সাঈদীর ফাঁসীর রায় নিয়ে মিথ্যাচার এবং সেগুলোর উত্তর - নিঝুম মজুমদার [পর্ব-তিন]
[উনার লেখার কিছু বানান ও যতিচিহ্ন সংশোধন করা হয়েছে]
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে গত ১৭ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন আব্দুল হালিম বাবুল। সাক্ষ্য দেয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, ১৯৭১ সালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ অন্যান্য রাজাকার এবং সশস্ত্র পাক আর্মির লোকজন তাদের ঘরে প্রবেশ করে লুটপাট করে। এরপর তারা ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সাক্ষী আব্দুল হালিম বাবুলের মামা আব্দুর রাজ্জাক আঁকন আজ ট্রাইব্যুনালে এসে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিলেন। আব্দুর রাজ্জাক সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, তার ভাগনে আব্দুল হালিম বাবুল এই ট্রাইব্যুনালে এসে সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন।
"স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে আমার ভাগনে আব্দুল হালিমের বাড়িতে কোনো পাক সেনা, রাজাকার যায় নাই। লুটপাট হয় নাই। আগুন দেয় নাই। এরকম কোন ঘটনাই ঘটেনি।"
আব্দুর রাজ্জাক দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিলেন মাওলানা সাঈদীর পক্ষে। জবানবন্দী শেষে আজ তার জেরা শুরু হয়।
আব্দুর রাজ্জাকের জবানবন্দী:
আমার নাম আব্দুর রাজ্জাক আঁকন। পিতা মৃত ইসকান্দার আলী আঁকন। মাতা মৃত আকিমুননেসা। আমার বয়স ৬৫ বছর। গ্রাম নলবুনিয়া। থানা জিয়ানগর। পিরোজপুর। আমি কৃষিকাজ করি। আমরা আট ভাইবোন। আমাদের সবার বড় বোন সাফিয়া খাতুন। এই বোনকে আমাদের পাশের বাড়িতে বিয়ে দেয়া হয়। তার তিন ছেলে। মেয়ে নেই। তিন ছেলেরা হলো আব্দুল হালিম বাবুল, আব্দুস সালাম বাহাদুর এবং আব্দুল করিম মধু। আমি আজ সাঈদী সাহেবের পক্ষে সত্য সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে এসেছি।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে আমার ভাগিনা আব্দুল হালিম বাবুলের বাড়ি কোনো পাক সেনা যায় নাই, কোনো রাজাকার যায় নাই। লুট হয় নাই। আগুন দেয় নাই। এরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
আব্দুল হালিম বাবুল এই ট্রাইব্যুনালে এসে সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে বাবুলের বয়স ছিল মাত্র আট-নয় বছর। এক বছর আগে শোনা গেলো বাবুল সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে। একথা শুনে বাবুলের মা বাবুলকে বলেন, "বাবা তুমি এরকম একজন ভালো মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না।" বাবুলের ভাই আব্দুস সালাম বাহাদুর এবং আব্দুল করিম মধুও বলেছে, "ভাইয়া তুমি এরকম সাক্ষ্য দেবে না।" উত্তরে বাবুল বলেছে, "আমি সাক্ষ্য দেবো।" তখন তার মা রাগে বাবুলের ঘর থেকে বের হয়ে তার মেজো ছেলে আব্দুস সালাম বাহাদুরের বাসায় ঢাকা আসেন। তার মা আমাকে বলেছেন, "আমি যদি সুস্থ থাকতাম তাহলে সাঈদী সাহেবের পক্ষে গিয়ে সাক্ষ্য দিতাম। তুমি সব জানো। তুমি গিয়ে সত্য সাক্ষ্য দিয়ে আসবা।" ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন আমাদের নলবুনিয়ায় একটা ঘটনাই ঘটেছে। আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি হঠাৎ একদিন শেষ রাত্রে একটা আওয়াজ হয়। আমি অনুমান করলাম এটা গুলির আওয়াজ। তারপর দেখি যে, ফজরের টাইম হয়ে গেছে। আমি আযান দিয়া নামাজ পড়ি। নামাজ পড়ার পর উত্তরদিকে রাস্তার পাশে যাই কোথায় কি হয়েছে জানার জন্য। তখন গিয়ে দেখি উত্তর দিক থেকে সামনের খাল দিয়ে নৌকায় করে ইব্রাহিম কুট্টির লাশ নিয়ে পাড়ের হাটের দিকে আসতেছে। নৌকায় কালাম চৌকিদার, আইয়ুব আলী চৌকিদার এবং হাকিম মুন্সিকে দেখি। এরপর দেখি আরও কয়েকজন লোক খালের পাড় দিয়ে উত্তর দিক থেকে আসতেছে। যেসব লোক আসতেছে তাদের মধ্যে দানেশ মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার, মোসলেম মাওলানা, রুহুল আমিন, মোমিন রাজাকার ছিল। আরও দেখি উক্ত লোকেরা আজু হাওলাদারের বৌ এবং তার ছেলে সাহেব আলীকে বেঁধে নিয়ে আসতেছে এবং পাড়েরহাটের দিকে নিয়া যাচ্ছে। তারপর দিন শুনি আজু হাওলাদারের বৌ বাড়িতে আসে এবং সাহেব আলীকে পিরোজপুরে নিয়ে পাক সেনারা গুলি করে হত্যা করেছে। এটাই আমার বক্তব্য। স্বাধীনতার কিছুদিন পরে শুনেছি যে, ইব্রাহিম কুট্টির বৌ একটা মামলা করেছে।
আব্দুল হালিম বাবুল যা বলেছিলেন:
গত ১৭ জুন মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৪ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আব্দুল হালিম বাবুল। তিনি জবানবন্দীতে বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের ২ জুন আমি আমার নিজ বাড়িতে ছিলাম। ঐদিন আমি আমার বাড়ির সামনে রাস্তার ওপর দাড়িয়ে ছিলাম। এসময় লোকজনের হৈচৈ শুনতে পাই। আমি লোকজনের কাছে জানতে চাইলাম কি হয়েছে। তারা বললো পাক হানাদার বাহিনী আসতেছে। আমরা সবসময় পাক হানাদার বাহিনীর ভয়ে আতঙ্কে থাকতাম। তাদের আসার খবর পেয়ে তাড়াতড়ি বাড়ির লোকদের বললাম, "তোমরা সবাই সরে যাও।" তারা সবাই আত্মগোপন করে। আমিও আত্মগোপন করলাম। দূর থেকে দেখতে পাই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, দানেশ মোল্লা, মোসলেম মাওলানা, তার সাথে আরো কিছু সশস্ত্র রাজাকার এবং পাক সেনারা আমার ঘরে প্রবেশ করে মালামাল লুটপাট করে। লুটপাটের পর আমার ঘরে আগুন দেয়।
অথচ আজ তার মামা ট্রাইব্যুনালে এসে সাক্ষ্য দিয়ে বললেন তার ভাগনে সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষীর জবানবন্দীর সময় সাক্ষীকে পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মনজুর আহমদ আনসারী। এসময় তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, আবু বকর সিদ্দিক, হাসানুল বান্না সোহাগ প্রমুখ।
জেরা:
জেরার শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, "আসামী পক্ষ থেকে আমাদের সাক্ষীর যে তালিকা দেয়া হয়েছে তাতে আব্দুর রাজ্জাক এবং আব্দুর রাজ্জাক খান নামে দু'জন সাক্ষীর নাম আছে। আব্দুর রাজ্জাক আঁকন নামে কোনো সাক্ষীর নাম নেই।" তারা তালিকায় যে আব্দুর রাজ্জাকের নাম উল্লেখ করেছেন সেই আব্দুর রাজ্জাক আর আজকের আব্দুর রাজ্জাক আঁকন দু'জন ভিন্ন ব্যক্তি। তখন ট্রাইব্যুনালন বলেন, "শুরুতে কেন এটা আপনি বলেননি?" ট্রাইব্যুনাল আসামী পক্ষের আইনজীবীর কাছে বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাখ্যা দাবি করলে তাজুল ইসলাম বলেন, "সাক্ষীর নিরাপত্তার কারণে কোড নেম ব্যবহার করা যায়। সাক্ষীর নিরাপত্তার কারণে আমরা পারিবারিক পদবী আঁকন শব্দটি ব্যবহার করিনি। তালিকায় আব্দুর রাজ্জাক নামে যে সাক্ষীর নাম আমরা জমা দিয়েছি তিনিই আজকের আব্দুর রাজ্জাক আঁকন।" শেষে ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি এবং আসামী পক্ষের বক্তব্য রেকর্ড করেন জেরার শুরুতে। তারপর জেরা শুরু হয়।
সাক্ষীকে জেরা করেন সৈয়দ হায়দার আলী।
প্রশ্ন : আপনার বড় বোন, বাবুলের মায়ের বয়স কত?
উত্তর : ৮৫ বছরের উপরে হতে পারে।
প্রশ্ন : আপনার বড় বোনের পরই কি আপনি?
উত্তর : না, আমার উপরে আরও বড় তিন ভাই আছে।
প্রশ্ন : আপনার বড় বোনের বিয়ে হয় কবে বলতে পারবেন?
উত্তর : না। আব্বা বিয়ে দিয়েছেন।
প্রশ্ন : তার বিয়ের সময় আপনার বয়স কত ছিল?
উত্তর : তাও মনে নেই।
প্রশ্ন : বাবুলরা বড় কে?
উত্তর : বাবুল।
প্রশ্ন : বাবুলের জন্ম কবে মনে আছে?
উত্তর : তার আগে আরো চার ভাই জন্মের পর মারা যায়। বাবুলের জন্ম কবে তা মনে নেই।
প্রশ্ন : চারজন কোন সালে মারা গেছে তা মনে আছে?
উত্তর : স্মরণ নেই।
প্রশ্ন : আপনার বড় বোনের বিয়ের সময় ভগ্নিপতির বয়স কত ছিল?
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : কবে মারা গেছে সে?
উত্তর : স্বাধীনতার পর।
প্রশ্ন : তখন তার বয়স কত ছিল?
উত্তর : তাও জানা নেই।
প্রশ্ন : নলবুনিয়া গ্রাম কোন দিকে লম্বা?
উত্তর : উত্তর-দক্ষিণে।
প্রশ্ন : লম্বায় কত?
উত্তর : আধা মাইল।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের সময় হাটবাজার করতেন?
উত্তর : মাঝে মধ্যে।
প্রশ্ন : আশ্বিন মাসে কয়বার পারেরহাট গেছেন?
উত্তর : একবার।
প্রশ্ন : হাটের দিন?
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : আশ্বিন মাসের আগে-পরে গেছেন?
উত্তর : গেছি, তবে কম।
প্রশ্ন : কেন কম গেছেন?
উত্তর : পাকিস্তানী এবং রাজাকারদের ভয়ে।
প্রশ্ন : রাজাকাররা কি করতো?
উত্তর : লুট।
প্রশ্ন : বাড়িঘরে আগুন দিতো?
উত্তর : হোগলাবুনিয়া গ্রামে আগুন দেয় শুনেছি।
প্রশ্ন : কাদের বাড়িতে আগুন দিতো?
উত্তর : হিন্দুদের।
প্রশ্ন : মুসলমানদের বাড়িতে আগুন দেয়ার কথা শুনেছেন?
উত্তর : শুনেছি।
প্রশ্ন : কোন মুসলমানদের বাড়িতে দিতো?
উত্তর : মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে। শঙ্কর পাশা গ্রামে খসরু মুক্তিযোদ্ধা এবং তার বাড়ির পাশে আরো একজনের বাড়িতে আগুন দেয়।
প্রশ্ন : আপনাদের বাড়িতে কোনো মুক্তিযোদ্ধা ছিল?
উত্তির : ছিল।
প্রশ্ন : নাম?
উত্তর : মোবারক। সম্পর্কে আমার ফুফাতো ভাই।
প্রশ্ন : আপনার ভগ্নিপতি কি মুক্তিযুদ্ধ সমর্থন করতেন না রাজাকারদের সমর্থন করতেন?
উত্তর : তিনি ঘোর আওয়ামী লীগ করতেন।
প্রশ্ন : তার পেশা ?
উত্তর : মোহরার ছিলেন। একবার মেম্বার হয়েছিলেন।
প্রশ্ন : জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে আপনার দুলাভাই বাড়িতে থাকতো না পালিয়ে থাকতো?
উত্তর : তাকে নিয়ে আমি পালিয়ে থাকতাম। অন্য গ্রামে এবং আমাদের গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে পালিয়ে থাকতাম।
প্রশ্ন : তিনি আওয়ামী লীগের কি ছিলেন?
উত্তর : ইউনিয়নের একটা পদে ছিলেন।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার ক্যাম্পে গেছেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আপনার গ্রামে কোনো রাজাকার ছিল না এবং কেউ আসেওনি?
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : মুক্তিযোদ্ধা ছিল?
উত্তর : সাত্তার নামে একজন ছিল।
প্রশ্ন : আর্মি ক্যাম্পে গেছেন কখনো?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আর্মি ক্যাম্প ছিল?
উত্তর : পারেহাটে রাজাকার ক্যাম্প ছিল। সেখানে মাঝে মাঝে আর্মি আসতো।
প্রশ্ন : দিনে পালাতেন না রাতে?
উত্তর : দিনে-রাতে কোনো সময় আমি পালাইনি। কারণ রাজাকারদের কোনো চাপ ছিল না।
প্রশ্ন : আপনার বিয়ের সাল মনে আছে?
উত্তর : ১৯৭২ সালের প্রথম দিকে।
প্রশ্ন : ঢাকায় কবে আসেন?
উত্তর : গতকাল।
প্রশ্ন কে নিয়ে এসেছেন?
উত্তর : রফিকের মামা।
উত্তর : রফিক কে?
উত্তর : সাঈদী সাহেবের ছেলে।
প্রশ্ন : আপকি কোথায় থাকেন?
এ প্রশ্ন করার সাথে সাথে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয় দুই পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে। মাওলানা সাঈদীর পক্ষে আইনজীবী তাজুল ইসলাম এ প্রশ্নে তীব্র আপত্তি জানান। সাথে সাথে সৈয়দ হায়দার আলীও তা প্রত্যাহার করে নেন।
প্রশ্ন : বাবুলের মা কি রকম অসুস্থ?
উত্তর : পুরোপুরি সুস্থ না। বয়স হয়েছে। কোনরকম চলাফেরা করতে পারেন।
প্রশ্ন : তিনি বেশিরভাগ সময় কোথায় থাকেন?
উত্তর : ঢাকা।
প্রশ্ন : এখন কোথায়?
উত্তর : আমাদের বাড়িতে।
প্রশ্ন : ঢাকায় এসে কোথায় থাকেন?
উত্তর: ধানমন্ডি ছেলের বাসায়।
প্রশ্ন : লঞ্চ ঘাট থেকে আপনার বাড়ি কতদূর?
উত্তর : ৪/৫ মাইল।
প্রশ্ন : “এক বছর আগে শোনা গেল আব্দুল হালিম বাবুল সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে। এই কথা শুনে তার মা তাকে বলেছিল যে, বাবা তুমি এরকম ভালো মানুষের বিরুদ্ধে অসত্য সাক্ষ্য দিবে না। তার ভাই মধু ও বাহাদুর তাকে বলেছিল ভাইয়া তুমি এরকম সাক্ষ্য দিও না।” এই কথাগুলি অসত্য, আপনি মিথ্যা বলেছেন।
উত্তর : আমার কথা সত্য।
প্রশ্ন : “তার মা আমাকে বলে ভাই আমি যদি সুস্থ থাকতাম তাহলে সাঈদী সাহেবের পক্ষে সত্য সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে যেতাম। তুমি তো সব জানো, তাই আমি অসুস্থ বিধায় তুমি গিয়ে সত্য সাক্ষ্য দিয়ে আসো।” এই কথাগুলি অসত্য।
উত্তর : আমার কথা সত্য।
প্রশ্ন : আব্দুস সালাম বাহাদুর ঢাকায় কি করে? তার বয়স কত?
উত্তর : ঢাকায় বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে। তার বয়স ৪০ হয়নি।
প্রশ্ন : আব্দুল করিম মধুর বয়স কত?
উত্তর : ৩৫ হবে।
প্রশ্ন : যুদ্ধের সময় বাহাদুর এবং মধু কোথায় থাকতো?
উত্তর : বাড়িতে।
প্রশ্ন : আশ্বিনের মাঝামাঝি গুলি শোনার কথা বললেন। ওটা যে গুলির শব্দ কিভাবে বুঝলেন?
উত্তর : মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অন্যান্য সময়েও গুলির আওয়াজ শুনেছিলাম।
প্রশ্ন : অন্যান্য সময় গুলির শব্দ শুনে তার খোঁজ নিতে সেখানে গিয়েছিলেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : তাহলে ওই সময় কারা গুলি করেছে তাও জানেন না।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : জৈষ্ঠ্য মাসে পারেরহাট বাজারে গেছেন?
উত্তর : মনে হয় একবার ।
প্রশ্ন : আপনার ভগ্নিপতি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পারেরহাট বাজারে যেতো?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আপনি পারেরহাট গেলে কেউ আপনাকে ভয়ভীতি, হুমকি বা খারাপ ব্যবহার করতো?
উত্তর : কারো সাথে আমার সাক্ষাতও হয়নি, ভয়ভীতিও দেখায়নি। আমি শেষ বেলায় যেতাম।
প্রশ্ন : সবসময় শেষ বেলায় যেতেন?
উত্তর : হ্যাঁ। সংসারের কাজকর্ম শেষ করে যেতাম।
প্রশ্ন : কারো সাথে দেখা হয়নি বলতে আপনি কাদের মিন করেছেন?
উত্তর : রাজাকার।
প্রশ্ন : রাজাকাররা কখন থাকে বা না থাকে তা জানতেন?
উত্তর : না।

Comments