ওসমানীয়দের স্বরূপ [পর্ব-এক]

 


'দেলি' নামে ওসমানীয়দের বাহিনী ছিল যারা অধিকাংশই ছিল ভয়াবহ দাগী আসামী। এদের পুরো শরীর পশমে ঢাকা থাকতো আর মাথা থেকে পা পর্যন্ত ট্যাটু আঁকা থাকতো।

https://islamqa.info/en/answers/20283/are-tattoos-haram-in-islam

এই আসামীদের দ্বারা গঠিত বাহিনীকে যুদ্ধ করাতে বেহেস্ত এর প্রাসাদের লোভ দেখানো হতো নিয়মিত। এরা অমুসলিম দেশগুলোতে আক্রমণের পর শত্রুদের মাথা বিচ্ছিন্ন করতো হত্যার সময়। 

ওসমানীয়রা রাজজ্যোতিষী রাখতো বেতন দিয়ে, যাদের কাজ ছিল শুভলগ্ন দেখে যুদ্ধের দিন ঠিক করা।

https://islamqa.info/en/answers/2538/are-zodiac-signs-haram

তুর্কি নাবিকরা জাহাজে ওঠার আগে পুরানো মাদুলি ফেলে দিয়ে নতুন মাদুলি পড়তো 'দুর্ভাগ্য' দূর করার উদ্দেশ্যে।

https://islamqa.info/en/answers/10543/ruling-on-wearing-amulets-for-protection

ওসমানীয়রা জিপসি'দের ঘোড়ায় চড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নিজেরা ঘোড়ায় চড়তো বলে। অথচ এরাও মুসলিম ছিল।

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Romani_people_in_Turkey

ওসমানীয়দের আমলে তাদের সাম্রাজ্যের সেরা রুটিগুলো বানাতো গ্রিকরা। অথচ হিংসুটে মুসলিমরা গুজব ছড়িয়ে দিয়েছিল গ্রিকরা রুটির উপর ক্রস চিহ্ন আঁকে আর এগুলো খেলে মুসলিমরা খ্রিস্টানে পরিণত হবে। অথচ দ্রুত ও ভালোভাবে সিদ্ধ হতে সারা বিশ্বে নানা খাবার ফাঁক করে দেয়ার রীতি আছে। 

ওসমানীয়দের আরেক বাহিনী জেনিসারি'দের উপর দাঁড়ি রাখতে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল, এরা কেবল গোঁফ রাখার অনুমতি পেতো। 

https://islamqa.info/en/answers/1189/is-it-haram-to-shave-your-beard

কথিত 'ইসলাম রক্ষাকারী' ওসমানীয় সুলতানরাই মুসলিম বিশ্বে প্রথম সুদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করে। সেটির নাম ছিল 'ইস্তানবুল ব্যাংক', যা ১৮৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। যৌথ মালিকানার এই ব্যাংকের অন্যতম অংশীদার ছিল ব্রিটিশ ও ফরাসি সরকার।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ওসমানীয় সুলতানদের সাথে জার্মানির মৈত্রী চুক্তি ছিল। সেই চুক্তির আওতায় তুরস্কের বিভিন্ন শহর থেকে ২০০ জন শিশু শ্রমিককে দ্বিতীয় দফায় পাঠানো হয়েছে জার্মানিতে, যুদ্ধ সংক্রান্ত নানা কাজে সহায়তা করতে। প্রথম দফায় পাঠানো হয়েছিল আরো অনেককে।


তুরস্কে গোঁফ রাখাকে সম্মানের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কামালের মুক্তিযোদ্ধারা ধরে ফেলেছিলেন একটা বিশেষ ছাঁটে পশ্চিমাদের দালাল ও গুপ্তচররা গোঁফ রাখতো, যাদের দেখলেই পশ্চিমা বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের লোক হিসেবে চিনতে পারতো। নিজেদের গদি বাঁচাতে ও বিলাসী জীবনযাপন বজায় রাখতে ওসমানীয় বংশ পশ্চিমাদের তোষামোদ করে নানা সুবিধা দিতো। উল্লেখ্য, মুসলমানদের এই খলিফাদের এক শেহজাদি কোনো এক ইহুদীর সাথে পালিয়ে যায়। আর তুরস্কের ক্যাফেগুলোতে এখনো পুরুষরাই কেবল যায়, এগুলোতে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।

ওসমানীয় সুলতানদের মাথায় বিশাল বিশাল সাদা পাগড়ির রহস্য হচ্ছে এরা পাগড়ি হিসেবে কাফন ব্যবহার করতো। খেলাফতের যুগে ফিরে যাওয়ার অলীক কল্পনাকারীরা এই দিকটাকে উপস্থাপন করে দাবী করে এসব নারীলিপ্সুরা কতটা ধর্মপ্রাণ ছিল! সাদা কাফন নাকি তাদের পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে বিনয়ী রাখতো! অথচ এই পাগড়ি পরিধান করেই তারা বাঈজীর নাচ দেখতো এবং এমন আরো নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকতো।

সুলতান সুলেমানের ছেলে দ্বিতীয় সেলিম মারা গিয়েছিল মদ খেয়ে গোসল করতে গিয়ে বেসিন এর মার্বেল পাথরে আঘাত পেয়ে। ঐদিন সন্ধ্যা যেতে না যেতেই দ্বিতীয় সেলিমের ছেলে মুরাদ ৪ জন শিশু ও কিশোর ভাইকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছিল। এই নির্মম ঘটনাটি ঘটানো হয়েছিল মুসলমানদের রোজা রাখার মাসেই। ওসমানীয়রা এতো বেশি পরিমাণে বন্য জন্তু শিকার করতো আর তাদের চিড়িয়াখানার জন্য সংগ্রহ করতো যে, তাদের কারণে এশিয়া ও ইউরোপের অনেক অংশে এসব প্রাণী বিলুপ্ত প্রায় হয়ে যায়। ওসমানীদের সময় প্রাসাদ তৈরির কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা মূল ফটক দিয়ে প্রবেশের অনুমতি পেতো না। পেছন দিকে আরেকটা প্রবেশদ্বার তৈরি করতে হতো তাদের, কাজ শেষ হলে সেটি ইট আর মাটি দিয়ে ভরাট করে দিতো তারা। উল্লেখ্য, এই তৃতীয় মুরাদের ১৯ জন ছেলেকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছিল তৃতীয় মেহমেদ।

যুদ্ধের ময়দানে ওসমানীয় সুলতানরা বেশ্যাদের নিয়ে যেতো সৈনিকদের খুশি রাখতে। এরা যুদ্ধের জন্য হাতি সাপ্লাই পেতো মুঘলদের কাছ থেকে।

আতিক সিনান ছিলেন কনস্টান্টিনোপল বিজেতা সুলতান ফতেহ'র প্রধান স্থপতি। তার উপর নির্দেশ এসেছিল সুলতান ফতেহ'র জন্য মসজিদ বানানোর। এজন্য বিশাল বিশাল স্তম্ভ নিয়ে আসা হয়েছিল, এগুলো থেকে আতিক সিনান কিছু স্তম্ভ সরিয়ে ফেলেছিলেন নির্মাণ কাজের সুবিধার জন্যই। সুলতানকে জিজ্ঞেস না করে নির্মাণ কাজে পরিবর্তন আনায় তিনি রেগে যান। আতিক সুলতানকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন ইস্তাম্বুলে প্রচন্ড ভূমিকম্প হয়। মসজিদটি যাতে এ কারণে ধ্বসে না যায় সেজন্য তিনি কিছু স্তম্ভ সরিয়ে ফেলেছিলেন। সুলতান এই ব্যাখ্যা বিশ্বাস করেননি। সুলতানের নির্দেশে আতিকের দু'টি হাত কেটে ফেলে অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করা হলো।

ওসমানীয় সুলতানদের তৈরিকৃত মসজিদগুলোর চারপাশে মাকড়সার ঝুল না জন্মানোর জন্য উটপাখির ডিম সংগ্রহ করে ডিমের শেষ প্রান্তে ফুটো করে দেয়া হতো। এটির গন্ধ মানুষের তেমন ক্ষতি না করলেও পোকামাকড় দূরে রাখতো।

উল্লেখ্য, সুলতান সুলেমানের সময়ের প্রধান স্থপতি সিনান ছিলেন খ্রিস্টান পরিবার থেকে আগত যাকে পরবর্তীতে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয় জবরদস্তি করে। এই কারণেই সোলেমানিয়া মসজিদ তৈরির দায়িত্ব যখন তার উপর পড়ে তখন অন্যরা সমালোচনা শুরু করেছিল। এই সুলতানের সময়ে ইউরোপের পাশাপাশি যখন তুরস্কেও মড়ক দেখা দেয় তখন গালাতা ভবনে ইহুদীদের উপর মুসলমান তুর্কিরা হামলা করেছিল। আলকাতরা দিয়ে ইহুদীদের ঘরের দরজার উপর চিহ্ন দেয়া হয়, ইহুদীদের অনেককে হত্যা করা হলো। তাদের অনেক রাবাইকে হত্যা করা হলো। এই বর্বরতা ইউরোপের অনেক খ্রিস্টান প্রধান দেশেও চালানো হয়েছিল। মুসলিম তুর্কিরা গুজব ছড়িয়ে দিয়েছিল যে, এক ইহুদি মুচি রাজ্যের সকল কুয়াতে বিষ ঢেলে দিয়েছিল এই মহামারী ছড়িয়ে পড়ার জন্য।

খ্রিস্টানদের উপরও চালানো হলো বর্বরতা। মুসলিমরা তুর্কিরা বলতো এই সম্প্রদায় নাকি হাম্মামখানায় গিয়ে গোসল করে না, আপাদমস্তক নোংরা থাকে, স্ত্রীদের সাথে সহবাস করার পর পরিষ্কার হওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না, ইচ্ছামতো মদ খায়, শুয়োরের মাংস খায় যেগুলো নোংরা কাদায় থাকে।

ধর্মান্ধ অনেক তুর্কি বললো দোষ আসলে সুফিদের। এরা ধর্ম-কর্ম করে না, গোল হয়ে কেবল নাচতে থাকে, নিজেদের মুসলমান বললেও ইসলাম ধর্মের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই, স্বর্গ-নরকের ভয় নেই, নিজেদের আল্লাহর সাথে তুলনা করে, তাদের আলখেল্লার নিচে নাকি খোদা অবস্থান করে। ধর্মান্ধ তুর্কিদের মতে এদের কারণেই খোদা মড়ক সৃষ্টি করেছেন। এরা সুফিদের দেখলেই আক্রমণ করা শুরু করেছিল।

সবাই পতিতা পল্লী আক্রমণ করা শুরু করলো। বেশ্যা ও তাদের দালালদের জীবন্ত জ্বালিয়ে দেয়া হলো। এই মড়কে মারা গিয়েছিল ৫,৭৪২ জন।

একদিকে সুলতান ও তার পুত্ররা মাইয়াবাজিতে ব্যস্ত থাকতো, অন্যদিকে সুলতানের নিয়োগকৃত 'শায়খ আল ইসলাম' নির্দেশ দিতো যারা শুক্রবারে নামাজ পড়তে আসবে না তাদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। আরো ফরমান জারি করা হতো যে, প্রত্যেক মুসলমানকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেই হবে। এজন্য ব্যাঙের ছাতার মতো মসজিদ বানানো হতো। মসজিদগুলোতে প্রথম পাথর বসানোর আগে গরু এবং ভেড়া উৎসর্গ করা হতো। তাই অমুসলিমদের ধর্মীয় প্রথাকে গালি দেয়ার আগে সবার আগে এই খলিফাদের কাজকর্ম বিবেচনা করা উচিত মুসলিমদের। মাংসগুলো যাতে পচে যায়, সেজন্য বিভিন্ন স্থানে সেগুলোকে নিয়ে রাখা হতো। যেখানে পচন বেশি হতো, সেখানে বাতের শুষ্ক ভাবও বেশি হতো। বিজিত অঞ্চলগুলো থেকে সকল মসজিদের নির্মাণ কাজের মাল-মশলা নিয়ে আসা হতো। অথচ এসকল অঞ্চলের উন্নতির জন্য ওসমানীয়রা তেমন কিছুই করেনি। সম্রাজ্ঞী থিওডোরার স্মৃতি বিজড়িত স্থাপত্য থেকে সতেরটি স্তম্ভ খুলে আনা হয়েছিল সুলায়মানিয়া মসজিদ বানাতে। শ্রমিকদের অধিকাংশই হতো খ্রিস্টান এবং ইহুদি, শ্রমিকদের খুব কমই ছিল মুসলিম।

সুলতান, তার পরিবার এবং বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের  সামনে যেসব খেলা দেখানো হতো তাদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি খেলা ছিল অত্যন্ত আপত্তিকর এবং অমুসলিম বিদ্বেষী। এই খেলায় একটা ভালুক ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করতো এবং একটা শুয়োর খ্রিস্টধর্মের প্রতিনিধিত্ব করতো। এই পদ্ধতিতে বিদেশি অমুসলিম প্রতিনিধিদের এটাই প্রদর্শন করা হতো যে, খ্রিস্টানদের চেয়ে মুসলিমরাই শ্রেষ্ঠ।

ওসমানীয়দের প্রাসাদগুলোতে যে বিদ্যালয় থাকতো সেখানে ইসলামী আইন, হাদিস, দর্শন, নবী রাসূলদের ইতিহাস, কুরআন শরীফ ইত্যাদি পড়ানো হতো কেবল পুরুষ শিক্ষার্থীদের। ওসমানীয়রা নারী শিক্ষার কোনো ব্যবস্থাই রাখেনি। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ বাবেল মন্দিরে যাওয়ার জন্য গণিত, ভূগোল, জ্যোতির্বিদ্যা, যুক্তিবিদ্যা ইত্যাদি পড়তো। আবার কেউ কেউ নিজেদের শখ অনুযায়ী কবিতা, গান, ক্যালিগ্রাফি, কুমারের কাজ, অস্ত্র তৈরীর কাজ করতো। এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই কাউকে উঁচু পদে দরবারে চাকরি দেয়া হতো, আবার কেউ হতো নির্মাতা কিংবা বিজ্ঞানী। এই বিদ্যালয়গুলোতে জাতিগত বৈষম্য করা হতো। এগুলোতে আলবেনীয়, গ্রীক, বুলগেরীয়, বসনীয় সহ নানা দেশের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেয়া হলেও কুর্দি, জিপসি আর ইরানী শিশুদের পড়ানো হতো না। 

ওসমানীয় সুলতান এবং শাহজাদারা শত শত উপপত্নী রাখলেও তারা তাদের মেয়েদের এবং বোনদের বিয়ে দেয়ার সময় এটা নিশ্চিত করতো যে, বরের যেন অন্য কোনো পত্নী না থাকে। কারণ তাদের মতে সুলতানের বোন বা মেয়ে কখনো কারো দ্বিতীয় স্ত্রী হতে পারে না।

ওসমানীয়রা মসজিদ নির্মাণের সময়ও তাদের প্রধান জ্যোতিষী দিন এবং কাজের স্থান নির্বাচন করে দিতো। এসময় ভেড়া এবং এঁড়ে বাছুর উৎসর্গ করে তাদের রক্ত চার কোণে ছিটিয়ে দেয়া হতো। 

ওসমানীয়দের বিভিন্ন স্থাপত্য নির্মাণের সময় শ্রমিকদের পায়ে শেকল পরিয়ে কাজ করানো হতো। এদের নির্মমভাবে চাবুক দিয়ে পেটানো হতো এবং এদের সুলতান তো বহু দূরের কথা, উচ্চ পর্যায়ের রাজকর্মচারীদের চোখের দিকে তাকানোর অনুমতি পর্যন্ত ছিল না। শুকনো বিস্কুট আর পাতলা স্যুপ দেয়া হতো এসব খ্রিস্টান দাসদের এবং দিনরাত কাজ আদায় করে নেয়া হতো এদের কাছ থেকে।

বিভিন্ন ধর্মের শ্রমিক নিয়োজিত থাকলেও তাদের মধ্যে কিছু কিছু কুসংস্কার বিদ্যমান ছিল। যেমন- শয়তান যাতে কাজের বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সেজন্য দেয়ালে পেরেক ঠোকা হতো, নৈবেদ্য দেয়ার জন্য রুটির টুকরো ফেলে রাখা হতো, লাল চুলো কাউকে দেখলে কেউ কাজ করতে চাইতো না অপয়া হিসেবে ধরে নিয়ে। তাদের বিশ্বাস ছিল কিছু কিছু প্রাণী অকল্যাণ বয়ে আনে। যেমন- ব্যাঙ, শুয়োর কিংবা তিন পায়ের ছাগল। আকাশ কিংবা মাটি দেখে তারা কাজ করতো। বাতাসে কড়া কিছুর গন্ধ পেলে সতর্ক হয়ে সব দিকে লোক পাঠানো হতো কেউ জাদুটোনা করছে কিনা দেখার জন্য। প্রতিবার গরিব আর অসহায় কাউকে ধরে আনা হতো। কাউকে ফাঁসিতে ঝোলানো হলে শ্রমিকরা ছুটে গিয়ে ফাঁসিকাষ্ঠ থেকে এক খন্ড কাঠ এনে মাদুলি বানিয়ে গলায় ঝোলাতো।

ওসমানীয়দের সময়ে স্থপতিরা নির্মাণ কাজের সময় ইচ্ছা করে কিছু ত্রুটি রেখে দিতো। যেমন- কোনো একটা টাইলস ওপর-নিচ করে রেখে দিতো কিংবা মার্বেলের একটা সূক্ষ্ম ঘষা দিয়ে রাখতো। কারণ তারা মনে করতো একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ ত্রুটিহীন নয়।

ঐসময়ের অধিবাসীদের ধারণা অনুযায়ী হাতি যেই মাটির উপর দিয়ে হেঁটে যায় তা খুব পয়া। এজন্য তারা ঐ রাস্তার মাটি সংগ্রহ করে রাখতো।

ওসমানীয়দের হারেমগুলোর সামনে 'ইচ্ছাপূরণ গাছ' থাকতো। সেগুলোতে ঝুলে থাকতো অসংখ্য স্কার্ফ, রিবন, গলার মালা ইত্যাদি। 

তুর্কি ঐতিহাসিক রেশাদ একরাম কচু 'জেনিসারি রিক্রুটমেন্ট' শিরোনামের লেখায় দেখিয়েছেন ওসমানীয় সুলতানদের বলশালী সৈন্যরা দাড়ি-গোঁফ না ওঠা কিশোর সৈন্যদের সাথে সমকামিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতো। তাঁর অত্যন্ত পরিশ্রমের ফসল 'İstanbul Ansiklopedisi' শিরোনামের বিশ্বকোষে চিত্র সহকারে দেখানো হয়েছে ওসমানীয়রা এবং তাদের সময়ের অধিবাসীরা কি পরিমাণে স্যাডিস্ট ছিল অন্যদের প্রতি আচরণে।

ওসমানীয় সুলতানরা শিকারে গেলে পাশের গ্রামগুলোর সাধারণ মানুষদের বাধ্য করা হতো পশু শিকারে সাহায্য করতে।

এদের সাম্রাজ্যে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার পর কাঠমোল্লারা ফতোয়া দিয়েছিল এই রোগ নাকি সৃষ্টিকর্তা পাঠিয়েছেন আর এজন্য কোয়ারেন্টাইন জাতীয় পদক্ষেপ নেয়ার অর্থ হতো সৃষ্টিকর্তার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ!

এদের সৈন্যদের যুদ্ধের ময়দানে নিহত বিপক্ষ সৈন্যদের বিচ্ছিন্ন মাথা স্তূপ করতে হতো সুলতানকে দেখাতে।

এরা ইউরোপ আক্রমণের সময় বহু গির্জা ধ্বংস করেছিল।

Comments

Popular posts from this blog

শিবিরনামা [পর্ব-এক]

পশ্চিমাদের পুতুল সরকার [পর্ব-এক]

দেশ যখন ইসলামাইজেশন এর পথে [পর্ব-এক]