নারী
রেভারেন্ড জেমস ফরডাইস তার 'Sermons to Young Women' বইটিতে নারীদের প্রতি যেসব আপত্তিকর কথা লিখেছিলেন, তার জবাবে মেরি ওলস্টোনক্র্যাফ্ট তার 'A vindication of the rights of women' বইটিতে লিখেছেন-
"এটিকে দীর্ঘদিন ধরে বিশেষভাবে মহিলাদের গ্রন্থাগারের অংশ করে রাখা হয়েছে। যারা তার উপদেশাবলীর লক্ষ্য ছিলেন সেই যুবতী নারীদের ফরডাইস 'সেইসব পুরুষালি নারীদের' বিরুদ্ধে সাবধান করে দিয়েছিলেন, 'যারা পুরুষদের রাজ্যে ভাগ বসানোর জন্য ওকালতি করছে।' পুরুষদের রাজ্য বলতে তিনি কেবলমাত্র 'যুদ্ধবিগ্রহের' কথাই বলেননি; ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, শক্তি ও দক্ষতার অনুশীলন, বিমূর্ত দর্শন, দুরূহ বিজ্ঞান সবই এর অন্তর্গত।"
https://en.m.wikipedia.org/wiki/James_Fordyce
..........................................................................
মেরি উলস্টোনক্রাফট তার 'এ ভিন্ডিকেশন অফ দ্য রাইটস অফ উইমেন' বইটিতে পরগাছা স্বভাবের নারীদের প্রতি টিটকারি দিয়েছেন এভাবে-
"মেয়েদের সমান অধিকার দাও, দেখবে পুরুষরা যা পারে তারাও সেটা করে দেখাতে পারবে। হয় সে বন্ধনমুক্ত হয়ে আরও পরিপূর্ণতা লাভ করবে, অথবা যে কর্তৃত্ব এই দুর্বল সত্তাটিকে শৃঙ্খলিত করে রাখে সে তারই যথার্থতা প্রমাণ করবে। যদি দ্বিতীয়টি হয়, তাহলে চাবুক আমদানি করার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে একটা নতুন ব্যবসা শুরু করতে হবে - যে চাবুক হবে বিয়ের দিনে জামাইয়ের জন্য শ্বশুরের যৌতুক এবং যার সাহায্যে স্বামী তার পুরো পরিবারের শৃঙ্খলা বজায় রাখবে। ন্যায্যতার কোনও উল্লঙ্ঘন না করে শুধু এই রাজদন্ড ব্যবহার করেই পরিবারের সর্বময় কর্তা রাজত্ব চালিয়ে যাবে; পরিবারে সে-ই তো একমাত্র লোক যার বিচারবুদ্ধি আছে।"
.......................................................................
"les femmes tricotent" অর্থাৎ "মেয়েদের কাজ হলো পোশাক বোনা"।
- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
.......................................................................
মাতা হারি'র বয়স যখন মাত্র ১৬ বছর তখন তার স্কুলের শুয়োর অধ্যক্ষ তাকে ধর্ষণ করেছিল। তার দুই নারী সহপাঠীর সাথে আড্ডা দেয়ার সময় তিনি জানতে পারেন তাদের সাথেও একই ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু সেসময় তারা স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ভয়ে মুখ খুলেনি। তিনি নৃত্যকলার কারণে সারা ফ্রান্সে বিখ্যাত হওয়ার পর ঐ দুই সহপাঠীই ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে ঘটনাটি প্রকাশ্যে ছড়িয়ে দেয়। এই ভয়াবহ ঘটনার পর থেকেই তিনি যৌনতাকে যান্ত্রিক অনুভূতি হিসেবে বিবেচনা করতেন, যার সাথে প্রেমের কোনো সম্পর্ক নেই। বিয়ের পর মিলিটারি স্বামীর কর্মস্থল ইন্দোনেশিয়ায় যেতে হয়েছিল তাকে। সেখানে তার লম্পট স্বামী নিয়মিত ইন্দোনেশিয়ান মেয়েদের ভোগ করতো। ভার্জিন না হওয়ার কারণে তার উপর প্রচন্ড শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতো এই লম্পট। বৌ এর উপর অন্যান্য অফিসারদের কুদৃষ্টি দেখে কমপ্লেক্স এ আক্রান্ত হয়েছিল মাতা হারি'র স্বামী, যে কিনা বয়সে তার চেয়ে ২১ বছরের বড়ো ছিল। এক কন্যার পর পুত্র সন্তানের মা হলেও আয়া বিষ দিয়ে হত্যা করেছিল ছেলেটিকে। ঐ আয়াকে বাড়ির অন্য চাকররা খুন করে। ঐ মহিলাকে তার স্বামী আর অন্যান্য অফিসাররা প্রচন্ড মারধর করতো, নিয়মিত ধর্ষণ করতো আর অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপিয়ে দিতো। পুরুষসুলভ কমপ্লেক্স এ আক্রান্ত লম্পট স্বামী মাতা হারিকে বাড়ি থেকে বের হতে দিতো না। তিনি ডাবল এজেন্ট ছিলেন। কিন্তু তার ভাগ্য অনেকটা জোয়ান অব আর্ক এর মতোই। জার্মানির প্রস্তাব ফ্রান্সকে ঠিকই জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ভুল কর্মকর্তাকে বাছাই করার খেসারত দিতে হয় তাকে। হারানো মর্যাদা ফিরে পাওয়ার লোভে ঐ কর্মকর্তা ফাঁসিয়ে দেয় তাকে। যুদ্ধে মিত্রশক্তির দেশগুলোর হাজার হাজার সৈন্যের জীবন যাওয়ার ঘটনা থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতে এবং চরিত্রহীন অভিজাতদের কথিত সম্মান রক্ষা করতে মাতা হারি'কে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া জরুরি ছিল পুরুষতন্ত্রের জন্য। তার নিজের জন্মভূমি তাকে উদ্ধারে কিছুই করেনি। যেই প্রায় অন্ধ ও অসুস্থ রুশ প্রেমিককে তিনি রাতদিন সেবা করেছিলেন, সে-ও বেইমানি করেছিল।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Georges_Ladoux
তখনকার নিয়ম অনুযায়ী মাথা কেটে ফেলা হতো এই ধরনের অপরাধে অভিযুক্তদের। মাতা হারি'র কাটা মাথা প্যারিসের যেই জাদুঘরে রাখা ছিল সেখান থেকে পরবর্তীতে চুরি হয়ে যায়।
Comments