চমস্কিনামা
পশ্চিমা বামেদের [তারা ইউরো কমিউনিজম থেকে শুরু করে হাজার রকমের বামপন্থার উদ্ভাবক] একটা অতি কমন বৈশিষ্ট্য আছে। আর সেটা হচ্ছে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমেরিকার আগ্রাসনের বিরোধিতা করলেও রাশিয়া সংক্রান্ত ব্যাপারে উল্টো গীত গেয়ে দ্বিচারিতা প্রদর্শন করেন। যেমন- 'হিউম্যানিটারিয়ান ইন্টারভেনশন' নামক গালভরা টার্মকে সামনে রেখে আমেরিকা ও তার পশ্চিমা মিত্ররা একের পর এক দেশকে ধ্বংস করেছে কিংবা করে যাচ্ছে। অথচ নোয়াম চমস্কি অন্যান্য দেশে এই টার্ম এর প্রয়োগের বিরোধিতা করলেও তিনি কসোভো'তে এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে উল্টো মার্কিনিদের প্রশংসা করলেন '9-11' বইটিতে! মুসলিম বিশ্বের সহানুভূতি আদায়ে মোল্লারাও ব্যাপকভাবে এই বেল্টের মুসলিমদের ব্যাপারে সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে অনেক কিছুই সারা বিশ্বে প্রচার করেছে। মুদ্রার অপর পিঠকে জানার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা মুসলমানদেরও হয়নি। সাংবাদিক চার্লটা গল এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যেসব জঙ্গিদের মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো থেকে ঐ বেল্টে ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাদের পরবর্তীতে নাগরিকত্ব দেয়া হয় সোভিয়েত ইউনিয়নের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Carlotta_Gall
তাছাড়া বইটিতে তিনি গণ্ডমূর্খ তালেবানদের সাথে আল কায়েদা'র মতো সুসংগঠিত জঙ্গি সংগঠনকে একই পর্যায়ে ফেলে তাদের বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্লেষণ ক্ষমতা ইত্যাদি নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছেন। তার এই আচরণের সাথে আত্মতৃপ্তিতে আক্রান্ত বাংলাদেশী প্রগতিশীলদের তুলনা করা যায় যারা সাধারণ কাঠমোল্লাদের সাথে শিবিরের মতো ক্রিমিনাল সংগঠনের তুলনা করে। এই বইয়ে তিনি আরো বলেছেন মার্কিনিদের উপস্থিতি না থাকলে নাকি সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে তালেবানদের প্রতিরোধ বৈধ বলে বিবেচিত হতে পারতো!
নোয়াম চমস্কি তার 'Middle East Illusions' বইটিতে বলকানাইজেশন'কে মিনমিনে ভাষায় সমর্থন করেছেন তথাকথিত স্থিতিশীলতার অজুহাতে।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Balkanizationতিনি এই বইয়ে সেসব আরব রাষ্ট্রের [যারা আমেরিকার সামনে মাথা নত করেনি] সমালোচনা করেছেন যারা ইজরায়েলের সাথে সমঝোতা [মূলত মাথা নত] করতে রাজি নয়। সমস্যা সমাধানে ইজরায়েল ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্ব স্বীকার করে না, অন্যদিকে নোয়াম চমস্কি সমগ্র আরব অঞ্চলের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনিদের ভূমিকাকে গৌণ মনে করে ইজরায়েলের ব্যাপারটি সম্পর্কিত অবস্থানকে অনেকটা সমর্থন করেন। তিনি ফিলিস্তিনিদের কথিত 'গোঁয়ার্তুমির' সমালোচনা করেছেন। একজন বামপন্থী হয়ে তিনি কিভাবে ইজরায়েল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কথিত অর্থনৈতিক সমন্বয়বাদের ধারণাকে সমর্থন করতে পারেন যেখানে ইজরায়েলের জোঁকেরা আরব শ্রমিকদের শোষণ করবে কথিত কর্মসংস্থানের অজুহাতে? ঠিক যেমনটা পুঁজিবাদী চীন বাংলাদেশ থেকে সস্তা শ্রমিকের বিনিময়ে এতো বিনিয়োগ করেছিল আর এদেশের নির্বাচনপন্থী বামেরা ব্যাপারটাকে 'সমাজতান্ত্রিক' কর্মকান্ড হিসেবে প্রচার করেছিল। তাছাড়া তিনি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আন্দোলনের সমাজতান্ত্রিক ধারা ও উগ্র ইসলামপন্থীদের একই কাতারে বিবেচনা করে তাদের সাথে উগ্র ইহুদি ধার্মিকদের তুলনা করেছেন। একটি সাম্রাজ্যবাদী হলে আরেকটি মৌলবাদী, এমন অবস্থায় তিনি ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনের সমন্বিত রাষ্ট্রের দিবাস্বপ্নের এমন একটা রূপরেখা দিয়েছেন যেটার সাথে মিল আছে সোভিয়েত ইউনিয়নের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলগুলোর রূপরেখার। একই বইয়ে তিনি লিখেছেন-
Comments