্লামেন্টের দ্বারা অনুমোদিত প্রস্তাব, আর তৃতীয়টি অর্থনৈতিক গ্রুপের পরিকল্পনা। ব্যাপক আলোচনার পর এবং সরকারি পরিকল্পনাটির ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ সংশোধনী সমূহ গ্রহণের পরেই ১৯ অক্টোবর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনার মূল কথাটি হলো বাজার অর্থনীতি। ২৮তম কংগ্রেসে ঘোষণা করা হয় যে, রুশ অর্থনীতির চালিকা শক্তি হবে বাজার অর্থনীতি। ধনবাদী অর্থনীতির চালিকা শক্তি হলো বাজার অর্থনীতি। বিশ্বে দুই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সামনে এসে দাঁড়িয়েছে- ধনবাদী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। এই দুই অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মৌলিক পার্থক্য সম্পর্কে আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির ভিত্তি হলো সমাজের সমগ্র প্রয়োজনের বিচার করে পরিকল্পিতভাবে অর্থনীতিকে বিকশিত করে তোলা এবং সুষম বণ্টন। আর ধনবাদী অর্থনীতির ভিত্তি হলো বাজার। বাজারই ধনবাদী অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রিত করে। আর সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি হলো পরিকল্পিত অর্থনীতি। ২৮তম কংগ্রেসে অর্থনৈতিক সংস্কার অর্থাৎ বাজার অর্থনীতির পরিকল্পনা গৃহীত হওয়ার পর ১৯ অক্টোবর রাশিয়ার পার্লামেন্ট অর্থনৈতিক সংস্কারের পরিকল্পনা পাস করলো। অর্থাৎ ১৯১৭ সালের ৭ই নভেম্বর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব জয়যুক্ত হওয়ার পর রাশিয়াকে কেন্দ্র করে কমরেড লেনিন ও স্তালিনের নেতৃত্বে যে পরিকল্পিত সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কার্যকরী করা হয় তার যবনিকাপাত ঘটে। এই পরিকল্পিত সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিই ইউরোপের অনুন্নত রাশিয়াকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান শিল্প প্রধান দেশে পরিণত করে। এরই ফলে কমরেড স্তালিনের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া পরাজিত করে বিশ্বের সেই সময়কার প্রধান আগ্রাসী শক্তি হিটলারের ফ্যাসিস্ট জার্মানিকে। একদিক থেকে বিচার করলে গর্বাচেভকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। গর্বাচেভ রাশিয়ার ওপর থেকে তথাকথিত সমস্ত রকমের সমাজতান্ত্রিক আবরণ উন্মোচিত করে দিয়েছেন। রাশিয়ার উলঙ্গ ধনবাদী রূপ চিনতে আজ আর কারো কষ্ট হয় না। ধনবাদের পথে রাশিয়ার এই যাত্রা শুরু হয় ক্রুশ্চেভের সময় ১৯৫৬ সালে বিশতম কংগ্রেসের মধ্য দিয়ে। ১৯৫৬ সালে ক্রুশ্চেভ বিশতম কংগ্রেসে সংশোধনবাদের পতাকা তুলে ধরে। কমরেড লেনিন বলেছেন যে, সংশোধনবাদ হলো শ্রমিক শ্রেণির কাতারে বুর্জোয়া প্রভাব। ১৯৫৬ সালে যে বুর্জোয়া প্রভাবের প্রক্রিয়ার সূচনা হয় সেই বুর্জোয়া প্রভাব পরিণতিতে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়াকে ধনবাদী রাশিয়ায় পরিণত করে। কিন্তু ধনবাদী রাশিয়ার স্বরূপ যাতে বিশ্ববাসীর কাছে ধরা না পড়ে সেই জন্য কিছু কিছু সমাজতান্ত্রিক আবরণ ঝুলানো থাকে। তার ভিতর একটি হলো পরিকল্পিত অর্থনীতির আবরণ। ক্রমে ক্রমে এই সমস্ত তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক আবরণ খসে পড়তে থাকে। গর্বাচেভ তথাকথিত সমস্ত রকমের সমাজতান্ত্রিক আবরণকে দু'হাত দিয়ে টেনে ছিড়ে ফেলে দিয়েছেন। গর্বাচেভ পেরেস্ত্রইকা অর্থাৎ পরিবর্তন ও গ্লসনস্ত অর্থাৎ খোলা দরজার নীতি গ্রহণ করে ধনবাদী পরিবর্তনের জন্য রাশিয়ার সমস্ত দরজাকে খুলে দেন। ক্রুশ্চেভ ধনবাদের যে ধারাকে সৃষ্টি করেন এবং ব্রেজনেভ যে ধারাকে প্রবহমান করে তোলেন সেই ধারাকে পরিণতিতে নিয়ে গিয়েছেন গর্বাচেভ। গর্বাচেভের অর্থনৈতিক সংস্কারের পরিকল্পনা বা বাজার অর্থনীতি সেই ধনবাদী পরিকল্পনারই অবশ্যম্ভাবী রূপ। ধনবাদী রাশিয়াকে চিনতে আর কোন দ্বিধা বা সন্দেহ থাকে না। এর পরেও যে সমস্ত পার্টি বা দল বলে যে, রাশিয়াতে কিছু কিছু বিচ্যুতি দেখা দিলেও, এই সমস্ত বিচ্যুতির চরিত্র গুরুতর হলেও রাশিয়া সমাজতান্ত্রিক দেশ, তারা সুস্পষ্টভাবে পুরোপুরি বুর্জোয়া স্বার্থের পরিপূরক। গর্বাচেভ বাজার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করে আমূল অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনাকে কার্যকরী করে আরও এক পা এগিয়ে গিয়েছেন। ২৬ অক্টোবর এক ডিক্রি জারি করে ঘোষণা করেছেন যে, বিদেশি পুঁজিপতিরা রাশিয়াতে পুঁজি বিনিয়োগ করে যে সমস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের পুরোপুরি মালিকানা তাদের হাতে থাকবে এবং এই সমস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত সমস্ত মুনাফাই তারা দেশে নিয়ে যেতে পারবেন। এই ডিক্রি জারির পূর্বে বিদেশি পুঁজিপতিরা ৪৯ ভাগ পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারতেন। এই ডিক্রি জারি করে গর্বাচেভ রাশিয়াকে বিদেশি পুঁজিপতিদের লুণ্ঠনের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করলেন।
Comments