Posts

ফেসবুক বিপ্লবীদের উৎসের সন্ধানে [পর্ব-দুই]

Image
  বলশেভিকরা সশস্ত্র গণ-অভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নেয়ার সময় শাসক শ্রেণি ও তাদের দোসররা, মেনশেভিক এবং 'সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবীরা' বলশেভিকদের, বিশেষত লেনিনকে 'জার্মানির চর' বলে অভিযুক্ত করলেন। যদি লেনিন প্রতিবিপ্লবী কোর্টে নিজেকে সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্ত করার জন্য হাজির করতেন, তাহলে হয় তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হতো, নয়তো তাকে গুম-খুন করে ফেলা হতো । আরও কয়েকজন সহ ট্রটস্কি মনে করতেন লেনিনের বিচারের জন্য কোর্টের সামনে হাজির হওয়া উচিত। জুলাই-আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত বলশেভিকদের ষষ্ঠ সম্মেলন এই বিষয়ে মত প্রকাশ করে যে, লেনিনের বিচার আসলে তাকে খুন করার পরিকল্পনা এবং তার বিচারের জন্য হাজির হওয়ার মতকে বাতিল করে। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ট্রটস্কি বলশেভিক পার্টিতে প্রবেশ করেন। ট্রটস্কিপন্থীরা দাবি করেন লেনিন এবং ট্রটস্কির বিপ্লবের মাসগুলোতে একপ্রকার সমঝোতায় আসেন এই মর্মে যে, লেনিন ট্রটস্কির সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের তত্ত্বকে গ্রহণ করবেন এবং ট্রটস্কি লেনিনের পার্টি গঠন ও সংগঠন সম্পর্কিত তত্ত্বকে গ্রহণ কর বে ন। অথচ ষষ্ঠ সম্মেলনে ট্রটস্কির রাজনৈতিক গ্রুপ মেঝ্রাইয়নৎসি বলশেভিক রাজনীতিকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করে এ

ফেসবুক বিপ্লবীদের উৎসের সন্ধানে [পর্ব-এক]

Image
  ১৮৭৯ সালে সচ্ছল কৃষক পরিবারে ট্রটস্কির জন্ম হয়েছিল। তার পরিবার কাজের জন্য মজুর ভাড়া করতো এবং তাদের খুবই কম মজুরী দিতো। মজুর দের খাদ্যের অবস্থা এতই করুণ ছিল যে, এক গ্রীষ্মে তারা সকলে অপুষ্টির কারণে রাতকানা-মহামারীতে অসুস্থ হয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধ তীব্র হয়ে উঠলে তার পরিবার এতই সমৃদ্ধশালী হয়ে ওঠে যে, কমিউনিস্টরা তাদের কাছে ছিল উপদ্রবস্বরূপ। তার বাবা মস্কোর কাছে এক বছরের মতো একটি রাষ্ট্রীয় মিল পরিচালনা করেছিলেন। স্কুলের পাঠ শেষ করে ট্রটস্কি ছাত্র এবং বুদ্ধিজীবীদের বিপ্লবী চক্রে যোগদান করেন। এই চক্রগুলোর কাজ সীমাবদ্ধ ছিল অন্তহীন আলোচনার মধ্যে। শ্রমিক শ্রেণিকে প্রকৃতভাবে সংগঠিত করা এবং পীড়ক রাষ্ট্রকে গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য গুপ্ত সংগঠন গড়ে তুলবার কোনও উদ্যোগই ছিল না। বর্তমানের ট্রটস্কিপন্থীদের কোনও গ্রুপ এই লাইনকে অতিক্রম করে না। প্রতিষ্ঠিত শিক্ষক, ছাত্র, ব্যাংক ম্যানেজার ও অন্যান্য পেটি-বুর্জোয়া উপাদানে গঠিত ট্রটস্কিপন্থীদের অসংখ্য গলাবাজি র গ্রূপ আছে; দুঃখের বিষয় অনেক জায়গায় শ্রমিকরাও ট্রটস্কিদের ফাঁদে পা দিয়েছে । কিন্তু কোথাও ট্রটস্কিপন্থীরা প্রলেতারিয়েতদের সেই স্তরে সংগঠিত করতে পারেনি যে স্তরে তা

কমিউনিস্টরা ছিল, আছে, থাকবে

Image
  কমিউনিস্টরা নাকি শেষ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ নাকি বামপন্থার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছে এবং জনগণ নাকি সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশ ও ভারতে আওয়ামী লীগ ও বিজেপিকে নিজেদের রক্ষাকর্তা হিসেবে বেছে নিয়েছে - এই নিয়ে প্রতিনিয়ত গাদা গাদা লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। বামপন্থী বলতে ঠিক কাদের বোঝানো হচ্ছে সেই বিষয়ে যেমন কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়া হচ্ছে না, ঠিক তেমনি বুর্জোয়া গণতন্ত্রের অধীনে সংসদীয় নির্বাচনে গিয়ে বিপ্লব কায়েমের স্বপ্ন দেখা চরম সংশোধনবাদী ও সামাজিক-ফ্যাসিবাদী পার্টিগুলোর অধ:পতনকে কেন সামগ্রিকভাবে বাম ও কমিউনিস্ট শক্তির পতন হিসেবে দেখানো হচ্ছে তারও কোনো জবাব নেই। https://iskrathespark.blogspot.com/2023/09/blog-post_18.html?m=1 প্রথমেই বাংলাদেশের নির্বাচনপন্থীদের দিকে ফিরে তাকানো যাক । বামপন্থী লেখক হিসেবে পরিচিত সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছিলেন- "শেখ মুজিবের সাহস তো অবশ্যই, বুদ্ধিমত্তাও ছিল প্রখর ।" অনেকেই দাবী করেন এদের আচরণ বৃদ্ধ বয়সে এসে রিভার্স করে। তারা এদের যৌবনের ইতিহাস জানেন না বলেই এমনটা করেন। ভাষা আন্দোলনের সময় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানীদের ভয়ে নিজে পিছিয়ে এসে অন্যদেরও তাই করতে বলার

ফিরে দেখা নন্দীগ্রাম আন্দোলন : মমতার উবাচ, বুদ্ধের ওয়াও-ওয়াও ও বাস্তবিক ঘটনাগুলো (সৌম্য মন্ডল)

Image
  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যদি প্লাস্টার করা ঠ্যাং উঁচিয়ে চুপ করে বসে থাকতে পারতেন, তবে হয়তো তাঁর তৃণমূল কংগ্রেস তুলনামূলকভাবে ভালো ফল করতো। এতদিন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) [সিপিআই (এম)] নন্দীগ্রামে গুলি চালানো নিয়ে "যা করেছি, বেশ করেছি" মার্কা কথা বলে গালাগালি খেয়েছে। হঠাৎ নন্দীগ্রামে পুলিশের সন্ত্রাসের সাথে মমতা  তাঁর দলের প্রাক্তন হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী আর শিশির অধিকারীর “বাপ-ব্যাটার” নাম জড়িয়ে দেওয়ায় যেমন নিজের বিশ্বাসযোগ্যতাকে হাসির খোরাকে পরিণত করলেন, তেমনি আচমকা সিপিআই (এম) কর্মীদেৱ  মধ্যে দারুণ একটা “ওয়াও-ওয়াও” অনুভূতি জাগ্রত করলেন। এই “ওয়াও-ওয়াও” অনুভূতি রোগ শয্যায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মধ্যেও সঞ্চারিত হলো।  ২০১১ সালে বিধায়ক পদ খুইয়ে গোসা করে রাজনৈতিক সন্ন্যাসে চলে যাওয়া বুদ্ধ হঠাৎ উত্তেজনায় একটা বিবৃতিও লিখে আলিমুদ্দিন ছাপ মেরে প্রেসে পাঠিয়ে দিলেন। মমতার কাছ থেকে সিপিআই (এম) হঠাৎ জানতে পারলো যে সিপিআই (এম) ক্যাডার এবং  বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশ গুলি চালায়নি! এ-ও জানা গেলো যে ২৩৪টা আসন জিতে বসে থাকা টানা ৩০ বছর ধরে চলা এ