লেপচা
'লেপচা' শব্দটা ব্রিটিশরা ভুল উচ্চারণ করায় তৈরী হয়ে যায়। মূল শব্দটা হলো 'ল্যাপচে', এই নামকরণ করেছিল নেপালিরা। 'ল্যাপ' অর্থ 'কথা' আর 'চে' অর্থ 'নির্বোধ'। শব্দটি ঠাট্টা করে নেপালিরা ব্যবহার করতো। কারণ লেপচারা সরল বলে বেশি কথা বলতো।
কার্শিয়াং শহরের লেপচা নাম ছিল 'কার্সঙ্গ'। নেপালিরা উচ্চারণ করতো 'খার্সাং'। অন্যদিকে ব্রিটিশরা উচ্চারণ করতো 'কার্শিয়াং'। 'কার্সঙ্গ' শব্দের অর্থ 'শুকতারা'।
কালিম্পং শহরের মূল নাম ছিল 'ক্যালেনপাঙ্গ'। নেপালিরা উচ্চারণ করতো 'কালেবুঙ্গ'। তিব্বতিরা উচ্চারণ করতো 'কাবু'। ব্রিটিশরা উচ্চারণ করতো 'কালিম্পং'।
'শিলিগুড়ি' শব্দটি লেপচা ভাষার। মূল শব্দ 'শ্যালিগ্রি', যার অর্থ 'ধনুকে ছিলা পরাও'। নেপালিরা উচ্চারণ করতো 'শিলিগিড়ি'। আর ব্রিটিশরা 'শিলিগুড়ি'। ১৮২৬ সালে সিকিমের রাজা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। ব্রিটিশ সৈন্যদের পাহাড় থেকে তাড়িয়ে সমতলে নিয়ে এসেছিল লেপচা সৈন্যরা। প্রচুর ব্রিটিশ সৈন্য মারা গেলেও মাত্র একজন লেপচা সৈন্য শহীদ হয়েছিলেন (ডুনো রেপগে)। ঐ যুদ্ধে তিনি একা বিষাক্ত তীরের সাহায্যে প্রচুর ব্রিটিশ সৈন্যকে মারেন। লেপচা সৈন্যরা সমতলে নেমে এসে দেখলো ব্রিটিশ সৈন্যরা আবার ফিরে আসছে। তখন লেপচা কমান্ডার আদুপ দোলে চিৎকার করে তার সৈন্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন 'শ্যালিগ্রি'। যুদ্ধে লেপচারা হেরে যায়।
কাঞ্চনজঙ্ঘা'কে তিব্বতিরা উচ্চারণ করতো 'খাঙ্গচেন জোঙ্গা'। অন্যদিকে ভুটিয়া'রা একে ডাকতো 'কুভেরা'। কাঞ্চনজঙ্ঘা'র আসল নাম ছিল 'কিংসুম জ্যাওঙ্গবু ছু' (Kingtsoom Zaongboo Choo), যার অর্থ 'পবিত্র শিখরের শীর্ষবিন্দু'। লেপচারা বিশ্বাস করতো সূর্যের প্রথম এবং শেষ আলো যখন কাঞ্চনজঙ্ঘা'র উপর পড়ে তখন যে লাল ও সোনালী দ্যুতি তৈরী হয় সেটার দিকে তাকালে সৃষ্টিকর্তাকে প্রত্যক্ষ করা যায়।
'দার্জিলিং' জায়গাটির আসল নাম নয়। মূল শব্দটা হচ্ছে 'দার্জুলাঙ্গ'। এটি লেপচা ভাষার শব্দ, যার অর্থ 'ভগবানের বাসস্থান'; অর্থাৎ 'পৃথিবীর স্বর্গ'।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Lepcha_language
সিকিমের ষষ্ঠ রাজা নামগেল একটি মন্দির তৈরী করে নাম দিয়েছিলেন 'দোর্জেলিঙ্গ', যার অর্থ 'বজ্র'।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Tenzing_Namgyal#:~:text=Tenzing%20Namgyal%20(Sikkimese%3A%20%E0%BD%96%E0%BD%A6%E0%BE%9F%E0%BD%93%E0%BC%8B,by%20Tsugphud%20Namgyal%20in%201793.
Comments