দেশ যখন ইসলামাইজেশন এর পথে [পর্ব-চার]

 


উগ্র মুসলিমরা প্রতিবন্ধীকে পর্যন্ত ছাড় না দিলেও মাইক দিয়ে ওয়াজ ও আজানের মাধ্যমে কান ফাটায় তারাই 

জিন্নাহ মদ ও শুকরের মাংস খেতো যা প্রকাশ্যে গর্ব করে বলতো। বাংলাদেশ সংক্রান্ত আপনাদের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ, এই হারামজাদা মূল লাহোর প্রস্তাব বিকৃত করে গায়ের জোরে তৎকালীন পূর্ব বাংলা ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ দখল করেছিল। পরে কাশ্মীর সংক্রান্ত বদমাইশির সূচনা করেছিল সে। যেই বাংলায় তার ব্যাপারে কথা বলছেন, সেই ভাষাটার গলা টিপতে ঢাকা ভার্সিটিতে বলে গিয়েছিল সে।

জাহাঙ্গীরনগর ভার্সিটি যখন জাহাঙ্গীরনগর মাদ্রাসা!

উগ্র জাতীয়তাবাদী মুসলিমদের স্বরূপ এভাবেই পেইজ, গ্ৰুপ, কমেন্ট সেকশন, পোস্টে উঠে আসছে


এভাবেই মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানো হয় নিয়মিত 


অবিভক্ত পাকিস্তান এবং পরে বাংলাদেশের বিখ্যাত নায়িকা শাবানা অভিনয় ছাড়ার পর কালো বোরকা পরিধান করে ধার্মিক মুসলিমাহ হয়েছেন এবং মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ ত্যাগ করে আমেরিকা গমন করেছেন আজ বহু বছর। তিনি অবশ্য তার প্রাণপ্রিয় নবীর দেশ তথা ইসলামের পীঠস্থান সৌদি আরবকে বেছে নেননি। বরং নিয়েছেন ক্রমশ নাস্তিকতা বৃদ্ধি পাওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে, যেখানে ইহুদী-নাসারা আর নাস্তিকরা সংখ্যায় ব্যাপক। লোভী ও স্বার্থবাদী শাবানা হিসেবে কিন্তু ভুল করেননি; তিনি মুখে যতই 'ইসলাম ইসলাম' বলে ফেনা তুলে ফেলুন না কেন, তিনি ভালো করেই জানেন অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা লাভ তথা আরাম আয়েশে বসবাসের জন্য দরকার অমুসলিম অধ্যুষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত উন্নত দেশ; মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ কিংবা সৌদি আরব নয়। অভিনীত সকল চলচ্চিত্রে শাবানা যেই পরিমাণ অশ্রুবর্ষণ করেছেন, সেটি পৃথিবীর আর কোনো নায়িকা করেছেন কিনা সন্দেহ আছে! ২০১৩ সালের জুলাই মাসে আমেরিকায় এক ঘরোয়া আড্ডায় শাবানা বলেছেন, নিউইয়র্কের স্থানীয় টিভি চ্যানেলে ও বাংলাদেশি চ্যানেলগুলোতে রমজান মাসে তার সিনেমা যেন না প্রচার করা হয়। এমনকি কখনোই যেন তার কোনো ছবিই না চালায় সেই অনুরোধও করেন টিভি চ্যানেলগুলোর কাছে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান তিনি। যশোরের কেশবপুরে স্বামীর নাম অনুসারে বসতবাড়ি ‘সাদিক ভিলা’র উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন তখন। সেখানে ২০ শতক জমির ওপর ছাত্রনিবাসসহ একটি আধুনিক মাদ্রাসা নির্মাণের কাজ শুরু করেন তিনি। কোনো ফিল্ম ইনস্টিটিউট দূরে থাক, এমনকি স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিও নয়; আবাসিক মাদ্রাসা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন শাবানা! দেশে যেখানে বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রগতিশীল, সুশিক্ষিত ও সচেতন যুব সমাজের প্রয়োজন; সেখানে তিনি মহাসমারোহে জঙ্গিবাদী, গণ্ডমূর্খ, বিজ্ঞান ও প্রগতিবিমুখ প্রজন্ম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শাবানা যে কত বড় অকৃতজ্ঞ ও স্ববিরোধী তার প্রমাণ হচ্ছে যেই চলচ্চিত্র তার অর্থবিত্ত, পরিচিতি ও খ্যাতি এনে দিলো; সেই চলচ্চিত্রের প্রতিই তার ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টিভঙ্গি। চলচ্চিত্রকে যেই বর্তমান শাবানা অপছন্দ করেন, সেই শাবানাই আবার স্ববিরোধী আচরণের মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার-২০১৫ এর অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং বলেন-

“আমি যাদের জন্য শাবানা, আজকের এ পুরস্কার তাদের। আমাদের চলচ্চিত্র আজ সংকটে। কিন্তু যেকোনও সংকটের মাঝে লুকিয়ে থাকে সমাধান। যখন আমাদের পাশে সবার প্রিয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আছেন তখন কোনও সংকটই থাকতে পারে না। প্রবাসে থাকলেও আমি জ্ঞাত হয়েছি। তিনি বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট করেছেন। বিপুল অর্থের মাধ্যমে বিএফডিসি আধুনিকায়ন করেছেন। জানতে পারি, তিনি ফোর-কে রেজুলেশনের প্রজেক্টরের ব্যবস্থা করছেন। যেখানে বিশ্বের অনেক দেশে এখনও টু-কে রেজুলেশন ব্যবহার করা হয়। আমি তাকে সাধুবাদ জানাই।”

এখানে তার চলচ্চিত্র বিরোধী মুসলিমাহত্ব কোথায় যায়, সেটিই সচেতন মানসে প্রশ্নের উদ্রেক করে। শাবানা ও তার স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের ঐসময় বড়ই অভিলাষ ছিল রাজনীতিতে আসার। তাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তেল মারতে হতো! শেখ হাসিনাকে তৈলমর্দনের মাধ্যমে যদি পরের ইলেকশনের টিকেট হাতে পাওয়া যেতো, তাহলে যশোর-৬ এর কেশবপুর এলাকাটি নিজেদের দখলে আনা সম্ভব হতো! এজন্য শাবানা হাসিনা সরকারের ধর্মমন্ত্রী আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সঙ্গে জোট বেঁধেছিলেন, যেই ধর্মমন্ত্রী ২০১৭ সালে ৭৯ জনকে জনগণের টাকায় হজ্বে পাঠিয়েছেন যারা তার আত্মীয় ও ব্যক্তিগত কর্মচারী। তিনি ২০০৯ সালে ময়মনসিংহ-৪ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে ‘হজ্ব অ্যাসিস্টেন্স ডেলিগেশনের’ নামে ধর্মমন্ত্রী ১৭১ জনকে সৌদি আরব পাঠিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৭১ জনই ছিলেন সরকারী স্টাফ। আরো ছিলেন মন্ত্রীর দু'জন গানম্যান এবং একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী। এই ফ্রি হজ্ব লিস্টে ১০ জন আওয়ামী লীগ নেতা, ৩ জন এমপি, ১৫ জন বঙ্গভবনের কর্মচারী, ২৪ জন গণভবনের এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিসের  কর্মচারীও পাওয়া গেছে। একজন মন্ত্রী কী করে তার নির্বাচনী এলাকায় ৮০ জনকে পাবলিকের টাকায় হজ্বে পাঠাতে পারেন? যারা এই ফ্রি হজ্ব লিস্টে ছিলেন তাদের ৯৫% শুধু ধনী নন, বরং অসম্ভব রকমের ধনী। শাবানা এই মন্ত্রীকে ব্যবহার করেই তার ও তার স্বামীর রাজনৈতিক অভিলাষ বাস্তবায়িত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন। আগে তিনি পরপুরুষকে আলিঙ্গন করে, কোমর বাঁকিয়ে, হেলে দুলে নেচে আর গ্লিসারিনে চোখ অশ্রুসজল করে বিপুল অর্থ উপার্জন করতেন তথা পাপ কামাতেন; পরে সেই পাপ মোচন করতে কালো বোরকায় আপাতমস্তক ঢেকে নামাজ-রোজা-হজ্ব করে বেড়াচ্ছেন, মসজিদ মাদ্রাসা বানাচ্ছেন আর রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিপুল অংকের টাকা ও ক্ষমতা হাসিল করার জন্য সামনে পা বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এটাকে অবশ্য তিনি ‘পাপ’ বলবেন না, কারণ এখানে বিশাল স্বার্থ লুকিয়ে রয়েছে! একদিকে আল্লাহ-বিল্লাহ করা, আরেকদিকে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা! এই মসজিদগুলোর খুৎবা শুনে শুনেই এদেশের তরুণ প্রজন্ম বিভ্রান্ত হচ্ছে, হাতে তুলে নিচ্ছে বিভিন্ন অস্ত্র - দা, কুড়াল, চাপাতি কিংবা বোমা; হচ্ছে জিহাদী জঙ্গিবাদী, মানুষ মারছে নির্বিচারে আর অন্যদের ভেতর ঢুকিয়ে দিচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা, ঘৃণা, হিংসা, হিংস্রতা, বর্বরতা ও নির্মমতা, নৃশংসতার বিষবাষ্প! পত্রিকায় প্রায়ই নিউজ আসে মাদ্রাসা মক্তব থেকে ধরা পড়া নারী, শিশু ধর্ষক হুজুর কিংবা সমকামী হুজুর। এসব মাদ্রাসা-মসজিদের মাধ্যমে দেশে তৈরি হচ্ছে অশিক্ষিত, অসুস্থ, রুগ্ন, পঙ্গু, দুর্বল, মস্তিষ্কবিকৃত, নারীবিদ্বেষী, পরজাত ও পরধর্মবিদ্বেষী অর্বাচীন, লোভী, স্বার্থপর ও উন্মাদ প্রজন্ম। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অষ্টরম্ভা মাদ্রাসায় পড়া প্রজন্ম কী পারবে বাংলাদেশকে সুখী, সমৃদ্ধিশীল ও আত্মনির্ভরশীল স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে? বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকার রুচি ও চিন্তাধারা যে এতটা নিম্নমানের, সেটি ভাবতে খুব কষ্ট হয়। জামাতের প্রতিষ্ঠাতা আবুল আ'লা মওদূদী মুখে 'ইসলাম ইসলাম' করতেন, কিন্তু তার ছেলেমেয়েদের প্রত্যেককে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করেছিলেন। শাবানাও সেই একই হিপোক্রেসি করেছেন। নিজের ছেলেমেয়েদের প্রত্যেককে বিদেশে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে বাংলাদেশী ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় পড়াতে চেয়েছেন। কী নিদারুণ হিপোক্রেসি! শাবানার কী এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বা দ্বিচারিতামূলক অবস্থান নিতে বিন্দুমাত্র লজ্জা করে না? তার স্বামীর বড় ভাই এএসএইচকে সাদেকের স্ত্রী ইসমত আরা সাদেক যশোর-৬ এর এমপি ছিলেন। নির্লজ্জের মতো তাকে হটিয়ে তিনি কিভাবে স্বামীকে ইলেকশনে এমপি পদপ্রার্থী বানাতে চেয়েছেন যার দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা তথা ন্যূনতম রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই? আমরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রগতিশীল প্রজন্ম চাইলেও সেই প্রজন্ম সৃষ্টির পথে মাদ্রাসা-মক্তবপ্রেমী এই শাবানারা অন্যতম প্রতিবন্ধক। শাবানারা সত্যিকারের দেশপ্রেমিক নন বলেই বছরের পর বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়ে থাকেন আর স্বার্থের জন্য বাংলাদেশে ফেরেন!



'ধর্ষণের সাথে মেয়েদের ছোট পোশাক জড়িত।' 

'ধর্ষণের সাথে আকাশ সংস্কৃতি, ইন্টারনেট, পাশ্চাত্য অনুকরণ জড়িত।'

অনলাইনে মোল্লারা, উগ্র ধার্মিকরা, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সবাই এসব বলে। 

'মিষ্টি খোলা রাখলে মাছি বসবেই।' 

'চকলেট খোলা থাকলে নষ্ট হবেই।'

এসব তুলনা তারা দিবেই। কথিত ডিগ্রিধারীরা তো পাভলভের কুকুর তত্ত্ব দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চায় কেন মেয়ে দেখলে লালা ঝরবেই; কেন কিছু মেয়ের পর্দা না করা অন্যদের ধর্ষণের ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। 

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Classical_conditioning

অথচ এদের সবার কাছে 'ব্যাটেল অব আল হারা' কিংবা মদীনার যুদ্ধের ধর্ষণ নিয়ে কোনো যুক্তি নেই। এই যুদ্ধ হয়েছিল নবী মুহাম্মদের মৃত্যুর ৫০ বছর পর।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Battle_of_al-Harra

১২০০ এর বেশী নারীকে দুই দিনে গণধর্ষণ করা হয়েছিল এই যুদ্ধে। এই ধর্ষিতারা সবাই সাহাবীদের স্ত্রী-কন্যা ছিল। যাদের দ্বারা ধর্ষণ হয়েছিল, তাদের বাহিনীর নেতৃত্বেও সাহাবীদের সন্তান ছিল। যে সমস্ত আনসার আর কুরাইশ নারীদের মদীনা শহরজুড়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল, তাদের অনেকেই নবী মুহাম্মদের পেছনে নামাজ পড়েছিল, দাওয়াত খাইয়েছিল তাকে। পর্দার আয়াত নাজিলের পর প্রথম পর্দা পালনকারী প্রজন্ম ছিল তারাই। মুহাম্মদের মৃত্যুর ৫০ বছর পর মদীনা শহরে ধর্ষিত হয়েছিল সেসব নারী, তারা যেসব পরিবারে বেড়ে উঠেছিল তারা নিশ্চয়ই পর্দার বাইরে ছিল না, মিষ্টি কিংবা চকলেট ছিল না? মিনি ড্রেস, ডিশ এন্টেনা দিয়ে ঐসব ধর্ষকদের শিশ্ন খাড়া করানো হয়নি। তাহলে উমাইয়া বাহিনীর হাতে শত শত কুরাইশ আর আনসার নারীদের ধর্ষিত হওয়ার পেছনের কারণ কী? তারা তো ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে সম্মানীত বংশীয়, সবচেয়ে ধর্মপ্রাণ নারী ও কন্যা ছিল৷ এই প্রশ্ন করলে মোল্লারা বলবে - "এরা সব জাহেল, পথভ্রষ্ট মুসলিম"। নারীর পোশাক কখনোই ধর্ষণের কারন হতে পারে না। সবচেয়ে পাগল হুজুরও বলবে না যে, "মুহাম্মদের সমসাময়িক কিংবা কিছুদিন পর জন্ম নেয়া এই ভুক্তভোগীরা কেউ পশ্চিমা মিষ্টি কিংবা মাছি ছিল। এর ফলে উত্তেজিত হওয়ায় ধর্ষণ অনিবার্য ছিল"। এই যুদ্ধে উভয়পক্ষই মুসলিম পরিচয়ধারী ছিল। যুদ্ধে জয়ীরা চাইলেই নারীদের দাসী হিসেবে, গণিমতের মাল হিসেবে রেখে দিতে পারতো। তারপরও শত শত ধর্ষণ কেন করা হয়েছিল? তা-ও মদিনা শহরে, যে শহরে স্বয়ং মুহাম্মদ এর কবর। এর কারণ ধর্ষণ করতে পথভ্রষ্ট পুরুষ লাগে, পারভার্ট মানুষ লাগে। পর্দা না করা কোনভাবেই ধর্ষণ জায়েজের জুজু হতে পারে না আপনার। এটা করলে আপনি পর্দাকে ভ্রান্তিমান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। ধর্ষিতার অবয়ব কিংবা তার পোশাক-আশাক কখনোই ধর্ষণের প্রাথমিক অনুঘটক না। ধর্ষণের এক নম্বর ও একমাত্র কারণ ধর্ষক। কোনো নারী ছোট কাপড় দেখিয়ে যদি ধর্ষণকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে, তাহলে নুসরাত ও তনু কেন ধর্ষিত হয়েছিল?


তারাই ভাস্কর্যে অশালীনতা দেখতে পায় যারা সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ দানকালে যৌনতা আবিস্কার করে। তাহলে কি ধর্ষকরা ভাস্কর্য দেখেই ধর্ষণ করা শিখেছে? ঘরে ঘরে যে ছেলে-মেয়েরা প্রতি মুহূর্তে যখন তখন পর্নো ভিডিও দেখছে, এই ভাস্কর্যগুলো কি এর জন্য দায়ী? এই ভাস্কর্যগুলো দেখে যাদের চোখ-মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায় তাদের কি লজ্জার প্রকাশ পায় তখন যখন-

১। বাবা কর্তৃক মেয়ে ধর্ষণ হয়?

২। হুজুর, শিক্ষক, ভাই, দুলা ভাই, চাচাতো ভাই, মামাতো ভাই, পথচারী কর্তৃক নারী, শিশু, যুবতী, বৃদ্ধা, প্রতিবন্ধীরা ধর্ষণের শিকার হয়?

৩। যে বইয়ে লেখা থাকে অন্য ধর্মের নারীদের ধর্ষণ বৈধ অথচ সেই বইকে সংরক্ষণ করতে দেখে?

৪। যখন সংখ্যালঘু নারীরা পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হয়? 

৫। ছোট থেকে বড় সকলে যখন সকল বয়সি নারীদের ইভটিজিং করে, ভন্ডরা নারীদের তেঁতুল বলে, আমিনী হুজুররা যখন ইভটিজিং করার উস্কানি দেয় তখন?

পোশাক যদি শালীনতার এত বড় অংশই হবে তাহলে ধার্মিকদের ঈশ্বর কেন মানুষকে পোশাক ছাড়া পাঠায়? এত লজ্জাধারী মানুষ এদেশে থাকতে প্রায় ১৭ কোটি জনগণ হলো কিভাবে খুব জানতে মন চায়। এতো শালীন মানুষের এই সমাজে কেন খবরে দেখা যায় ডাস্টবিনে পাওয়া গেলো নবজাতকের লাশ, গর্ভপাত করাতে গিয়ে তরুণীর মৃত্যু, অবিবাহিতা হলো সন্তানের জননী, পাগলীটা হলো এবার মা, ৪র্থ শ্রেণীর মেয়ে মা হলো! দেশে গুম, খুন, ধর্ষণ, ধর্মের ব্যবসা, দুর্নীতি, ঘুষ, বিচারহীনতা দেখে চুপ থাকে আর দাঁত কেলিয়ে চিৎকার করে উঠে ভাস্কর্য দেখলেই ভাঙতে চাওয়া মৌলবাদীরা। হুমায়ুন আহমেদ এর 'ঘেটুপুত্র কমলা' ফিল্মে এদের স্বরূপ চমৎকারভাবে উন্মোচন করা হয়েছে, যেখানে মোল্লা সাধারণ মানুষদের উপর হম্বিতম্বি করলেও ঘেটুপুত্র রাখার নোংরা প্রথার বিন্দুমাত্র বিরোধিতা করেনি আরামের জীবিকার নিশ্চয়তার লোভে।


মার্ক্সবাদী শ্রেণী সংগ্রামের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে ফরহাদ মজহারের ভ্রান্তি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। তার পথ ধরেছিল তার যোগ্য শিষ্য পিনাকী ভট্টাচার্য। এরা বাংলাদেশে ভ্রান্ত শ্রেণী সংগ্রামের ব্যাখ্যা হাজির করেছে। হেফাজতে ইসলামের নানা ধর্মীয় প্রতিক্রিয়াশীল আন্দোলনগুলোকে এরা 'শ্রেণী সংগ্রাম' হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশে এদের অনুসারীর সংখ্যা কম নয়। হেফাজতের মত পশ্চাৎপদ ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠনকে কিভাবে শ্রেণী সংগ্রামী হিসেবে চালিয়ে দেয় এসব বামেরা? শ্রেণী সংগ্রাম নিয়ে বলতে হলে প্রথমেই শ্রেণী সংগ্রাম নিয়ে পরিস্কার ধারণা থাকা দরকার। মার্ক্সবাদের ব্যাখ্যা থেকে আমরা জানি সমাজ যখন অর্থনৈতিকভাবে নানা শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে তখন থেকে শ্রেণী সংগ্রামের যাত্রা। ঐতিহাসিকভাবে মার্ক্সবাদ যে শ্রেণী বিভক্তির ধারণা দেয় তা মোটামুটি দাস সমাজে দাস মালিকদের বিরুদ্ধে দাসদের সংগ্রাম। সামন্তীয় সমাজে জমিদার বা রাজাদের বিরুদ্ধে ভূমিদাসদের সংগ্রাম, শহুরে আধুনিক বুর্জোয়াদের সংগ্রাম। বুর্জোয়ারা যখন ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠলো তখন পুরাতন ধরণের শ্রেণী সংগ্রামের বিলুপ্তি হয়ে নতুন ধরণের শ্রেণী সংগ্রাম গড়ে উঠে। আজকের দিনে শ্রমিক শ্রেণীর লড়াই হলো শ্রেণী সংগ্রামের ভিত্তি। কোথাও কোথাও এখনো বুর্জোয়াদের শ্রেণী সংগ্রাম বা ভূমিদাসদের শ্রেণী সংগ্রামের অস্তিত্ব দেখা যেতে পারে। তবে বর্তমান পুঁজিবাদী যুগে শ্রেণী সংগ্রাম হলো শ্রমিক শ্রেণী বনাম ক্ষমতাশালী বুর্জোয়ারা। হেফাজতে ইসলাম যে আদর্শিক জায়গা থেকে আন্দোলন করেছিল তা কী শ্রেণী সংগ্রামের মধ্যে পড়ে? হেফাজতের আহমদ শফি বা তাদের সংগঠন শ্রমিক শ্রেণীর কোন আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতো কিংবা এখনো করে? কথিত তাত্ত্বিকরা এর ব্যাখ্যা দেননি। আহমদ শফি বা জোনায়েদ বাবু নগরী হলো চিন্তার দিক দিয়ে সামন্তবাদী আর অর্থনৈতিক বাস্তবতায় পুঁজিবাদী। কওমী মাদ্রাসার ছেলেদের এরা নিজস্ব গোষ্ঠী স্বার্থে ব্যবহার করেছে। হেফাজতীরা হলো আজকের দিনে লুটেরা সুবিধাপ্রাপ্ত একটি শ্রেণী যারা সমাজ বিকাশের পশ্চাৎপদ চিন্তা লালন করে। এরা কি আধুনিক যুগের শ্রেণী সংগ্রাম লালন করতে পারে?


প্রকাশ্যে জঙ্গিদের মিছিল!


আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসীম উদ্দিন রাহমানী'কে ছেড়ে দেয়া হয়েছে

ইরানের মতো দেশে ৫০,০০০ মসজিদ বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ তারা রাজনৈতিক ইসলামের ভয়াবহতা দেখেছে বলেই বিতৃষ্ণা এসে গেছে। একাত্তরের প্রজন্ম নয় মাস ধরে রাজনৈতিক ইসলামের ধারকদের বর্বরতা সহ্য করেছিল দেখেই তারা দেশ স্বাধীন হওয়ার পঞ্চাশ বছর পরও এদের প্রতি ঘৃণাটা বজায় রাখতে পেরেছে। বর্তমানের আহাম্মক প্রজন্মেরও শিক্ষাটা হবে অচিরেই।


নারী-পুরুষের একই কাতারে লোক দেখানো নামাজ পড়া নিয়ে যারা গর্ব করে বেড়াচ্ছে তাদের যে এই ব্যাপারে ইসলাম কি বলে তা নিয়ে জ্ঞান নেই সেটা সুস্পষ্ট। ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী, নারীরা পুরুষের সামনে এমনকি পুরুষের সাথে একই কাতারে নামাজ পড়তে পারবে না। কারণ এটা করলে পুরুষের চোখ নারীদের পশ্চাৎদেশে চলে যাবে, শয়তান সেই সুযোগ নিয়ে নামাজ নষ্ট করবে।


হাসিনাকে মৌলবাদীদের এবং তাদের অনুসারীদের দেখতে না পারার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল তিনি একজন নারী ছিলেন। কারণ, ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম। হাসিনা সরকার পতনের আগে এবং পরে অসংখ্য গ্রূপ আর পেইজে এই কারণটাকে সামনে এনেছিল মৌলবাদীরা। 


‘গ্লোবাল টেররিজম অ্যান্ড ইনসারজেনসি অ্যাটাক ইনডেক্স-২০১৩’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ‘আইএইচএস জেন্স টেররিজম অ্যান্ড ইনসারজেনসি সেন্টার’ ২০১৩ সালে সবচেয়ে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় ৩ নম্বরে রেখেছিল শিবিরকে। বাংলাদেশ জুড়ে এদের একক নৈরাজ্যে নিহত হয়েছিল কমপক্ষে ১৫২ জন মানুষ। পাকিস্তান আমলে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠনের নাম ছিল ‘পাকিস্তান ছাত্রসংঘ’। ১৯৭৭ সালে ছাত্রসংঘ ‘ইসলামী ছাত্রশিবির’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তির কারণে শিবির দরিদ্র ব্যক্তিদের সন্তান ও মাদ্রাসা ছাত্রদের দলে ভেড়াতে পারে। শিবির কর্মীদের পড়াশোনায় সহায়তা দেয়। পাশাপাশি জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শিবির কর্মীদের চাকরির নিশ্চয়তা আছে। ফলে শিবিরের কর্মী সংকট হয় না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে তারা শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে।

https://www.thedailystar.net/shibir-3rd-among-top-non-state-armed-groups-12937

"বাঙালী নারীদের গর্ভবতী করে দাও, তাহলে ওদের ঘরে জন্ম নেয়া সন্তানরা আমাদের বিরোধীতা করবে না।"

- জেনারেল নিয়াজী

Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

দেশ যখন ইসলামাইজেশন এর পথে [পর্ব-এক]