রোমানভ পরিবার সংক্রান্ত মিথ্যাচারের জবাব
দুই অনুসন্ধানী সাংবাদিক এমন প্রমাণ উন্মোচন করেছেন যা গণহত্যার তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে এবং ইঙ্গিত করে যে, জারিনা ও তার চার কন্যা তথাকথিত হত্যার তারিখের কয়েক মাস পর বেঁচে ছিলেন। তাদের 'দ্য ফাইল অন দ্য জার' বইটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত হয় হার্পার এন্ড রো কোম্পানির মাধ্যমে। তারা হলেন ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের সাংবাদিক অ্যান্থনি সামারস এবং টর্ন ম্যাঙ্গোল্ড৷ বইটির সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিকটি হলো ভাগ্য এবং গোয়েন্দা কাজের সমন্বয়ে লেখকদ্বয়ের আবিষ্কার যা একটি সাত খণ্ডের ডসিয়ার। বইটিতে উল্লিখিত প্রমাণগুলো কথিত গণহত্যার তদন্তের সময় একজন রাজতন্ত্রবাদী কর্মকর্তার দ্বারা সংগৃহীত। ডসিয়ারের অন্তর্ভুক্ত মূল হলফনামা এবং পুলিশ রিপোর্ট রুশ টাইপস্ক্রিপ্টে লেখা ছিল, যা হার্ভার্ডের হটন লাইব্রেরির একটি ভল্টে পাওয়া গেছে।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Houghton_Library
লেখকদ্বয় বলেন-
"ডসিয়ারের ভিতরে বিস্তারিত প্রমাণ ছিল, গণহত্যার সংস্করণের জন্য বিদ্যমান যে কোনওটির মতোই বাধ্যতামূলক, যা দেখায় যে রোমানভ পরিবারের বেশিরভাগই তাদের ঐতিহাসিক মৃত্যুর পর বহু মাস ধরে বেঁচে ছিলেন।"
লেখকরা যুক্তি দেন যে লেনিন সম্ভবত জার এবং তার ছোট ছেলের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রায় গৃহীত তারিখে। কিন্তু জারিনা এবং তার চার কন্যাকে গোপনে ইকেটেরিনবার্গের ২০০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে পার্মে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। বলশেভিকরা তাদের বিনিময়ে জার্মানিতে বন্দী থাকা বিশিষ্ট বিপ্লবীদের ছাড়িয়ে আনতে চেয়েছিলেন জার্মানদের কাছ থেকে।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Perm,_Russia
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা লেখকদ্বয় বলেছেন, লেনিন জার্মানদের সাথে দর কষাকষির জন্য জার্মান বংশোদ্ভূত জারিনা এবং তার চার কন্যার বিনিময়ে প্রস্তুত ছিলেন। কাইজারের সাথে আলোচনা করে লেনিন তার অনুসারীদের মধ্যে ধারণাটি প্রচার করতে পারেন যে, পরিবারটি মারা গেছে। ধারণাটি গৃহযুদ্ধের অশান্ত পরিস্থিতিতে তাদের স্থানান্তর সহজ করে তোলে এবং জঙ্গি বলশেভিকদের ক্রোধ এড়াতে তিনি কাজটি করেন যারা জোর দিয়েছিল যে তাদের সকলকে হত্যা করা হবে। লেখকরা বইটির উপর পাঁচ বছর কাজ করেছেন। তারা হটন লাইব্রেরিতে পাওয়া জবানবন্দি, সাক্ষাৎকার; জার্মান, ব্রিটিশ এবং আমেরিকান আর্কাইভে পাওয়া নথি আর রাজকীয় পরিবারের ভাগ্য সংক্রান্ত প্রথম আনুষ্ঠানিক হোয়াইট রাশিয়ান তদন্তের প্রমাণ উন্মোচন করে তাদের যুক্তি প্রমাণ করেছেন। সেগুলোতে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, সেলার হত্যা সংঘটিত হয়েছিল। বিচারক ইভান সের্গেইভ প্রায় ছয় মাস পরিশ্রম করে প্রচুর প্রমাণ সংগ্রহ করেন। তিনি বলেছিলেন-
"আমি বিশ্বাস করি না যে সমস্ত লোক, জার, তার পরিবার এবং তাদের সাথে যারা সেখানে ছিল তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছিল।"
১৯১৯ সালের জানুয়ারিতে বিচারক সের্গেইভকে আকস্মিকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং নিকোলাই সোকোলভ নামে একজন আইনজীবীকে প্রতিস্থাপিত করা হয়, যার মাধ্যমে কথিত গণহত্যার তত্ত্বটি চূড়ান্ত মিথ্যা সংস্করণে পরিণত হয়েছিল। দুই লেখক পার্মে তাদের অনুমিত বন্দিত্বের পর রোমানভ নারীদের ট্র্যাক হারান।
সামারস বলেন-
"যদি লেনিন জার্মানদের সাথে একটি চুক্তির জন্য পরিবারটিকে জিম্মি হিসাবে বাঁচিয়ে রাখতেন, তবে জার্মানি পরাজিত হলে এবং কাইজারের পতনের সময় উদ্দেশ্যটি পূরণ হতো।"
তিনি আরো বলেন-
"লেনিন হয় বেঁচে থাকা রোমানভদের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছিলেন কিংবা তাদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলেন। আমরা যা জানি, যা আমরা প্রায় নিশ্চিত, তা হলো পরিবারটির সদস্যরা তাদের ঐতিহাসিক মৃত্যুর পর ছয় মাস বেঁচে ছিল।"
Comments