সংশোধনবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেই কৃষক সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে (৮ নং দলিল)
নির্বাচনের পরবর্তী যুগে আমাদের আকাঙ্খাকে সত্য প্রমাণিত করতে পার্টি নেতৃত্ব উঠে পড়ে লেগেছেন। পি. বি (পলিট ব্যুরো) আমাদের কাজ নির্দেশিত করেছেন অ-কংগ্রেসী মন্ত্রিসভাগুলিকে প্রতিক্রিয়ার হাত থেকে রক্ষা করার সংগ্রাম চালাতে; অর্থাৎ শ্রেণীসংগ্রামকে তীব্র করে তোলা নয়, মন্ত্রিসভার পক্ষে ওকালতি করাই হবে মার্কসবাদীদের প্রধান কাজ। তাই শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে অর্থনীতিবাদকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য পার্টি সভ্যদের কনভেনশন ডাকা হলো এবং তারপরই মন্ত্রিসভার নেতৃত্বে শিল্পে শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হলো। শ্রমিকদের ঘেরাও করতে মানা করা হলো, শ্রেণী সহযোগীতার চেয়ে নগ্ন চেহারা আর কি হতে পারে? মালিকপক্ষকে শোষণ করার পুরো অধিকার দিয়ে শ্রমিককে বলা হচ্ছে কোন সংগ্রাম না করতে। বিপুল গণ আন্দোলনের ফলে যে সরকার কায়েম হলো, সেই সরকারে কমিউনিস্ট পার্টি যোগ দেওয়ার সাথে সাথেই তারা শ্রেণী সহযোগিতার পথ বেছে নিলেন। চীনের নেতারা বহু আগেই ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন যে যারা আন্তর্জাতিক মতবিরোধ সম্পর্কে নিরপেক্ষ নীতি নিচ্ছেন, তারা অতি দ্রুত সুবিধাবাদের পথ নেবেন এবং এখন চীনের নেতারা বলেছেন যে এই নিরপেক্ষ নীতিওয়ালারা আসলে হলেন সংশোধনবাদী এবং তারা দ্রুত প্রতিবিপ্লবী শিবিরে চলে যাবেন। আমাদের দেশে এই সত্য আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। শ্রমিক শ্রেণীর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা আমরা চোখের উপর দেখেছি, এর সাথে যোগ করুন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের ঘোষণা। তিনি প্রথমে প্রতিশ্রুতি দিলেন যে সমস্ত ভেষ্ট জমি ভূমিহীন কৃষকের মধ্যে বিলি করবেন। তারপর তার পরিমাণটা কমে গেলো। শেষে জানালো যে, এ বছর যেমন আছে তেমনই থাকবে। খাজনা মাফ ব্যাপারটা জেএলআরও’দের দয়াতে ছেড়ে দেওয়া হলো। কৃষককে পথ বাৎলানো হলো দরখাস্ত করার এবং বলা হলো কৃষকের জোর করে জমি দখল করা চলবে না। হরেকৃষ্ণবাবু শুধু কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভ্য নন, তিনি বাংলাদেশের কৃষক সভারও সম্পাদক। তারই কৃষকসভার ডাকে গত ১৯৫৯ সালে ভেষ্ট জমি ও বেনামী জমি ধরার আন্দোলন চলেছিল। সরকার জমির মালিকদের স্বার্থে দমননীতি চালিয়েছে, উচ্ছেদের রায় দিয়েছে। তবু কৃষক অনেক ক্ষেত্রে সে জমি ছাড়েনি, গ্রামে একতার জোরে দখল রেখেছে। কৃষকসভার নেতা মন্ত্রী হওয়ার পর কি তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করলেন? না, তিনি যে কথা বললেন তার অর্থ হচ্ছে ভেষ্ট জমি পুনর্বণ্টন হবে। কে পাবে? সে বিষয়ে জেএলআরও'রা কৃষকসভার মতামত নেবে। কিন্তু সেই মতামতই কি পালিত হবে? এমন কোনো বক্তব্য হরেকৃষ্ণবাবু রাখেননি। তবে যদি জেএলআরও কৃষক সভার মতামতকে অগ্রাহ্য করে তাহলে কৃষকদের কোনোমতেই সে জমি জোর করে দখল করা চলবে না। এ বিষয়ে হরেকৃষ্ণবাবু স্পষ্টভাবে বলতে দেরি করেননি। একে কি বলবেন? সরকার ও জোতদারদের গোমস্তাগিরী নয় কি? শ্রেণীগুলির পক্ষে এ রকম নির্লজ্জ ওকালতি কংগ্রেসীরাও করতে সাহস পেতো না। কাজেই পার্টি নেতাদের নির্দেশ মানার অর্থ হলো সামন্তশ্রেণীগুলির শোষণ ও শাসন নির্বিচারে মেনে চলা। তাই কমিউনিস্টদের দায়িত্ব হবে এই নেতৃত্বের শ্রেণীবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা পার্টি সভ্য ও জনসাধারণের মধ্যে খুলে ধরা এবং শ্রেণীসংগ্রামকে তীব্র করার নীতিতে এগিয়ে যাওয়া। তারপর, ধরুন হরেকৃষ্ণবাবুর প্রস্তাব মেনে যদি ভূমিহীন ও দরিদ্র কৃষক দরখাস্ত দেয় তাহলে কি হবে? ভেষ্ট জমির মধ্যে কিছু অনাবাদী আছে সত্য, কিন্তু আবাদী জমিই বেশী। সেই আবাদী জমিতে চাষী আছে, সে হয় আজ লাইসেন্সের জোরে ভোগ করছে না হলে জোতদারকে ভাগ দিচ্ছে। সেই জমি যখন পুনর্বণ্টন হবে তখন অনিবার্যভাবে দরিদ্র ও ভূমিহীন কৃষকের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হবে এবং তারই সুযোগে সমস্ত কৃষক আন্দোলনের উপর ধনী কৃষকের নেতৃত্ব কায়েম হবে, কারণ ধনী কৃষকের যেমন তদ্বির করার সুযোগ আছে তেমনি সামন্ত প্রভাবের অংশীদার ধনী কৃষক। কাজেই হরেকৃষ্ণবাবু শুধু আজই সংগ্রাম করতে চাচ্ছেন না তাই নয়, ভবিষ্যতেও যাতে কৃষক আন্দোলন জঙ্গী খাতে না যায়, তারও ব্যবস্থা করেছেন। অথচ আমরা জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রোগ্রাম নিয়েছি এবং সেই বিপ্লবের কাজই হচ্ছে কৃষকের স্বার্থে ভূমিসংস্কার করা। কৃষকের স্বার্থে ভূমিসংস্কার তখনই হতে পারে যখন আমরা গ্রামাঞ্চলে সামন্তশ্রেণীগুলির প্রভূত্ব খতম করতে পারবো। এ কাজ করতে হলে আমাদের সামন্তশ্রেণীগুলির হাত থেকে জমি কেড়ে নিতে হবে এবং বণ্টন করতে হবে ভূমিহীন ও দরিদ্র কৃষকদের মধ্যে। তা আমরা কখনই করতে পারবো না, যদি আমাদের আন্দোলন অর্থনীতিবাদের আওতার মধ্যে থাকে। ভেষ্ট জমির আন্দোলনের প্রত্যেকটি এলাকায়ই আমরা দেখেছি, যে কৃষক ভেষ্ট জমি দখল পেয়েছে এবং লাইসেন্স করতে পেরেছে, সে আর কৃষক আন্দোলনে সক্রিয় থাকে না। তার কারণ কি? কারণ সেই দরিদ্র কৃষকের এক বৎসরের মধ্যে শ্রেণী বদলে গেছে, সে এখন মধ্য কৃষকে পরিণত হয়েছে। কাজেই দরিদ্র ও ভূমিহীন কৃষকের অর্থনৈতিক দাবী আর তার দাবী নয়। তাই অর্থনীতিবাদ সংগ্রামী কৃষকের ঐক্যে ফাটল ধরায় এবং ভূমিহীন ও দরিদ্র কৃষককে হতাশাগ্রস্ত করে। অর্থনীতিবাদীরা প্রত্যেকটি সংগ্রামকে বিচার করে কত মন ধান দখল হলো বা কত বিঘা জমি কৃষক পেলো এই হিসাব থেকে। তারা কখনও বিচার করেনা কৃষকের সংগ্রামী চেতনা বাড়লো কিনা সেই নিরিখে। কাজেই কৃষকের শ্রেণী চেতনা বাড়ানোর কোনো চেষ্টাই তারা করেনা। অথচ আমরা জানি যে কোনো সংগ্রামই ত্যাগ স্বীকার না করে করা যায় না। চেয়ারম্যান মাও শিখিয়েছেন যেখানে সংগ্রাম সেখানেই ত্যাগ স্বীকার আছে। সংগ্রামের প্রথম দিকে জনতার শক্তির চেয়ে প্রতিক্রিয়ার শক্তি বেশীই থাকবে। তাই সংগ্রাম দীর্ঘস্থায়ী হবে। যেহেতু জনতা প্রগতিশীল শক্তি কাজেই তার শক্তি দিনের পর দিন বাড়বে আর প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি যেহেতু মরণোন্মুখ কাজেই তার শক্তি দিনের পর দিন কমবে। তাই জনসাধারণকে ত্যাগ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করতে না পারলে কোন বিপ্লবী সংগ্রামই সফল হতে পারে না। অর্থনীতিবাদ এই মূল বিপ্লবী দৃষ্টিভঙ্গী থেকে টেনে নিয়ে যায় বুর্জোয়া দৃষ্টিভঙ্গীর চোরাগলিতে। পার্টির নেতারা ঠিক এই কাজটিই করছেন তাদের সমস্ত ক্রিয়াকলাপের দ্বারা। আমাদের আগের সমস্ত কৃষক আন্দোলনের পর্যালোচনা করলে আমরা দেখবো যে পার্টির নেতারা উপর থেকে আপোষ চাপিয়ে দিয়েছেন কৃষকদের উপর। অথচ পার্টি নেতৃত্বের দায়িত্ব ছিল কৃষক আন্দোলনে শ্রমিকশ্রেণীর সংগ্রামী নেতৃত্ব কায়েম করা। সে কাজ আগেও তারা করেননি, এখনও করছেন না। এখন তারা আইন ও আমলাতন্ত্রের উপর নির্ভর করতে বলছেন। লেনিন যেখানে লিখেছেন যেকোনো প্রগতিশীল আইন পাশ করলেও সে আইন যদি আমলাতন্ত্রের হাতে কার্যকরী করার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে কৃষক কিছুই পাবে না। সুতরাং আমাদের নেতারা লেনিন ও বিপ্লবী পথ থেকে অনেক দূরে সরে গেছেন। কৃষিবিপ্লব আজকের এই মুহুর্তের কাজ, এ কাজ ফেলে রাখা যায় না এবং এ কাজ না করে কৃষকের কোনো উপকারই করা যায় না। কিন্তু কৃষি বিপ্লব করার আগে চাই রাষ্ট্রশক্তির ধ্বংস সাধন। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধ্বংস না করে কৃষি বিপ্লব করতে যাওয়া মানে সোজা সংশোধনবাদ। তাই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধ্বংস করার কাজ আজ কৃষক আন্দোলনের প্রথম ও প্রধান কাজ। সারা দেশব্যাপী, সারা রাজ্যব্যাপী যদি এ কাজ করা না যায় তাহলে কি কৃষক চুপ করে থাকবে? না, মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাও সে তুঙ চিন্তাধারা আমাদের শিখিয়েছে যে, যদি কোনো এলাকার কৃষককে রাজনৈতিক চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ করা যায় তাহলে সেই এলাকায় রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভাঙ্গার কাজে এগিয়ে যেতে হবে। একেই বলে কৃষকের মুক্ত অঞ্চল। এই মুক্ত অঞ্চল গড়ে তোলার সংগ্রামই আজকের দিনে কৃষক আন্দোলনের সবচেয়ে জরুরী আর এই মুহুর্তের কাজ। মুক্ত অঞ্চল আমরা কাকে বলবো? যে কৃষক অঞ্চল থেকে আমরা শ্রেণী শত্রুদের উচ্ছেদ করতে পেরেছি সেই এলাকাকেই আমরা মুক্ত অঞ্চল বলবো। এই মুক্ত অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য চাই কৃষকের সশস্ত্র শক্তি। এই সশস্ত্র শক্তি বলতে আমরা কৃষকের হাতে গড়া অস্ত্রকেও যেমন ধরি, ঠিক তেমন বন্দুকও চাই। কৃষক রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে কিনা তা আমরা বুঝবো কৃষক বন্দুক সংগ্রহ করতে অগ্রসর হলো কিনা এর ভিত্তিতে। বন্দুক কৃষক কোথায় পাবে? শ্রেণীশত্রুদের হাতে বন্দুক আছে এবং তারা গ্রামের মধ্যেই বাস করে। তাদের কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নিতে হবে। তারা স্বেচ্ছায় আমাদের বন্দুক দেবে না। কাজেই জোর করে আমাদের সেই বন্দুক দখল করতে হবে। এর জন্য কৃষক মিলিট্যান্টদের শ্রেণীশত্রুদের ঘরে আগুন দেওয়া থেকে সব রকম কৌশলই শেখাতে হবে। এছাড়া আমরা বন্দুক পাবো সরকারী সশস্ত্র বাহিনীর কাছ থেকে হঠাৎ অতর্কিত আক্রমণ করে। এই বন্দুক সংগ্রহ অভিযান যে এলাকায় আমরা সংগঠিত করতে পারবো সেই এলাকা দ্রুত মুক্ত এলাকায় রূপান্তরিত হবে। তাই এই কাজ করার জন্য চাই কৃষকের মধ্যে ব্যাপকভাবে সশস্ত্র সংগ্রাম গড়ে তোলার রাজনীতি প্রচার করা। আর চাই বন্দুক সংগ্রহ অভিযান চালানোর জন্য গোপন ছোট ছোট মিলিট্যান্ট গ্রুপ সংগঠিত করা। এই গ্রুপের সভ্যরা সশস্ত্র সংগ্রামের রাজনীতি যেমন প্রচার করবে সাথে সাথেই বন্দুক সংগ্রহের নির্দিষ্ট কার্যক্রমকে সফল করে তোলার চেষ্টা করবে। বন্দুক সংগ্রহ করলেই সংগ্রামের চেহারা বদলায় না-সংগৃহীত বন্দুক চালাতে হবে। তবেই কৃষকের সৃজনী শক্তির বিকাশ ঘটবে এবং সংগ্রামের গুণগত পরিবর্তন সাধিত হবে। একাজ করতে পারে একমাত্র শ্রমিকশ্রেণীর দৃঢ় মিত্র দরিদ্র ও ভূমিহীন কৃষক। মধ্যকৃষকও মিত্র, কিন্তু সংগ্রামী চেতনা ভূমিহীন ও দরিদ্র কৃষকের মত এতো তীব্র নয়। কাজেই সে একই সাথে সংগ্রামে অংশীদার হতে পারে না, তার কিছু সময় লাগে। এই জন্যই কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে শ্রেণী বিশ্লেষণ অবশ্য করণীয় কাজ। চীনের মহান নেতা চেয়ারম্যান মাও সে তুং তাই প্রথমেই এই কাজটি করেছিলেন এবং অভ্রান্তভাবে বিপ্লবী সংগ্রামের পথনির্দেশ করতে পেরেছেন। তাই আমাদের সাংগঠনিক কাজে প্রধান কথা হলো কৃষক আন্দোলনে দরিদ্র ভূমিহীন কৃষকের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। সশস্ত্র সংগ্রামের রাজনীতি নিয়ে কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করার মধ্য দিয়েই দরিদ্র ও ভূমিহীন কৃষকের নেতৃত্ব কায়েম হবে। কারণ, তারাই কৃষক শ্রেণীগুলির মধ্যে সবচেয়ে বিপ্লবী শক্তি। আলাদা ক্ষেত মজুর সংগঠন এ কাজকে সাহায্য করবে না। বরং আলাদা ক্ষেতমজুর সংগঠন অর্থনীতিবাদী ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের ঝোঁক বাড়ায় এবং কৃষকদের বিরোধ বাড়ায়। মিত্র শ্রেণীগুলির ঐক্য বাড়ায় না, কারণ আমাদের কৃষি ব্যবস্থায় সামন্তশ্রেণীর শোষণই প্রধান। এই প্রসঙ্গেই আর একটা প্রশ্ন আসে-সেটা হলো ছোট মালিকদের সাথে আপোষের প্রশ্ন। এ ক্ষেত্রে কমিউনিস্টদের দৃষ্টিভঙ্গি কি হবে? আপোষের ক্ষেত্রে আমাদের বিচার করতে হবে আমরা কার পক্ষে? সুতরাং তাদের বিপক্ষে অন্য কোনও শ্রেণীকে আমরা সমর্থন করতে পারি না। কৃষক আন্দোলনে বরাবর কমিউনিস্টরা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর স্বার্থে দরিদ্র ও ভূমিহীন কৃষককে স্বার্থ ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। এতে দরিদ্র ও ভূমিহীন কৃষক সংগ্রামী মনোবল হারায়। মধ্যকৃষক ও ধনীকৃষক সম্বন্ধেও আমাদের আলাদা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গী হবে। যদি আমরা ধনী কৃষককে মধ্য কৃষক হিসাবে বিচার করি তাহলে দরিদ্র ও ভূমিহীন কৃষক হতাশ হবে। আবার যদি মধ্য কৃষককে ধনী কৃষক হিসাবে বিচার করি তাহলে মধ্য কৃষকের সংগ্রামী উৎসাহ কমে যাবে। তাই কমিউনিস্টরা চেয়ারম্যান মাও এর নির্দেশ মতো প্রত্যেকটি এলাকায় কৃষকশ্রেণীর বিচার করতে শিখবে। বারবার ভারতবর্ষের কৃষক বিক্ষোভে ফেটে পরেছে। বারবার কমিউনিস্ট পার্টির কাছে তারা পথনির্দেশ চেয়েছে। আমরা বলিনি যে সশস্ত্র সংগ্রামের রাজনীতি আর বন্দুক সংগ্রহের অভিযানই একমাত্র পথ। এই পথ শ্রমিকশ্রেণীর পথ, মুক্তির পথ, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার পথ। সারা ভারতবর্ষে প্রত্যেকটি রাজ্যে আজ কৃষক বিক্ষুদ্ধ, তাদের সামনে কমিউনিস্টদের পথ দেখাতে হবে। সে পথ সশস্ত্র সংগ্রামের রাজনীতি আর বন্দুক সংগ্রহের অভিযান। মুক্তির এই একমাত্র পথ আমাদের দৃঢ়ভাবে দেখাতে হবে। চীনের মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লব সমস্ত রকম বুর্জোয়া মতাদর্শের স্তাবকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সেই বিপ্লবের জলন্ত প্রভাব ভারতবর্ষে এসে পৌঁছেছে। সেই বিপ্লবের আহ্বান-দৃঢ়চিত্তে সমস্ত রকম ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত হও, পথের বাধাকে একটা একটা করে দূর কর। জয় আমাদের হবেই। সাম্রাজ্যবাদ যত ভয়ংকরভাবেই আসুক না কেন, আধুনিক সংশোধনবাদ তাদের সাহায্য করতে যত কুৎসিত জালই বিছাক না কেন, প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির দিন ঘনিয়ে এসেছে, মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাও সে তুঙ এর চিন্তাধারার উজ্জ্বল সূর্যালোক সব অন্ধকারকে ধুয়ে মুছে নিঃশেষ করে দেবে। স্বভাবতই প্রশ্ন আসে তাহলে কি এই যুগে আংশিক দাবীর ভিত্তিতে কৃষকের কোনো গণ আন্দোলন করার দরকার নেই? নিশ্চয়ই আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কারণ ভারতবর্ষ বিরাট দেশ এবং কৃষকও বহু শ্রেণীতে বিভক্ত। কাজেই রাজনৈতিক চেতনার মান সব এলাকার এবং সব শ্রেণীর মধ্যে একই স্তরে থাকতে পারে না, তাই আংশিক দাবীর ভিত্তিতে কৃষকের গণ আন্দোলনের সুযোগ ও সম্ভাবনা সব সময়েই থাকবে এবং কমিউনিস্টদের সেই সুযোগের পুরো সদ্ব্যবহার সব সময়েই করতে হবে। আংশিক দাবীর আন্দোলন আমরা কি কৌশলে পরিচালিত করবো এবং কিইবা তার লক্ষ্য? আমাদের কৌশলের মূল কথা হলো ব্যাপক কৃষকশ্রেণীর জমায়েত হচ্ছে কিনা এবং আমাদের মূল লক্ষ্য হবে কৃষকের শ্রেণী চেতনা বাড়লো কিনা, ব্যাপক কৃষক সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে এগিয়ে গেল কিনা। আংশিক দাবীর ভিত্তিতে আন্দোলন শ্রেণীসংগ্রামকে তীব্র করে তুলবে। ব্যাপক জনতার মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়াবে। ব্যাপক কৃষক জনতা ত্যাগ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ হবে, সংগ্রাম ছড়িয়ে পরবে নতুন নতুন এলাকায়। আংশিক দাবীর আন্দোলনের ধরণ যেকোনো রূপ হতে পারে, কিন্তু কমিউনিস্টরা সব সময়ে উন্নত ধরণের সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা কৃষক সাধারণের মধ্যে প্রচার করবে। কোনো অবস্থাতেই যে ধরণ কৃষকদের দ্বারা গৃহীত হলো তাকেই সেরা বলে চালাবার চেষ্টা করবেন না। আসলে কমিউনিস্টরা সব সময়েই কৃষকদের মধ্যে বিপ্লবী রাজনীতি অর্থাৎ সশস্ত্র সংগ্রামের রাজনীতি আর বন্দুক সংগ্রহ অভিযান চালানোর প্রচার চালাবে। এই প্রচার চালানো সত্ত্বেও কৃষক হয়তো গণ ডেপুটেশনের সিদ্ধান্ত নেবে এবং আমাদের সেই আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে। শ্বেত সন্ত্রাসের যুগে এই গণ ডেপুটেশনের কার্যকারিতা কোনো ক্রমেই ছোট করে দেখলে চলবে না, কারণ এই ডেপুটেশনগুলোই সংগ্রামে বেশী করে কৃষককে টেনে আনবে। অর্থনৈতিক দাবীর আন্দোলন কোন সময়েই অন্যায় নয়, তবে অর্থনৈতিক কায়দায় এই আন্দোলনকে পরিচালনা করা অপরাধ। আর অপরাধ এই প্রচার চালানো যে অর্থনৈতিক দাবীর আন্দোলন নিজের থেকেই রাজনৈতিক সংগ্রামে রূপ নেবে, কারণ এটা হলো স্বতঃস্ফূর্ততার পূজা করা। এর কোনোটাই জনতাকে পথ দেখাতে পারে না, দৃষ্টিভঙ্গীর স্বচ্ছতা আসে না, সংগ্রামে ত্যাগ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করে না। সংগ্রামের একটি স্তরে একটি মাত্র কাজ থাকে। সেই কাজটি না করলে সংগ্রাম উন্নত স্তরে যাবে না। সেই বিশেষ কাজ আজকের যুগে সশস্ত্র সংগ্রামের রাজনীতি ও বন্দুক সংগ্রহ অভিযান। এ কাজটি বাদ দিয়ে অন্য যা কিছুই করিনা কেন সংগ্রাম উচ্চস্তরে যাবে না, সংগ্রাম ভেঙ্গে যাবে, সংগঠন গড়ে উঠবে না। ঠিক তেমনি ভারতবর্ষের বিপ্লবের একটি মাত্র পথই আছে যে পথ লেনিন দেখিয়েছিলেন-জনতার সশস্ত্র বাহিনী ও রিপাবলিক গঠন। ১৯০৫ সালে লেনিন বলেছিলেন যে সারা রুশদেশে সম্ভব না হলেও যেখানে সম্ভব সেখানেই এ দুটি গড়ে তোলো। চেয়ারম্যান মাও সে তুঙ লেনিন নির্দেশিত এই পথকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন, জনযুদ্ধের কৌশল শিখিয়েছেন এবং এই পথে চীনের মুক্তি সাধিত হয়েছে। সেই পথ আজ ভিয়েৎনামে, থাইল্যান্ডে, মালয়ে, ফিলিপাইনে, বর্মায়, ইন্দোনেশিয়ায়, ইয়েমেনে, লিওপোল্ডভিলে, কঙ্গোতে, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে। সেই পথ ভারতবর্ষেও নিয়েছে নাগা, মিজো, কাশ্মীর এলাকার জনতা-জনতার সশস্ত্র বাহিনী আর মুক্তিফ্রণ্টের শাসন ব্যবস্থার পথ। তাই শ্রমিক শ্রেণীকে আজ ডাক দিয়ে বলতে হবে যে, ভারতবর্ষের গণতান্ত্রিক বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে হবে শ্রমিকশ্রেণীকে এবং এ কাজ করতে হবে শ্রমিকশ্রেণীকে তার প্রধান মিত্র কৃষকশ্রেণীর সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে। তাই কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করার সংগ্রামকে সশস্ত্র সংগ্রামের স্তরে তোলার দায়িত্ব তার। শ্রমিক শ্রেণীর অগ্রণী অংশকে যেতে হবে গ্রামাঞ্চলে সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে। এই কাজ শ্রমিক শ্রেণীর প্রধান কাজ। অস্ত্র সংগ্রহ করা এবং গ্রামাঞ্চলে সংগ্রামের ঘাঁটি তৈয়ার করা- এরই নাম শ্রমিক শ্রেণীর রাজনীতি, এই রাজনীতি দিয়ে আমাদের শ্রমিকশ্রেণীকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নে সমস্ত শ্রমিককে সংগঠিত কর-এ আওয়াজ শ্রমিক শ্রেণীর রাজনৈতিক চেতনা বাড়ায় না। এর অর্থ অবশ্যই এ রকম নয় যে আমরা আর ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠিত করবো না। এর অর্থ পার্টির বিপ্লবী কর্মীদের আমরা নিশ্চয়ই ট্রেড ইউনিয়নের কাজে আটকে রাখবো না, তাদের কাজ হবে শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে রাজনৈতিক প্রচার আন্দোলন চালানো অর্থাৎ সশস্ত্র সংগ্রামের রাজনীতি ও বন্দুক সংগ্রহ অভিযান চালানোর রাজনীতি প্রচার করা ও পার্টি সংগঠন গড়ে তোলা। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যেও আমাদের রাজনৈতিক প্রচার চালানোর প্রথম কাজ কৃষক সংগ্রামের তাৎপর্য প্রচার করা। অর্থাৎ পার্টির সব ফ্রন্টেই দায়িত্ব হচ্ছে কৃষক সংগ্রামের গুরুত্ব বোঝানো এবং সেই সংগ্রামের অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানানো। এ কাজ যতখানি আমরা করতে পারবো ততখানি আমরা গণতান্ত্রিক বিপ্লবে সচেতন নেতৃত্বের স্তরে গিয়ে পৌছাবো। পার্টির এই মূল মার্কসবাদী-লেনিনবাদী পথের বিরোধীতা আসছে শুধু সংশোধনবাদীদের কাছ থেকেই নয়। সংশোধনবাদীরা সোজাসুজি শ্রেণী সহযোগিতার পথ নিচ্ছে, সুতরাং তার মুখোশ খুলে ধরা সহজ। কিন্তু আর এক ধরণের বিরোধীতা আছে পার্টির মধ্যে, যাকে বলা হয় গোড়ামিবাদ। এরা বিপ্লবের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন, স্বীকার করেন যে বিপ্লব একমাত্র সশস্ত্র সংগ্রামের মারফতই হতে পারে। তারা স্বপ্ন দেখেন যে সারা ভারতব্যাপী গণ আন্দোলনের বিস্তৃতি ঘটিয়েই কেবল সশস্ত্র বিপ্লবের পথে যাওয়া যায়। তার আগে ছোটখাট এম কি বড় রকমের সংঘর্ষ ঘটতে পারে, কিন্তু ক্ষমতা দখল সম্ভব নয়। ক্ষমতা দখল সম্বন্ধে তারা অক্টোবর বিপ্লবের একটা সংস্করণ ভারতবর্ষে ঘটবে এ রকম আশা করেন। অক্টোবর বিপ্লব কি করে সফল হলো সে সম্বন্ধে তাদের পুঁথিগত বিদ্যা তারা ঠিক একইভাবে ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন। এরা ভুলে যান যে অক্টোবর বিপ্লবের আগে ফেব্রুয়ারী বিপ্লব ঘটেছিল এবং বুর্জোয়া পার্টিগুলি ক্ষমতায় গিয়েছিল এবং শ্রমিক, কৃষক ও সৈন্যদের সোভিয়েতের হাতেও ক্ষমতা ছিল। এই দ্বৈত ক্ষমতা থাকার ফলে শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্ব সোভিয়েতগুলির মধ্যে কার্যকরী হয়েছিলো এবং এই সোভিয়েতগুলির মধ্যে যখন পের্টি বুর্জোয়া পার্টিগুলো ধনিকশ্রেণীর হাতে ক্ষমতা তুলে দিলো তখনই শ্রমিকশ্রেণীর পক্ষে অক্টোবর বিপ্লব করা সম্ভব হলো। এরা ভারতবর্ষের বাস্তব অবস্থা বিশ্লেষণ করেন না, ভারতবর্ষে যে সংগ্রামগুলো হচ্ছে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন না। রুশ বিপ্লবের সাফল্যের প্রধান কারণ ছিল যুক্তফ্রন্টের কৌশলকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করার মধ্যে। যুক্তফ্রন্টের কৌশলের প্রশ্ন ভারতবর্ষেও সমধিক গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ভারতের গণতান্ত্রিক বিপ্লবের কৌশল এর থেকে অন্য রূপ হবে। ভারতবর্ষেও নাগা, মিজো, কাশ্মীর প্রভৃতি এলাকায় পের্টি বুর্জোয়া নেতৃত্বে সংগ্রাম হচ্ছে। কাজেই গণতান্ত্রিক বিপ্লবে এদের সাথে যুক্তফ্রন্ট করেই শ্রমিকশ্রেণীকে এগোতে হবে এবং আরও অনেক নতুন এলাকায় বুর্জোয়া বা পের্টি বুর্জোয়া পার্টিগুলোর নেতৃত্বে সংগ্রাম শুরু হবে। তাদের সাথেও শ্রমিকশ্রেণী অবশ্য মৈত্রী করবে এবং এই মৈত্রীর প্রধান ভিত্তি হবে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার। এই অধিকার অবশ্যই শ্রমিকশ্রেণী মেনে থাকে, বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকার সহ। অক্টোবর বিপ্লবের পথে ভারতে যারা বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেন তারা বিপ্লবী হলেও পুঁথিগত (doctrinaire) দৃষ্টিভঙ্গী থাকায় এরা বলিষ্ঠভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেন না। কৃষক সংগ্রামের তাৎপর্য বোঝেন না, ফলে শ্রমিকদের মধ্যে অজ্ঞাতসারেই অর্থনীতিবাদের প্রচারক হয়ে ওঠেন। তারা চেয়ারম্যান মাও এর শিক্ষাকে গ্রহণ করতে পারেন না। পারেন না এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার জনসাধারণের বিপ্লবী সংগ্রামের অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে। তাদেরই একটা অংশ চে গুয়েভারার ভক্ত হয়ে পড়েন এবং ভারতবর্ষের গণতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রধান শক্তি কৃষকশ্রেণীকে সংগঠিত করার কাজে জোর দেন না। ফলে অনিবার্যভাবে বামপন্থী বিচ্যুতির শিকার হয়ে পড়েন। কাজেই আমাদের এদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে এবং ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা মারফৎ শিক্ষিত করে তুলতে হবে। এদের সম্বন্ধে কোনোক্রমেই অসহিষ্ণু হলে চলবে না। এ ছাড়াও আরও একদল বিপ্লবী কমরেড আছেন আমাদের মধ্যে যারা চীনের পার্টি ও মহান নেতা মাও সে তুঙ এর চিন্তাধারাকে মানেন এবং সেই পথই একমাত্র পথ সেটাও স্বীকার করেন। কিন্তু তারা এই বইটিকে আত্মোন্নতির একমাত্র সোপান হিসাবে দেখেন। তার ফলে এক গুরুতর বিচ্যুতির মধ্যে গিয়ে পড়েন। আত্মোন্নতির একমাত্র মার্কসবাদী পথ যা লেনিন এবং চেয়ারম্যান মাও শিখিয়েছেন সেটা হলো শ্রেণী সংগ্রামের পথ। একমাত্র শ্রেণীসংগ্রামের আগুনে পুড়েই কমিউনিস্ট খাঁটি সোনা হতে পারে। শ্রেণী সংগ্রামই হচ্ছে কমিউনিস্টদের সত্যিকার স্কুল এবং শ্রেণীসংগ্রামের অভিজ্ঞতাকেই মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাও সে তুঙ এর চিন্তাধারার আলোকে যাচাই করতে হবে এবং শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তাই পার্টি শিক্ষার মূল কথা হলো মার্কসবাদ-লেনিনবাদের শিক্ষাকে শ্রেণীসংগ্রামের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা এবং সেই অভিজ্ঞতা থেকে আবার জনসাধারণের মধ্যে নিয়ে যেতে হবে। একেই বলে জনসাধারণের কাছ থেকে শিখে আবার তা নিয়ে জনগণের মধ্যে যাওয়া (From the people of the people)। পার্টি শিক্ষার মূল কথা হলো এই। এইসব বিপ্লবী কমরেডরা পার্টি শিক্ষার এই মূল সত্যকে উপলব্ধি করতে পারেন না। ফলে পার্টি শিক্ষা সম্বন্ধে ভাববাদী বিচ্যুতি করেন। চেয়ারম্যান মাও সে তুঙ আমাদের শিখিয়েছেন যে, প্রয়োগ ছাড়া কোন শিক্ষা হতে পারে না। তার ভাষায় কাজ করাই শিক্ষা (Doing is learning)। বিপ্লবী প্রয়োগের দ্বারা পরিস্থিতির পরিবর্তনের ভিতর দিয়েই একমাত্র আত্মোন্নতি ঘটতে পারে।
দুনিয়ার বিপ্লবীরা এক হও।
শ্রমিক-কৃষকের বিপ্লবী ঐক্য জিন্দাবাদ।
চেয়ারম্যান মাও সে তুং জিন্দাবাদ।
Comments