মহান লেনিন
রাশিয়ায় ১৮৮৩ সালে প্লেখানভ 'শ্রমিক মুক্তি' স্থাপন করেন।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Georgi_Plekhanov
এই সংঘ তৎকালীন সময়ের অবৈজ্ঞানিক ও অবিপ্লবী মতাদর্শ নারদিজমের তাত্ত্বিক ভিত্তিকে খন্ডন করে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পতাকা তুলে ধরার চেষ্টা চালায়।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Narodniks
নারদনিকদের ভ্রান্ত ধারণা ছিলো বিপ্লবের জন্য কয়েকজন উদ্যোগী বীর থাকবে আর নিস্ক্রিয় জনতা কার্যকলাপের জন্য অপেক্ষা করতে থাকবে। এই ধারণা ছিল অবিপ্লবী। এরপর লেনিনের হাত ধরে 'শ্রমিক শ্রেণির মুক্তি সংগ্রাম সংঘ' এর জন্ম যা ছিলো শ্রমিকশ্রেণির আন্দোলনের পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত বিপ্লবী পার্টির প্রথম সূত্রপাত। লেনিন রাশিয়ার বিভিন্ন মার্কসবাদী সংস্থাগুলোকে একত্রিত করার জন্য সারাদেশ জুড়ে 'ইসক্রা' নামের প্রথম মার্কসবাদী সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। লেনিন এটির মাধ্যমে বিপ্লবের মতাদর্শিক বিতর্ক চালিয়ে যেতেন এবং এর মাধ্যমেই রাশিয়ায় একটি মাত্র সোশ্যাল-ডেমোক্রেটিক লেবার পার্টি গঠিত হলো। লেনিন চমৎকারভাবে আইনী মার্কসবাদী ও সুবিধাবাদী, অর্থনীতিবাদীদের আপোষকামী মতকে খন্ডন করেন। যেখানে মার্কস স্পষ্টতই সর্বহারা শ্রেণির বল প্রয়োগের মধ্য দিয়ে বিপ্লবের পথ দেখিয়েছিলেন সেখানে আইনী মার্কসবাদীরা আইনী লড়াই ও আইনী পার্টির মাধ্যমে সমাজতন্ত্র কায়েমের পথ নির্দেশ করেছিলো।
অন্যদিকে অর্থনীতিবাদীরা মনে করতো শ্রমিকশ্রেণির কাজ হচ্ছে বিভিন্ন দাবী-দাওয়া ভিত্তিক আন্দোলন করা আর তাদের পক্ষে রাজনৈতিক আন্দোলন করবে উদারনৈতিক বুর্জোয়া শ্রেণি।
লেনিন ‘কি করিতে হইবে’ পুস্তকের মাধ্যমে এসব ভ্রান্ত মতকে খন্ডন করেন।
https://www.marxists.org/archive/lenin/works/1901/witbd/
১৯০১-১৯০৪ সালে রাশিয়ায় বিপ্লবী আন্দোলনের জোয়ার শুরু হয়। কিন্তু পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে একক পার্টি গঠন ও তার নিয়মাবলী নিয়ে মতানৈক্য হয় এবং সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক লেবার পার্টির মধ্যে বলশেভিক ও মেনশেভিক নামে দু'টি ধারার উদ্ভব হয়। লেনিনের নেতৃত্বাধীন অংশের নাম ছিলো বলশেভিক। দ্বিতীয় কংগ্রেসের পর বলশেভিক ও মেনশেভিকদের মধ্যে প্রধানত সংগঠন প্রশ্নে মতভেদ তীব্র হয়। লেনিনের রচিত মার্কসবাদী পার্টির সংগঠন সম্পর্কীয় নীতিমালাকে তুলে ধরে ‘এক পা আগে দুই পা পিছে’ বইটি প্রকাশিত হয়।
https://terabox.com/s/1UVgOjU-u6_MC9fuHvCe-fA
১৯০৪ সালে রাশিয়ায় বিপ্লবী আন্দোলনের প্রসার ঘটে। ১৯০৫ সালের ৩ জানুয়ারি সেন্ট পিটার্সবুর্গ ধর্মঘট শুরু হয়। ঐসময় শ্রমিকরা অত্যন্ত কষ্টে দিনাতিপাত করতো। তারা তাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য জার দ্বিতীয় নিকোলাসের কাছে দরখাস্ত করে। এসময় বলশেভিক পার্টি এক সভায় স্পষ্ট করেই বুঝিয়ে দেয় যে, জারের কাছে আবেদন-নিবেদন দ্বারা স্বাধীনতা অর্জন করা যায় না, অস্ত্রবলে স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে। তারা আরো বলে যে, জারের শীতকালীন প্রাসাদ অভিমুখে তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালানো হতে পারে। কিন্তু তারা শীতকালীন প্রাসাদ অভিমুখে যে মিছিল গেলো তা বন্ধ করতে পারেনি। ১৯০৫ সালের ৯ জানুয়ারি তারিখে জারের শীতকালীন প্রাসাদের দিকে শান্তিপূর্ণ মিছিল অগ্রসর হয়। জার নিরস্ত্র শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর হুকুম দিলো। সেদিনের রক্তাক্ত রবিবারে জারের সৈন্যদের হাতে ১ হাজারের বেশি শ্রমিক প্রাণ হারালো, ২ হাজারের বেশি জখম হলো। বলশেভিকদের আশংকাই সত্য হলো। ঐ দিন সন্ধায় মজুরদের মহল্লাগুলোতে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড গড়া হলো। শ্রমিকরা বললো “জার আমাদের যা দিয়েছে, এখন আমরা তা ফেরত দিবো”। লেনিন বিপ্লবের জন্য করণীয় নির্ধারণ করতে গিয়ে 'গণতান্ত্রিক বিপ্লবে সোশ্যাল ডেমোক্রাসির দুই রণকৌশল' বইটি রচনা করেন।
https://www.marxists.org/archive/lenin/works/1905/tactics/index.htm
তিনি দেখান যে, ভবিষ্যতে বিপ্লবের দু'টি সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যায়। হয় এই বিপ্লব জারতন্ত্রের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত জয়লাভ, জারতন্ত্রের উচ্ছেদ এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হবে না হয় যথেষ্ট শক্তির অভাবে জনগণের স্বার্থহানি করে জার এবং বুর্জোয়াশ্রেণির মধ্যে একটা রফা হবে, সম্ভবত শাসনতন্ত্রের নামে একটি প্রহসন মিলবে। ১৯০৫ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে জনগণের বিপ্লবী সংগ্রাম পূর্ণ তেজে বেড়ে চললো। ঐসময় শ্রমিক ধর্মঘট লেগেই ছিলো। মেনশেভিকরা সশস্ত্র বিদ্রোহ তথা বিপ্লবের বিরোধিতা করে। বলশেভিকরা তাদের এই সুবিধাবাদী মুখোশ উন্মোচন করে দেয় এবং স্তালিন শ্রমিকদের এক সভায় বলেন “যথার্থ জয়লাভের জন্য আমাদের কী চাই? চাই তিনটি জিনিস: প্রথম অস্ত্রশস্ত্র, দ্বিতীয় অস্ত্রশস্ত্র, তৃতীয় বারবার চাই অস্ত্রশস্ত্র!” মস্কোতে শ্রমিকদের সশস্ত্র বিদ্রোহ আরম্ভ হয়ে যায়। জার সরকার নৃশংসভাবে শ্রমিক ও কৃষকদের নির্বিচারে খুন করার নির্দেশ দেয় এবং বিদ্রোহ দমন করতে সক্ষম হয়। লেনিন এই বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেন। যেখানে প্লেখানভ ও তার নেতৃত্বাধীন মেনশেভিকরা মনে করে যে “অস্ত্রধারণ করা উচিত হয় নাই”; সেখানে লেনিন এর বিপরীতে দেখান “আরও দৃঢ়ভাবে, আরো উৎসাহ নিয়ে এবং আক্রমণাত্মক উপায়ে আমাদের অস্ত্র ধারণ করা উচিত ছিলো”। শ্রমিক-কৃষকের কোনো স্থায়ী মৈত্রী হয়নি বিপ্লবের প্রাক্কালে। তাছাড়া মস্কো ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলগুলো প্রধানত আত্মরক্ষামূলক কার্যে আটকে ছিল। তারা জারের বাহিনীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত যুদ্ধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়। যা ছিলো মস্কো বিদ্রোহের এক বড় দুর্বলতা। ১৯০৫ সালের বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার পরে মেনশেভিকরা বিপ্লবের নীতি পুরোপুরিভাবে বর্জন করে বিলোপবাদীতে পরিণত হলো। ১৯০৫ সাল থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত বিপ্লবের ভাটার কাল। এসময় বলশেভিক পার্টি ও লেনিন অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। ১৯০৯ সালে লেনিন 'মেটেরিয়ালিজম এন্ড এম্পিরিয়ো-ক্রিটিসিজম গ্রন্থটির মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণিকে বিপ্লবী মতাদর্শের বিরোধীদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেন এবং বিরোধীদের ভুল মতবাদকে স্পষ্টভাবে খন্ডন করেন।
https://www.marxists.org/archive/lenin/works/1908/mec/
১৯১২ সালে বলশেভিকদের স্বতন্ত্র মার্কসবাদী পার্টি গঠিত হয়। ১৯১৪ সালে ১ম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জার্মানি ও রাশিয়ার মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। ঐসময় ১৯০৫ সালের বিপ্লবের অনুরূপ অবস্থা তৈরি হয়। মালিকরা শ্রমিকের বেতন কর্তন ও ছাঁটাই করতে শুরু করে। অর্থনৈতিক অবস্থার খারাপ পরিস্থিতি শুরু হয়। ১৯১৪ সালের সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে রাশিয়ার সোশ্যালিস্ট-রেভল্যুশনারি এবং মেনশেভিকরা বুর্জোয়া ধনী মালিকশ্রেণিকে সহযোগিতা করে। তারা 'পিতৃভূমি রক্ষা'র লড়াইয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে। আর লেনিনের নেতৃত্বাধীন বলশেভিকরা এসময় সাম্রাজ্যবাদী অন্যায় যুদ্ধের স্পষ্ট বিরোধিতা করে। ঐসময় রাশিয়ার সৈন্যরা ও সাধারণ শ্রমিক-কৃষকও যুদ্ধের পক্ষে ছিলো না। এই যুদ্ধে যে মেহনতি মানুষের কোনো লাভ নেই, আছে কেবল মৃত্যু আর ক্ষুধার যন্ত্রণা জনগণ তা বুঝতে পারে। বলশেভিকরা যুদ্ধ বিরতির দাবী তোলেন এবং সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধকে গৃহযুদ্ধে পরিণত করার আহ্বান জানান। শ্রেণি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিপ্লব করা ছাড়া মেহনতি শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণির মুক্তির আর কোনো রাস্তা নেই বিধায় সাম্রাজ্যবাদী অন্যায় যুদ্ধের বিপরীতে শ্রেণি সংগ্রামের ন্যায়যুদ্ধের প্রতি শ্রমিক-কৃষককে আহ্বান করেন তারা। লেনিন দেখান যে, পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ ও মুমূর্ষু রূপ হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ। আর সাম্রাজ্যবাদ মানেই যুদ্ধ। অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলো অন্য রাষ্ট্রকে করায়ত্ত করে। তাই এ যুগ হলো সাম্রাজ্যবাদের যুগ, পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ি ও অন্তহীন যুদ্ধের যুগ। একইসাথে তা সর্বহারা বিপ্লবের যুগ। সেটা লেনিন স্পষ্ট করেন। ১৯১৪ সালের যুদ্ধ তিন বছর ধরে চলার পর লক্ষ লক্ষ লোক যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিহত হলো, যুদ্ধকালীন মহামারী রোগে মারা গেলো। জার বাহিনী বার বার পরাজিত হতে থাকলো। রাশিয়ার বুর্জোয়া মহলে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়লো। বুর্জোয়া শ্রেণি ভাবলো রাজপ্রাসাদের মধ্যে ওলটপালট ঘটিয়ে সংকট সমাধান করা যাবে। জনগণ তাদের সংকটের সমাধান ঘটালো নিজস্ব পদ্ধতিতে। ফেব্রুয়ারি মাসে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব জয়যুক্ত হলো। বিপ্লব ঘটালো বলশেভিকদের নেতৃত্বে সর্বহারা শ্রেণি। কিন্তু নতুন যে রাষ্ট্রশক্তির উদ্ভব হলো তাতে ক্ষমতাসীন হলো বুর্জোয়া শ্রেণি ও যেসব জমিদার বুর্জোয়া হয়েছিলো তাদের প্রতিনিধিরা। বুর্জোয়া সরকারের পাশাপাশি ছিলো আর একটি শক্তি- শ্রমিক ও সৈনিক প্রতিনিধিদের সোভিয়েত। ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পর অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়, যেখানে বুর্জোয়া শ্রেণি ও শ্রমিক-সৈন্য সোভিয়েতের দ্বৈত ক্ষমতা ছিলো। ১৯১৭ সালের ৩ এপ্রিল লেনিন ১০ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে পেত্রোগ্রাদে ফিরে এলেন। শুরু থেকেই লেনিন অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করার ডাক দিতে থাকলেন। কারণ তিনি দেখান যে, ঐ সরকার ছিল একটি বুর্জোয়া পুঁজিবাদী সরকার।
https://grontho.net/%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8B-%E0%A6%A6%E0%A6%B6-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%A8/
১৯১৭ সালের জুলাই মাসে কেরেনস্কি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হলো এবং তার থাকার জায়গা হলো জারের সাবেক বাসভবন শীতকালীন প্রাসাদে।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Alexander_Kerensky
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Winter_Palace
অক্টোবরের শুরুর দিকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে কেরেনস্কির কর্তৃত্ব ভেঙে পড়লো। অন্যদিকে লেনিনের প্রস্তাবে বিপ্লবী বলশেভিকরা একটি সশস্ত্র অভ্যুত্থান ঘটানোর জন্য গোপন প্রস্তাব পাস করলো। লেনিন জোর দিয়ে বললেন, যা করার দ্রুত করতে হবে। মেনশেভিকরা বলতো রাশিয়া সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত নয় এবং সেখানে শুধু বুর্জোয়া প্রজাতন্ত্রই সম্ভব। বলশেভিক পার্টির ষষ্ঠ কংগ্রেস সম্পন্ন হয় এবং তারা সশস্ত্র অভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ‘সোভিয়েতগুলোর হাতে সমস্ত ক্ষমতা চাই’- আহ্বানে বলশেভিক পার্টি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করে। শ্রমিক বিক্ষোভ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে থাকে। শ্রমিক, সৈন্যরা বিক্ষোভে ফেটে পড়তে শুরু করে। ১০ অক্টোবর বলশেভিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি অস্থায়ী সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ২৫ অক্টোবর (নতুন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৭ নভেম্বর) শ্রমিকদের সশস্ত্র অংশ এবং বিপ্লবী সৈন্যরা অস্থায়ী সরকারকে উৎখাত করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে যুদ্ধ জাহাজ গার্ড বাহিনীর সহায়তায় রাজধানী পেট্রোগ্রাডের শ্রমিকরা বুর্জোয়া সরকারের কেন্দ্র উইন্টার প্যালেসে অভিযান শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যে পতন হয় উইন্টার প্যালেসের। অস্থায়ী সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা চলে আসে শ্রমিক, কৃষক ও সৈন্যদের সোভিয়েতের হাতে। পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে প্রতি বিপ্লবীদের প্রতিরোধ ভেঙ্গে মস্কোসহ গোটা রাশিয়া এবং পুরনো জার সাম্রাজ্যের অন্যান্য অংশে বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে শ্রমিক শ্রেণি ক্ষমতা দখল করে। বিপ্লবের পরে লেনিনের নেতৃত্বে নতুন সমাজতান্ত্রিক সরকার গঠিত হয়। জমি, শান্তি ও রুটির শ্লোগানে বলশেভিকরা জনগণকে সংগঠিত করেছিল। নতুন সরকারের প্রথম পদক্ষেপ ছিল জমি ও শান্তির জন্য ডিক্রি জারি করা। ‘শান্তির ডিক্রি’র মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য অবিলম্বে শান্তি আলোচনা শুরুর ডাক দেয়া হয়।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Decree_on_Peace#:~:text=The%20Decree%20on%20Peace%2C%20written,27%20October%5D%201917.
‘জমির ডিক্রি’র মাধ্যমে জমিদারতন্ত্র উচ্ছেদ ঘোষণা করা হয়।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Decree_on_Land#:~:text=It%20decreed%20an%20abolition%20of,the%20nobility%2C%20monasteries%20and%20Church.
অন্যান্য ডিক্রিগুলো ছিল নিরক্ষরতা দূরীকরণ, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, অবৈতনিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যরক্ষা এবং সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্রের নতুন ইউনিয়ন গঠন সম্পর্কিত। এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তৈরি হয় পৃথিবীর বুকে প্রথম সফল শ্রমিক শ্রেণির সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং শুরু হয় সমাজতান্ত্রিক বিনির্মাণ। লেনিন ১৯২২ সালে বিপ্লব বিরোধী আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হন। যার ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯২৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

Comments